সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা ঈমান অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ১৬৬ –২১০

৪৪. অধ্যায়ঃ
(মৃতের শোকে) গাল থাপড়ানো, জামা ছিঁড়ে ফেলা এবং জাহিলী যুগের ন্যায় উচ্চৈঃস্বরে বিলাপ করা হারাম

১৮৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي جَمِيعًا، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ الْخُدُودَ أَوْ شَقَّ الْجُيُوبَ أَوْ دَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ ‏”‏ ‏.‏ هَذَا حَدِيثُ يَحْيَى وَأَمَّا ابْنُ نُمَيْرٍ وَأَبُو بَكْرٍ فَقَالاَ ‏”‏ وَشَقَّ وَدَعَا ‏”‏ بِغَيْرِ أَلِفٍ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, যে ব্যক্তি গাল থাপড়াবে, জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলবে অথবা জাহিলী যুগের ন্যায় বিলাপ করবে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। ইবনু নুমায়র ও আবূ বাক্‌র বলেছেন, “আলিফ” ছাড়াই হবে। অর্থাৎ (আরবী) পরিবর্তে (আরবী) বলেছেন। [৪৩] (ই.ফা. ১৮৭; ই.সে. ১৯৩)

[৪৩] কোন মৃতের জন্য বিলাপ করে কাঁদা অবৈধ, আর যদি শুধু অন্তর ফেটে চক্ষু দিয়ে অশ্রু নির্গত হয় তা বৈধ। প্রতিটি ব্যক্তির ওয়াসিয়াত করা উচিত যে, আমার মৃত্যের পরে তোমরা উচ্চস্বরে কাঁদবে না।
১৮৭
وَحَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، جَمِيعًا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالاَ ‏ “‏ وَشَقَّ وَدَعَا ‏”‏ ‏.‏

আ’মাশ (রহঃ)- এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

উপরোক্ত সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাঁরা (আরবী) বলেছেন। (ই.ফা. ১৮৮; ই.সে. ১৯৪)

১৮৮
حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ مُوسَى الْقَنْطَرِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ، أَنَّ الْقَاسِمَ بْنَ مُخَيْمِرَةَ، حَدَّثَهُ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو بُرْدَةَ بْنُ أَبِي مُوسَى، قَالَ وَجِعَ أَبُو مُوسَى وَجَعًا فَغُشِيَ عَلَيْهِ وَرَأْسُهُ فِي حَجْرِ امْرَأَةٍ مِنْ أَهْلِهِ فَصَاحَتِ امْرَأَةٌ مِنْ أَهْلِهِ فَلَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يَرُدَّ عَلَيْهَا شَيْئًا فَلَمَّا أَفَاقَ قَالَ أَنَا بَرِيءٌ مِمَّا بَرِئَ مِنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَرِئَ مِنَ الصَّالِقَةِ وَالْحَالِقَةِ وَالشَّاقَّةِ ‏.‏

আবূ বুরদাহ্‌ ইবনু আবূ মূসা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ মূসা (রাঃ) কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাঁর মাথা তাঁর পরিবারের এক মহিলার কোলে ছিল। সে মহিলা চিৎকার করে উঠলো। তিনি তাকে তা থেকে বাধা দিতে পারেননি। যখন তাঁর জ্ঞান ফিরলো তখন বললেন, আমি তার থেকে সম্পর্কহীন, যার থেকে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কচ্ছেদ করেছেন। যে ব্যক্তি (মৃতের শোকে) উচ্চৈঃস্বরে কান্নাকাটি করে, মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। (ই.ফা. ১৮৯; ই.সে. ১৯৫)

১৮৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا جَعْفَرُ بْنُ عَوْنٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو عُمَيْسٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا صَخْرَةَ، يَذْكُرُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ، وَأَبِي، بُرْدَةَ بْنِ أَبِي مُوسَى قَالاَ أُغْمِيَ عَلَى أَبِي مُوسَى وَأَقْبَلَتِ امْرَأَتُهُ أُمُّ عَبْدِ اللَّهِ تَصِيحُ بِرَنَّةٍ ‏.‏ قَالاَ ثُمَّ أَفَاقَ قَالَ أَلَمْ تَعْلَمِي – وَكَانَ يُحَدِّثُهَا – أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ أَنَا بَرِيءٌ مِمَّنْ حَلَقَ وَسَلَقَ وَخَرَقَ ‏”‏ ‏.‏

‘আবদুর রহমান ইবনু ইয়াযীদ ও আবূ বুরদাহ্‌ ইবনু আবূ মূসা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) বেহুশ হয়ে পড়েন। তাঁর স্ত্রী উম্মু ‘আবদুল্লাহ চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে তাঁর নিকট আসলেন। তারা বলেন, অতঃপর তিনি জ্ঞান ফিরে পেলেন এবং বললেন, তুমি কি জান না? তারপর তিনি তাঁকে এ হাদীস শোনান যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি সে ব্যক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন যে ব্যক্তি মাথার কেশ মুণ্ডন করে, চিৎকার করে কান্নাকাটি করে এবং জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে (ই.ফা. ১৯০; ই.সে. ১৯৬)

১৯০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُطِيعٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ عِيَاضٍ الأَشْعَرِيِّ، عَنِ امْرَأَةِ أَبِي مُوسَى، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح

وَحَدَّثَنِيهِ حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا دَاوُدُ، – يَعْنِي ابْنَ أَبِي هِنْدٍ – حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ مُحْرِزٍ، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح وَحَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ ‏.‏ غَيْرَ أَنَّ فِي حَدِيثِ عِيَاضٍ الأَشْعَرِيِّ قَالَ ‏”‏ لَيْسَ مِنَّا ‏”‏ ‏.‏ وَلَمْ يَقُلْ ‏”‏ بَرِيءٌ ‏”‏ ‏.

আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে রাবী ইয়ায আল আশ্‌‘আরীর হাদীসে (আরবী) (সে আমার দলভূক্ত নয়) কথাটি রয়েছে। তিনি (আরবী) (বিচ্ছিন্ন) শব্দ বলেননি। (ই.ফা. ১৯১; ই.সে. ১৯৭)  সরাসরি

৪৫. অধ্যায়ঃ
চোগলখোরী জঘন্যতম হারাম

১৯১
وَحَدَّثَنِي شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ، – وَهُوَ ابْنُ مَيْمُونٍ – حَدَّثَنَا وَاصِلٌ الأَحْدَبُ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَجُلاً، يَنِمُّ الْحَدِيثَ فَقَالَ حُذَيْفَةُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ نَمَّامٌ ‏”‏ ‏.

আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

হুযাইফাহ্‌ (রাঃ)-এর নিকট খবর পৌঁছল যে, এক ব্যক্তি চোগলখোরী করে বেড়ায়। তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, কোন চোগলখোরই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। [৪৪] (ই.ফা. ১৯২; ই.সে. ১৯৮)

[৪৪] একজনের কথা অন্যজনের সামনে এ জন্য বলে যে, তাদের মধ্যে যেন শত্রুতার সৃষ্টি হয় ও ঝগড়া-বিবাদ লেগে যায় তাকে ‘নাম্মাম’ বা চোগলখোর বলে। (নাবাবী)

১৯২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ الْحَارِثِ، قَالَ كَانَ رَجُلٌ يَنْقُلُ الْحَدِيثَ إِلَى الأَمِيرِ فَكُنَّا جُلُوسًا فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ الْقَوْمُ هَذَا مِمَّنْ يَنْقُلُ الْحَدِيثَ إِلَى الأَمِيرِ ‏.‏ قَالَ فَجَاءَ حَتَّى جَلَسَ إِلَيْنَا ‏.‏ فَقَالَ حُذَيْفَةُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ ‏”‏ ‏.

হাম্মাম ইবনু আল হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি সাধারণ লোকজনের কথাবার্তা শাসনকর্তার নিকট পৌঁছাত। একদা আমরা মাসজিদে বসা ছিলাম। উপবিষ্ট লোকেরা বলল, এ সে ব্যক্তি যে লোকজনের কথাবর্তা শাসনকর্তার নিকট পৌঁছায়। রাবী বললেন, এরপর সে উপস্থিত হলো এবং আমাদের পাশে বসে পড়ল। তখন হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, কোন চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না”। [৪৫] (ই.ফা. ১৯৩; ই.সে. ১৯৯)
[৪৫] ক্বাত্তাত ও নাম্মাল দু’টোর অর্থ একই, অর্থাৎ চোগলখোর।

১৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، ح وَحَدَّثَنَا مِنْجَابُ بْنُ الْحَارِثِ التَّمِيمِيُّ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – أَخْبَرَنَا ابْنُ مُسْهِرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ الْحَارِثِ، قَالَ كُنَّا جُلُوسًا مَعَ حُذَيْفَةَ فِي الْمَسْجِدِ فَجَاءَ رَجُلٌ حَتَّى جَلَسَ إِلَيْنَا فَقِيلَ لِحُذَيْفَةَ إِنَّ هَذَا يَرْفَعُ إِلَى السُّلْطَانِ أَشْيَاءَ ‏.‏ فَقَالَ حُذَيْفَةُ – إِرَادَةَ أَنْ يُسْمِعَهُ – سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ ‏”‏ ‏.‏

হাম্মাম ইবনু হারিস (রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

আমরা হুযাইফাহ্‌ (রাঃ)-এর সাথে মাসজিদে বসা ছিলাম। তাখন এক ব্যক্তি এলো ও আমাদের সাথে বসে পড়লো। তখন হুযাইফাহ্‌ (রাঃ) তাকে শোনানোর উদ্দেশ্যে বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি : চোগলখোর জান্নতে প্রবেশ করতে পারবে না। (ই.ফা. ১৯৪; ই.সে. ২০০)

৪৬. অধ্যায়ঃ
কাপড় টাখনুর নীচে নামিয়ে পরা, দান করে খোঁটা দেয়া ও (মিথ্যা) শপথের মাধ্যমে মালামাল বেচাকেনা করা হারাম এবং সে তিন ব্যক্তির বর্ণনা যাদের সাথে কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন না, রহ্‌মাতের নযরে তাকাবেন না, তাদের পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি

১৯৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالُوا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُدْرِكٍ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ‏”‏ قَالَ فَقَرَأَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَ مِرَارٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو ذَرٍّ خَابُوا وَخَسِرُوا مَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ الْمُسْبِلُ وَالْمَنَّانُ وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْكَاذِبِ ‏”‏ ‏.

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ তা’আলা কিয়ামাতের দিন তিন শ্রেণীর লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না। বরং তাদের জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তি। বর্ণনাকারী বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাটি তিনবার পাঠ করলেন। আবূ যার (রাঃ) বলে উঠলেন, তার তো ধ্বংস হবে, সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহর রসূল! এরা কারা? তিনি বললেন, যে লোক পায়ের গোছার নীচে কাপড় ঝুলিয়ে চলে, কোন কিছু দান করে খোঁটা দেয় এবং মিথ্যা শপথ করে পণ্যদ্রব্য বিক্রি করে। (ই.ফা. ১৯৫; ই.সে. ২০১)

১৯৫
وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ خَلاَّدٍ الْبَاهِلِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، – وَهُوَ الْقَطَّانُ – حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ الأَعْمَشُ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ مُسْهِرٍ، عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْمَنَّانُ الَّذِي لاَ يُعْطِي شَيْئًا إِلاَّ مَنَّهُ وَالْمُنَفِّقُ سِلْعَتَهُ بِالْحَلِفِ الْفَاجِرِ وَالْمُسْبِلُ إِزَارَهُ ‏”‏ ‏.‏

وَحَدَّثَنِيهِ بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، – يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ – عَنْ شُعْبَةَ، قَالَ سَمِعْتُ سُلَيْمَانَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَقَالَ ‏ “‏ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ‏”‏ ‏.

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তিন ব্যক্তির সাথে কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন না। (১) যে ব্যক্তি কোন কিছু দান করে খোঁটা দেয়; (২) যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করে দোকানদারী করে এবং (৩) যে ব্যক্তি টাখ্‌নুর নীচে ঝুলিয়ে পোশাক পরিধান করে।

বিশ্‌র ইবনু খালিদ (রাঃ) ….. শু’বাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি সুলাইমানকে এ সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ তা’আলা কথা বলেবেন না, তাদের প্রতি তাকাবেন না, তাদের (গুনাহ থেকে) পবিত্র করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। (ই.ফা. ১৯৬; ই.সে. ২০২-২০৩)

১৯৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ – قَالَ أَبُو مُعَاوِيَةَ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ – وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ شَيْخٌ زَانٍ وَمَلِكٌ كَذَّابٌ وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তিন ব্যক্তির সাথে কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন না, তাদের (গুনাহ থেকে) পবিত্র করবেন না। রাবী আবূ মু’আবিয়াহ্‌ বলেন, তাদের প্রতি তাকাবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। (এরা হলো) ব্যভিচারী বুড়ো, মিথ্যাবাদী শাসক বা রাষ্ট্রপ্রধান ও অহঙ্কারী দরিদ্র ব্যক্তি। (ই.ফা. ১৯৭; ই.সে. ২০৪)  সরাসরি

১৯৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، – وَهَذَا حَدِيثُ أَبِي بَكْرٍ – قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ ثَلاَثٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلاَ يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ رَجُلٌ عَلَى فَضْلِ مَاءٍ بِالْفَلاَةِ يَمْنَعُهُ مِنِ ابْنِ السَّبِيلِ وَرَجُلٌ بَايَعَ رَجُلاً بِسِلْعَةٍ بَعْدَ الْعَصْرِ فَحَلَفَ لَهُ بِاللَّهِ لأَخَذَهَا بِكَذَا وَكَذَا فَصَدَّقَهُ وَهُوَ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ وَرَجُلٌ بَايَعَ إِمَامًا لاَ يُبَايِعُهُ إِلاَّ لِدُنْيَا فَإِنْ أَعْطَاهُ مِنْهَا وَفَى وَإِنْ لَمْ يُعْطِهِ مِنْهَا لَمْ يَفِ ‏”‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তিন শ্রেণীর লোকের সাথে কথা বলবেন না, এদের দিকে নযরও দেবেন না এবং এদেরকে পবিত্রও করবেন না, বরং এদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। যে ব্যক্তির নিকট অতিরিক্ত পানি থাকা সত্ত্বেও তা পথিককে দেয় না। যে ব্যবসায়ী ‘আস্‌রের পর [৪৬] তার পণ্য সামগ্রী ক্রেতার নিকট আল্লাহ্‌র কসম করে বিক্রি করে আর বলে, আমি এ পণ্য এতো এতো মূল্যে ক্রয় করেছিলাম, আর ক্রেতা তাকে সত্যবদী মনে করে, কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার তার উল্টো। যে ব্যক্তি ইমামের (রাষ্ট্রপ্রধান) হাতে কেবল পার্থিব স্বার্থে বাই’আত গ্রহণ করে, যদি ইমাম তা কিছু পার্থিব সুযোগ দেয়, তাহলে সে তার বাই’আতের প্রতিজ্ঞান পূরণ করে, আর যদি তা থেকে কিছু না দেয় তাহলে আর প্রতিজ্ঞা পূরণ করে না। (ই.ফা. ১৯৮; ই.সে. ২০৫)
[৪৬] ‘আসরের সালাতে ফেরেশতা উপস্থিত হয়, সেটা অত্যন্ত পবিত্রতম সময়, আর মিথ্যা কসম চরম অপরাধ (নাবাবী)
১৯৮
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَمْرٍو الأَشْعَثِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْثَرٌ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّ فِي حَدِيثِ جَرِيرٍ ‏ “‏ وَرَجُلٌ سَاوَمَ رَجُلاً بِسِلْعَةٍ ‏”‏ ‏.‏

যুহায়র ইবনু হার্‌ব এবং সা’ঈদ ইবনু ‘আম্‌র আল আশ’আসী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে রাবী জারীর বর্ণিত হাদীসে যে ব্যক্তি তার পণ্যের ব্যাপারে অন্যের সাথে দাম দরাদরি করে’ কথাটির উল্লেখ আছে। (ই.ফা. ১৯৯; ই.সে. ২০৬)
১৯৯
وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، – قَالَ أُرَاهُ مَرْفُوعًا – قَالَ ‏ “‏ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ رَجُلٌ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ بَعْدَ صَلاَةِ الْعَصْرِ عَلَى مَالِ مُسْلِمٍ فَاقْتَطَعَهُ ‏”‏ ‏.‏ وَبَاقِي حَدِيثِهِ نَحْوُ حَدِيثِ الأَعْمَشِ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে যতদূর সম্ভব মারফূ’ সানাদে (অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে) থেকে বর্ণিতঃ

তিন ব্যক্তির সাথে আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন না, তাদের প্রতি রহমাতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। (তারা হলো) যে ব্যক্তি ‘আসরের সলাতের পর কোন মুসলিমের মালে উপর শপথ করে তা আত্মসাৎ করে। হাদীসের বাকী অংশ আ’মাশের হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ২০০; ই.সে. ২০৭)

৪৭. অধ্যায়ঃ
আত্মহত্যা করা মহাপাপ, যে ব্যক্তি যে বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করবে জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে এবং মুসলিম ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

২০০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنَ قَتَلَ نَفْسَهُ بِحَدِيدَةٍ فَحَدِيدَتُهُ فِي يَدِهِ يَتَوَجَّأُ بِهَا فِي بَطْنِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا وَمَنْ شَرِبَ سَمًّا فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَهُوَ يَتَحَسَّاهُ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا وَمَنْ تَرَدَّى مِنْ جَبَلٍ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَهُوَ يَتَرَدَّى فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করবে জাহান্নামের মধ্যে সে অস্ত্র দ্বারা সে নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে, এভাবে তথায় সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যক্তি বিষপানে আত্মহত্যা করবে সে জাহান্নামে আগুনের মধ্যে অবস্থান করে উক্ত বিষপান করতে থাকবে, এভাবে তথায় সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যক্তি নিজে পাহাড় থেকে পড়ে আত্মহত্যা করবে, সে ব্যক্তি সর্বদা পাহাড় থেকে নীচে গড়িয়ে জাহান্নামের আগুনে পড়তে থাকবে, এভাবে সে ব্যক্তি তথায় চিরকাল অবস্থান করবে। (ই.ফা. ২০১; ই.সে. ২০৮)

২০১
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، ح وَحَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عَمْرٍو الأَشْعَثِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْثَرٌ، ح وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، – يَعْنِي ابْنَ الْحَارِثِ – حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، كُلُّهُمْ بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.‏ وَفِي رِوَايَةِ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ ذَكْوَانَ ‏.‏

যুহায়র ইবনু হার্‌ব, সা’ঈদ ইবনু ‘আম্‌র আল আশ’আসী এবং ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু হাবীব আল হারিসী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁরা সকলে উপরোল্লিখিত সানাদে অবিকল হাদীস বর্ণনা করেছেন। শু’বার বর্ণনায় সুলাইমানের সূত্রে বর্ণিত আছে, “আমি যাক্‌ওয়ানকে বলতে শুনেছি”। (ই.ফা. ২০২; ই.সে. ২০৯)

২০২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ سَلاَّمِ بْنِ أَبِي سَلاَّمٍ الدِّمَشْقِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، أَنَّ أَبَا قِلاَبَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ ثَابِتَ بْنَ الضَّحَّاكِ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، بَايَعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَحْتَ الشَّجَرَةِ وَأَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ بِمِلَّةٍ غَيْرِ الإِسْلاَمِ كَاذِبًا فَهُوَ كَمَا قَالَ وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِشَىْءٍ عُذِّبَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَيْسَ عَلَى رَجُلٍ نَذْرٌ فِي شَىْءٍ لاَ يَمْلِكُهُ ‏”‏ ‏.‏

সাবিত ইবনু যাহ্‌হাক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি (হুদাইবিয়াহ্‌ প্রান্তরে) গাছের নীচে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাতে বাই’আত করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের উপর মিথ্যা কসম করে, সে সে দলেরই। আর যে ব্যক্তি কোন বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করবে, কিয়ামাত দিবসে উক্ত বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে। যে ব্যক্তি এমন বস্তুর মানৎ করে যার মালিক সে নয়, এরূপ মানৎ কার্যকরী নয়। (ই.ফা. ২০৩; ই.সে. ২১০)
২০৩
حَدَّثَنِي أَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ، حَدَّثَنَا مُعَاذٌ، – وَهُوَ ابْنُ هِشَامٍ – قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو قِلاَبَةَ، عَنْ ثَابِتِ بْنِ الضَّحَّاكِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لَيْسَ عَلَى رَجُلٍ نَذْرٌ فِيمَا لاَ يَمْلِكُ وَلَعْنُ الْمُؤْمِنِ كَقَتْلِهِ وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِشَىْءٍ فِي الدُّنْيَا عُذِّبَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَنِ ادَّعَى دَعْوَى كَاذِبَةً لِيَتَكَثَّرَ بِهَا لَمْ يَزِدْهُ اللَّهُ إِلاَّ قِلَّةً وَمَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينِ صَبْرٍ فَاجِرَةٍ ‏”‏ ‏.‏

সাবিত ইবনু যাহ্‌হাক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সে বস্তুর মানৎ কার্যকরী নয়, যার মালিক সে নয়। মু’মিনকে অভিশাপ করা তাকে হত্যা করার সমান। যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করবে কিয়ামাত দিবসে উক্ত বস্তু দ্বারা তাকে শাস্তি দেয়া হবে। যে ব্যক্তি সম্পদ বৃদ্ধির জন্য মিথ্যা দাবী করে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য স্বল্পতাই বৃদ্ধি করবেন। আর যে ব্যক্তি বিচারকের সামনে দৃঢ়তার সাথে মিথ্যা শপথ করবে (তাঁর অবস্থাও মিথ্যা দাবীদারের অনুরূপ হবে)। (ই.ফা. ২০৪; ই.সে. ২১১)
২০৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَعَبْدُ الْوَارِثِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ، كُلُّهُمْ عَنْ عَبْدِ الصَّمَدِ بْنِ عَبْدِ الْوَارِثِ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ ثَابِتِ بْنِ الضَّحَّاكِ الأَنْصَارِيِّ، ح

وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، عَنِ الثَّوْرِيِّ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ ثَابِتِ بْنِ الضَّحَّاكِ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَنْ حَلَفَ بِمِلَّةٍ سِوَى الإِسْلاَمِ كَاذِبًا مُتَعَمِّدًا فَهُوَ كَمَا قَالَ وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِشَىْءٍ عَذَّبَهُ اللَّهُ بِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ ‏”‏ ‏.‏ هَذَا حَدِيثُ سُفْيَانَ ‏.‏ وَأَمَّا شُعْبَةُ فَحَدِيثُهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ مَنْ حَلَفَ بِمِلَّةٍ سِوَى الإِسْلاَمِ كَاذِبًا فَهُوَ كَمَا قَالَ وَمَنْ ذَبَحَ نَفْسَهُ بِشَىْءٍ ذُبِحَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”

সাবিত ইবনু যাহ্‌হাক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মের নামে মিথ্যা শপথ করবে সে যেরূপ বলেছে সেরূপ হবে। আর যে ব্যক্তি কোন বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করবে তাকে আল্লাহ তা’আলা জাহান্নামে সে বস্তু দ্বারা শাস্তি দিবেন। এ হলো রাবী সুফ্‌ইয়ানের বর্ণনা। আর রাবী শু’বার বর্ণনা হলো, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মের নামে মিথ্যা শপথ করবে সে যেরূপ বলেছে সেরূপই হবে। যে ব্যক্তি কোন বস্তু দ্বারা নিজেকে যাবাহ করবে, কিয়ামাত দিবসে উক্ত জিনিস দ্বারা তাকে যাবাহ করা হবে। (ই.ফা. ২০৫; ই.সে. ২১২)

২০৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، جَمِيعًا عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ، – قَالَ ابْنُ رَافِعٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، – أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنِ ابْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ شَهِدْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حُنَيْنًا فَقَالَ لِرَجُلٍ مِمَّنْ يُدْعَى بِالإِسْلاَمِ ‏”‏ هَذَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ ‏”‏ فَلَمَّا حَضَرْنَا الْقِتَالَ قَاتَلَ الرَّجُلُ قِتَالاً شَدِيدًا فَأَصَابَتْهُ جِرَاحَةٌ فَقِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ الرَّجُلُ الَّذِي قُلْتَ لَهُ آنِفًا ‏”‏ إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ ‏”‏ فَإِنَّهُ قَاتَلَ الْيَوْمَ قِتَالاً شَدِيدًا وَقَدْ مَاتَ ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ إِلَى النَّارِ ‏”‏ فَكَادَ بَعْضُ الْمُسْلِمِينَ أَنْ يَرْتَابَ فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى ذَلِكَ إِذْ قِيلَ إِنَّهُ لَمْ يَمُتْ وَلَكِنَّ بِهِ جِرَاحًا شَدِيدًا فَلَمَّا كَانَ مِنَ اللَّيْلِ لَمْ يَصْبِرْ عَلَى الْجِرَاحِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَأُخْبِرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِذَلِكَ فَقَالَ ‏”‏ اللَّهُ أَكْبَرُ أَشْهَدُ أَنِّي عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ أَمَرَ بِلاَلاً فَنَادَى فِي النَّاسِ ‏”‏ إِنَّهُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلاَّ نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ وَإِنَّ اللَّهَ يُؤَيِّدُ هَذَا الدِّينَ بِالرَّجُلِ الْفَاجِرِ ‏”‏ ‏.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হুনায়নের যুদ্ধে আমরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে ছিলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে দোযখী বলে চিহ্নিত করলেন, যে আমাদের মাঝে মুসলিম হিসেবে পরিচিত ছিল। যখন আমরা যুদ্ধে লিপ্ত হলাম, ঐ লোকটি ভীষণভাবে যুদ্ধ করলো, সে আহত হয়ে গেলো। এ সময় কেউ এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! কিছুক্ষণ আগে আপনি যার সম্পর্কে বলেছিলেন যে, সে জাহান্নামী আজ সে ভীষণভাবে জিহাদ করে মারা গেছে। এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে জাহান্নামে চলে গেছে। কিন্তু এতে কোন কোন মুসলিম সন্দেহে পতিত হলো। ইত্যবসরে কেউ এসে বলল, লোকটি এখনও মরেনি, তবে সে মারাত্মকভাবে আহত। পরে যখন রাত হলো, সে জখমের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এ সংবাদ জানানো হলো। তিনি বললেন, আল্লাহু আকবার, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি নিশ্চিত আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল। অতঃপর তিনি বিলাল (রাঃ)-কে নির্দেশ দিলেন তখন তিনি লোকদের মাঝে ঘোষণা করলেন, মুসলিম ব্যতীত কোন ব্যক্তিই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। অবশ্য আল্লাহ তা’আলা পাপী ব্যক্তির দ্বারাও ও দ্বীনের সাহায্য ও শক্তি প্রদান করবেন। (ই.ফা. ২০৬; ই.সে. ২১৩)

২০৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقَارِيُّ – حَىٌّ مِنَ الْعَرَبِ – عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْتَقَى هُوَ وَالْمُشْرِكُونَ فَاقْتَتَلُوا ‏.‏ فَلَمَّا مَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَسْكَرِهِ وَمَالَ الآخَرُونَ إِلَى عَسْكَرِهِمْ وَفِي أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ لاَ يَدَعُ لَهُمْ شَاذَّةً إِلاَّ اتَّبَعَهَا يَضْرِبُهَا بِسَيْفِهِ فَقَالُوا مَا أَجْزَأَ مِنَّا الْيَوْمَ أَحَدٌ كَمَا أَجْزَأَ فُلاَنٌ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَمَا إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ ‏”‏ ‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ أَنَا صَاحِبُهُ أَبَدًا ‏.‏ قَالَ فَخَرَجَ مَعَهُ كُلَّمَا وَقَفَ وَقَفَ مَعَهُ وَإِذَا أَسْرَعَ أَسْرَعَ مَعَهُ – قَالَ – فَجُرِحَ الرَّجُلُ جُرْحًا شَدِيدًا فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَوَضَعَ نَصْلَ سَيْفِهِ بِالأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَى سَيْفِهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَخَرَجَ الرَّجُلُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ وَمَا ذَاكَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ الرَّجُلُ الَّذِي ذَكَرْتَ آنِفًا أَنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَأَعْظَمَ النَّاسُ ذَلِكَ فَقُلْتُ أَنَا لَكُمْ بِهِ فَخَرَجْتُ فِي طَلَبِهِ حَتَّى جُرِحَ جُرْحًا شَدِيدًا فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَوَضَعَ نَصْلَ سَيْفِهِ بِالأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَيْهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ ذَلِكَ ‏”‏ إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ النَّارِ فِيمَا يَبْدُو لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏”‏ ‏.‏

সাহ্‌ল ইবনু সা’দ আস্‌ সা’ইদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সেনাবাহিনীর দিকে অগ্রসর হলে অপরপক্ষও তাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলিত হলো। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গীদের মধ্যে সে সময় এমন এক ব্যক্তি ছিল যে, সেদিন বীরত্বের সাথে লড়েছিল। কোন কাফিরকে দেখামাত্র সে তার পিছনে লেগে যেতো এবং তরবারি দ্বারা খতম করে দিত। লোকেরা তার বীরত্ব দেখে বলাবলি করছিল যে, অমুক ব্যক্তি আজ যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে আমাদের কেউ তা পারেনি। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মনে রেখো। সে ব্যক্তি জাহান্নামী। উপস্থিত লোকদের একজন বলল, আমি সর্বক্ষণ তার সাথে থাকবো। তারপর সে ব্যক্তি তার পিছনে থাকলো। যেখানে সে থামত সেও তথায় থেমে যেতো। তখন সে দ্রুতবেগে কোথাও যেতো সেও তার সাথে দ্রুতবেগে তথায় গমন করতো। শেষ পর্যন্ত সে ব্যক্তি মারাত্মকভাবে জখম হলো। তারপর ক্ষতের জ্বালার তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে ত্বরায় মৃত্যু কামনা করলো। সে তার তরবারি জমিনে রেখে এর অগ্রভাগ তার উভয় স্তনের মাঝামাঝি ঠেকিয়ে তার উপর ঝুঁকে পড়লো এবং নিজেকে হত্যা করলো। তাকে অনুসরণকারী লোকটি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গেলো এবং সাক্ষ্য প্রদান করলো, নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রসূল। তিনি বলেন, ব্যাপার কি? সে বলল, আপনি একটু আগে যে ব্যক্তিকে জাহান্নামী বলেছিলেন এবং লোকেরা এতে আশ্চর্যান্বিত হয়েছিল; আমি বলেছিলাম, আমি তার সাথে সাথে থেকে তোমাদেরকে খবর দিব। আমি অপেক্ষায় থাকলাম। অবশেষে সে মারাত্মকভাবে আহত হলো এবং ত্বরায় মৃত্যুর জন্য নিজের তরবারি জমিনে রেখে এর অগ্রভাগ তার উভয় স্তনের মাঝামাঝি ঠেকিয়ে দিল। তারপর এর উপর ঝুঁকে পড়লো এবং নিজেকে হত্যা করলো। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, লোকের দৃষ্টিতে কোন ব্যক্তি জান্নাতের কাজ করছে অথচ সে জাহান্নামী হয় আবার লোকের দৃষ্টিতে কোন ব্যক্তি জাহান্নামের কাজ করছে অথচ সে জান্নাতবাসী। (ই.ফা. ২০৭; ই.সে. ২১৪)

২০৭
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا الزُّبَيْرِيُّ، – وَهُوَ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ – حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، قَالَ سَمِعْتُ الْحَسَنَ، يَقُولُ ‏ “‏ إِنَّ رَجُلاً مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ خَرَجَتْ بِهِ قَرْحَةٌ فَلَمَّا آذَتْهُ انْتَزَعَ سَهْمًا مِنْ كِنَانَتِهِ فَنَكَأَهَا فَلَمْ يَرْقَإِ الدَّمُ حَتَّى مَاتَ ‏.‏ قَالَ رَبُّكُمْ قَدْ حَرَّمْتُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ مَدَّ يَدَهُ إِلَى الْمَسْجِدِ فَقَالَ إِي وَاللَّهِ لَقَدْ حَدَّثَنِي بِهَذَا الْحَدِيثِ جُنْدَبٌ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي هَذَا الْمَسْجِدِ ‏.

শাইবান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি হাসান (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, পূর্বের যুগে এক ব্যক্তির ফোঁড়া হয়েছিল, ফোঁড়ার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তার তূণ তেকে একটি তীর বের করলো। আর তা দিয়ে আঘাত করে করে ফোঁড়াটি চিরে ফেলল। তখন তা থেকে সজোরে রক্তক্ষরণ শুরু হলো, অবশেষে সে মারা গেল। তোমাদের প্রতিপালক বলেন, আমি তার উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছি। তারপর হাসান আপন হাত মাসজিদের দিকে প্রসারিত করে বললেন, আল্লাহর কসম! জুনদাব (ইবনু ‘আবদুল্লাহ বাজালী) এ মাসজিদেই রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ হাদীসটি আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ২০৮; ই.সে. ২১৫)

২০৮
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ الْحَسَنَ، يَقُولُ حَدَّثَنَا جُنْدَبُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْبَجَلِيُّ، فِي هَذَا الْمَسْجِدِ فَمَا نَسِينَا وَمَا نَخْشَى أَنْ يَكُونَ جُنْدَبٌ كَذَبَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ خَرَجَ بِرَجُلٍ فِيمَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ خُرَاجٌ ‏”‏ ‏.‏ فَذَكَرَ نَحْوَهُ ‏.

হাসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

জুনদাব ইবনু ‘আবদুল্লাহ আল বাজালী এ মাসজিদে বসেই আমাদেরকে নাসীহাত করেছেন। তারপর আমরা তা ভুলে যাইনি। আর আমরা আশঙ্কা করি না যে, জুনদাব রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর প্রতি মিথ্যারোপ করেছেন। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের মধ্যে এক ব্যক্তির ফোঁড়া হয়েছিল ….. তার পরের অংশ উপরের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ২০৯; ই.সে. ২১৬)

৪৮. অধ্যায়ঃ
গনীমাতের মাল আত্মসাৎ করা হারাম, ঈমানদার ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

২০৯
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ الْقَاسِمِ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنِي سِمَاكٌ الْحَنَفِيُّ أَبُو زُمَيْلٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ خَيْبَرَ أَقْبَلَ نَفَرٌ مِنْ صَحَابَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا فُلاَنٌ شَهِيدٌ فُلاَنٌ شَهِيدٌ حَتَّى مَرُّوا عَلَى رَجُلٍ فَقَالُوا فُلاَنٌ شَهِيدٌ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ كَلاَّ إِنِّي رَأَيْتُهُ فِي النَّارِ فِي بُرْدَةٍ غَلَّهَا أَوْ عَبَاءَةٍ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ يَا ابْنَ الْخَطَّابِ اذْهَبْ فَنَادِ فِي النَّاسِ إِنَّهُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلاَّ الْمُؤْمِنُونَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَخَرَجْتُ فَنَادَيْتُ ‏”‏ أَلاَ إِنَّهُ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلاَّ الْمُؤْمِنُونَ ‏”‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেন, খাইবারে অমুক অমুক শাহীদ হয়েছেন। অবশেষে এক ব্যক্তি প্রসঙ্গে তাঁরা বললেন যে, সেও শাহীদ হয়েছে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কখনই না। গনীমাতের মাল থেকে চাদর আত্মসাৎ করার কারণে আমি তাকে জাহান্নামে দেখেছি। তারপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে খাত্তাবের পুত্র! যাও লোকেদের মাঝে ঘোষণা করে দাও যে, ‘জান্নাতে কেবলমাত্র প্রকৃত মু’মিন ব্যক্তিরাই প্রবেশ করবে’। ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেন, তারপর আমি বের হলাম এবং ঘোষণা করে দিলাম, “সাবধান! শুধুমাত্র প্রকৃত মু’মিনরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (ই.ফা. ২১০; ই.সে. ২১৭)

২১০
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ الدُّؤَلِيِّ، عَنْ سَالِمٍ أَبِي الْغَيْثِ، مَوْلَى ابْنِ مُطِيعٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، – وَهَذَا حَدِيثُهُ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، – يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ – عَنْ ثَوْرٍ، عَنْ أَبِي الْغَيْثِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَيْبَرَ فَفَتَحَ اللَّهُ عَلَيْنَا فَلَمْ نَغْنَمْ ذَهَبًا وَلاَ وَرِقًا غَنِمْنَا الْمَتَاعَ وَالطَّعَامَ وَالثِّيَابَ ثُمَّ انْطَلَقْنَا إِلَى الْوَادِي وَمَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَبْدٌ لَهُ وَهَبَهُ لَهُ رَجُلٌ مِنْ جُذَامٍ يُدْعَى رِفَاعَةَ بْنَ زَيْدٍ مِنْ بَنِي الضُّبَيْبِ فَلَمَّا نَزَلْنَا الْوَادِيَ قَامَ عَبْدُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَحُلُّ رَحْلَهُ فَرُمِيَ بِسَهْمٍ فَكَانَ فِيهِ حَتْفُهُ فَقُلْنَا هَنِيئًا لَهُ الشَّهَادَةُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ كَلاَّ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنَّ الشَّمْلَةَ لَتَلْتَهِبُ عَلَيْهِ نَارًا أَخَذَهَا مِنَ الْغَنَائِمِ يَوْمَ خَيْبَرَ لَمْ تُصِبْهَا الْمَقَاسِمُ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَفَزِعَ النَّاسُ ‏.‏ فَجَاءَ رَجُلٌ بِشِرَاكٍ أَوْ شِرَاكَيْنِ ‏.‏ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَصَبْتُ يَوْمَ خَيْبَرَ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ شِرَاكٌ مِنْ نَارٍ أَوْ شِرَاكَانِ مِنْ نَارٍ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে খাইবারের অভিযানে বের হলাম। আল্লাহ আমাদেরকে জয়যুক্ত করলেন। গনীমাত হিসেবে আমরা স্বর্ণ বা রৌপ্য লাভ করিনি। বরং যা পেলাম তা ছিল আসবাবপত্র, খাদ্যদ্রব্য, কাপড়-চোপড় ইত্যাদি। অতঃপর আমরা ওখান থেকে এক সমভূমির দিকে রওয়ানা হলাম। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে তাঁর একটি গোলাম ছিল। ‘জুযাম’ গোত্রের জনৈক ব্যক্তি গোলামটি তাঁকে উপহার দিয়েছিল। তাকে রিফা’আহ্‌ ইবনু যায়দ নামে ডাকা হত। সে যুবায়ব গোত্রের লোক ছিল। যখন আমরা সমতল ভূমিতে অবতরণ করলাম, গোলামটি উঠে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ‘হাওদা’ খুলছিল। এমন সময় হঠাৎ একটি তীর এসে তার শরীরে বিদ্ধ হলো। আর তাতেই সে তৎক্ষণাৎ মারা গেলো। এ দেখে আমরা বলে উঠলাম : খুশীর বিষয় তার, মুবারক হোক! সে শাহাদাত লাভ করলো। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কখনো নয়। সে মহান সত্তার কসম যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! বণ্টন করা ছাড়াই খাইবার যুদ্ধের গণীমাত থেকে সে যে চাদর নিয়েছে তা আগুন হয়ে অবশ্যই তাকে দগ্ধ করবে। তাঁর এ কথা শুনে সমস্ত লোক ভীত হয়ে পড়লো। এক ব্যক্তি জুতার একটি কিংবা দু’টি ফিতা নিয়ে এসে বলল হে আল্লাহর রসূল! আমি এটি খাইবারের দিন তুলে নিয়েছিলাম। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই একটি অথবা দু’টি জুতার ফিতা আগুনের ফিতায় রূপান্তরিত হতো। (ই.ফা. ২১১; ই.সে. ২১৮)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]