সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা ঈমান অধ্যায় তৃতীয় ভাগ হাদিস নং ২২১ – ২২৯

৪৯. অধ্যায়ঃ
আত্মহত্যাকারী কাফির হবে না তার প্রমাণ

২১১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، جَمِيعًا عَنْ سُلَيْمَانَ، – قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، – حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ حَجَّاجٍ الصَّوَّافِ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ الطُّفَيْلَ بْنَ عَمْرٍو الدَّوْسِيَّ، أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ لَكَ فِي حِصْنٍ حَصِينٍ وَمَنَعَةٍ – قَالَ حِصْنٌ كَانَ لِدَوْسٍ فِي الْجَاهِلِيَّةِ – فَأَبَى ذَلِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلَّذِي ذَخَرَ اللَّهُ لِلأَنْصَارِ فَلَمَّا هَاجَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْمَدِينَةِ هَاجَرَ إِلَيْهِ الطُّفَيْلُ بْنُ عَمْرٍو وَهَاجَرَ مَعَهُ رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ فَاجْتَوَوُا الْمَدِينَةَ فَمَرِضَ فَجَزِعَ فَأَخَذَ مَشَاقِصَ لَهُ فَقَطَعَ بِهَا بَرَاجِمَهُ فَشَخَبَتْ يَدَاهُ حَتَّى مَاتَ فَرَآهُ الطُّفَيْلُ بْنُ عَمْرٍو فِي مَنَامِهِ فَرَآهُ وَهَيْئَتُهُ حَسَنَةٌ وَرَآهُ مُغَطِّيًا يَدَيْهِ فَقَالَ لَهُ مَا صَنَعَ بِكَ رَبُّكَ فَقَالَ غَفَرَ لِي بِهِجْرَتِي إِلَى نَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا لِي أَرَاكَ مُغَطِّيًا يَدَيْكَ قَالَ قِيلَ لِي لَنْ نُصْلِحَ مِنْكَ مَا أَفْسَدْتَ ‏.‏ فَقَصَّهَا الطُّفَيْلُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ اللَّهُمَّ وَلِيَدَيْهِ فَاغْفِرْ ‏”‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তুফায়ল ইবনু ‘আম্‌র দাওসী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে উপস্থিত হয়ে প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি কি চান যে, আপনার জন্য একটি মাযবূত দুর্গ ও সেনাবাহিনী হোক? রাবী বলেন, দাওস গোত্রে জাহিলী যুগের একটি দূর্গ ছিল (তিনি এদিকে ইঙ্গিত করেন)। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা কবূল করলেন না। কারণ, আল্লাহ তা’আলা আনসারদের জন্য এ সৌভাগ্য নির্ধারণ করে রেখেছিলেন। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় হিজরত করলেন, তখন তুফায়ল ইবনু ‘আমর (রাঃ) এবং তাঁর গোত্রের একজন লোকও তাঁর সঙ্গে মাদীনায় হিজরত করেন। কিন্তু মাদীনার আবহাওয়া তাদের অনুকূল হয়নি। তুফায়ল ইবনু ‘আমর (রাঃ)-এর সাথে আগত লোকটি অসুস্থ হয়ে পড়লো। সে রোগ যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তীর নিয়ে তার হাতের আঙ্গুলগুলো কেটে ফেললো। এতে উভয় হাত থেকে রক্ত নির্গত হতে থাকে। অবশেষে সে মারা যায়। তুফায়ল ইবনু ‘আম্‌র দাওসী (রাঃ) স্বপ্নে তাকে ভাল অবস্থায় দেখতে পেলেন, কিন্তু তিনি তার উভয় হাত আবৃত দেখে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার রব তোমার সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছে? সে বলল, আল্লাহ তা’আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে হিজরত করার কারণে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তুফায়ল (রাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি হয়েছে যে, আমি তোমার হাত দু’টো আবৃত দেখছি? সে বলল, আমাকে বলা হয়েছে যে, তুমি স্বেচ্ছায় যে অংশ নষ্ট করেছো তা আমরা কখনো ঠিক করব না। তুফায়ল (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করলেন। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’আ করলেন : ইয়া আল্লাহ! আপনি তার হাত দু’টোকেও ক্ষমা করে দিন। (ই.ফা. ২১২; ই.সে. ২১৯)
৫০. অধ্যায়ঃ
কিয়ামাতের পূর্বে এক বাতাস প্রবাহিত হবে, সামান্য ঈমানও যার অন্তরে আছে তার রূহ্‌ সে বাতাস কবয করে নিবে।

২১২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، وَأَبُو عَلْقَمَةَ الْفَرْوِيُّ قَالاَ حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ سُلَيْمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَلْمَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِنَّ اللَّهَ يَبْعَثُ رِيحًا مِنَ الْيَمَنِ أَلْيَنَ مِنَ الْحَرِيرِ فَلاَ تَدَعُ أَحَدًا فِي قَلْبِهِ – قَالَ أَبُو عَلْقَمَةَ مِثْقَالُ حَبَّةٍ وَقَالَ عَبْدُ الْعَزِيزِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ – مِنْ إِيمَانٍ إِلاَّ قَبَضَتْهُ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা কিয়ামাতের আগে ইয়ামান থেকে এক বাতাস প্রবাহিত করবেন যা হবে রেশম অপেক্ষাও নরম। যার অন্তরে দানা পরিমাণ ঈমান থাকবে তার রূহ্‌ ঐ বাতাস কবয করে নিয়ে যাবে। রাবী আবূ ‘আলকামাহ্‌ (আরবী) বর্ণনায় আছে। আর রাবী ‘আবদুল আযীয (আরবী) উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ২১৩; ই.সে. ২২০)

৫১. অধ্যায়ঃ
ফিত্‌নাহ্‌ প্রকাশের পূর্বেই নেক ‘আমালের প্রতি অগ্রসর হওয়ার জন্য উৎসাহিত করা

২১৩
حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ جَمِيعًا عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، – قَالَ ابْنُ أَيُّوبَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – قَالَ أَخْبَرَنِي الْعَلاَءُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ بَادِرُوا بِالأَعْمَالِ فِتَنًا كَقِطَعِ اللَّيْلِ الْمُظْلِمِ يُصْبِحُ الرَّجُلُ مُؤْمِنًا وَيُمْسِي كَافِرًا أَوْ يُمْسِي مُؤْمِنًا وَيُصْبِحُ كَافِرًا يَبِيعُ دِينَهُ بِعَرَضٍ مِنَ الدُّنْيَا ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আঁধার রাতের মতো ফিত্‌নাহ্‌ আসার পূর্বেই তোমরা সৎ ‘আমালের দিকে ধাবিত হও। সে সময় সকালে একজন মু’মিন হলে বিকালে কাফির হয়ে যাবে। বিকেলে মু’মিন হলে সকালে কাফির হয়ে যাবে। দুনিয়ার সামগ্রীর বিনিময়ে সে তার দ্বীন বিক্রি করে বসবে। (ই.ফা. ২১৪; ই.সে. ২২১)
৫২. অধ্যায়ঃ
‘আমাল বিনষ্ট হওয়া সম্পর্কে মু’মিনের আশঙ্কা

২১৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ‏{‏ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ‏}‏ إِلَى آخِرِ الآيَةِ جَلَسَ ثَابِتُ بْنُ قَيْسٍ فِي بَيْتِهِ وَقَالَ أَنَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ ‏.‏ وَاحْتَبَسَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَعْدَ بْنَ مُعَاذٍ فَقَالَ ‏”‏ يَا أَبَا عَمْرٍو مَا شَأْنُ ثَابِتٍ أَشْتَكَى ‏”‏ ‏.‏ قَالَ سَعْدٌ إِنَّهُ لَجَارِي وَمَا عَلِمْتُ لَهُ بِشَكْوَى ‏.‏ قَالَ فَأَتَاهُ سَعْدٌ فَذَكَرَ لَهُ قَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ثَابِتٌ أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ وَلَقَدْ عَلِمْتُمْ أَنِّي مِنْ أَرْفَعِكُمْ صَوْتًا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ ‏.‏ فَذَكَرَ ذَلِكَ سَعْدٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ بَلْ هُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏”‏ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল হলো, “হে মু’মিনগণ! তোমরা নাবীর কণ্ঠের উপর নিজেদের কণ্ঠ উঁচু করবে না এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চৈঃস্বরে কথা বল তাঁর সাথে সেরূপ উচ্চৈঃস্বরে কথা বলবে না; এতে তোমাদের ‘আমাল বিনষ্ট হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে অথচ তোমরা টেরও পাবে না”- (সূরাহ আল হুজুরাত ৪৯ : ২)। তখন সাবিত (রাঃ) নিজের ঘরে বসে গেলেন এবং বলতে লাগলেন, আমি একজন জাহান্নামী। এরপর থেকে তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন। একদিন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহাবা সা’দ ইবনু মু’আযকে সাবিত (রাঃ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে বললেন, হে আবূ ‘আম্‌র! সাবিতের কি হলো? সা’দ (রাঃ) বললেন, সে আমার প্রতিবেশী, তার কোন অসুখ হয়েছে বলে তো জানি না। আনাস (রাঃ) বলেন, পরে সা’দ (রাঃ) সাবিতের কাছে গেলেন এবং তাঁর সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বক্তব্য উল্লেখ করলেন। সাবিত (রাঃ) বলেন, এ আয়াত নাযিল হয়েছে। আর তোমরা জান রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপর আমার কষ্ঠস্বরই সবচেয়ে উঁচু হয়ে যায়। সুতরাং আমি তো জাহান্নামী। সা’দ (রাঃ) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে সাবিতের কথা বললেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেন, না, বরং সে তো জান্নাতী। (ই.ফা. ২১৫; ই.সে. ২২২)
২১৫
وَحَدَّثَنَا قَطَنُ بْنُ نُسَيْرٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ ثَابِتُ بْنُ قَيْسِ بْنِ شَمَّاسٍ خَطِيبَ الأَنْصَارِ فَلَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ‏.‏ بِنَحْوِ حَدِيثِ حَمَّادٍ ‏.‏ وَلَيْسَ فِي حَدِيثِهِ ذِكْرُ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শাম্মাস ছিলেন আনসারদের খতীব। যখন এ আয়াত নাযিল হলো : “তোমরা নাবীর কণ্ঠের উপর নিজেদের কণ্ঠ উঁচু করো না”। বাকী অংশ হাম্মাদ বর্ণিত উল্লেখিত রিওয়ায়াতের অনুরূপ। তবে এ রিওয়ায়াতে সা’দ ইবনু মু’আয এর উল্লেখ নেই।

আহমাদ ইবনু সা’ঈদ ইবনু সাখ্‌র আদ্‌ দারিমী (রহঃ) ….. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যখন এ আয়াত নাযিল হলো : অর্থাৎ “তোমরা নাবীর কণ্ঠের উপর নিজেদের কণ্ঠ উঁচু করো না”। এ বর্ণনায় সা’দ ইবনু মু’আয-এর উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ২১৬; ই.সে. ২২৩-২২৪)
২১৬
وَحَدَّثَنَا هُرَيْمُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الأَسَدِيُّ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي يَذْكُرُ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ‏.‏ وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرْ سَعْدَ بْنَ مُعَاذٍ وَزَادَ فَكُنَّا نَرَاهُ يَمْشِي بَيْنَ أَظْهُرِنَا رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যখন এ আয়াত নাযিল হলো…। এতেও সা’দ ইবনু মু’আয-এর উল্লেখ নেই। তবে শেষে আছে, আমরা তাঁকে ভাবতাম, একজন জান্নাতী লোক আমাদের মাঝে বিচরণ করছেন। (ই.ফা. ২১৭; ই.সে. ২২৫)
৫৩. অধ্যায়ঃ
জাহিলী যুগের ‘আমালের ব্যাপারেও কি পাকড়াও হবে?

২১৭
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ أُنَاسٌ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنُؤَاخَذُ بِمَا عَمِلْنَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ قَالَ ‏ “‏ أَمَّا مَنْ أَحْسَنَ مِنْكُمْ فِي الإِسْلاَمِ فَلاَ يُؤَاخَذُ بِهَا وَمَنْ أَسَاءَ أُخِذَ بِعَمَلِهِ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَالإِسْلاَمِ ‏”‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

কিছু সংখ্যক লোক রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বললেন, জাহিলী যুগে আমরা যা করেছি এর জন্যও কি আমাদের পাকড়াও করা হবে? তিনি বললেন, ইসলাম গ্রহণের পর যে ব্যক্তি ভাল কাজ করবে তাকে জাহিলী যুগের ‘আমালের জন্য পাকড়াও করা হবে না। কিন্তু যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণের পরও মন্দ করবে তাকে জাহিলী ও ইসলাম উভয় যুগের (মন্দ) কাজের জন্য পাকড়াও করা হবে। (ই.ফা. ২১৮; ই.সে. ২২৬)
২১৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي وَوَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَنُؤَاخَذُ بِمَا عَمِلْنَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ قَالَ ‏ “‏ مَنْ أَحْسَنَ فِي الإِسْلاَمِ لَمْ يُؤَاخَذْ بِمَا عَمِلَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ ‏.‏ وَمَنْ أَسَاءَ فِي الإِسْلاَمِ أُخِذَ بِالأَوَّلِ وَالآخِرِ ‏”‏ ‏.‏

মুহাম্মাদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও আবূ বাক্‌র ইবনু আবূ শাইবাহ (রহঃ) ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট প্রশ্ন করলাম- হে আল্লাহর রসূল! আমরা জাহিলী যুগে যা করেছি এর জন্যও কি আমাদের পাকড়াও করা হবে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করে ভাল কাজ করবে জাহিলী যুগে সে কি করেছে তার জন্য পাকড়াও করা হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলাম গহণের পর মন্দ কাজ করে তাকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পাকড়াও করা হবে। (ই.ফা. ২১৯; ই.সে. ২২৭)
২১৯
حَدَّثَنَا مِنْجَابُ بْنُ الْحَارِثِ التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.‏

আ’মাশ (রহঃ) থেকে উক্ত সানাদে থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ বর্ণিত আছে। (ই.ফা. ২২০; ই.সে. ২২৮)
৫৪. অধ্যায়ঃ
ইসলাম গ্রহণ এবং হিজরত ও হাজ্জ পালনের দ্বারা পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়

২২০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، وَأَبُو مَعْنٍ الرَّقَاشِيُّ وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ كُلُّهُمْ عَنْ أَبِي عَاصِمٍ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ، – يَعْنِي أَبَا عَاصِمٍ – قَالَ أَخْبَرَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، قَالَ حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ، عَنِ ابْنِ شَمَاسَةَ الْمَهْرِيِّ، قَالَ حَضَرْنَا عَمْرَو بْنَ الْعَاصِ وَهُوَ فِي سِيَاقَةِ الْمَوْتِ ‏.‏ فَبَكَى طَوِيلاً وَحَوَّلَ وَجْهَهُ إِلَى الْجِدَارِ فَجَعَلَ ابْنُهُ يَقُولُ يَا أَبَتَاهُ أَمَا بَشَّرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِكَذَا أَمَا بَشَّرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِكَذَا قَالَ فَأَقْبَلَ بِوَجْهِهِ ‏.‏ فَقَالَ إِنَّ أَفْضَلَ مَا نُعِدُّ شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ إِنِّي قَدْ كُنْتُ عَلَى أَطْبَاقٍ ثَلاَثٍ لَقَدْ رَأَيْتُنِي وَمَا أَحَدٌ أَشَدَّ بُغْضًا لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنِّي وَلاَ أَحَبَّ إِلَىَّ أَنْ أَكُونَ قَدِ اسْتَمْكَنْتُ مِنْهُ فَقَتَلْتُهُ فَلَوْ مُتُّ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ لَكُنْتُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَلَمَّا جَعَلَ اللَّهُ الإِسْلاَمَ فِي قَلْبِي أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ ابْسُطْ يَمِينَكَ فَلأُبَايِعْكَ ‏.‏ فَبَسَطَ يَمِينَهُ – قَالَ – فَقَبَضْتُ يَدِي ‏.‏ قَالَ ‏”‏ مَا لَكَ يَا عَمْرُو ‏”‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ أَرَدْتُ أَنْ أَشْتَرِطَ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ تَشْتَرِطُ بِمَاذَا ‏”‏ ‏.‏ قُلْتُ أَنْ يُغْفَرَ لِي ‏.‏ قَالَ ‏”‏ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ الإِسْلاَمَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ وَأَنَّ الْهِجْرَةَ تَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهَا وَأَنَّ الْحَجَّ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ ‏”‏ ‏.‏ وَمَا كَانَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَىَّ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ أَجَلَّ فِي عَيْنِي مِنْهُ وَمَا كُنْتُ أُطِيقُ أَنْ أَمْلأَ عَيْنَىَّ مِنْهُ إِجْلاَلاً لَهُ وَلَوْ سُئِلْتُ أَنْ أَصِفَهُ مَا أَطَقْتُ لأَنِّي لَمْ أَكُنْ أَمْلأُ عَيْنَىَّ مِنْهُ وَلَوْ مُتُّ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ لَرَجَوْتُ أَنْ أَكُونَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ثُمَّ وَلِينَا أَشْيَاءَ مَا أَدْرِي مَا حَالِي فِيهَا فَإِذَا أَنَا مُتُّ فَلاَ تَصْحَبْنِي نَائِحَةٌ وَلاَ نَارٌ فَإِذَا دَفَنْتُمُونِي فَشُنُّوا عَلَىَّ التُّرَابَ شَنًّا ثُمَّ أَقِيمُوا حَوْلَ قَبْرِي قَدْرَ مَا تُنْحَرُ جَزُورٌ وَيُقْسَمُ لَحْمُهَا حَتَّى أَسْتَأْنِسَ بِكُمْ وَأَنْظُرَ مَاذَا أُرَاجِعُ بِهِ رُسُلَ رَبِّي ‏.‏

ইবনু শামাসাহ্‌ আল মাহ্‌রী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমরা ‘আমর ইবনু ‘আস (রাঃ)-কে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দেখতে উপস্থিত হলাম। তখন তিনি দেয়ালের দিকে মুখ করে অনেকক্ষণ কাঁদছিলেন। তাঁর পুত্র তাঁকে তাঁর সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদত্ত বিভিন্ন সুসংবাদের উল্লেখ পূর্বক সান্ত্বনা দিচ্ছে যে, আব্বা! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেননি? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেননি? রাবী বলেন, তখন তিনি পুত্রের দিকে মুখ ফিরালেন এবং বললেন, আমার সর্বোৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে “লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুহাম্মাদুর রসূলুল্ল-হ” এ কালিমার সাক্ষ্য দেয়া। আর আমি অতিক্রম করেছি আমার জীবনের তিনটি পর্যায়। এক সময় তো আমি এমন ছিলাম যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর বিরুদ্ধাচরণে আমার চেয়ে কঠোরতর আর কেউই ছিল না। সে সময়ে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কব্জায় পেয়ে হত্যা করা ছিল আমার সবচাইতে প্রিয় ভাবনা। যদি সে অবস্থায় আমার মৃত্যু হত তবে নিশ্চিত আমাকে জাহান্নামে যেতে হত। এরপর আল্লাহ যখন আমার অন্তরে ইসলামের অনুরাগ সৃষ্টি করে দিলেন, তখন আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে অনুরোধ জানালাম যে, আপনার ডান হাত বাড়িয়ে দিন, আমি বাই’আত করতে চাই। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন, তখন আমি আমার হাত টেনে নিলাম। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আমর, কী ব্যাপার? বললাম, পূর্বে আমি শর্ত করে নিতে চাই। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, কী শর্ত করবে? আমি উত্তর করলাম, আল্লাহ যেন আমার সব গুনাহ মাফ করে দেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘আম্‌র! তুমি কি জান না যে, ইসলাম পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়। আর হিজরত পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়? আর হাজ্জ পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়? ‘আমর বলেন, এ পর্যায়ে আমার অন্তরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপেক্ষা বেশি প্রিয় আর কেউ ছিল না। আমার চোখে তিনি অপেক্ষা মহান আর কেউ নেই। অপরিসীম শ্রদ্ধার কারণে আমি তাঁর প্রতি চোখভরে তাকাতেও পারতাম না। আজ যদি আমাকে তাঁর দৈহিক আকৃতির বর্ণনা করতে বলা হয় তবে আমার পক্ষে তা সম্ভব নয়। কারণ চোখ ভরে আমি কখনই তাঁর প্রতি তাকাতে পারিনি। ঐ অবস্থায় যদি আমার মৃত্যু হত তবে অবশ্যই আমি জান্নাতী হওয়ার আশাবাদী থাকতাম। পরবর্তীকালে আমরা নানা বিষয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছি, তাই জানি না, এতে আমার অবস্থান কোথায়? সুতরাং আমি যখন মারা যাব, তখন যেন কোন বিলাপকারিণী অথবা আগুন সে জানাযার সাথে না থাকে। আমাকে যখন দাফন করবে তখন আমার উপর আস্তে আস্তে মাটি ফেলবে এবং দাফন সেরে একটি উট যাবাহ করে তার গোশ্‌ত বণ্টন করতে যে সময় লাগে ততক্ষণ আমার ক্ববরের পাশে অবস্থান করবে। যেন তোমাদের উপস্থিতির কারণে আমি আতঙ্ক মুক্ত অবস্থায় থাকি ও চিন্তা করতে পারি যে, আমার প্রতিপালকের দূতের কি জবাব দিব। (ই.ফা. ২২১; ই.সে. ২২৯)
 সরাসরি

২২১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمِ بْنِ مَيْمُونٍ، وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ دِينَارٍ، – وَاللَّفْظُ لإِبْرَاهِيمَ – قَالاَ حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ، – وَهُوَ ابْنُ مُحَمَّدٍ – عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يَعْلَى بْنُ مُسْلِمٍ، أَنَّهُ سَمِعَ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ نَاسًا، مِنْ أَهْلِ الشِّرْكِ قَتَلُوا فَأَكْثَرُوا وَزَنَوْا فَأَكْثَرُوا ثُمَّ أَتَوْا مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا إِنَّ الَّذِي تَقُولُ وَتَدْعُو لَحَسَنٌ وَلَوْ تُخْبِرُنَا أَنَّ لِمَا عَمِلْنَا كَفَّارَةً فَنَزَلَ ‏{‏ وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا‏}‏ وَنَزَلَ ‏{‏ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لاَ تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ‏{‏ ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস থেকে বর্ণিতঃ

মুশরিকদের কিছু লোক যারা ব্যাপকভাবে হত্যা ও ব্যভিচারে লিপ্ত ছিল, তারা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে এসে জিজ্ঞেস করল, আপনি যে দ্বীনের প্রতি মানুষদের আহ্বান জানাচ্ছেন, এতো অনেক উত্তম বিষয়। তবে আমাদের পূর্বকৃত গুনাহসমূহের প্রায়শ্চিত্ত সম্পর্কে আপনি যদি আমাদের নিশ্চিতভাবে কিছু অবহিত করতেন। তখন এ আয়াত নাযিল হয় : “এবং যারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহকে ডাকে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না; যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে”-(সূরাহ আল ফুরকান ২৫ : ৬৮)। আরো নাযিল করেন : “হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ আল্লাহর রহমাত হতে নিরাশ হয়ো না”-(সূরাহ আয্‌ যুমার : ৫৩)। (ই.ফা. ২২২; ই.সে. ২৩০)
৫৫. অধ্যায়ঃ
ইসলাম গ্রহণের পূর্বের কুফ্‌রী জীবনের নেক কাজসমূহের প্রতিদান প্রসঙ্গ

২২২
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، قَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرَأَيْتَ أُمُورًا كُنْتُ أَتَحَنَّثُ بِهَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ هَلْ لِي فِيهَا مِنْ شَىْءٍ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَسْلَمْتَ عَلَى مَا أَسْلَفْتَ مِنْ خَيْرٍ ‏”‏ ‏.‏ وَالتَّحَنُّثُ التَّعَبُّدُ ‏.‏

হাকিম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম যে, জাহিলী যুগে আমি যে সব নেক কাজ করতাম, আমি কি তার কোন প্রতিদান পাব? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তর করলেন : তোমার পূর্বকৃত সৎকর্মের বিনিময়ে তুমি ইসলাম গ্রহণের সৌভাগ্য লাভ করেছ। রাবী বলেন, হাদীসে উক্ত (আরবী) শব্দটির (আরবী) ‘নির্জনে ‘ইবাদত করা’। (ই.ফা. ২২৩; ই.সে. ২৩১)

২২৩
وَحَدَّثَنَا حَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، – قَالَ الْحُلْوَانِيُّ حَدَّثَنَا وَقَالَ عَبْدٌ، حَدَّثَنِي – يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ – حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، قَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَىْ رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ أُمُورًا كُنْتُ أَتَحَنَّثُ بِهَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ مِنْ صَدَقَةٍ أَوْ عَتَاقَةٍ أَوْ صِلَةِ رَحِمٍ أَفِيهَا أَجْرٌ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَسْلَمْتَ عَلَى مَا أَسْلَفْتَ مِنْ خَيْرٍ ‏”‏ ‏.‏

হাকিম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! সদাকাহ্‌, দাসমুক্তি ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে সুসম্পর্ক রাখা ইত্যাদি যে সব নেক কাজ জাহিলী যুগে আমি করতাম তার কি কোন প্রতিদান পাব? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বললেন, তোমার পূর্বকৃত সৎকর্মের বিনিময়ে তুমি ইসলাম গ্রহণের সৌভাগ্য লাভ করেছ। (ই.ফা. ২২৪; ই.সে. ২৩২)  সরাসরি

২২৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَشْيَاءَ كُنْتُ أَفْعَلُهَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ – قَالَ هِشَامٌ يَعْنِي أَتَبَرَّرُ بِهَا – فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَسْلَمْتَ عَلَى مَا أَسْلَفْتَ لَكَ مِنَ الْخَيْرِ ‏”‏ ‏.‏ قُلْتُ فَوَاللَّهِ لاَ أَدَعُ شَيْئًا صَنَعْتُهُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ إِلاَّ فَعَلْتُ فِي الإِسْلاَمِ مِثْلَهُ ‏.‏

হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ! জাহিলী যুগে যে সকল নেক কাজ করতাম আমি কি তার কোন প্রতিদান পাবো? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমার সে সব নেক কাজের বিনিময়ে তুমি ইসলাম গ্রহণের সৌভাগ্য লাভ করেছ। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! জাহিলী যুগে যে সব নেক কাজ আমি করেছি ইসলামী জিন্দেগীতেও আমি তা করে যাব। (ই.ফা. ২২৫; ই.সে. ২৩৩)

২২৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ، أَعْتَقَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ مِائَةَ رَقَبَةٍ وَحَمَلَ عَلَى مِائَةِ بَعِيرٍ ثُمَّ أَعْتَقَ فِي الإِسْلاَمِ مِائَةَ رَقَبَةٍ وَحَمَلَ عَلَى مِائَةِ بَعِيرٍ ثُمَّ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِهِمْ ‏.‏

‘উরওয়াহ্‌ ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) জাহিলী যুগে একশ’ ক্রীতদাসকে মুক্তি দিয়ে দিলেন, মাল বোঝাই একশ’ উট দান করেছিলেন, ইসলাম গহণ করার পরেও তিনি একশ’ ক্রীতদাস আযাদ করেন এবং মালামাল বোঝাই একশ’ উট সদাকাহ্‌ করেন। পরে তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে এসে প্রশ্ন করেন। এরপর বর্ণনাকারী উল্লেখিত হাদীসে অনুরূপ বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ২২৬; ই.সে. ২৩৪)

৫৬. অধ্যায়ঃ
ঈমানে সততা ও নিষ্ঠা

২২৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ وَوَكِيعٌ عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ ‏{‏ الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ‏}‏ شَقَّ ذَلِكَ عَلَى أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالُوا أَيُّنَا لاَ يَظْلِمُ نَفْسَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ لَيْسَ هُوَ كَمَا تَظُنُّونَ إِنَّمَا هُوَ كَمَا قَالَ لُقْمَانُ لاِبْنِهِ ‏{‏ يَا بُنَىَّ لاَ تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ‏{‏

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

(আল্লাহ তা’আলার বাণী) : “যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুল্‌ম দ্বারা কলূষিত করেনি নিরাপত্তা তাদের জন্য, তারাই সৎপথপ্রাপ্ত”-(সূরাহ আল আন’আম ৬ : ৮২)। এ আয়াতটি অবতীর্ণ হলে তা সহাবাদের কাছে খুবই কঠিন মনে হলো। তাঁরা বললেন, আমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে নিজের উপর আদৌ অত্যাচার করেনি? তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা যা মনে করেছ বিষয়টি তা নয়, বরং এর মর্মার্থ হচ্ছে লুক্‌মান তাঁর পুত্রকে সম্বোধন করে যা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন : “হে বৎস! আল্লাহর সাথে কোন শারীক করো না, নিশ্চয়ই শির্‌ক চরম যুল্‌ম”-(সূরাহ লুক্‌মান ৩১ : ১৩)। (ই.ফা. ২২৭; ই.সে. ২৩৫)

২২৭
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عِيسَى، – وَهُوَ ابْنُ يُونُسَ ح وَحَدَّثَنَا مِنْجَابُ بْنُ الْحَارِثِ التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ مُسْهِرٍ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، كُلُّهُمْ عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ قَالَ أَبُو كُرَيْبٍ قَالَ ابْنُ إِدْرِيسَ حَدَّثَنِيهِ أَوَّلاً أَبِي، عَنْ أَبَانِ بْنِ تَغْلِبَ، عَنِ الأَعْمَشِ، ثُمَّ سَمِعْتُهُ مِنْهُ، ‏.‏

আ’মাশ (রহঃ) থেকে উক্ত সানাদে থেকে বর্ণিতঃ

আবূ কুরায়ব (রহঃ) বলেন, ইবনু ইদ্‌রীস (রহঃ) বলেছেন, প্রথমতঃ আমার পিতা আমাকে আবান ইবনু তাগলিব থেকে আ’মাশ-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন, পরবতীকালে আমি নিজেই আ’মাশ থেকে সরাসরি এ হাদীস শুনেছি। (ই.ফা. ২২৮; ই.সে. ২৩৬)  সরাসরি

৫৭. অধ্যায়ঃ
মনের কল্পনা বা খটকা আল্লাহ তা’আলা মাফ করে দেন, মানুষের সামর্থ্যানুযায়ীই আল্লাহ তাকে দায়িত্ব অর্পণ করেন এবং ভাল বা মন্দ কর্মের মনস্থ করার বিধান

২২৮
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ مِنْهَالٍ الضَّرِيرُ، وَأُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامَ الْعَيْشِيُّ، – وَاللَّفْظُ لأُمَيَّةَ – قَالاَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، – وَهُوَ ابْنُ الْقَاسِمِ – عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏{‏ لِلَّهِ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ وَإِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللَّهُ فَيَغْفِرُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيُعَذِّبُ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ‏}‏ قَالَ فَاشْتَدَّ ذَلِكَ عَلَى أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَتَوْا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ بَرَكُوا عَلَى الرُّكَبِ فَقَالُوا أَىْ رَسُولَ اللَّهِ كُلِّفْنَا مِنَ الأَعْمَالِ مَا نُطِيقُ الصَّلاَةُ وَالصِّيَامُ وَالْجِهَادُ وَالصَّدَقَةُ وَقَدْ أُنْزِلَتْ عَلَيْكَ هَذِهِ الآيَةُ وَلاَ نُطِيقُهَا ‏.‏ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَتُرِيدُونَ أَنْ تَقُولُوا كَمَا قَالَ أَهْلُ الْكِتَابَيْنِ مِنْ قَبْلِكُمْ سَمِعْنَا وَعَصَيْنَا بَلْ قُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ ‏.‏ فَلَمَّا اقْتَرَأَهَا الْقَوْمُ ذَلَّتْ بِهَا أَلْسِنَتُهُمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ فِي إِثْرِهَا ‏{‏ آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ‏}‏ فَلَمَّا فَعَلُوا ذَلِكَ نَسَخَهَا اللَّهُ تَعَالَى فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ‏{‏ لاَ يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا‏}‏ قَالَ نَعَمْ ‏{‏ رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا‏}‏ قَالَ نَعَمْ ‏{‏ رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ‏}‏ قَالَ نَعَمْ ‏{‏ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلاَنَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ‏}‏ قَالَ نَعَمْ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যখন এ আয়াত নাযিল হলো : ‘আসমান ও জমিনে যত কিছু আছে সমস্ত আল্লাহরই। তোমাদের মনের অভ্যন্তরে যা আছে তা প্রকাশ কর কিংবা গোপন রাখ, আল্লাহ তোমাদের নিকট থেকে তার হিসাব গ্রহণ করবেন এবং যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিবেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান’– (সূরাহ আল বাকারাহ্‌ ২ : ২৮৪)। রাবী বলেন, তখন বিষয়টি সহাবাদের কাছে খুবই কঠিন মনে হলো। তাই সবাই রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলেন এবং হাঁটু গেড়ে বসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! সলাত, সিয়াম, জিহাদ, সদাকাহ্‌ প্রভৃতি যে সমস্ত ‘আমাল আমাদের সামর্থ্যানুযায়ী ছিল এ যাবৎ আমাদেরকে সেগুলোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে এ আয়াত নাযিল হয়েছে। এ বিষয়টি তো আমাদের ক্ষমতার বাইরে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আহলে কিতাব-ইয়াহূদী ও খৃষ্টানের ন্যায় তোমরাও কি এমন কথা বলবে যে, শুনলাম কিন্তু মানলাম না। বরং তোমরা বল; শুনলাম ও মানলাম। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর তোমার কাছেই আমরা ফিরে যাব। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ নির্দেশ শুনে সহাবায়ে কিরাম বললেন, আমরা শুনেছি ও মেনেছি, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি, তুমিই আমাদের শেষ প্রত্যাবর্তনস্থল। রাবী বলেন, সহাবাদের সকলে এ আয়াত পাঠ করলেন এবং মনেপ্রাণে তা গ্রহণ করে নিলেন। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেন : ‘রসূল ঈমান এনেছেন তাঁর প্রতি তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং মু’মিনগণও তাদের সকলেই আল্লাহর, তাঁর ফেরেশতাগণের, তাঁর কিতাবসমূহের এবং তাঁর রসূলগণের ঈমান এনেছে। (তারা বলে) আমরা তাঁর রসূলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না। আর তাঁরা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম! হে আমাদের রব! আমরা তোমার নিকট ক্ষমা চাই আর তোমারই নিকট আমাদের প্রত্যাবর্তনস্থল- (সূরাহ আল বাকারাহ্‌ ২ : ২৮৫)। যখন তাঁরা সর্বতোভাবে আনুগত্য প্রকাশ করলেন, তখন আল্লাহ তা’আলা উক্ত আয়াতের হুকুম রহিত করে নাযিল করলেন : “আল্লাহ কারো উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়-দায়িত্ব অর্পন করেন না যা তার পক্ষে করা অসম্ভব। সে ভাল যা উপার্জন করে তা তারই এবং মন্দ যা উপার্জন করে তাও তারই। হে আমাদের রব! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করে ফেলি তবে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করো না।” আল্লাহ তা’আলা বললেন, হ্যাঁ, মেনে নিলাম। আরো ইরশাদ হলো : “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর যেমন গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন, আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না। আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ হ্যাঁ, মেনে নিলাম। আরো ইরশাদ হল : “হে আমাদের রব! এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করো না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই।” আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ হ্যাঁ, মেনে নিলাম। আরো ইরশাদ হলো, “আমাদের পাপ মোচন কর, আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও, আমাদের উপর দয়া কর, তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে বিজয় দান কর।” -(সূরাহ আল বাকারাহ্‌ ২ : ২৮৬)। আল্লাহ তা’আলা বললেন, হ্যাঁ, মেনে নিলাম। (ই.ফা. ২২৯, ই.সে ২৩৭)

২২৯
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ – وَاللَّفْظُ لأَبِي بَكْرٍ قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا – وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ آدَمَ بْنِ سُلَيْمَانَ، مَوْلَى خَالِدٍ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ‏{‏ وَإِنْ تُبْدُوا مَا فِي أَنْفُسِكُمْ أَوْ تُخْفُوهُ يُحَاسِبْكُمْ بِهِ اللَّهُ‏}‏ قَالَ دَخَلَ قُلُوبَهُمْ مِنْهَا شَىْءٌ لَمْ يَدْخُلْ قُلُوبَهُمْ مِنْ شَىْءٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ قُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَسَلَّمْنَا ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَأَلْقَى اللَّهُ الإِيمَانَ فِي قُلُوبِهِمْ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى ‏{‏ لاَ يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا‏}‏ قَالَ قَدْ فَعَلْتُ ‏{‏ رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِنَا‏}‏ – قَالَ قَدْ فَعَلْتُ ‏{‏ وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنْتَ مَوْلاَنَا‏}‏ قَالَ قَدْ فَعَلْتُ ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

(মহান আল্লাহর বাণী) : “তোমাদের মনে যা আছে তা প্রকাশ কর কিংবা গোপন রাখ, আল্লাহ তোমাদের নিকট হতে তার হিসাব গ্রহণ করবেন”-(সূরাহ্‌ আল বাকারাহ্‌ ২ : ২৮৪)। এ আয়াতটি নাযিল হলে সহাবাগণ খুবই উদ্বিগ্ন হলেন, আর কোন বিষয়ে তারা এতো উদ্বিগ্ন হননি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বরং তোমরা বল, শুনলাম, আনুগত্য স্বীকার করলাম এবং মেনে নিলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা তাঁদের অন্তরে ঈমান ঢেলে দিলেন। তিনি নাযিল করলেন, আল্লাহ তা’আলা কারোর উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অর্পণ করেন না, যা তার সাধ্যাতীত। সে ভালো যা উপার্জন করে তা তারই, আর মন্দ যা উপার্জন করে তাও তারই। হে আমাদের রব! যদি আমরা ভুলে যাই অথবা ভুল করে ফেলি তবে আমাদের পাকড়াও করো না। তখন আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ অবশ্যই মেনে নিলাম। আল্লাহ তা’আলা আরো ইরশাদ করলেন : হে আমাদের রব! আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর যেমন গুরু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলে, আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ অবশ্যই মেনে নিলাম। আল্লাহ তা’আলা আরও ঘোষণা করলেন : ‘ (বলুন) আমাদের পাপ মোচন কর, আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের রব’। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ অবশ্যই মেনে নিলাম। (ই.ফা. ২৩০; ই.সে. ২৩৮)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]