সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা মসজিদ ও সালাতের স্থানসমূহ অধ্যায় ৪র্থ ভাগ হাদিস নং ১৪১১ – ১৪৫৪

৫২. অধ্যায়ঃ
ফাজরের সলাতের পর বসে থাকার এবং মসজিদসমূহের ফাযীলত

১৪১১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا سِمَاكٌ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، – وَاللَّفْظُ لَهُ – قَالَ أَخْبَرَنَا أَبُو خَيْثَمَةَ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، قَالَ قُلْتُ لِجَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ أَكُنْتَ تُجَالِسُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ نَعَمْ كَثِيرًا كَانَ لاَ يَقُومُ مِنْ مُصَلاَّهُ الَّذِي يُصَلِّي فِيهِ الصُّبْحَ أَوِ الْغَدَاةَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ فَإِذَا طَلَعَتِ الشَّمْسُ قَامَ وَكَانُوا يَتَحَدَّثُونَ فَيَأْخُذُونَ فِي أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ فَيَضْحَكُونَ وَيَتَبَسَّمُ ‏.

সিমাক ইবনু হার্‌ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,আমি জাবির ইবনু সামুরাহ্‌-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি (ফাজ্‌রের সলাতের পর) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে বসতেন? জবাবে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, অনেক দিন বসেছি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদের যে জায়গায় ফাজ্‌রের সলাত (অথবা বলেছেন ভোরের সলাত) আদায় করতেন সূর্য উদিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানে থেকে উঠতেন না। সূর্য উদিত হওয়ার পর তিনি সেখান থেকে উঠতেন। লোকজন তখন জাহিলী যুগের ঘটনাবলী সম্পর্কে আলোচনা করত। এসব ঘটনা আলোচনা করতে গিয়ে লোকজন হাসত আর তা দেখে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুচকি হাসতেন। (ই.ফা. ১৩৯৭, ই.সে. ১৪০৯)

১৪১২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ أَبُو بَكْرٍ وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، عَنْ زَكَرِيَّاءَ، كِلاَهُمَا عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا صَلَّى الْفَجْرَ جَلَسَ فِي مُصَلاَّهُ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ حَسَنًا ‏.

জাবির ইবনু সামুরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

(তিনি বলেছেনঃ ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের সলাত আদায়ের পর সূর্য স্পষ্টভাবে উদিত না হওয়া পর্যন্ত সলাতের জায়গায় বসে থাকতেন। (ই.ফা. ১৩৯৮, ই.সে. ১৪১০)

১৪১৩
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، ح قَالَ وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، كِلاَهُمَا عَنْ سِمَاكٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ وَلَمْ يَقُولاَ حَسَنًا ‏.

সিমাক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এ সানাদে বর্ণিত। কিন্ত তাতে ‘ভালভাবে’ শব্দটির উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ১৩৯৯, ই.সে. ১৪১১)

১৪১৪
وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، – حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي ذُبَابٍ، فِي رِوَايَةِ هَارُونَ – وَفِي حَدِيثِ الأَنْصَارِيِّ حَدَّثَنِي الْحَارِثُ – عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مِهْرَانَ مَوْلَى أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ أَحَبُّ الْبِلاَدِ إِلَى اللَّهِ مَسَاجِدُهَا وَأَبْغَضُ الْبِلاَدِ إِلَى اللَّهِ أَسْوَاقُهَا ‏”‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার কাছে সব চাইতে প্রিয় জায়গা হলো মসজিদসমূহ আর সব চাইতে খারাপ জায়গা হলো বাজারসমূহ। (ই.ফা. ১৪০০, ই.সে. ১৪১২)

৫৩. অধ্যায়ঃ
ইমামতির জন্য বেশী যোগ্য কে ?

১৪১৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا كَانُوا ثَلاَثَةً فَلْيَؤُمَّهُمْ أَحَدُهُمْ وَأَحَقُّهُمْ بِالإِمَامَةِ أَقْرَؤُهُمْ ‏”‏ ‏.

আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিনজন লোক একত্রিত হলে তাদের একজনকে তাদের ইমাম বা নেতা হতে হবে। আর তাদের মধ্যে ইমামত বা নেতৃত্বের সবচাইতে বেশী হাক্বদ্বার সেই ব্যক্তি যে সবচেয়ে বেশী কুরআন মাজীদ অধ্যয়ন করেছে। (ই.ফা. ১৪০১, ই.সে. ১৪১৩)

১৪১৬
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي عَرُوبَةَ، ح وَحَدَّثَنِي أَبُو غَسَّانَ الْمِسْمَعِيُّ، حَدَّثَنَا مُعَاذٌ، – وَهُوَ ابْنُ هِشَامٍ – حَدَّثَنِي أَبِي كُلُّهُمْ، عَنْ قَتَادَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.

ক্বাতাদাহ্‌ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৪০২, ই.সে. ১৪১৪)

১৪১৭
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا سَالِمُ بْنُ نُوحٍ، ح وَحَدَّثَنَا حَسَنُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، جَمِيعًا عَنِ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ ‏.

আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা, ১৪০৩, ই.সে. ১৪১৫)

১৪১৮
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ كِلاَهُمَا عَنْ أَبِي خَالِدٍ، – قَالَ أَبُو بَكْرٍ حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، – عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، عَنْ أَوْسِ بْنِ ضَمْعَجٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ يَؤُمُّ الْقَوْمَ أَقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللَّهِ فَإِنْ كَانُوا فِي الْقِرَاءَةِ سَوَاءً فَأَعْلَمُهُمْ بِالسُّنَّةِ فَإِنْ كَانُوا فِي السُّنَّةِ سَوَاءً فَأَقْدَمُهُمْ هِجْرَةً فَإِنْ كَانُوا فِي الْهِجْرَةِ سَوَاءً فَأَقْدَمُهُمْ سِلْمًا وَلاَ يَؤُمَّنَّ الرَّجُلُ الرَّجُلَ فِي سُلْطَانِهِ وَلاَ يَقْعُدْ فِي بَيْتِهِ عَلَى تَكْرِمَتِهِ إِلاَّ بِإِذْنِهِ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ الأَشَجُّ فِي رِوَايَتِهِ مَكَانَ سِلْمًا سِنًّا ‏.

আবূ মাস’ঊদ আল আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন আমাদেরকে বললেনঃ যে স‍‌র্বাপেক্ষা বেশী কুরাআনের পাঠক ও কুরআনী জ্ঞানের অধিকারী সে-ই ক্বওমের (লোকজনের) ইমামাত করবে। সবাই যদি কুরানের জ্ঞানের সমপর্যায়ের হয় সেক্ষেত্রে যে ব্যক্তি সুন্নাত সম্পর্কে অধিক পরিজ্ঞাত হবে সে-ই ইমামাত করবে। সুন্নাহর জ্ঞানেরও সবাই সমান হলে হিজরাতে যে অগ্রগামী সে ইমামাত করবে। কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির নিজস্ব প্রভাবাধীন এলাকায় ইমামাত করবে না কিংবা তার অনুমতি ছাড়া তার বাড়ীতে তার বিছানায় বসবে না। বর্ণনাকারী আশাজ্জ তার বর্ণনায় (ইসলাম) শব্দের স্হানে (বয়স) শব্দ উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ১৪০৪, ই.সে. ১৪১৬)

১৪১৯
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ ح وَحَدَّثَنَا الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، كُلُّهُمْ عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.

আবূ কুরায়ব, ইসহাক্ব, আশাজ্জ, ইবনু আবূ ‘উমার (রহঃ) … তারা সকলে আ’মাশ (রাঃ) -এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

পূর্বোক্ত হাদীসের অনূরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা, ১৪০৫, ই.সে. ১৪১৭)

১৪২০
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَوْسَ بْنَ ضَمْعَجٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا مَسْعُودٍ، يَقُولُ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ يَؤُمُّ الْقَوْمَ أَقْرَؤُهُمْ لِكِتَابِ اللَّهِ وَأَقْدَمُهُمْ قِرَاءَةً فَإِنْ كَانَتْ قِرَاءَتُهُمْ سَوَاءً فَلْيَؤُمَّهُمْ أَقْدَمُهُمْ هِجْرَةً فَإِنْ كَانُوا فِي الْهِجْرَةِ سَوَاءً فَلْيَؤُمَّهُمْ أَكْبَرُهُمْ سِنًّا وَلاَ تَؤُمَّنَّ الرَّجُلَ فِي أَهْلِهِ وَلاَ فِي سُلْطَانِهِ وَلاَ تَجْلِسْ عَلَى تَكْرِمَتِهِ فِي بَيْتِهِ إِلاَّ أَنْ يَأْذَنَ لَكَ أَوْ بِإِذْنِهِ ‏”‏ ‏.

আবূ মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বললেনঃ আল্লাহর কিতাব কুরআন মাজীদের জ্ঞান যে সবচেয়ে বেশী এবং যে কুরআন তিলাওয়াতও সুন্দরভাবে করতে পারে সে-ই সলাতের জামা’আতে ইমামাত করবে। সুন্দর ক্বিরাআতের ব্যাপারে সবাই যদি সমকক্ষ হয় তাহলে তাদের মধ্যে যে হিজরাতে অগ্রগামী সে ইমামাত করবে। হিজরাতের ব্যাপারেও সবাই যদি সমকক্ষ হয় তাহলে তাদের মধ্যে যে বয়সে প্রবীণ সেই ইমামাত করবে। কোন ব্যক্তি যেন কারো নিজের বাড়ীতে (বাড়ীর কর্তাকে বাদ দিয়ে) কিংবা কারো ক্ষমতাসীন এলাকায় নিজে ইমামাত না করে। আর কেউ যেন কারো বাড়ীতে গিয়ে অনুমতি ছাড়া তার বিছানায় না বসে। (ই.ফা. ১৪০৬, ই.সে. ১৪১৮)

১৪২১
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ، قَالَ أَتَيْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ شَبَبَةٌ مُتَقَارِبُونَ فَأَقَمْنَا عِنْدَهُ عِشْرِينَ لَيْلَةً وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَحِيمًا رَقِيقًا فَظَنَّ أَنَّا قَدِ اشْتَقْنَا أَهْلَنَا فَسَأَلَنَا عَنْ مَنْ تَرَكْنَا مِنْ أَهْلِنَا فَأَخْبَرْنَاهُ فَقَالَ ‏ “‏ ارْجِعُوا إِلَى أَهْلِيكُمْ فَأَقِيمُوا فِيهِمْ وَعَلِّمُوهُمْ وَمُرُوهُمْ فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَلْيُؤَذِّنْ لَكُمْ أَحَدُكُمْ ثُمَّ لْيَؤُمَّكُمْ أَكْبَرُكُمْ ‏”‏ ‏.

মালিক ইবনু হুওয়াইরিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা প্রায় এ বয়সের কিছু যুবক রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এসে বিশরাত (অর্থাৎ-বিশদিন) অবস্হান করলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও নম্র হৃদয়। তিনি বুঝতে পারলেন যে, আমরা আমাদের পরিবারের লোকজনের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েছি। তাই নিজ পরিবারে আমরা কাকে কাকে রেখে গিয়েছি এ বিষয়ে তিনি আমাদের জিজ্ঞেস করলে আমরা তাঁকে সে বিষয়ে অবহিত করলাম। তখন তিনি বললেনঃ ঠিক আছে, তোমরা নিজ পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে অবস্হান করে তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষাদান করো। আর এ বিষয়ে তাদেরকে বিভিন্ন কাজ করতে আদেশ করো। আর সলাতের সময় হলে তোমাদের কেউ আযান দিবে। তবে বয়সে যে সবার বড় সে ইমামাত করবে। [১] (ই.ফা. ১৪০৭, ই.সে. ১৪১৯)






[১]এক্ষেত্রে বয়সে বড় হওয়াকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে কারণ তাদের হিজরাত, ইসলাম গ্রহণ, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহিওয়াসাল্লাম) –এর সাহচর্য এবং বিশদিন অবস্হান – এ সকল বৈশিষ্ঠ্যে তারা সমান ছিল একমাত্র বয়স ব্যতীত।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

১৪২২
وَحَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، وَخَلَفُ بْنُ هِشَامٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.

আইয়ূব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে বর্ণিত। (ই.ফা. ১৪০৮, ই.সে. ১৪২০)

১৪২৩
وَحَدَّثَنَاهُ ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، عَنْ أَيُّوبَ، قَالَ قَالَ لِي أَبُو قِلاَبَةَ حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ الْحُوَيْرِثِ أَبُو سُلَيْمَانَ، قَالَ أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي نَاسٍ وَنَحْنُ شَبَبَةٌ مُتَقَارِبُونَ ‏.‏ وَاقْتَصَّا جَمِيعًا الْحَدِيثَ بِنَحْوِ حَدِيثِ ابْنِ عُلَيَّةَ ‏.‏

মালিক ইবনুল হুওয়াইরিস আবূ সুলাইমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার সমবয়সী একদল যুবকের সাথে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর কাছে আসলাম। এতটুকু বর্ণনা করার পর তারা সবাই ইবনু ‘উলাইয়্যাহ্ বর্ণিত হাদীসের অনূরূপ হাদীস বর্ণনা করলেন। (ই.ফা. ১৪০৮, ই.সে. ১৪২০)

১৪২৪
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ، قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَصَاحِبٌ لِي فَلَمَّا أَرَدْنَا الإِقْفَالَ مِنْ عِنْدِهِ قَالَ لَنَا ‏ “‏ إِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَأَذِّنَا ثُمَّ أَقِيمَا وَلْيَؤُمَّكُمَا أَكْبَرُكُمَا ‏”‏ ‏.

মালিক ইবনু হুওয়াইরিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি এবং আমার এক বন্ধু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে গেলাম। যখন আমরা তাঁর নিকট থেকে ফিরতে চাইলাম তখন তিনি আমাদেরকে লক্ষ্য করে বললেনঃসলাতের সময় হলে আযান দিবে এবং তারপর ইক্বামত দিবে (অর্থাৎ-সলাত আদায় করবে)। তবে তোমাদের মধ্যে যে বয়সে বড় হবে সেই যেন ইমামাত করে। (ই.ফা. ১৪০৯, ই.সে. ১৪২১)

১৪২৫
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ، حَدَّثَنَا حَفْصٌ، – يَعْنِي ابْنَ غِيَاثٍ – حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ قَالَ الْحَذَّاءُ وَكَانَا مُتَقَارِبَيْنِ فِي الْقِرَاءَةِ ‏.

খালিদ আল হায্‍যা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে হাফ্‌সা ইবনু গিয়াস এতটুকু কথা অতিরিক্ত বলেছেন যে, হায্‍যা (রহঃ) বলেছেন, তারা উভয়ে (মালিক ইবনুল হুওয়াইরিস এবং তার বন্ধু) ক্বিরাআতের ব্যাপারে সমকক্ষ ছিলেন | (ই.ফা. ১৪১০, ই.সে. ১৪২১)

৫৪. অধ্যায়ঃ
যখন মুসলিমদের ওপর কোন বিপদ আপতিত হয়, তখন সকল সলাতে ‘কুনূ্তে নাযিলাহ্’ পাঠ মুস্তাহাব

১৪২৬
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، قَالاَ أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ بْنُ يَزِيدَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، وَأَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ أَنَّهُمَا سَمِعَا أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ حِينَ يَفْرُغُ مِنْ صَلاَةِ الْفَجْرِ مِنَ الْقِرَاءَةِ وَيُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ رَأْسَهُ ‏”‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ يَقُولُ وَهُوَ قَائِمٌ ‏”‏ اللَّهُمَّ أَنْجِ الْوَلِيدَ بْنَ الْوَلِيدِ وَسَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ وَعَيَّاشَ بْنَ أَبِي رَبِيعَةَ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ وَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ كَسِنِي يُوسُفَ اللَّهُمَّ الْعَنْ لِحْيَانَ وَرِعْلاً وَذَكْوَانَ وَعُصَيَّةَ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ بَلَغَنَا أَنَّهُ تَرَكَ ذَلِكَ لَمَّا أُنْزِلَ ‏{‏ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَىْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ يُعَذِّبَهُمْ فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ‏}‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌রের সলাতে ক্বিরাআত শেষ তাকবীর দিয়ে রুকূ‘তে গিয়ে রুকূ‘ থেকে যখন মাথা উঠাতেন তখন বলতেনঃ “সামি‘আল্ল-হু লিমান হামিদাহ, রব্বানা-ওয়ালাকাল হাম্‌দ” – (অর্থাৎ – যে আল্লাহর প্রশংসা করে আল্লাহ তাঁর প্রশংসা শুনেন। হে আমাদের প্রভু ! সকল প্রশংসা তোমারই জন্য নির্দিষ্ট।)। এরপর তিনি দাঁড়িয়ে বলতেনঃ হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদ, সালামাহ্‌ ইবনু হিশাম ও ‘আইয়্যাশ ইবনু রবী‘আহ্‌ এবং দুর্বল ও নিপীড়িত মু‘মিনদের নাযাত দান করো। হে আল্লাহ ! তুমি মুযার গোত্রকে কঠোরহস্তে পাকড়াও করো। আর ইউসুফ (আঃ) -এর সময়ের দুর্ভিক্ষের মতো দুর্ভিক্ষ দিয়ে তাদের শায়েস্তা করো। হে আল্লাহ ! তুমি লিহ্‌ইয়ান, রি‘লান, যাক্‌ওয়ান ও ‘উসাইয়্যাহ্‌ গোত্রের ওপর অভিসম্পাত বর্ষণ করো। কেননা তারা আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের অবাধ্য হয়েছে। অতঃপর আমরা জানতে পারলাম যে, আয়াত- “হে নবী ! এর ব্যাপারে তোমার কোন করণীয় নেই। আল্লাহ তাদের তাওবাহ্‌ কবূল করুন আর তাদেরকে শাস্তি দান করুন এ ব্যাপারে তিনি পূর্ণ ইখতিয়ারের অধিকারী। কেননা তারা তো যালিম” – (সূরাহ্‌ আ-লি ‘ইমরান ৩: ১২৮)। অবতীর্ণ হওয়ার পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এভাবে কুনূত পড়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। (ই.ফা.১৪১১, ই.সে.১৪২২)

১৪২৭
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى قَوْلِهِ ‏ “‏ وَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ كَسِنِي يُوسُفَ ‏”‏ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرْ مَا بَعْدَهُ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এতে ইউসুফের সময়ে দুর্ভিক্ষের মত দুর্ভিক্ষের মুখোমুখী করা পর্যন্ত উল্লেখ করেছেন। পরের অংশটুকু উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৪১২, ই.সে. ১৪২২)

১৪২৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مِهْرَانَ الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، حَدَّثَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَنَتَ بَعْدَ الرَّكْعَةِ فِي صَلاَةٍ شَهْرًا إِذَا قَالَ ‏”‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ‏”‏ ‏.‏ يَقُولُ فِي قُنُوتِهِ ‏”‏ اللَّهُمَّ أَنْجِ الْوَلِيدَ بْنَ الْوَلِيدِ اللَّهُمَّ نَجِّ سَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ اللَّهُمَّ نَجِّ عَيَّاشَ بْنَ أَبِي رَبِيعَةَ اللَّهُمَّ نَجِّ الْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ اللَّهُمَّ اجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ سِنِينَ كَسِنِي يُوسُفَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ثُمَّ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَرَكَ الدُّعَاءَ بَعْدُ فَقُلْتُ أُرَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ تَرَكَ الدُّعَاءَ لَهُمْ – قَالَ – فَقِيلَ وَمَا تَرَاهُمْ قَدْ قَدِمُوا

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সময় একমাস যাবৎ ফাজরের সলাতে দ্বিতীয় রাক‘আতে রুকূ থেকে ওঠার পরে কুনূত পড়েছেন। এতে তিনি যখন রুকূ‘ থেকে উঠে “সামিআল্ল-হু লিমান হামিদাহ” বলতেন তখন কুনূত পড়তে গিয়ে বলতেনঃ হে আল্লাহ, ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে মুক্ত করে দাও। হে আল্লাহ ! সালামাহ্‌ ইবনু হিশামকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ ! ‘আয়িশাহ্‌ ইবনু আবূ রাবী‘আহ্‌কে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ ! দুর্বল অসহায় মু‘মিনদেরকেও মুক্তি দাও। হে আল্লাহ ! তুমি মুযার গোত্রকে তোমার কঠোরতা দ্বারা পিষে মারো। হে আল্লাহ ! তুমি তাদের ওপর ইউসুফ (আঃ) -এর সময়ের দুর্ভিক্ষের মতো দুর্ভিক্ষ দান করো। আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেছেন, পরে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -কে এ দু‘আ পরিত্যাগ করতে দেখেছি। এতে আমি বিস্মিত হয়ে বললামঃ আমি দেখছি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এখন তাদের জন্য দু‘আ করা ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেনঃ আমাকে তখন বলা হলো তুমি কি দেখছনা যে, তারা সবাই মুক্ত হয়ে চলে এসেছেন? (ই.ফা. ১৪১৩, ই.সে. ১৪২৩)

১৪২৯
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَمَا هُوَ يُصَلِّي الْعِشَاءَ إِذْ قَالَ ‏”‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ قَبْلَ أَنْ يَسْجُدَ ‏”‏ اللَّهُمَّ نَجِّ عَيَّاشَ بْنَ أَبِي رَبِيعَةَ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ الأَوْزَاعِيِّ إِلَى قَوْلِهِ ‏”‏ كَسِنِي يُوسُفَ ‏”‏ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرْ مَا بَعْدَهُ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘ইশার সলাত আদায় করেছিলেন। সাজদাহ্ করার পূর্বে রুকূ’ থেকে উঠে যখন তিনি “সামি‘আল্ল-হু লিমান হামিদাহ” বললেন তখন এ বলে দু‘আ করলেনঃ “হে আল্লাহ! ‘আইয়্যাশ ইবনু রাবী‘আকে মুক্তিদান করো” এতটুকু বর্ণনা করার পর আবূ হুরায়রাহ্ আওযা‘ঈ বর্ণিত হাদীসের বা সিনী ইউসুফ [অর্থাৎ- ইউসুফ (আঃ) ]-এর যুগের দুর্ভিক্ষের ন্যায় দুর্ভিক্ষ দিয়ে শাস্তিদান করো পর্যন্ত উল্লেখ করলেন। এতে তিনি আওযা‘ঈ বর্ণিত হাদীসের পরের অংশটুকু উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৪১৪, ই.সে. ১৪২৪)

১৪৩০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ وَاللَّهِ لأُقَرِّبَنَّ بِكُمْ صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَكَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَقْنُتُ فِي الظُّهْرِ وَالْعِشَاءِ الآخِرَةِ وَصَلاَةِ الصُّبْحِ وَيَدْعُو لِلْمُؤْمِنِينَ وَيَلْعَنُ الْكُفَّارَ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ আমি তোমাদেরকে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর মতো করে (প্রায় অনুরূপ) সলাত আদায় করে দেখাব। এরপর আবূ হুরায়রাহ্ যুহর, ‘ইশা ও ফাজরের সলাতে কুনূত পড়তেন। এতে তিনি মু‘মিনদের জন্য দু‘আ করতেন এবং কাফিরদেরকে অভিসম্পাত করতেন। (ই.ফা. ১৪১৫, ই.সে. ১৪২৫)

১৪৩১
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الَّذِينَ قَتَلُوا أَصْحَابَ بِئْرِ مَعُونَةَ ثَلاَثِينَ صَبَاحًا يَدْعُو عَلَى رِعْلٍ وَذَكْوَانَ وَلِحْيَانَ وَعُصَيَّةَ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ ‏.‏ قَالَ أَنَسٌ أَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي الَّذِينَ قُتِلُوا بِبِئْرِ مَعُونَةَ قُرْآنًا قَرَأْنَاهُ حَتَّى نُسِخَ بَعْدُ أَنْ بَلِّغُوا قَوْمَنَا أَنْ قَدْ لَقِينَا رَبَّنَا فَرَضِيَ عَنَّا وَرَضِينَا عَنْهُ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, “বি‘রি মা‘উনাহ্‌” নামক স্থানে যে মু‘মিনদেরকে হত্যা করা হয়েছিল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের হত্যাকারীদের জন্য ত্রিশদিন পর্যন্ত ফাজরের সলাতে বদ দু‘আ করেছিলেন। আনাস বর্ণনা করেছেন, “বি‘রি মা‘উনাহ্‌” নামক স্থানে নিহতদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা আয়াত অবতীর্ণ করে ছিলেন যা আমরা পাঠ করতাম। অবশেষে তা মানসুখ বা রহিত করে দেয়া হয়েছিল। আয়াতটি ছিল-

অর্থাৎ“আমাদের ক্বওমকে এ সংবাদ পৌছিয়ে দাও যে, আমরা আমাদের প্রভুর সাক্ষাৎ লাভ করেছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর আমরাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছি।” (ই.ফা. ১৪১৬, ই.সে. ১৪২৬)

১৪৩২
وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، قَالَ قُلْتُ لأَنَسٍ هَلْ قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي صَلاَةِ الصُّبْحِ قَالَ نَعَمْ بَعْدَ الرُّكُوعِ يَسِيرًا ‏.

মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাসকে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি ফাজ্‌রের সলাতে কুনূত পড়তেন? জবাবে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, রুকূ‘র পরে সংক্ষিপ্তভাবে পড়তেন। (ই.ফা. ১৪১৭, ই.সে.১৪২৭)

১৪৩৩
وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، وَأَبُو كُرَيْبٍ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ مُعَاذٍ – حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي مِجْلَزٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَهْرًا بَعْدَ الرُّكُوعِ فِي صَلاَةِ الصُّبْحِ يَدْعُو عَلَى رِعْلٍ وَذَكْوَانَ وَيَقُولُ ‏ “‏ عُصَيَّةُ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ ‏”‏ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাস যাবৎ ফাজ্‌রের সলাতে রুকূ’ করার পর কুনূত পড়েছেন। এতে তিনি রি‘ল ও যাক্‌ওয়ান গোত্রদ্বয়ের জন্য বদ-দু‘আ করতেন। আর ‘উসাইয়্যাহ্‌ গোত্র সম্পর্কে বলতেন যে, ‘উসায়ইয়্যাহ্‌ আল্লাহ ও তার রাসূলের অবাধ্য হয়েছে। (ই.ফা. ১৪১৮, ই.সে. ১৪২৮)

১৪৩৪
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا بَهْزُ بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، أَخْبَرَنَا أَنَسُ بْنُ سِيرِينَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَنَتَ شَهْرًا بَعْدَ الرُّكُوعِ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ يَدْعُو عَلَى بَنِي عُصَيَّةَ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক মাস যাবৎ ফাজ্‌রের সলাতে রুকূ‘ থেকে উঠার পর কুনূতে বানূ ‘উসাইয়্যাহ্‌ গোত্রের জন্য বদ-দু‘আ করেছেন। (ই.ফা. ১৪১৯, ই.সে. ১৪২৯)

১৪৩৫
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ سَأَلْتُهُ عَنِ الْقُنُوتِ، قَبْلَ الرُّكُوعِ أَوْ بَعْدَ الرُّكُوعِ فَقَالَ قَبْلَ الرُّكُوعِ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ فَإِنَّ نَاسًا يَزْعُمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَنَتَ بَعْدَ الرُّكُوعِ ‏.‏ فَقَالَ إِنَّمَا قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَهْرًا يَدْعُو عَلَى أُنَاسٍ قَتَلُوا أُنَاسًا مِنْ أَصْحَابِهِ يُقَالُ لَهُمُ الْقُرَّاءُ ‏.

‘আসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) – কে কুনূত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম যে, কুনূত রুকূ’ করার পূর্বে পড়তে হবে না পরে? জবাবে তিনি বললেনঃ রুকূ’ করার পূর্বে পড়তে হবে। তিনি বলেন, এ কথা শুনে আমি আবার বললাম যে, কোন কোন লোক বলে থাকে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূ’ করার পর কুনূত পড়তেন। আনাস (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (রুকূর পরে) একমাস কুনূত পাঠ করেছেন। তখন তিনি ঐ সব লোকদের জন্য বদ-দু‘আ করতেন যারা তাঁর (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর) সহাবীকে হত্যা করেছিল যাদেরকে ‘ক্বারী’ বলে সম্বোধন করা হত। (ই.ফা. ১৪২০, ই.সে. ১৪৩০)

১৪৩৬
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَدَ عَلَى سَرِيَّةٍ مَا وَجَدَ عَلَى السَّبْعِينَ الَّذِينَ أُصِيبُوا يَوْمَ بِئْرِ مَعُونَةَ كَانُوا يُدْعَوْنَ الْقُرَّاءَ فَمَكَثَ شَهْرًا يَدْعُو عَلَى قَتَلَتِهِمْ ‏.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বি‘রি মা‘উনাহ্‌-এর ঘটনায় ‘ক্বারী’ বলে পরিচিত সত্তর জন সহাবীকে হত্যার কারণে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যতখানি বেদনাহত হয়ে ছিলেন এমনটি আর কোন সেনাদলের ক্ষেত্রে হতে দেখিনি। এ ঘটনার পর তিনি একমাস পর্যন্ত (ঐসব সাহাবার) হত্যাকারীদের জন্য বদ-দু‘আ করেছিলেন। (ই.ফা. ১৪২১, ই.সে ১৪৩১)

১৪৩৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا حَفْصٌ، وَابْنُ، فُضَيْلٍ ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ، كُلُّهُمْ عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ ‏.‏ يَزِيدُ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে উভয়েই কিছুটা অতিরিক্ত শাব্দিক তারতম্যসহ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৪২২, ই.সে.১৪৩২)

১৪৩৮
وَحَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا الأَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَنَتَ شَهْرًا يَلْعَنُ رِعْلاً وَذَكْوَانَ وَعُصَيَّةَ عَصَوُا اللَّهَ وَرَسُولَهُ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক সময়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রি‘ল, যাক্‌ওয়ান ও ‘উসাইয়্যাহ্‌ গোত্রসমূহকে লা’নত করে একমাস পর্যন্ত সলাতে কূনূত পড়েছেন। এরা সবাই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে নাফরমানী করেছিল। (ই.ফা. ১৪৩২, ই.সে. ১৪৩৩)

১৪৩৯
وَحَدَّثَنَا عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا الأَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَنَسٍ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِنَحْوِهِ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ (অর্থবোধক) হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৪২৪, ই.সে. ১৪৩৪)

১৪৪০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَنَتَ شَهْرًا يَدْعُو عَلَى أَحْيَاءٍ مِنْ أَحْيَاءِ الْعَرَبِ ثُمَّ تَرَكَهُ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরবে কিছু গোত্রের জন্য এক সময়ে একমাস যাবৎ বদ-দু‘আ করেছিলেন। কিন্তু পরে তিনি তা পরিত্যাগ করেন। (ই.ফা. ১৪২৫, ই.সে.১৪৩৫)

১৪৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي لَيْلَى، قَالَ حَدَّثَنَا الْبَرَاءُ بْنُ عَازِبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقْنُتُ فِي الصُّبْحِ وَالْمَغْرِبِ ‏.

বারা ইবনু ‘আযিয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌র এবং মাগরিবের সলাতে কুনূত পড়তেন। (ই.ফা. ১৪২৬, ই.সে. ১৪৩৬)

১৪৪২
وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْفَجْرِ وَالْمَغْرِبِ ‏.

বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফাজ্‌র ও মাগরিবের সলাতে কুনূত পড়তেন। (ই.ফা. ১৪২৭, ই.সে. ১৪৩৭)

১৪৪৩
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ الْمِصْرِيُّ قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنِ اللَّيْثِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ أَبِي أَنَسٍ، عَنْ حَنْظَلَةَ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ خُفَافِ بْنِ إِيمَاءٍ الْغِفَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي صَلاَةٍ ‏ “‏ اللَّهُمَّ الْعَنْ بَنِي لِحْيَانَ وَرِعْلاً وَذَكْوَانَ وَعُصَيَّةَ عَصَوُا اللَّهَ وَرَسُولَهُ غِفَارُ غَفَرَ اللَّهُ لَهَا وَأَسْلَمُ سَالَمَهَا اللَّهُ ‏”‏ ‏.

খুফাফ ইবনু ঈমা আল গিফারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক সলাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বলে বদ- দু‘আ করলেনঃ হে আল্লাহ ! তুমি বানী লিহ্‌ইয়ান, রি‘ল যাক্‌ওয়ান ও ‘উসাইয়্যাহ্‌ গোত্রসমূহের ওপর লা‘নাত বর্ষণ করো। তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নাফরমানী করেছে। আর গিফার গোত্রকে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করুন এবং আসলাম গোত্রকে নিরাপদ রাখুন। (ই.ফা. ১৪২৮, ই.সে. ১৪৩৮)

১৪৪৪
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالَ ابْنُ أَيُّوبَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ أَخْبَرَنِي مُحَمَّدٌ، – وَهُوَ ابْنُ عَمْرٍو – عَنْ خَالِدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَرْمَلَةَ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ خُفَافٍ، أَنَّهُ قَالَ قَالَ خُفَافُ بْنُ إِيمَاءٍ رَكَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ ‏ “‏ غِفَارُ غَفَرَ اللَّهُ لَهَا وَأَسْلَمُ سَالَمَهَا اللَّهُ وَعُصَيَّةُ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ اللَّهُمَّ الْعَنْ بَنِي لِحْيَانَ وَالْعَنْ رِعْلاً وَذَكْوَانَ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ وَقَعَ سَاجِدًا ‏.‏ قَالَ خُفَافٌ فَجُعِلَتْ لَعْنَةُ الْكَفَرَةِ مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ ‏.

হারিস ইবনু খুফাফ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খুফাফ ইবনু ঈমা বর্ণনা করেছেন। তিনি (খুফাফ ইবনু ঈমা) বলেন, একদিন সলাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রুকূ’ করলেন এবং তারপর রুকূ’ থেকে মাথা তুলে বললেনঃ গিফার গোত্রকে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করুন। আসলাম গোত্রকে আল্লাহ নিরাপদে রাখুন। আর ‘উসাইয়্যাহ্‌ গোত্র তো আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নাফরমানী করেছে। এরপর তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ ! তুমি বানী লিহ্‌ইয়ান গোত্রের ওপর লা‘নাত বর্ষণ করো, রি‘ল ও যাকওয়ান গোত্রদ্বয়ের ওপর লা‘নাত বর্ষণ করো। এরপর তিনি সাজদায় চলে গেলেন। খুফাফ ইবনু ঈমা বলেছেনঃ এ কারণেই কুনূতে কাফিরদের লা‘নাত করা হয়ে থাকে। (ই.ফা. ১৪২৯, ই.সে. ১৪৩৯)

১৪৪৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ وَأَخْبَرَنِيهِ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ حَرْمَلَةَ، عَنْ حَنْظَلَةَ بْنِ عَلِيِّ بْنِ الأَسْقَعِ، عَنْ خُفَافِ بْنِ إِيمَاءٍ، ‏.‏ بِمِثْلِهِ إِلاَّ أَنَّهُ لَمْ يَقُلْ فَجُعِلَتْ لَعْنَةُ الْكَفَرَةِ مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ ‏.

খুফাফ ইবনু ঈমা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি তাতে “এ কারণেই কুনূতে কাফিরদের লা‘নাত করা হয়ে থাকে” কথাটি বলেননি। (ই.ফা. ১৪৩০, ই.সে. নেই)

৫৫. অধ্যায়ঃ
যে সলাত আদায় করা সম্ভব হয়নি এবং তা করার (সম্পাদনের) ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব

১৪৪৬
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى التُّجِيبِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَفَلَ مِنْ غَزْوَةِ خَيْبَرَ سَارَ لَيْلَهُ حَتَّى إِذَا أَدْرَكَهُ الْكَرَى عَرَّسَ وَقَالَ لِبِلاَلٍ ‏”‏ اكْلأْ لَنَا اللَّيْلَ ‏”‏ ‏.‏ فَصَلَّى بِلاَلٌ مَا قُدِّرَ لَهُ وَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ فَلَمَّا تَقَارَبَ الْفَجْرُ اسْتَنَدَ بِلاَلٌ إِلَى رَاحِلَتِهِ مُوَاجِهَ الْفَجْرِ فَغَلَبَتْ بِلاَلاً عَيْنَاهُ وَهُوَ مُسْتَنِدٌ إِلَى رَاحِلَتِهِ فَلَمْ يَسْتَيْقِظْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ بِلاَلٌ وَلاَ أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِهِ حَتَّى ضَرَبَتْهُمُ الشَّمْسُ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَوَّلَهُمُ اسْتِيقَاظًا فَفَزِعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏”‏ أَىْ بِلاَلُ ‏”‏ ‏.‏ فَقَالَ بِلاَلٌ أَخَذَ بِنَفْسِي الَّذِي أَخَذَ – بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ – بِنَفْسِكَ قَالَ ‏”‏ اقْتَادُوا ‏”‏ ‏.‏ فَاقْتَادُوا رَوَاحِلَهُمْ شَيْئًا ثُمَّ تَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَمَرَ بِلاَلاً فَأَقَامَ الصَّلاَةَ فَصَلَّى بِهِمُ الصُّبْحَ فَلَمَّا قَضَى الصَّلاَةَ قَالَ ‏”‏ مَنْ نَسِيَ الصَّلاَةَ فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ قَالَ ‏{‏ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي‏}‏ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ يُونُسُ وَكَانَ ابْنُ شِهَابٍ يَقْرَؤُهَا لِلذِّكْرَى ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বার যুদ্ধ শেষে ফিরে আসার সময় রাতে সফররত ছিলেন। এক সময় রাতের শেষভাগে তাঁকে তন্দ্রায় পেয়ে বসলে তিনি সেখানেই অবতরণ করলেন। আর বিলালকে বললেনঃ ‘তুমি আজ রাতে আমাদের পাহারার কাজ করো। সুতরাং বিলাল যতটা পারলেন রাতের বেলায় সলাত আদায় করলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ ঘুমিয়ে পড়লেন। কিন্তু ফাজরের সময় ঘনিয়ে আসলে বিলাল পূর্ব দিকে মুখ করে তার উটের সাথে হেলান দিলেন। এ সময় ঘুমে বিলালের দু‘চোখ বন্ধ হয়ে আসলো। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) , বিলাল কিংবা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাহাবীগণের কারোরই নিদ্রা ভঙ্গ হলো না।এ অবস্থায় তাদের গায়ে সূর্যের আলো এসে পড়ল।প্রথমে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুম থেকে জেগে উঠলেন। তিনি জেগে উঠে বিলালকে ডাকলেন, হে বিলাল ! বিলাল বললেন, হে আল্লাহর রসূল ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনি যে কারণে জাগতে পারেন নি আমিও ঐ একই কারণে জাগতে পারিনি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুকুম দিলেন তাড়াতাড়ি যাত্রা করো। সুতরাং সবাই উটগুলো হাঁকিয়ে কিছু দূরে নিয়ে গেলে এবার রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওযূ করলেন এবং বিলালকে সলাতের জন্য আদেশ করলেন। বিলাল সলাতের জন্য ইক্বামত দিলে তিনি তাদের সবাইকে সাথে ফাজরের সলাত আদায় করলেন। সলাত শেষে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ কেউ সলাত আদায় করতে ভুলে গেলে যখনই স্মরণ হবে তখনই তা আদায় করে নিবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন- “ আমার স্মরণের জন্য সলাত আদায় করো” – (সূরাত্ব-হা-২০:১৪)।

ইউনুস বলেছেনঃ ইবনু শিহাব (আরবি) (লিযিক্‌রী) -এর স্থানে (আরবি) (লিয্‌যিক্‌রা-) আদায় করলেন। (ই.ফা. ১৪৩১, ই.সে. ১৪৪০)

১৪৪৭
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، وَيَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، كِلاَهُمَا عَنْ يَحْيَى، – قَالَ ابْنُ حَاتِمٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، – حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ كَيْسَانَ، حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ عَرَّسْنَا مَعَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ نَسْتَيْقِظْ حَتَّى طَلَعَتِ الشَّمْسُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لِيَأْخُذْ كُلُّ رَجُلٍ بِرَأْسِ رَاحِلَتِهِ فَإِنَّ هَذَا مَنْزِلٌ حَضَرَنَا فِيهِ الشَّيْطَانُ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَفَعَلْنَا ثُمَّ دَعَا بِالْمَاءِ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ – وَقَالَ يَعْقُوبُ ثُمَّ صَلَّى سَجْدَتَيْنِ – ثُمَّ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَصَلَّى الْغَدَاةَ ‏.

আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন , আমরা একদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে শেষ রাতে বিশ্রামের জন্য ঘুমালাম। কিন্তু সূর্যোদয়ের পূর্বে আমরা জাগিনি (নিদ্রা থেকে জেগে  উঠে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ প্রত্যেকে নিজের উটের লাগাম টেনে নিয়ে যাও। কারন এই স্তানে আমাদের মাঝে শাইত্বন এসে হাজির হয়েছে। বর্ণনাকারী আবু হুরায়রাহ্ বলেছেন আমরা তাই করলাম। অতঃপর তিনি পানি চেয়ে নিয়ে ওযু করলেন এবং দু‘টি সাজদাহ্ করলেন (অর্থাৎ দু‘ রাকআত সলাত আদায় করলেন) ইয়াকুব বলেছেনঃ অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ফাজরের দুই রাকআত) সুন্নাত আদায় করলেন। অতঃপর সলাতের ইকামত দেওয়া হলে তিনি ফজরের (ফারয) সলাত আদায় করলেন। (ই. ফা. ১৪৩২ , ই. সে. ১৪৪১)

১৪৪৮
وَحَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، – يَعْنِي ابْنَ الْمُغِيرَةِ – حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏”‏ إِنَّكُمْ تَسِيرُونَ عَشِيَّتَكُمْ وَلَيْلَتَكُمْ وَتَأْتُونَ الْمَاءَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ غَدًا ‏”‏ ‏.‏ فَانْطَلَقَ النَّاسُ لاَ يَلْوِي أَحَدٌ عَلَى أَحَدٍ – قَالَ أَبُو قَتَادَةَ – فَبَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَسِيرُ حَتَّى ابْهَارَّ اللَّيْلُ وَأَنَا إِلَى جَنْبِهِ – قَالَ – فَنَعَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَمَالَ عَنْ رَاحِلَتِهِ فَأَتَيْتُهُ فَدَعَمْتُهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ أُوقِظَهُ حَتَّى اعْتَدَلَ عَلَى رَاحِلَتِهِ – قَالَ – ثُمَّ سَارَ حَتَّى تَهَوَّرَ اللَّيْلُ مَالَ عَنْ رَاحِلَتِهِ – قَالَ – فَدَعَمْتُهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ أُوقِظَهُ حَتَّى اعْتَدَلَ عَلَى رَاحِلَتِهِ – قَالَ – ثُمَّ سَارَ حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ السَّحَرِ مَالَ مَيْلَةً هِيَ أَشَدُّ مِنَ الْمَيْلَتَيْنِ الأُولَيَيْنِ حَتَّى كَادَ يَنْجَفِلُ فَأَتَيْتُهُ فَدَعَمْتُهُ فَرَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ ‏”‏ مَنْ هَذَا ‏”‏ ‏.‏ قُلْتُ أَبُو قَتَادَةَ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ مَتَى كَانَ هَذَا مَسِيرَكَ مِنِّي ‏”‏ ‏.‏ قُلْتُ مَا زَالَ هَذَا مَسِيرِي مُنْذُ اللَّيْلَةِ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ حَفِظَكَ اللَّهُ بِمَا حَفِظْتَ بِهِ نَبِيَّهُ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ هَلْ تَرَانَا نَخْفَى عَلَى النَّاسِ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ هَلْ تَرَى مِنْ أَحَدٍ ‏”‏ ‏.‏ قُلْتُ هَذَا رَاكِبٌ ‏.‏ ثُمَّ قُلْتُ هَذَا رَاكِبٌ آخَرُ ‏.‏ حَتَّى اجْتَمَعْنَا فَكُنَّا سَبْعَةَ رَكْبٍ – قَالَ – فَمَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الطَّرِيقِ فَوَضَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ احْفَظُوا عَلَيْنَا صَلاَتَنَا ‏”‏ ‏.‏ فَكَانَ أَوَّلَ مَنِ اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالشَّمْسُ فِي ظَهْرِهِ – قَالَ – فَقُمْنَا فَزِعِينَ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ ارْكَبُوا ‏”‏ ‏.‏ فَرَكِبْنَا فَسِرْنَا حَتَّى إِذَا ارْتَفَعَتِ الشَّمْسُ نَزَلَ ثُمَّ دَعَا بِمِيضَأَةٍ كَانَتْ مَعِي فِيهَا شَىْءٌ مِنْ مَاءٍ – قَالَ – فَتَوَضَّأَ مِنْهَا وُضُوءًا دُونَ وُضُوءٍ – قَالَ – وَبَقِيَ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ مَاءٍ ثُمَّ قَالَ لأَبِي قَتَادَةَ ‏”‏ احْفَظْ عَلَيْنَا مِيضَأَتَكَ فَسَيَكُونُ لَهَا نَبَأٌ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ أَذَّنَ بِلاَلٌ بِالصَّلاَةِ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ صَلَّى الْغَدَاةَ فَصَنَعَ كَمَا كَانَ يَصْنَعُ كُلَّ يَوْمٍ – قَالَ – وَرَكِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَرَكِبْنَا مَعَهُ – قَالَ – فَجَعَلَ بَعْضُنَا يَهْمِسُ إِلَى بَعْضٍ مَا كَفَّارَةُ مَا صَنَعْنَا بِتَفْرِيطِنَا فِي صَلاَتِنَا ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَمَا لَكُمْ فِيَّ أُسْوَةٌ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَمَا إِنَّهُ لَيْسَ فِي النَّوْمِ تَفْرِيطٌ إِنَّمَا التَّفْرِيطُ عَلَى مَنْ لَمْ يُصَلِّ الصَّلاَةَ حَتَّى يَجِيءَ وَقْتُ الصَّلاَةِ الأُخْرَى فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَلْيُصَلِّهَا حِينَ يَنْتَبِهُ لَهَا فَإِذَا كَانَ الْغَدُ فَلْيُصَلِّهَا عِنْدَ وَقْتِهَا ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ مَا تَرَوْنَ النَّاسَ صَنَعُوا ‏”‏ ‏.‏ قَالَ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَصْبَحَ النَّاسُ فَقَدُوا نَبِيَّهُمْ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَكُمْ لَمْ يَكُنْ لِيُخَلِّفَكُمْ ‏.‏ وَقَالَ النَّاسُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَيْدِيكُمْ فَإِنْ يُطِيعُوا أَبَا بَكْرٍ وَعُمَرَ يَرْشُدُوا ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَانْتَهَيْنَا إِلَى النَّاسِ حِينَ امْتَدَّ النَّهَارُ وَحَمِيَ كُلُّ شَىْءٍ وَهُمْ يَقُولُونَ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْنَا عَطِشْنَا ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ لاَ هُلْكَ عَلَيْكُمْ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَطْلِقُوا لِي غُمَرِي ‏”‏ ‏.‏ قَالَ وَدَعَا بِالْمِيضَأَةِ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُبُّ وَأَبُو قَتَادَةَ يَسْقِيهِمْ فَلَمْ يَعْدُ أَنْ رَأَى النَّاسُ مَاءً فِي الْمِيضَأَةِ تَكَابُّوا عَلَيْهَا ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَحْسِنُوا الْمَلأَ كُلُّكُمْ سَيَرْوَى ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَفَعَلُوا فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَصُبُّ وَأَسْقِيهِمْ حَتَّى مَا بَقِيَ غَيْرِي وَغَيْرُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – قَالَ – ثُمَّ صَبَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِي ‏”‏ اشْرَبْ ‏”‏ ‏.‏ فَقُلْتُ لاَ أَشْرَبُ حَتَّى تَشْرَبَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ إِنَّ سَاقِيَ الْقَوْمِ آخِرُهُمْ شُرْبًا ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَشَرِبْتُ وَشَرِبَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – قَالَ – فَأَتَى النَّاسُ الْمَاءَ جَامِّينَ رِوَاءً ‏.‏ قَالَ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَبَاحٍ إِنِّي لأُحَدِّثُ هَذَا الْحَدِيثَ فِي مَسْجِدِ الْجَامِعِ إِذْ قَالَ عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ انْظُرْ أَيُّهَا الْفَتَى كَيْفَ تُحَدِّثُ فَإِنِّي أَحَدُ الرَّكْبِ تِلْكَ اللَّيْلَةَ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ فَأَنْتَ أَعْلَمُ بِالْحَدِيثِ ‏.‏ فَقَالَ مِمَّنْ أَنْتَ قُلْتُ مِنَ الأَنْصَارِ ‏.‏ قَالَ حَدِّثْ فَأَنْتُمْ أَعْلَمُ بِحَدِيثِكُمْ ‏.‏ قَالَ فَحَدَّثْتُ الْقَوْمَ فَقَالَ عِمْرَانُ لَقَدْ شَهِدْتُ تِلْكَ اللَّيْلَةَ وَمَا شَعَرْتُ أَنَّ أَحَدًا حَفِظَهُ كَمَا حَفِظْتُهُ ‏.‏

আবু ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন (যুদ্ধ থেকে ফেরার সময়) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সামনে  বক্তৃতা করলেন। তিনি বললেনঃ আজকের বিকাল থেকে তোমাদের সারারাত পথ চলতে  হবে এবং ইনশাআল্লাহ আগামীকাল সকালে পানির কাছে উপস্থিত হবে। সুতরাং লোকজন সেখান থেকে এভাবে যাত্রা করল যে, কেউ কারো দিকে   ফিরেও তাকাচ্ছিল না। আবু কাতাদাহ্ বলেন- রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -ও পথ চলছিলেন। এক সময় রাত্রি দ্বিপ্রহর হয়ে গেল। আমি তাঁর পাশে পাশেই চলছিলাম। এ সময় রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তন্দ্রায় ঝিমুচ্ছিলেন। ঘুমের প্রভাবে এক সময় তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সওয়ারির উপর একদিকে ঝূকে পড়লেন। ঠিক সে সময় আমি তাঁর পাশে গিয়ে তাঁকে ঠেলে ধরলাম (অথাৎ-ঠেকনা দিলাম)। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারীর উপর সোজা হয়ে বসলেন , কিন্তু তাঁকে জাগালাম না। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চলতে থাকলেন এবং এ অবস্তায় রাতের অধিকাংশ সময় অতিক্রান্ত হলে সওয়ারির উপর থেকে আবার একদিকে ঝূকে পড়লেন। তখন আমি আবার তাঁকে সওয়ারির উপর তাঁকে না জাগিয়ে ঠেলে ধরলাম | এভাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারীর উপর সোজা হয়ে বসলেন। আবু ক্বাতাদাহ্ বলেন- এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার চলতে থাকলেন। রাত ভোর হয়ে আসলে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবার প্রথম দু’বারের চেয়ে বেশি করে একদিকে ঝুকে পড়লেন এমনকি  পড়ে যাওয়ার উপক্রম হল। তখন আমি পুনরায় ঠেস লাগিয়ে ধরলাম। এবার তিনি মাথা উঠিয়ে জিজ্ঞেস করেন – কে? আমি বললাম – আবু ক্বাতাদাহ্। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, এভাবে আমার পাশে পাশে কতক্ষন চলছ? আমি বললাম , আমি রাতের প্রথ্ম থেকেই এভাবে  আপনার সাথে চলছি। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেনঃ আল্লাহ তোমাকে হেফাজত করুন। কারন তুমি তাঁর নবী কে দেখাশুনা করেছ। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি কি কাউকে দেখতে পাচ্ছ? আমি বললাম  হাঁ এই তো একজন আরোহী | তারপর বললাম, এই তো আরও একজন আরোহী উপস্থিত হল।  এভাবে আমরা সাত জন একত্র হলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাস্তা থেকে কিছু সরে গিয়ে মাটিতে মাথা রাখলেন (অর্থাৎ- শুয়ে পড়লেন)। এ সময় তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বললেনঃ সলাতের খেয়াল রেখো। কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ই ছিলেন প্রথম ব্যাক্তি যিনি নিদ্রা থেকে জাগ্রত হন আর তখন সূর্যের আলো তাঁর পিঠের উপর এসে পড়েছিল। আবু ক্বাতাদাহ্ বলেন-এরপর আমারা সবাই ব্যতিব্যস্ত হয়ে উটে পড়লাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা সবাই যার যার সওয়ারীতে সওয়ার হও। তাই আমরা সওয়ারীতে চেপে যাত্রা করলাম। সূর্য বেশ কিছু উপরে উঠলে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওয়ারী থেকে অবতরন করে  আমার কাছে অল্প পানিসহ যে ওযুর পাত্র ছিল তা চেয়ে নিয়ে অন্য সময়ের চেয়ে সংক্ষিপ্ত করে ওযু করলেন। আবু ক্বাতাদাহ্ বললেন- এরপরও ঐ পাত্রে  কিছু পানি অবশিষ্ট থাকল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবু ক্বাতাদাহ্-কে বললেনঃ পাত্রটি রেখে দাও , দেখবে পরে বিস্ময়কর কাণ্ড ঘটবে। তখন বিলাল সলাতের আযান দিলে  রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথমে দু’রাক’আত (সুন্নাত) সলাত আদায় করলেন এবং প্রতিদিনের মত করে ফাজরের ফারজ সলাত আদায় করলেন। আবু ক্বাতাদাহ্ বলেন – অতঃপর সওয়ারীতে আরোহণ  করলে আমারাও সওয়ারিতে আরোহণ করে তাঁর সাথে রওয়ানা হলাম। এ সময়ে আমারা পরস্পর চুপিসারে বলাবলি করছিলাম যে, আমারা সলাতের ব্যাপারে যে অবহেলা প্রদর্শন করছিলাম তার কাফফারাহ্ বা ক্ষতিপুরন কীভাবে হবে? রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমার জীবন ও কাজ-কর্ম কি তোমাদের জন্য অনুসরণীও আদর্শ নয়? এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেনঃ ঘুমানোতে কোন দোষ বা অবহেলা নেই। অবহেলা তখনই বলা  হবে যদি কোন ব্যাক্তি সলাত না আদায় করে দেরি করে এবং অন্য সলাতের ওয়াক্ত হয়ে যায়। কোন সময় কারো যদি এরুপ হয়ে যায় সে যখন জাগ্রত হবে তখনই যেন সলাত আদায় করে নেয়। পরদিন সকালে যেন সে সময়মত সলাত আদায় করে। পরে তিনি বললেনঃ অন্য সবাই কী করছে তা কি জান? সকালে লোকজন যখন তাদের নবী কে দেখতে পেল না তখন আবু বাকর ও উমার তাদের বললেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের পিছনে আছেন। তিনি তোমাদের পিছনে ফেলে যেতে পারেন না। কিন্তু লোকজন বললঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের সামনে আছেন। (নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন) এ ব্যাপারে তারা যদি আবু বাকর ও ‘উমার-এর কথা মানতো তাহলে সঠিক কাজ করত।

আবু ক্বাতাদাহ্ বলেনঃ যখন বেলা বেড়ে দুপুর হল এবং সবকিছু সূর্যতাপে উপ্তপ্ত হয়ে উঠল তখন আমারা  লোকজনের কাছে গিয়ে পৌঁছলাম। তখন তারা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বলছিলঃ হে আল্লাহ্‌র রাসুল ! আমারা পিপাসায় মরে গেলাম। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না , তোমরা মরবে না। এরপর  তিনি বললেনঃ আমার ছোট পেয়ালাটা আনো। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওযুর পাত্রটাও চেয়ে নিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পেয়ালাতে পানি ঢালতে থাকলেন আর আবু ক্বাতাদাহ্ পান করাতে থাকলেন। লোকজন  যখন দেখল যে , পানি মাত্র একপাত্র আর এতগুলো লোক তখন তারা (পানি থেকে বঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে) ভিড় জমিয়ে তুলল। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা ধীরে সুস্থে পানি পান করতে থাকো। সবাইকে তৃপ্তি সহকারে পানি পান করানো যাবে। সতরাং লোকজন তাই করল। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পানি  ঢালছিলেন আর আমি (আবু ক্বাতাদাহ্) পান করাচ্ছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমি এবং রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছাড়া পানি পান করেত  আর কেউ অবশিষ্ট রইল না। তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পেয়ালার পানি ঢেলে আমাকে বললেনঃ পান করো  | আমি বললাম- হে আল্লাহ্‌র রাসুল ! আপনি পান না করা পর্যন্ত আমি পান করব না। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যিনি পান করান তিনি সবার শেষে পান করেন। আবু ক্বাতাদাহ্ বলেনঃ আমি তখন পানি পান করলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পান করলেন। পরে অবশ্য লোকজন পানি পান করার ফলে শান্ত মনে তৃপ্তি সহকারে যেতে থাকল।

হাদিসের বর্ণনাকারী সাবিত বলেছেন যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাবাহ ও এ কথা শুনে বললেনঃ তাহলে তো আপনি এ হাদীসটি সম্পর্কে ভাল জানেন। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কোন কওমের লোক? আমি বললাম, আমি আনসারদের একজন। তিনি বললেন, তাহলে বর্ণনা কর। কেননা, তুমি তোমার হাদিস সম্পর্কে নিশ্চয়ই ভালভাবে অবহিত আছ। ‘আবদুল্লাহ ইবনু রাবাহ বলেন- আমি ঐ রাতে কাফিলায় শারীক ছিলাম। তবে আমি জানতাম না যে , অন্য কেউও আমার মত হাদীসটি স্মরণ রেখেছেন।   (ই. ফা. ১৪৩৩ ই. সে. ১৪৪২)

১৪৪৯
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ صَخْرٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيدِ، حَدَّثَنَا سَلْمُ بْنُ زَرِيرٍ الْعُطَارِدِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيَّ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ كُنْتُ مَعَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي مَسِيرٍ لَهُ فَأَدْلَجْنَا لَيْلَتَنَا حَتَّى إِذَا كَانَ فِي وَجْهِ الصُّبْحِ عَرَّسْنَا فَغَلَبَتْنَا أَعْيُنُنَا حَتَّى بَزَغَتِ الشَّمْسُ – قَالَ – فَكَانَ أَوَّلَ مَنِ اسْتَيْقَظَ مِنَّا أَبُو بَكْرٍ وَكُنَّا لاَ نُوقِظُ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ مَنَامِهِ إِذَا نَامَ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ عُمَرُ فَقَامَ عِنْدَ نَبِيِّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يُكَبِّرُ وَيَرْفَعُ صَوْتَهُ بِالتَّكْبِيرِ حَتَّى اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا رَفَعَ رَأْسَهُ وَرَأَى الشَّمْسَ قَدْ بَزَغَتْ قَالَ ‏”‏ ارْتَحِلُوا ‏”‏ ‏.‏ فَسَارَ بِنَا حَتَّى إِذَا ابْيَضَّتِ الشَّمْسُ نَزَلَ فَصَلَّى بِنَا الْغَدَاةَ فَاعْتَزَلَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لَمْ يُصَلِّ مَعَنَا فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ يَا فُلاَنُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تُصَلِّيَ مَعَنَا ‏”‏ ‏.‏ قَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ أَصَابَتْنِي جَنَابَةٌ ‏.‏ فَأَمَرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَيَمَّمَ بِالصَّعِيدِ فَصَلَّى ثُمَّ عَجَّلَنِي فِي رَكْبٍ بَيْنَ يَدَيْهِ نَطْلُبُ الْمَاءَ وَقَدْ عَطِشْنَا عَطَشًا شَدِيدًا ‏.‏ فَبَيْنَمَا نَحْنُ نَسِيرُ إِذَا نَحْنُ بِامْرَأَةٍ سَادِلَةٍ رِجْلَيْهَا بَيْنَ مَزَادَتَيْنِ فَقُلْنَا لَهَا أَيْنَ الْمَاءُ قَالَتْ أَيْهَاهْ أَيْهَاهْ لاَ مَاءَ لَكُمْ ‏.‏ قُلْنَا فَكَمْ بَيْنَ أَهْلِكِ وَبَيْنَ الْمَاءِ ‏.‏ قَالَتْ مَسِيرَةُ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ ‏.‏ قُلْنَا انْطَلِقِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ قَالَتْ وَمَا رَسُولُ اللَّهِ فَلَمْ نُمَلِّكْهَا مِنْ أَمْرِهَا شَيْئًا حَتَّى انْطَلَقْنَا بِهَا فَاسْتَقْبَلْنَا بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهَا فَأَخْبَرَتْهُ مِثْلَ الَّذِي أَخْبَرَتْنَا وَأَخْبَرَتْهُ أَنَّهَا مُوتِمَةٌ لَهَا صِبْيَانٌ أَيْتَامٌ فَأَمَرَ بِرَاوِيَتِهَا فَأُنِيخَتْ فَمَجَّ فِي الْعَزْلاَوَيْنِ الْعُلْيَاوَيْنِ ثُمَّ بَعَثَ بِرَاوِيَتِهَا فَشَرِبْنَا وَنَحْنُ أَرْبَعُونَ رَجُلاً عِطَاشٌ حَتَّى رَوِينَا وَمَلأْنَا كُلَّ قِرْبَةٍ مَعَنَا وَإِدَاوَةٍ وَغَسَّلْنَا صَاحِبَنَا غَيْرَ أَنَّا لَمْ نَسْقِ بَعِيرًا وَهِيَ تَكَادُ تَنْضَرِجُ مِنَ الْمَاءِ – يَعْنِي الْمَزَادَتَيْنِ – ثُمَّ قَالَ ‏”‏ هَاتُوا مَا كَانَ عِنْدَكُمْ ‏”‏ ‏.‏ فَجَمَعْنَا لَهَا مِنْ كِسَرٍ وَتَمْرٍ وَصَرَّ لَهَا صُرَّةً فَقَالَ لَهَا ‏”‏ اذْهَبِي فَأَطْعِمِي هَذَا عِيَالَكِ وَاعْلَمِي أَنَّا لَمْ نَرْزَأْ مِنْ مَائِكِ ‏”‏ ‏.‏ فَلَمَّا أَتَتْ أَهْلَهَا قَالَتْ لَقَدْ لَقِيتُ أَسْحَرَ الْبَشَرِ أَوْ إِنَّهُ لَنَبِيٌّ كَمَا زَعَمَ كَانَ مِنْ أَمْرِهِ ذَيْتَ وَذَيْتَ ‏.‏ فَهَدَى اللَّهُ ذَاكَ الصِّرْمَ بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ فَأَسْلَمَتْ وَأَسْلَمُوا ‏.

‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন , আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কোন এক সফরে তাঁর সাথে ছিলাম। এক রাতে আমরা রাতের বেলায়ই পথ চলছিলাম | রাতের শেষ দিকে বিশ্রামের জন্য আমরা একস্থানে অবতরন করলে ঘুমের প্রভাবে আমাদের চোখ বন্ধ হয়ে আসলো। এ অবস্তায় সূর্য উদিত হলো। ‘ইমরান ইবনু হুসাইন বলেন, আমাদের মধ্যে সর্বপ্রথম যিনি ঘুম থেকে জেগে উটলেন তিনি আবু বাকর। আমাদের নীতি ছিল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমানোর পর নিজে নিজেই যতক্ষণ না জাগতেন ততক্ষন আমারা কেউ তাঁকে নিদ্রা থেকে জাগাতাম না। আবু বকরের পর যিনি প্রথম ঘুম থেকে জাগলেন তিনি ‘উমার। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পাশে গিয়ে দাড়িয়ে  উচ্চ শব্দে তাকবীর  বলতে শুরু করলেন। এতে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জেগে উঠলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা উটিয়ে দেখতে পেলেন সূর্য আগেই উদিত হয়েছে। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সবাইকে বললেনঃ  তোমরা এখান থেকে যাত্রা শুরু করো। এরপর তিনিও আমাদের সাথে যাত্রা করলেন। অতঃপর সূর্যের কিরণ আরো পরিস্কারভাবে  চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে তিনি সওয়ারী থামিয়ে অবতরন করলেন এবং আমাদেরকে সাথে করে ফাজরের সলাত আদায় করলেন। কিন্তু জৈনিক ব্যক্তি সবার থেকে দূরে থাকল এবং আমাদের সাথে সলাত আদায় করলেন না। সলাত শেষ করে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন তুমি কি কারনে আমাদের সাথে সলাত আদায় করলে না? সে বলল , হে আল্লাহ্‌র নবী , আমার জন্য গোসল ফারয হয়েছে (তাই সলাত আদায় করতে পারলাম না) তখন রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করতে বললেন। অতঃপর সে তায়াম্মুম করে সলাত আদায় করল। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  আমাকে একদল লোকের সাথে সম্মুখের দিকে আগে আগে পাঠিয়ে দিলেন যাতে আমরা পানি খুঁজে বের করি। আমরা ইতিমধ্যে যার পর নাই তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমরা পথ চলতে চলতে এক স্ত্রী লোককে দেখতে পেলাম। সে তার সওয়ারীর উপর দু’টি চামড়ার মশকের উপর দু’দিকে পা ঝুলিয়ে বসেছিল। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম , এখানে পানি কোথায় পাওয়া যাবে? সে বলে উঠল হায় ! হায় ! এখানে পানি তোমরা কোথায় পাবে? আমরা তাকে পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম , তোমার গোত্রের বসতি এলাকা থেকে পানি কত দূরে? সে বললঃ একদিন ও একরাতের পথের ব্যবধান। আমরা তাকে বললাম, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে চলো। সে বললঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার কি? এরপর আমরা আর তাকে নিজের ইচ্ছামত কোন কিছুই করতে দিলাম না। বরং তাকে ধরে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে নিয়ে আসলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন , সে আমাদেরকে যা বলেছিল তাঁকেও তাই বলল। সে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আরও জানালেন যে , সে ইয়াতিম শিশুর অভিভাবিকা। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উটকে বসাতে আদেশ করলে সেটাকে বসানো হল এবং  তিনি চামড়ার মশকের উপর দিকের মুখ দু’টিতে কুল্লি করে দিলেন। এরপর উটটিকে দাড় করানো হলো। আমরা তৃষ্ণার্ত চল্লিশ জনে সবাই এবার তৃষ্ণা দূর করে পানি পান করলাম। আমরা আমাদের মশক ও পানির পাত্রগুলি ভর্তি করে নিলাম এবং আমাদের সঙ্গী লোকটিকেও গোসল করালাম। তবে কোন উটকে পানি পান করালাম না। অথচ মশক তখনও পানির চাপে ফেটে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমাদের যার কাছে যা আছে নিয়ে এসো। সুতরাং আমরা ঐ মহিলার জন্য খেজুর ও খেজুরের টুকরা এনে জমা করলে সেগুলো দিয়ে তার জন্য একটি পুটলি বাঁধা হলো। (এগুলো দিয়ে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ এবার তুমি গিয়ে তোমার বাচ্চাদের খওয়াও। আর মনে রেখ যে, তোমার পানি আমরা আদৌ নেই নি। সে তার লোকদের নিকট ফিরে গিয়ে বললঃ আমি সবচেয়ে বড় জাদুকরের সাক্ষাৎ পেয়েছি। অথবা সে সম্ববত বলেছিল , একজন নবী র সাক্ষাৎ পেয়েছি। এমন-এমন বিস্ময়কর দেখলাম তার ব্যাপারটা আল্লাহ তাআলা ঐ মহিলার দ্বারা উক্ত জনপদকে হেদায়েত দান করলেন। সুতরাং সেও ইসলাম গ্রহণ করল এবং উক্ত জনপদের লোকেরাও ইসলাম গ্রহণ করল। (ই. ফা. ১৪৩৪ , ই. সে. ১৪৪৩)

১৪৫০
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ، أَخْبَرَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، حَدَّثَنَا عَوْفُ بْنُ أَبِي جَمِيلَةَ الأَعْرَابِيُّ، عَنْ أَبِي رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيِّ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ الْحُصَيْنِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَسَرَيْنَا لَيْلَةً حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ قُبَيْلَ الصُّبْحِ وَقَعْنَا تِلْكَ الْوَقْعَةَ الَّتِي لاَ وَقْعَةَ عِنْدَ الْمُسَافِرِ أَحْلَى مِنْهَا فَمَا أَيْقَظَنَا إِلاَّ حَرُّ الشَّمْسِ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِنَحْوِ حَدِيثِ سَلْمِ بْنِ زَرِيرٍ وَزَادَ وَنَقَصَ ‏.‏ وَقَالَ فِي الْحَدِيثِ فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ وَرَأَى مَا أَصَابَ النَّاسَ وَكَانَ أَجْوَفَ جَلِيدًا فَكَبَّرَ وَرَفَعَ صَوْتَهُ بِالتَّكْبِيرِ حَتَّى اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِشِدَّةِ صَوْتِهِ بِالتَّكْبِيرِ فَلَمَّا اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَكَوْا إِلَيْهِ الَّذِي أَصَابَهُمْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ ضَيْرَ ارْتَحِلُوا ‏”‏ ‏.‏ وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ ‏

‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন , কোন এক সফরে আমরা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলাম। আমরা রাতের বেলা পথ চললাম। রাতের শেষভাগে ভোর অল্প কিছু পূর্বে আমরা এমনভাবে পড়লাম (অর্থাৎ ক্লান্তিতে শরীর এলিয়ে দিলাম) যার চেয়ে অন্য কোন পড়াই কোন মুসাফিরের কাছে অধিক পছন্দনীয় বা সুখকর নয়। একমাত্র সূর্যতাপে আমরা জেগে উটলাম। …… এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি হাদীসটি সালাম ইবনু যারীর বর্ণিত  হাদিসের অনুরূপ করে বর্ণনা করলেন। এ বর্ণনাতে তিনি হ্রাস-বৃদ্ধিও করলেন। হাদীসটিতে তিনি উল্লেখ করেছেন-‘উমার ইবনু খাত্তাব জেগে উটে যখন লোকদের অবস্থা দেখলেন তখন উচ্চঃস্বরে তাকবীর শুরু করলেন। ‘উমার ছিলেন উচু কন্ঠস্বরের লোক। তাঁর গুরুগম্ভীর শব্দে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জেগে উঠলেন। তিনি জেগে উটলে লোকজন তাঁর কাছে তাদের অবস্তা জানিয়ে অভিযোগ করলে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন- এ ঘুমে কোন ক্ষতি নেই। তোমরা এখান থেকে যাত্রা করো। এরপর তিনি হাদীসটি বর্ণনা করলেন। (ই. ফা. ১৪৩৫,  ই. সে. ১৪৪৪)

১৪৫১
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ رَبَاحٍ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ فِي سَفَرٍ فَعَرَّسَ بِلَيْلٍ اضْطَجَعَ عَلَى يَمِينِهِ وَإِذَا عَرَّسَ قُبَيْلَ الصُّبْحِ نَصَبَ ذِرَاعَهُ وَوَضَعَ رَأْسَهُ عَلَى كَفِّهِ ‏.

আবু ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন , রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফররত অবস্তায় রাতে ঘুম থেকে জাগ্রত হলে তিনি ডান কাতে শুয়ে থাকতেন। আর ভোরের কাছাকাছি সময়ে জাগ্রত হলে তাঁর বাহু দাঁড় করিয়ে হাতের তালুতে ভর করে শুয়ে থাকতেন। (ই. ফা. নেই, ই. সে. ১৪৪৫)

১৪৫২
حَدَّثَنَا هَدَّابُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ نَسِيَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ قَتَادَةُ وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ কোন সলাত করতে ভুলে গেলে যখন স্মরণ হবে তখনই যেন তা আদায় করে নেয়। এ ব্যবস্তা গ্রহণ করা ছাড়া আর কোন কাফফারাহ্ তাকে দিতে হবে না।

হাদিসের বর্ণনাকারী ক্বাতাদাহ্ তার বর্ণনায় “আমার স্মরণের জন্য সলাত আদায় করো’” – (সূরা ত্ব-হা ২০ : ১৪)  এ আয়াতটি উল্লেখ করেছেন। (ই. ফা. ১৪৩৬ , ই. সে. ১৪৪৬)

১৪৫৩
وَحَدَّثَنَاهُ يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَسَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، جَمِيعًا عَنْ أَبِي عَوَانَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَذْكُرْ ‏ “‏ لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ ‏”‏ ‏.

আবু আওয়ানাহ্ , ক্বাতাদাহ্ , আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এর বর্ণনাতে “এর কাফফারাহ্ এ (স্মরণ হলেই আদায় করে নেয়া) ছাড়া আর কিছুই নয়”- কথাটি উল্লেখ করা হয়নি। (ই. ফা. ১৪৩৭ , ই. সে. ১৪৪৭)

১৪৫৪
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ نَسِيَ صَلاَةً أَوْ نَامَ عَنْهَا فَكَفَّارَتُهَا أَنْ يُصَلِّيَهَا إِذَا ذَكَرَهَا ‏”‏ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন , কেউ কোন সলাত আদায় করতে ভুলে গেলে অথবা ঘুমিয়ে পড়লে তার কাফফারাহ্ হলো যখনই স্মরণ হবে তখনই তা আদায় করে নিবে।   (ই. ফা. ১৪৩৮ , ই. সে. ১৪৪৮)

১৪৫৫. নাস্‌র ইবনু ‘আলী আল জাহ্‌যামী (রহঃ) ….. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন , রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ ঘুম থেকে জাগতে না পারার কারনে সলাত আদায় করতে না পারলে অথবা সলাত আদায় করতে ভুলে গেলে যখনই স্মরণ হবে তখনই সলাত আদায় করবে। কেননা, মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেনঃ ” আমার স্মরণের জন্য সলাত আদায় করো ”- (সূরা ত্ব-হা ২০ : ১৪) (ই. ফা. ১৪৩৯ ,ই.সে. ১৪৪৯)
[বিঃদ্রঃ হাদিস নং ১৪৫৫ দুইবার এসেছে, তাই প্রথমটি হাদিস নং ১৪৫৪ এর সাথে সংযুক্ত করে দেওয়া হল।]

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]