সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা মুসাফিরের সালাত ও তার কসর অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ১৫১৩ – ১৫৬০

৬. অধ্যায়ঃ
আবাসে দু’ ওয়াক্তের সলাত একত্রে আদায়

১৫১৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ جَمِيعًا وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ جَمِيعًا فِي غَيْرِ خَوْفٍ وَلاَ سَفَرٍ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভীতিকর অবস্থা কিংবা সফররত অবস্থা ছাড়াই এবং ‘আস্‌রের সলাত একসাথে এবং মাগরিব ও ‘ইশার সলাত একসাথে আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৪৯৮, ই.সে. ১৫০৭)

১৫১৪
وَحَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، وَعَوْنُ بْنُ سَلاَّمٍ، جَمِيعًا عَنْ زُهَيْرٍ، – قَالَ ابْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، – حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ جَمِيعًا بِالْمَدِينَةِ فِي غَيْرِ خَوْفٍ وَلاَ سَفَرٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو الزُّبَيْرِ فَسَأَلْتُ سَعِيدًا لِمَ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ كَمَا سَأَلْتَنِي فَقَالَ أَرَادَ أَنْ لاَ يُحْرِجَ أَحَدًا مِنْ أُمَّتِهِ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সফররত বা ভীতিকর অবস্থা ছাড়াই রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনায় অবস্থানকালে যুহর এবং ‘আস্‌রের সলাত একসাথে আদায় করেছেন।

আবুয্ যুবায়র বলেছেনঃ (এ হাদীস শুনে) আমি সা‘ঈদ ইবনু যুবায়রকে জিজ্ঞেস করলাম যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন? তিনি বললেনঃ তুমি যেন আমাকে জিজ্ঞেস করলে আমিও তেমনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে (বিষয়টি) জিজ্ঞেস করেছিলাম। জবাবে তিনি আমাকে বলেছিলেন, এ দ্বারা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইচ্ছা ছিল তাঁর উম্মাতের মনে যেন কোন প্রকার দ্বিধা-দ্বন্দ্ব না থাকে। [২৭] (ই.ফা. ১৪৯৯, ই.সে. ১৫০৮)






[২৭] এ মর্মে দু’টি উল্লেখযোগ্য মত হ’ল- (১) এ হাদীস অসুস্থতাজনিত অবস্থার উপর প্রযোজ্য-এটা আহমাদ বিন হাম্বাল ও কাজী হুসায়ন (রহঃ)-এর অভিমত। (২) ইবনু সীরীন এবং কতক মালিকী ও শাফি’ঈ বিদ্বানের মতে অভ্যাসে পরিণত না করে একান্ত প্রয়োজনে যুহর, ‘আস্‌র একত্রে এবং মাগরিব ‘ইশা একত্রে আদায় করা এ হাদীস অনুপাতে জায়িয।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

১৫১৫
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، – يَعْنِي ابْنَ الْحَارِثِ – حَدَّثَنَا قُرَّةُ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَمَعَ بَيْنَ الصَّلاَةِ فِي سَفْرَةٍ سَافَرَهَا فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ فَجَمَعَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ ‏.‏ قَالَ سَعِيدٌ فَقُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ مَا حَمَلَهُ عَلَى ذَلِكَ قَالَ أَرَادَ أَنْ لاَ يُحْرِجَ أُمَّتَهُ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাবূক যুদ্ধকালে কোন এক সফরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (একাধিক) সলাত একসাথে করেছিলেন। সুতরাং তিনি যুহর এবং ‘আস্‌র আর মাগরিব ও ‘ইশার সলাত একত্রে আদায় করেছিলেন।

সা‘ঈদ ইবনু যুহায়র বর্ণনা করেছেন- আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাসকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তিনি কী কারণে এরূপ করেছিলেন জবাবে সা‘ঈদ ইবনু যুবায়র বললেন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উম্মাতকে বাধ্য করতে বা কষ্ট দিতে চাননি। (ই.ফা. ১৫০০, ই.সে. ১৫০৯)

১৫১৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ، عَامِرٍ عَنْ مُعَاذٍ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ فَكَانَ يُصَلِّي الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ جَمِيعًا وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ جَمِيعًا ‏.

মু’আয (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা তাবূক অভিযানে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলাম। (এ সফরে) তিনি যুহর ও ‘আস্‌র এবং মাগরিব ও ‘ইশার সলাত একসাথে একই ওয়াক্তে আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫০১, ই.সে. ১৫১০)

১৫১৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، – يَعْنِي ابْنَ الْحَارِثِ – حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الزُّبَيْرِ، حَدَّثَنَا عَامِرُ بْنُ وَاثِلَةَ أَبُو الطُّفَيْلِ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ، قَالَ جَمَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَبَيْنَ الْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ ‏.‏ قَالَ فَقُلْتُ مَا حَمَلَهُ عَلَى ذَلِكَ قَالَ فَقَالَ أَرَادَ أَنْ لاَ يُحْرِجَ أُمَّتَهُ ‏.

মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তাবূক অভিযানকালে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর ও ‘আস্‌রের সলাত এবং মাগরীব ও ‘ইশার সলাত একসাথে আদায় করেছেন। আবূ তূফায়ল বর্ণনা করেছেনঃ আমি মু’আয ইবনু জাবালকে জিজ্ঞেস করলাম, কী কারণে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন? জবাবে মু’আয ইবনু জাবাল বললেন- তিনি তাঁর উম্মাতকে বাধ্যবাধকতার মধ্যে ফেলতে বা কষ্ট দিতে চাননি (এ কারণেই তিনি এরূপ করেছেন)। (ই.ফা. ১৫০২, ই.সে. ১৫১১)

১৫১৮
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَأَبُو سَعِيدٍ الأَشَجُّ – وَاللَّفْظُ لأَبِي كُرَيْبٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ جَمَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ بِالْمَدِينَةِ فِي غَيْرِ خَوْفٍ وَلاَ مَطَرٍ ‏.‏ فِي حَدِيثِ وَكِيعٍ قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ لِمَ فَعَلَ ذَلِكَ قَالَ كَىْ لاَ يُحْرِجَ أُمَّتَهُ ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ قِيلَ لاِبْنِ عَبَّاسٍ مَا أَرَادَ إِلَى ذَلِكَ قَالَ أَرَادَ أَنْ لاَ يُحْرِجَ أُمَّتَهُ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মাদীনায় অবস্থানরত কোন ভীতিকর পরিস্থিতি কিংবা বৃষ্টি-বাদল ছাড়াই রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর, ‘আস্‌র, মাগরিব এবং ‘ইশার সলাত আদায় করেছেন।

(ওয়াকী’ বর্ণিত হাদীসে) এ কথার উল্লেখ রয়েছে যে, সা‘ঈদ ইবনু যুবায়র বলেছেন- আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বললাম, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ করেছেন এজন্যে যাতে তাঁর উম্মাতের কোন কষ্ট না হয়।

তবে আবূ মু’আবিয়াহ্‌ বর্ণিত হাদীসে আছে যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) -কে বলা হ’ল- রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী উদ্দেশে এরূপ করেছেন? জবাবে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস বললেনঃ তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চেয়েছেন তাঁর উম্মাতের যেন কোন কষ্ট না হয়। (ই.ফা. ১৫০৩ ই.সে. ১৫১২)

১৫১৯
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثَمَانِيًا جَمِيعًا وَسَبْعًا جَمِيعًا ‏.‏ قُلْتُ يَا أَبَا الشَّعْثَاءِ أَظُنُّهُ أَخَّرَ الظُّهْرَ وَعَجَّلَ الْعَصْرَ وَأَخَّرَ الْمَغْرِبَ وَعَجَّلَ الْعِشَاءَ ‏.‏ قَالَ وَأَنَا أَظُنُّ ذَاكَ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিছনে আট রাক‘আত (ফারয্‌) সলাত এবং একত্রে সাত রাক‘আত সলাত আদায় করেছি। আমি বললামঃ হে আবুশ্‌ শা’সা! আমার মনে হয় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহরের সলাত দেরী করে শেষ ওয়াক্তে এবং ‘আস্‌রের সলাত প্রথমভাগে আদায় করেছেন। আর তেমনি মাগরিবের সলাত দেরী করে এবং ‘ইশার সলাত প্রথমভাগে আদায় করেছেন। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আমিও তাই মনে করি। (ই.ফা. ১৫০৪,ই.সে. ১৫১৩)

১৫২০
وَحَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى بِالْمَدِينَةِ سَبْعًا وَثَمَانِيًا الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মাদীনায় অবস্থানরত অবস্থায় রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাত রাক‘আত ও আট রাক‘আত সলাত একত্রে আদায় করেছেন। অর্থাৎ যুহর ও ‘আস্‌রের আট রাক‘আত একসাথে এবং মাগরিব ও ‘ইশার সাত রাক‘আত এক সাথে আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৫০৫, ই.সে. ১৫১৪)

১৫২১
وَحَدَّثَنِي أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْخِرِّيتِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ خَطَبَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ يَوْمًا بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى غَرَبَتِ الشَّمْسُ وَبَدَتِ النُّجُومُ وَجَعَلَ النَّاسُ يَقُولُونَ الصَّلاَةَ الصَّلاَةَ – قَالَ – فَجَاءَهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ لاَ يَفْتُرُ وَلاَ يَنْثَنِي الصَّلاَةَ الصَّلاَةَ ‏.‏ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَتُعَلِّمُنِي بِالسُّنَّةِ لاَ أُمَّ لَكَ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَمَعَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَالْمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ ‏.‏ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ شَقِيقٍ فَحَاكَ فِي صَدْرِي مِنْ ذَلِكَ شَىْءٌ فَأَتَيْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ فَسَأَلْتُهُ فَصَدَّقَ مَقَالَتَهُ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন ‘আস্‌রের সলাতের পর ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস আমাদের সামনে বক্তব্য পেশ করতে থাকলেন। এ অবস্থায় সূর্য ডুবে গেল এবং তারকারাজি দৃষ্টিগোচর হতে থাকল। তখন লোকজন বলতে শুরু করল, সলাত! সলাত! (অর্থাৎ সলাতের সময় চলে যাচ্ছে, সলাত আদায় করুন)। ‘আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব বলেনঃ এ সময় বানূ তামীম গোত্রের একজন লোক তাঁর কাছে আসল এবং শান্ত ও বিরত না হয়ে বারবার আস্‌ সলাত (সলাত! সলাত!) বলে চলল। তা দেখে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ তোমার সর্বনাশ হোক! তুমি কি আমাকে সুন্নাত (রসূলের পদ্ধতি) শিখাচ্ছ? পরে তিনি বললেনঃ আমি দেখেছি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুহর ও ‘আস্‌রের সলাত এবং মাগরিব ও ‘ইশার সলাত একত্র করে আদায় করেছেন।

‘আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব বলেন, এ কথা শুনে আমার মনে কিছু প্রশ্ন জাগল। তাই আমি আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ)-এর কাছে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কথার সত্যতা স্বীকার করলেন। (ই.ফা. ১৫০৬, ই.সে. ১৫১৫)

১৫২২
وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ حُدَيْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ الْعُقَيْلِيِّ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ لاِبْنِ عَبَّاسٍ الصَّلاَةَ فَسَكَتَ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ الصَّلاَةَ ‏.‏ فَسَكَتَ ثُمَّ قَالَ الصَّلاَةَ فَسَكَتَ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ لاَ أُمَّ لَكَ أَتُعَلِّمُنَا بِالصَّلاَةِ وَكُنَّا نَجْمَعُ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব আল ‘উক্বায়লী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলল- সলাতের সময় হয়েছে, সলাত আদায় করুন। কিন্তু তিনি চুপ করে রইলেন। সে আবার বলল- সলাত আদায় করুন। তিনি এবারও চুপ করে থাকলেন। লোকটি পুনরায় বলল- সলাতের সময় হয়েছে, সলাত আদায় করুন। এবার ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেনঃ তুমি আমাকে সলাত সম্পর্কিত ব্যাপারে শিখাচ্ছ? আমরা তো রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে দু’ওয়াক্ত সলাত একসাথে আদায় করতাম। (ই.ফা. ১৫০৭, ই.সে. ১৫১৬)

৭. অধ্যায়ঃ
সলাত শেষে ডানে-বামে ফেরার বৈধতা

১৫২৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لاَ يَجْعَلَنَّ أَحَدُكُمْ لِلشَّيْطَانِ مِنْ نَفْسِهِ جُزْءًا لاَ يَرَى إِلاَّ أَنَّ حَقًّا عَلَيْهِ أَنْ لاَ يَنْصَرِفَ إِلاَّ عَنْ يَمِينِهِ أَكْثَرُ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْصَرِفُ عَنْ شِمَالِهِ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমাদের মধ্য হতে কেউ যেন তার পক্ষ থেকে শাইত্বনের জন্য কোন অংশ নির্ধারণ না করে। অর্থাৎ সে যেন এরূপ মনে না করে যে, সলাত শেষে ডান দিকে ছাড়া অন্য কোন দিকে মুখ ফিরানো যাবে না। কেননা আমি অধিকাংশ সময় রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বাম দিকে মুখ ফিরাতে দেখেছি। (ই.ফা. ১৫০৮, ই.সে. ১৫১৭)

১৫২৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، وَعِيسَى بْنُ يُونُسَ، ح وَحَدَّثَنَاهُ عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى، جَمِيعًا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.

ইসহাক্ব ইবনু ইব্রাহীম, ‘আলী ইবনু খশ্রাম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন উভয়ে আ’মাশ থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫০৯, ই.সে. ১৫১৮)

১৫২৫
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنِ السُّدِّيِّ، قَالَ سَأَلْتُ أَنَسًا كَيْفَ أَنْصَرِفُ إِذَا صَلَّيْتُ عَنْ يَمِينِي أَوْ عَنْ يَسَارِي قَالَ أَمَّا أَنَا فَأَكْثَرُ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْصَرِفُ عَنْ يَمِينِهِ ‏.

ইসমা‘ঈল ইবনু ‘আবদুর রহমান আস্‌ সুদ্দী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি সলাত শেষ করে কোন্‌ দিকে মুখ ফিরাব- ডানে না বাঁয়ে? তিনি বললেনঃ আমি অধিকাংশ সময় রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখেছি (সলাত শেষ করে) ডান দিকে মুখ ফিরাতেন। (ই.ফা. ১৫১০, ই.সে ১৫১৯)

১৫২৬
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنِ السُّدِّيِّ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَنْصَرِفُ عَنْ يَمِينِهِ ‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সলাত শেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ডানদিকে (মুখ) ফিরাতেন। (ই.ফা. ১৫১১, ই.সে. ১৫২০)

৮.অধ্যায়ঃ
(মুক্তাদীর) ইমামের ডানপাশে থাকা মুস্তাহাব হওয়া

১৫২৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ مِسْعَرٍ، عَنْ ثَابِتِ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنِ ابْنِ الْبَرَاءِ، عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَحْبَبْنَا أَنْ نَكُونَ عَنْ يَمِينِهِ يُقْبِلُ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ – قَالَ – فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ ‏ “‏ رَبِّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ – أَوْ تَجْمَعُ – عِبَادَكَ ‏”‏ ‏.

বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর পিছনে সলাত আদায় করতাম তখন পিছনে তাঁর ডান দিকে দাঁড়ানো পছন্দ করতাম যাতে তিনি ঘুরে বসলে আমাদের দিকে মুখ করে বসেন। বারা ইবনু ‘আযিব বলেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, “হে আমার রব! যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে পুনরায় জীবিত করবে; অথবা বলেছেন, একত্রিত করবে সেদিনের ‘আযাব থেকে আমাকে রক্ষা কর।” (ই.ফা. ১৫১২, ই.সে. ১৫২১)

১৫২৮
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو كُرَيْبٍ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مِسْعَرٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَلَمْ يَذْكُرْ يُقْبِلُ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ ‏.

মিস‘আর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন- তবে এ সানাদে বর্ণিত হাদীসটিতে তিনি “আমাদের দিকে ঘুরে বসেন” কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৫১৩,ই.সে. ১৫২২)

৯. অধ্যায়ঃ
মুয়ায্‌যিন ইক্বামাত দেয়া শুরু করলে নাফ্‌ল সলাত শুরু করা মাকরূহ

১৫২৯
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ وَرْقَاءَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ صَلاَةَ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةُ ‏”‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে ফরয সলাত ছাড়া অন্য সলাতের নিয়্যাত করা যাবে না। (ই.ফা. ১৫১৪, ই.সে ১৫২৩)

১৫৩০
وَحَدَّثَنِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ وَابْنُ رَافِعٍ قَالاَ حَدَّثَنَا شَبَابَةُ حَدَّثَنِي وَرْقَاءُ بِهَذَا الإِسْنَادِ

মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম ও ইবনু রাফি’ (রহঃ) শাবাবাহ্ (রহঃ) হতে, তিনি ওয়ারক্বা (রহঃ) সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ১৪১৫, ই.সে. ১৫২৩-ক)

১৫৩১
وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَطَاءَ بْنَ يَسَارٍ، يَقُولُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ “‏ إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ صَلاَةَ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةُ ‏”‏ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ফরয সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে তখন উক্ত ফরয ব্যতীত অন্য কোন সলাত আদায় করা যাবে না। (ই.ফা. ১৫১৬, ই.সে. ১৫২৩-খ)

১৫৩২
وَحَدَّثَنَاهُ عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ إِسْحَاقَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.

যাকারিয়্যা ইবনু ইসহাক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উক্ত সানাদে অনুরূপ বিষয়বস্তু সম্বলিত হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫১৭, ই.সে. ১৫২৪)

১৫৩৩
وَحَدَّثَنَا حَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ بِمِثْلِهِ ‏.‏ قَالَ حَمَّادٌ ثُمَّ لَقِيتُ عَمْرًا فَحَدَّثَنِي بِهِ وَلَمْ يَرْفَعْهُ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছে। হাম্মাদ বর্ণনা করেছেন- অতঃপর আমি ‘উমার ইবনু খাত্ত্বাবের সাথে সাক্ষাৎ করলে তিনি আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করে শুনালেন। তবে তিনি হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেননি। (ই.ফা. ১৫১৮, ই.সে. ১৫২৫)

১৫৩৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ ابْنِ بُحَيْنَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ بِرَجُلٍ يُصَلِّي وَقَدْ أُقِيمَتْ صَلاَةُ الصُّبْحِ فَكَلَّمَهُ بِشَىْءٍ لاَ نَدْرِي مَا هُوَ فَلَمَّا انْصَرَفْنَا أَحَطْنَا نَقُولُ مَاذَا قَالَ لَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ لِي ‏ “‏ يُوشِكُ أَنْ يُصَلِّيَ أَحَدُكُمُ الصُّبْحَ أَرْبَعًا ‏”‏ ‏.‏ قَالَ الْقَعْنَبِيُّ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَالِكٍ ابْنُ بُحَيْنَةَ عَنْ أَبِيهِ ‏.‏ قَالَ أَبُو الْحُسَيْنِ مُسْلِمٌ وَقَوْلُهُ عَنْ أَبِيهِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ خَطَأٌ ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু মালিক বুহায়নাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদিন ফাজ্‌রের সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাতরত জনৈক ব্যক্তির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে কিছু বললেন যা আমরা বুঝতে পারলাম না। সলাত শেষে আমরা তাকে ঘিরে ধরলাম। আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলামঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাকে কী বললেন? সে বলল, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ মনে হচ্ছে কেউ ফাজ্‌রের সলাত চার রাক‘আত আদায় করছে। ক্বা’নাবী বর্ণনা করেছেন- ‘আবদুল্লাহ ইবনু মালিক ইবনু বুহায়নাহ্‌ তার পিতা বুহায়নাহ্‌ থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইমাম মুসলিম বলেছেন যে, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মালিক তার পিতা বুহাইনাহ্‌ থেকে বর্ণনা করেন ক্বা’নাবীর এ উক্তি ভুল। (ই.ফা. ১৫১৯, ই.সে. ১৫২৬)

১৫৩৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ بُحَيْنَةَ، قَالَ أُقِيمَتْ صَلاَةُ الصُّبْحِ فَرَأَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يُصَلِّي وَالْمُؤَذِّنُ يُقِيمُ فَقَالَ ‏ “‏ أَتُصَلِّي الصُّبْحَ أَرْبَعًا ‏”‏ ‏.

ইবনু বুহায়না (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন ফাজ্‌রের সলাতের ইক্বামাত দেয়া হলে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনৈক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, মুয়ায্‌যিন ইক্বামাত দিচ্ছে আর সে লোকটি সলাত আদায় করছে। তখন তিনি তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি কি ফাজ্‌রের (ফরয ) সলাত চার রাক‘আত আদায় করবে? (ই.ফা. ১৫২০, ই.সে. ১৫২৭)

১৫৩৬
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ الْجَحْدَرِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ يَعْنِي ابْنَ زَيْدٍ، ح وَحَدَّثَنِي حَامِدُ بْنُ عُمَرَ الْبَكْرَاوِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ يَعْنِي ابْنَ زِيَادٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، كُلُّهُمْ عَنْ عَاصِمٍ، ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْفَزَارِيُّ، عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَرْجِسَ، قَالَ دَخَلَ رَجُلٌ الْمَسْجِدَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي صَلاَةِ الْغَدَاةِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ فِي جَانِبِ الْمَسْجِدِ ثُمَّ دَخَلَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا سَلَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ يَا فُلاَنُ بِأَىِّ الصَّلاَتَيْنِ اعْتَدَدْتَ أَبِصَلاَتِكَ وَحْدَكَ أَمْ بِصَلاَتِكَ مَعَنَا ‏”‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু সারজিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি মাসজিদে আসল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সে সময় ফাজ্‌রের সলাত আদায় করেছিলেন। লোকটি মাসজিদের এক পাশে গিয়ে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সলাতে শামিল হ’ল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাম ফেরার পর তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে অমুক! তুমি কোন্‌ দু’ রাক‘আত সলাতকে ফরয সলাতরূপে গণ্য করলে? একাকী যে দু’রাক‘আত আদায় করলে সে দু’রাক‘আতকে, না আমাদের সাথে যে দু’ রাক‘আত আদায় করলে সে দু’ রাক‘আতকে? [২৮] (ই.ফা ১৫২১, ই.সে. ১৫২৮)






[২৮] ইমাম নাবাবী (রহঃ) বলেন, এ হাদীস ইক্বামাতের পর কোন সলাত আদায় না করার দলীল যদিও ইমামের সাথে সলাতে গিয়ে মিলিত হতে পারে এবং যে ব্যক্তি বলে প্রথম বা দ্বিতীয় রাক‘আত ইমামের সাথে পেলে সুন্নাত আদায় করা যাবে- এ হাদীস তার বক্তব্যকে প্রত্যাখান করছে।

(সুফ্‌লিন শারহে নাবাবী-১ম খন্ড ২৪৭ পৃষ্ঠা)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

১০. অধ্যায়ঃ
মাসজিদে প্রবেশের সময় কি বলবে

১৫৩৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ، – أَوْ عَنْ أَبِي أُسَيْدٍ، – قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ ‏.‏ وَإِذَا خَرَجَ فَلْيَقُلِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ مُسْلِمٌ سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ يَحْيَى يَقُولُ كَتَبْتُ هَذَا الْحَدِيثَ مِنْ كِتَابِ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ ‏.‏ قَالَ بَلَغَنِي أَنَّ يَحْيَى الْحِمَّانِيَّ يَقُولُ وَأَبِي أُسَيْدٍ ‏.

আবু উসায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন মাসজিদে প্রবেশ করবে তখন বলবেঃ ”আল্ল-হুম্মাফ তাহ্‌লী আব্‌ওয়া-বা রহ্‌মাতিক” (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি তোমার অনুগ্রহের দরজা আমার জন্য খুলে দাও)। যখন বের হয়ে যাবে, তখন বলবে- ”আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্‌আলুকা মিন ফায্‌লিক” (অর্থাৎ- আমি আপনার কাছে আপনার অনুগ্রহ প্রার্থী)।

ইমাম মুসলিম বলেছেনঃ আমি ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু ইয়াহ্‌ইয়া (রহঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন- আমি সুলায়মান ইবনু হিলালের একটি গ্রন্থ থেকে এ হাদীসটি লিপিবদ্ধ করেছি। তিনি আরো বলেছেন যে, ইয়াহ্‌ইয়া আল্‌ হিমানী আবূ উসায়দ থেকে বর্ননা করেছেন। (ই.ফা. ১৫২২, ই.সে. ১৫২৯)

১৫৩৮
وَحَدَّثَنَا حَامِدُ بْنُ عُمَرَ الْبَكْرَاوِيُّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، حَدَّثَنَا عُمَارَةُ بْنُ غَزِيَّةَ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ سَعِيدِ بْنِ سُوَيْدٍ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِي حُمَيْدٍ، أَوْ عَنْ أَبِي أُسَيْدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ ‏.

’আব্দুল মালিক ইবনু সা‘ঈদ ইবনু সুওয়াইদ আল আনসারী (রাঃ) এবং আবূ হুমায়দ অথবা আবূ উসায়দ (রাঃ) এর মাধ্যমে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫২৩, ই.সে. ১৫৩০)

১১. অধ্যায়ঃ
দু’ রাক‘আত তাহিয়্যাতুল মাসজিদ আদায় মুস্তাহাব এবং দু’ রাক‘আত আদায়ের পুর্বে বসা মাকরুহ এবং এটা সর্বাবস্থায় পালনীয়

১৫৩৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ بْنِ قَعْنَبٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ عَامِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمٍ الزُّرَقِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يَجْلِسَ ‏”‏ ‏.

আবু ক্বাতাদাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মাসজিদে প্রবেশ করলে বসার আগেই যেন দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করে। (ই.ফা. ১৫২৪, ই.সে. ১৫৩১)

১৫৪০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا حُسَيْنُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ زَائِدَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ يَحْيَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ سُلَيْمِ بْنِ خَلْدَةَ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، صَاحِبِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ بَيْنَ ظَهْرَانَىِ النَّاسِ – قَالَ – فَجَلَسْتُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَرْكَعَ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ تَجْلِسَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ رَأَيْتُكَ جَالِسًا وَالنَّاسُ جُلُوسٌ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَإِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلاَ يَجْلِسْ حَتَّى يَرْكَعَ رَكْعَتَيْنِ ‏”‏ ‏.

রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সহাবী আবু ক্বাতাদাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমি মাসজিদে প্রবেশ করে দেখতে পেলাম রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকজনের মধ্যে বসে আছেন। সুতরাং আমিও গিয়ে বসে পড়লাম। এ দেখে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ সবার আগে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতে তোমার কি অসুবিধা ছিল? আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! আমি দেখলাম আপনি বসে আছেন এবং আরো অনেক লোক বসে আছে (তাই আমিও বসে আদায় করেছি)। তিনি বললেন, তোমরা কেউ কোন সময় মাসজিদে প্রবেশ করলে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় না করে বসবে না। (ই.ফা. ১৫২৫, ই.সে. ১৫৩২)

১৫৪১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ جَوَّاسٍ الْحَنَفِيُّ أَبُو عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ الأَشْجَعِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كَانَ لِي عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم دَيْنٌ فَقَضَانِي وَزَادَنِي وَدَخَلْتُ عَلَيْهِ الْمَسْجِدَ فَقَالَ لِي ‏ “‏ صَلِّ رَكْعَتَيْنِ ‏”‏ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আমার কিছু পাওনা ছিল। তিনি আমাকে তা পরিশোধ করে দিলেন এবং অধিক পরিমানেই দিলেন। আমি একদিন মাসজিদে তার কাছে গেলে তিনি আমাকে বললেনঃ দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করে নাও। (ই.ফা. ১৫২৬, ই.সে. ১৫৩৩)

১২. অধ্যায়ঃ
সফরে থেকে ফিরে এসে প্রথমে মাসজিদে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করা মুস্তাহাব

১৫৪২
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَارِبٍ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ اشْتَرَى مِنِّي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعِيرًا فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ أَمَرَنِي أَنْ آتِيَ الْمَسْجِدَ فَأُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট থেকে একটি উট কিনে ছিলেন। অতঃপর তিনি মাদীনায় আগমন করলে আমাকে মাসজিদে এসে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতে বললেন। (ই.ফা. ১৫২৭, ই.সে. ১৫৩৪)

১৫৪৩
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، – يَعْنِي الثَّقَفِيَّ – حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ خَرَجْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزَاةٍ فَأَبْطَأَ بِي جَمَلِي وَأَعْيَى ثُمَّ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَبْلِي وَقَدِمْتُ بِالْغَدَاةِ فَجِئْتُ الْمَسْجِدَ فَوَجَدْتُهُ عَلَى بَابِ الْمَسْجِدِ قَالَ ‏”‏ الآنَ حِينَ قَدِمْتَ ‏”‏ ‏.‏ قُلْتُ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَدَعْ جَمَلَكَ وَادْخُلْ فَصَلِّ رَكْعَتَيْنِ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَدَخَلْتُ فَصَلَّيْتُ ثُمَّ رَجَعْتُ ‏.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে গিয়েছিলাম। (ফিরে আসার সময়) আমার উটটি বেশ দেরি করলো। সেটি বেশ ক্লান্ত শ্রান্তও হয়ে পড়েছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার আগেই এসে পৌছেছিলেন। আর আমি পরদিন সকালে পৌছলাম। আমি মাসজিদে এবং সেখানে মাসজিদের দরজায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেলাম। তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বলেলেনঃ তুমি এখন এসে পৌছলে? আমি বললাম হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এখন উটটি রেখে মাসজিদে দু রাক‘আত সলাত আদায় করে নাও। জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ বলেছেনঃ এরপর আমি মাসজিদে গিয়ে সলাত আদায় করে আসলাম। (ই.ফা. ১৫২৮, ই.সে. ১৫৩৫)

১৫৪৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ يَعْنِي أَبَا عَاصِمٍ، ح وَحَدَّثَنِي مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالاَ جَمِيعًا أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ، أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِيهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ، وَعَنْ عَمِّهِ، عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ عَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَقْدَمُ مِنْ سَفَرٍ إِلاَّ نَهَارًا فِي الضُّحَى فَإِذَا قَدِمَ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَصَلَّى فِيهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ فِيهِ ‏.

কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দিবাভাগে বেশ কিছু বেলা করা ব্যতীত সফর থেকে ফিরে আসতেন না। সফর থেকে ফিরে তিনি প্রথমেই মাসজিদে যেতেন এবং সেখানে তিনি দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতেন। তারপর সেখানে কিছুক্ষন বসতেন। (ই.ফা. ১৫২৯, ই.সে. ১৫৩৬)

১৩. অধ্যায়ঃ
যুহার সলাত মুস্তাহাব আর তার সর্বনিম্ন (রাক’আতের পরিমান) হচ্ছে দু’ রাক‘আত, আর সম্পুর্ন হচ্ছে আট রাক‘আত, মধ্যম পরিমান হচ্ছে চার অথবা ছয় রাক‘আত এবং এগুলো রক্ষনাবেক্ষন করার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান

১৫৪৫
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ سَعِيدٍ الْجُرَيْرِيِّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ هَلْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى قَالَتْ لاَ إِلاَّ أَنْ يَجِيءَ مِنْ مَغِيبِهِ ‏.

’আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ্‌কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি চাশ্‌তের সলাত আদায় করতেন? জবাবে তিনি বললেনঃ না, তিনি সলাতুয্‌ যুহা আদায় করতেন না। তবে যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন তখন আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৩০, ই.সে. ১৫৩৭)

১৫৪৬
وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا كَهْمَسُ بْنُ الْحَسَنِ الْقَيْسِيُّ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ شَقِيقٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى قَالَتْ لاَ إِلاَّ أَنْ يَجِيءَ مِنْ مَغِيبِهِ

’আবদুল্লাহ ইবনু শাক্বীক্ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ্‌কে জিজ্ঞেস করলাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি যুহা বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করতেন। জবাবে তিনি বললেনঃ না, তবে তিনি যখন সফর থেকে ফিরে আসতেন তখন আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৩১, ই.সে. ১৫৩৮)

১৫৪৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي سُبْحَةَ الضُّحَى قَطُّ ‏.‏ وَإِنِّي لأُسَبِّحُهَا وَإِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيَدَعُ الْعَمَلَ وَهُوَ يُحِبُّ أَنْ يَعْمَلَ بِهِ خَشْيَةَ أَنْ يَعْمَلَ بِهِ النَّاسُ فَيُفْرَضَ عَلَيْهِمْ ‏.

’আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি কখনো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করতে দেখিনি। তবে আমি নিজে চাশ্‌তের সলাত আদায় করে থাকি। অনেক কাজ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পছন্দ করা সত্বেও এ আশংকায় তা করতেন না যে, লোকজন সে অনুযায়ী কাজ করলে তা ফরয করে দেয়া হতে পারে। (ই.ফা. ১৫৩২, ই.সে. ১৫৩৯)

১৫৪৮
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، – يَعْنِي الرِّشْكَ – حَدَّثَتْنِي مُعَاذَةُ، أَنَّهَا سَأَلَتْ عَائِشَةَ – رضى الله عنها – كَمْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي صَلاَةَ الضُّحَى قَالَتْ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ وَيَزِيدُ مَا شَاءَ ‏.

মু’আযাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত কয় রাক‘আত আদায় করতেন? জবাবে ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, তিনি ‘যুহা’ বা চাশতের সলাত সাধারণতঃ চার রাক‘আত আদায় করতেন এবং অনেক সময় ইচ্ছামত আরো বেশী আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৩৩, ই.সে. ১৫৪০)

১৫৪৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ يَزِيدَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ مِثْلَهُ وَقَالَ يَزِيدُ مَا شَاءَ اللَّهُ ‏.

মুহাম্মাদ ইবনু জা’ফার ও শু’বাহ্ থেকে বর্ণিতঃ

ইয়াযীদ থেকে একই সানাদে অনুরুপ হাদীস বর্ননা করেছেন। তবে ইয়াযীদ তার বর্ননায় “মা-শা-আল্ল-হু” (আল্লাহ যা চান) কথাটি উল্লেখ করেছেন। (ই.ফা. ১৫৩৪, ই.সে. ১৫৪১)

১৫৫০
وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، أَنَّ مُعَاذَةَ الْعَدَوِيَّةَ، حَدَّثَتْهُمْ عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى أَرْبَعًا وَيَزِيدُ مَا شَاءَ اللَّهُ ‏.

’আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত চার রাক‘আত আদায় করতেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় বেশীও আদায় করতেন। (ই.ফা. ১৫৩৫, ই.সে. ১৫৪২)

১৫৫১
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ، بَشَّارٍ جَمِيعًا عَنْ مُعَاذِ بْنِ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ قَتَادَةَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.

আবূ ক্বাতাদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৩৬, ই.সে. ১৫৪৩)

১৫৫২
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، قَالَ مَا أَخْبَرَنِي أَحَدٌ، أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي الضُّحَى إِلاَّ أُمُّ هَانِئٍ فَإِنَّهَا حَدَّثَتْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ بَيْتَهَا يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ فَصَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ مَا رَأَيْتُهُ صَلَّى صَلاَةً قَطُّ أَخَفَّ مِنْهَا غَيْرَ أَنَّهُ كَانَ يُتِمُّ الرُّكُوعَ وَالسُّجُودَ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرِ ابْنُ بَشَّارٍ فِي حَدِيثِهِ قَوْلَهُ قَطُّ ‏.

’আবদুর রহমান ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একমাত্র উম্মু হানী ছাড়া আর কেউ-ই আমাকে এ কথা বলেন নি যে, সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘যুহা’ বা চাশতের সলাত আদায় করতে দেখেছে। উম্মু হানী বর্ণনা করেছেন যে, মক্কা বিজয়ের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে গিয়ে আট রাক‘আত সলাত আদায় করেছেন। (তিনি এ কথাও বলেছেন যে,) আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আর কখনো এত সংক্ষিপ্ত করে সলাত আদায় করতে দেখিনি। তবে তিনি রুকু’ ও সাজদাহ্‌গুলো পূর্ণরূপে আদায় করছিলেন। ইবনু বাশ্‌শার তার বর্ণিত হাদীসে ‘কাত্‌তু’ (কখনো) শব্দটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৫৩৭, ই.সে. ১৫৪৪)

১৫৫৩
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمُرَادِيُّ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، أَنَّ أَبَاهُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ الْحَارِثِ بْنِ نَوْفَلٍ، قَالَ سَأَلْتُ وَحَرَصْتُ عَلَى أَنْ أَجِدَ أَحَدًا مِنَ النَّاسِ يُخْبِرُنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَبَّحَ سُبْحَةَ الضُّحَى فَلَمْ أَجِدْ أَحَدًا يُحَدِّثُنِي ذَلِكَ غَيْرَ أَنَّ أُمَّ هَانِئٍ بِنْتَ أَبِي طَالِبٍ أَخْبَرَتْنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَتَى بَعْدَ مَا ارْتَفَعَ النَّهَارُ يَوْمَ الْفَتْحِ فَأُتِيَ بِثَوْبٍ فَسُتِرَ عَلَيْهِ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ قَامَ فَرَكَعَ ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ لاَ أَدْرِي أَقِيَامُهُ فِيهَا أَطْوَلُ أَمْ رُكُوعُهُ أَمْ سُجُودُهُ كُلُّ ذَلِكَ مِنْهُ مُتَقَارِبٌ – قَالَتْ – فَلَمْ أَرَهُ سَبَّحَهَا قَبْلُ وَلاَ بَعْدُ ‏.‏ قَالَ الْمُرَادِيُّ عَنْ يُونُسَ ‏.‏ وَلَمْ يَقُلْ أَخْبَرَنِي ‏.

‘আবদুল্লাহ ইবনু হারিস ইবনু নাওফাল (রহঃ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এমন কোন লোকের সন্ধান পেতে আমি খুবই আকাঙ্ক্ষী ছিলাম এবং এ ব্যাপারে লোকদের জিজ্ঞেসও করতাম যে, এমন কেউ আমাকে এ মর্মে জ্ঞাত করতে পারবে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘সলাতুয যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করেছেন। তবে একমাত্র আবূ ত্বলিবের কন্যা উম্মু হানী ছাড়া আর কাউকেই এমন পাইনি যে, আমাকে এ ব্যাপারে কিছু অবহিত করতে পেরেছে। তিনি (উম্মু হানী) আমাকে জানিয়েছেন যে, মক্কা বিজয়ের দিন সুর্যোদয়ের পর বেলা কিছু বাড়লে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে আসলেন। একটি কাপড় আনা হল এবং তা দিয়ে পর্দা করে দিলে তিনি গোসল করলেন। তারপর সলাতে দাড়ালেন এবং আট রাক‘আত আদায় করলেন। উম্মু হানী (রাঃ) বলেছেন- এ সলাতে তার ক্বিয়াম (দাঁড়ানো) দীর্ঘতর ছিল, না রুকু’ দীর্ঘতর ছিল, না সাজদাহ্‌ দীর্ঘতর ছিল তা আমি জানিনা। তবে ক্বিয়াম, রুকু’ ও সাজদাহ্‌ সবগুলোই মনে হয় এক রকমের দীর্ঘ ছিল। উম্মু হানী (রাঃ) বলেছেনঃ এর আগে কিংবা পরে আর কখনো আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে ‘সলাতুয্‌ যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করতে দেখিনি। হাদীসটির বর্ণনাকারী মুরাদী এটি ইউনুস থেকে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি ‘আখবারানী’ অর্থাৎ ‘ইউনুস আমাকে বলেছেন’ কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ১৫৩৮, ই.সে. ১৫৪৫)

১৫৫৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي النَّضْرِ، أَنَّ أَبَا مُرَّةَ، مَوْلَى أُمِّ هَانِئٍ بِنْتِ أَبِي طَالِبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أُمَّ هَانِئٍ بِنْتَ أَبِي طَالِبٍ، تَقُولُ ذَهَبْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَامَ الْفَتْحِ فَوَجَدْتُهُ يَغْتَسِلُ وَفَاطِمَةُ ابْنَتُهُ تَسْتُرُهُ بِثَوْبٍ – قَالَتْ – فَسَلَّمْتُ فَقَالَ ‏”‏ مَنْ هَذِهِ ‏”‏ ‏.‏ قُلْتُ أُمُّ هَانِئٍ بِنْتُ أَبِي طَالِبٍ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ مَرْحَبًا بِأُمِّ هَانِئٍ ‏”‏ ‏.‏ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ غُسْلِهِ قَامَ فَصَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ مُلْتَحِفًا فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ ‏.‏ فَلَمَّا انْصَرَفَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ زَعَمَ ابْنُ أُمِّي عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ أَنَّهُ قَاتِلٌ رَجُلاً أَجَرْتُهُ فُلاَنُ بْنُ هُبَيْرَةَ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ قَدْ أَجَرْنَا مَنْ أَجَرْتِ يَا أُمَّ هَانِئٍ ‏”‏ ‏.‏ قَالَتْ أُمُّ هَانِئٍ وَذَلِكَ ضُحًى ‏.

উম্মু হানী (রাঃ)-এর আযাদকৃত দাস আবূ মুর্‌রাহ্‌ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তিনি আবূ ত্বলিবের কন্যা উম্মু হানী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন। (তিনি বলেছেন) মক্কা বিজয়ের বছরে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে গিয়ে দেখলাম, তিনি গোসল করছেন আর তাঁর কন্যা ফাত্বিমাহ্‌ একটি কাপড় দিয়ে তাঁকে পর্দা করে রেখেছেন। উম্মু হানী বলেন- আমি তাঁকে সালাম দিলাম। তখন তিনি জানতে চাইলেন, কে? আমি বললামঃ আমি আবূ ত্বলিবের কন্যা উম্মু হানী। তিনি (খুশীতে) বললেনঃ উম্মু হানীকে স্বাগতম। অতঃপর গোসল শেষ করে তিনি সলাতে দাড়াঁলেন এবং একটি মাত্র কাপড় গায়ে জড়িয়ে আট রাক‘আত সলাত আদায় করলেন। সলাত শেষে আমি তাঁকে বললামঃ হে আল্লাহর রসুল! আমার ভাই ‘আলী ইবনু আবু ত্বলিব বলেছেনঃ তিনি আবু হুরায়রাহ্‌ (রাঃ)-এর পুত্র অমুককে হত্যা করে ছাড়বেন অথচ আমি তাকে নিরাপত্তা দিয়েছি। সব শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে উম্মু হানী! তুমি যাকে নিরাপত্তা দান করেছ আমিও তাকে নিরাপত্তা দান করেছি। উম্মু হানী বর্ণনা করেছেনঃ এ ঘটনা ছিল ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সময়ের। (ই.ফা. ১৫৩৯, ই.সে. ১৫৪৬)

১৫৫৫
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا وُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي مُرَّةَ، مَوْلَى عَقِيلٍ عَنْ أُمِّ هَانِئٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى فِي بَيْتِهَا عَامَ الْفَتْحِ ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ قَدْ خَالَفَ بَيْنَ طَرَفَيْهِ ‏.

উম্মু হানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মক্কা বিজয়ের বছর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ঘরে একটি কাপড় গায়ে জড়িয়ে তার দু’ প্রান্ত দু’ দিকে উঠিয়ে আট রাক‘আত সলাত আদায় করেছেন। (ই.ফা. ১৫৪০, ই.সে. ১৫৪৭)

১৫৫৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ، – وَهُوَ ابْنُ مَيْمُونٍ – حَدَّثَنَا وَاصِلٌ، مَوْلَى أَبِي عُيَيْنَةَ عَنْ يَحْيَى بْنِ عُقَيْلٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ يَعْمَرَ، عَنْ أَبِي الأَسْوَدِ الدُّؤَلِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ “‏ يُصْبِحُ عَلَى كُلِّ سُلاَمَى مِنْ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ فَكُلُّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلُّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ وَأَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ وَنَهْىٌ عَنِ الْمُنْكَرِ صَدَقَةٌ وَيُجْزِئُ مِنْ ذَلِكَ رَكْعَتَانِ يَرْكَعُهُمَا مِنَ الضُّحَى ‏”‏ ‏.

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রতিটি দিন শুরু হওয়ার সাথে সাথে তোমাদের প্রত্যেকের প্রতিটি অস্থি-বন্ধনী ও গিঁটের উপর সদাক্বাহ্‌ ওয়াজিব হয়। সুতরাং প্রতিটি তাসবীহ্‌ অর্থাৎ ‘সুবহানাল্ল-হ’ বলা সদাক্বাহ্‌ হিসেবে গন্য হয়। প্রতিটি তাহমীদ অর্থাৎ ‘আলহম্‌দুলিল্লা-হ’ বলা তার সদাক্বাহ্‌ হিসেবে গন্য হয়। প্রতিটি ‘আল্ল-হু আকবর’ তার জন্য এবং ‘নাহী আনিল মুনকার’ অর্থাৎ খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখার প্রতিটি প্রয়াসও তার জন্য অনুরুপ সদাক্বাহ বলে গন্য হয়। তবে ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের মাত্র দু রাক‘আত সলাত যদি সে আদায় করে তাহলে তা এ সবগুলোর সমকক্ষ হতে পারে। (ই.ফা. ১৫৪১, ই.সে. ১৫৪৮)

১৫৫৭
حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا أَبُو التَّيَّاحِ، حَدَّثَنِي أَبُو عُثْمَانَ النَّهْدِيُّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثٍ بِصِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَرَكْعَتَىِ الضُّحَى وَأَنْ أُوتِرَ قَبْلَ أَنْ أَرْقُدَ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার বন্ধু [অর্থাৎ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] আমাকে তিনটি কাজ করতে উপদেশ দিয়েছেন। সেগুলো হ’ল – প্রতি মাসে তিনটি করে সওম (রোযা) পালন করতে, ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করতে এবং ঘুমানোর পূর্বে বিত্‌র সলাত আদায় করতে। (ই.ফা. ১৫৪২, ই.সে.১৫৪৯)

১৫৫৮
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبَّاسٍ الْجُرَيْرِيِّ، وَأَبِي، شِمْرٍ الضُّبَعِيِّ قَالاَ سَمِعْنَا أَبَا عُثْمَانَ النَّهْدِيَّ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ بِمِثْلِهِ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) -এর মাধ্যমে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১৫৪৩, ই.সে.১৫৫০)

১৫৫৯
وَحَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ مَعْبَدٍ، حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُخْتَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الدَّانَاجِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو رَافِعٍ الصَّائِغُ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثٍ ‏.‏ فَذَكَرَ مِثْلَ حَدِيثِ أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ‏.

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার বন্ধু আবুল ক্বাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি কাজ করতে আদেশ করেছেন। এতটুকু বর্ণনা করার পর তিনি আবূ হুরায়রাহ্ থেকে আবূ ‘উসমান বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা.১৫৪৪, ই.সে.১৫৫১)

১৫৬০
وَحَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي فُدَيْكٍ، عَنِ الضَّحَّاكِ بْنِ عُثْمَانَ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حُنَيْنٍ، عَنْ أَبِي مُرَّةَ، مَوْلَى أُمِّ هَانِئٍ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، قَالَ أَوْصَانِي حَبِيبِي صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثٍ لَنْ أَدَعَهُنَّ مَا عِشْتُ بِصِيَامِ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ وَصَلاَةِ الضُّحَى وَبِأَنْ لاَ أَنَامَ حَتَّى أُوتِرَ ‏.

আবুদ্ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার প্রিয়তম বন্ধু আমাকে তিনটি কাজ করতে আদেশ করেছেন। আমার জীবদ্দশায় তা কখনো পরিত্যাগ করব না। (তিনি আমাকে আদেশ করেছেন) প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম পালন করতে ‘যুহা’ বা চাশ্‌তের সলাত আদায় করতে আর বিত্‌র সলাত আদায় করার আগে না ঘুমাতে। (ই.ফা.১৫৪৫, ই.সে.১৫৫২)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]