৯. অধ্যায়ঃ
মৃত্যুর লক্ষণ দেখা দেয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঈমান গ্রহণযোগ্য হওয়া, মুশরিকদের ব্যাপারে ইসতিগফার রহিত হওয়া ও মুশরিক অবস্থায় মৃত্যুবরণকারীর জাহান্নামী হওয়া এবং সে কোন ওয়াসীলায় পরিত্রাণ না পাওয়ার দলীল
৩৯
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى التُّجِيبِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ لَمَّا حَضَرَتْ أَبَا طَالِبٍ الْوَفَاةُ جَاءَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدَ عِنْدَهُ أَبَا جَهْلٍ وَعَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي أُمَيَّةَ بْنِ الْمُغِيرَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” يَا عَمِّ قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . كَلِمَةً أَشْهَدُ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللَّهِ ” . فَقَالَ أَبُو جَهْلٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي أُمَيَّةَ يَا أَبَا طَالِبٍ أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ . فَلَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَعْرِضُهَا عَلَيْهِ وَيُعِيدُ لَهُ تِلْكَ الْمَقَالَةَ حَتَّى قَالَ أَبُو طَالِبٍ آخِرَ مَا كَلَّمَهُمْ هُوَ عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ . وَأَبَى أَنْ يَقُولَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَمَا وَاللَّهِ لأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ مَا لَمْ أُنْهَ عَنْكَ ” . فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ { مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُوا أُولِي قُرْبَى مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ} . وَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى فِي أَبِي طَالِبٍ فَقَالَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم { إِنَّكَ لاَ تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَكِنَّ اللَّهَ يَهْدِي مَنْ يَشَاءُ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ}.
সা‘ঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব থেকে তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন আবূ তালিবের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসল রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে গেলেন এবং সেখানে তিনি আবূ জাহ্ল ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমাইয়্যাহ্ ইবনু মুগীরাহকে উপস্থিত দেখতে পেলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (আবূ তালিবকে লক্ষ্য করে) বললেন, হে আমার চাচা! আপনি ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ কথাটি বলুন। এর দ্বারাই আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য সাক্ষ্য দেব। তখন আবূ জাহল ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ উমাইয়্যাহ্ বলে ওঠলো, হে আবূ তালিব! তুমি কি ‘আবদুল মুত্তালিবের মিল্লাত (দীন) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে? (অর্থাৎ সে দ্বীন পরিত্যাগ করবে?) এদিকে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বার বার তাঁর কথাটি পেশ করতে থাকলেন। আবূ তালিব শেষ পর্যন্ত যে কথা বললেন তা হলো, তিনি ‘আবদুল মুত্তালিবের মিল্লাতের উপরই অবিচল থাকবেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তিনি “লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” বলতে অস্বীকৃতি জানালেন। এতে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহর শপথ! যতক্ষণ আমাকে নিষেধ না করা হয় আমি আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবো। এ প্রসঙ্গে সুমহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করলেন, “নবী এবং ঈমানদারদের পক্ষে মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা শোভা পায় না, যদিও তারা (মুশরিকরা) নিকটাত্মীয় হয়। কেননা তারা যে জাহান্নামী হবে এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে”-[২৬] (সূরাহ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ১১৩) । আবূ তালিবের প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, “হে নবী! নিশ্চয়ই হিদায়াত আপনার হাতে নয় যে, যাকে আপনি চাইবেন হিদায়াত করতে পারবেন। বরং আল্লাহ যাকে চান তাকে হিদায়াত দান করেন, আর কে হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে তিনিই বেশি জানেন”-[২৭] (সূরাহ আল কাসাস ২৮ : ৫৬) । (ই.ফা. ৩৯; ই.সে. ৪০)
[২৬] আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাচা আবূ তালিব যখন মরণাপন্ন তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট যান, সে সময় আবূ জাহ্ল ও ‘আবদুল্লাহ বিন উমাইয়্যাহ্ উপস্থিত ছিলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলতে বলেন, তখন আবূ জাহ্ল বাধা দিল।
[২৭] রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাচা কাফির হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার পরেও বললেন, আমি আপনার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করব, যতক্ষণ আল্লাহ নিষেধ না করবেন। আল্লাহ নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন মুশরিকদের জন্য ইসতিগফার করা যাবে না। আরও জানা গেল, প্রকৃত হিদায়াতের মালিক আল্লাহ তা‘আলা, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নন।
৪০
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، ح وَحَدَّثَنَا حَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ – قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، كِلاَهُمَا عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّ حَدِيثَ صَالِحٍ انْتَهَى عِنْدَ قَوْلِهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيهِ . وَلَمْ يَذْكُرِ الآيَتَيْنِ . وَقَالَ فِي حَدِيثِهِ وَيَعُودَانِ فِي تِلْكَ الْمَقَالَةِ . وَفِي حَدِيثِ مَعْمَرٍ مَكَانَ هَذِهِ الْكَلِمَةِ فَلَمْ يَزَالاَ بِهِ .
ইসহাক্ ইবনু ইবরাহীম ও ‘আব্দ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুহরীর সূত্রে একই সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে সালিহ্-এর হাদীসটি (আরবী) এ বাক্যেই সমাপ্ত হয়েছে এবং তিনি আয়াত দু’টির উল্লেখ করেননি। তিনি তাঁর সূত্রে আরও উল্লেখ করেন (আরবী) “তারা উভয়ই এ বক্তব্যটি পুনরাবৃত্তি করেন।” মা‘মার বর্ণিত হাদীসে (আরবী)-এর স্থলে (আরবী) “তারা উভয়েই তার নিকট এ কথার পুনরাবৃত্তি করতে থাকে” কথার বর্ণনা রয়েছে। (ই.ফা. ৪০; ই.সে. ৪১)
৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، قَالاَ حَدَّثَنَا مَرْوَانُ، عَنْ يَزِيدَ، – وَهُوَ ابْنُ كَيْسَانَ – عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِعَمِّهِ عِنْدَ الْمَوْتِ ” قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ لَكَ بِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . فَأَبَى فَأَنْزَلَ اللَّهُ { إِنَّكَ لاَ تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ} الآيَةَ .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাচা আবূ তালিবের মৃত্যুর সময় তাকে বলেছিলেন। আপনি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলুন, কিয়ামাতের দিন আমি আপনার জন্য এর সাক্ষ্য দিব। কিন্তু তিনি তা বলতে অস্বীকার করলেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা অবতীর্ণ করেনঃ অর্থাৎ “আপনি যাকে পছন্দ করেন, তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না”-(সূরাহ আল-কাসাস ২৮ : ৫৬) (ই.ফা. ৪১; ই.সে. ৪২)
৪২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمِ بْنِ مَيْمُونٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ كَيْسَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ الأَشْجَعِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِعَمِّهِ ” قُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ لَكَ بِهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . قَالَ لَوْلاَ أَنْ تُعَيِّرَنِي قُرَيْشٌ يَقُولُونَ إِنَّمَا حَمَلَهُ عَلَى ذَلِكَ الْجَزَعُ لأَقْرَرْتُ بِهَا عَيْنَكَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ { إِنَّكَ لاَ تَهْدِي مَنْ أَحْبَبْتَ وَلَكِنَّ اللَّهَ يَهْدِي مَنْ يَشَاءُ}
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাচাকে বললেন, আপনি ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ’ বলুন, কিয়ামাত দিবসে আপনার পক্ষে আমি এর সাক্ষ্য দিব। তিনি বললেন, আবূ তালিব ভীত হয়ে এ কথা বলেছেন, কুরায়শদের থেকে এরূপ দোষারোপের যদি আশংকা না থাকত তাহলে আমি তা পাঠ করে তোমার চোখ জুড়াতাম। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করলেনঃ “তুমি যাকে চাইবে হিদায়াত করতে পারবে না, কিন্তু আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন হিদায়াত করেন”-(সূরাহ আল-কাসাস ২৮ : ৫৬) (ই.ফা. ৪২; ই.সে. ৪৩)