৩. অধ্যায়ঃ
মানুষের মৃত্যুর পর যে সকল জিনিসের সাওয়াব তার কাছে পৌঁছে
৪১১৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، – يَعْنِي ابْنَ سَعِيدٍ – وَابْنُ حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – هُوَ ابْنُ جَعْفَرٍ – عَنِ الْعَلاَءِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاَثَةٍ إِلاَّ مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ ” .
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তার সমস্ত ‘আমাল বন্ধ হয়ে যায় তিন প্রকার ‘আমাল ছাড়া। ১. সদাকাহ্ জারিয়াহ্ অথবা ২. এমন ‘ইল্ম যার দ্বারা উপকার হয় অথবা ৩. পুণ্যবান সন্তান যে তার জন্যে দু’আ করতে থাকে। ( ই. ফা. ৪০৭৭, ই. সে. ৪০৭৬)।
৪. অধ্যায়ঃ
ওয়াক্ফ
৪১১৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا سُلَيْمُ بْنُ أَخْضَرَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ أَصَابَ عُمَرُ أَرْضًا بِخَيْبَرَ فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتَأْمِرُهُ فِيهَا فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَصَبْتُ أَرْضًا بِخَيْبَرَ لَمْ أُصِبْ مَالاً قَطُّ هُوَ أَنْفَسُ عِنْدِي مِنْهُ فَمَا تَأْمُرُنِي بِهِ قَالَ “ إِنْ شِئْتَ حَبَسْتَ أَصْلَهَا وَتَصَدَّقْتَ بِهَا ” . قَالَ فَتَصَدَّقَ بِهَا عُمَرُ أَنَّهُ لاَ يُبَاعُ أَصْلُهَا وَلاَ يُبْتَاعُ وَلاَ يُورَثُ وَلاَ يُوهَبُ . قَالَ فَتَصَدَّقَ عُمَرُ فِي الْفُقَرَاءِ وَفِي الْقُرْبَى وَفِي الرِّقَابِ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَالضَّيْفِ لاَ جُنَاحَ عَلَى مَنْ وَلِيَهَا أَنْ يَأْكُلَ مِنْهَا بِالْمَعْرُوفِ أَوْ يُطْعِمَ صَدِيقًا غَيْرَ مُتَمَوِّلٍ فِيهِ . قَالَ فَحَدَّثْتُ بِهَذَا الْحَدِيثِ مُحَمَّدًا فَلَمَّا بَلَغْتُ هَذَا الْمَكَانَ غَيْرَ مُتَمَوِّلٍ فِيهِ . قَالَ مُحَمَّدٌ غَيْرَ مُتَأَثِّلٍ مَالاً . قَالَ ابْنُ عَوْنٍ وَأَنْبَأَنِي مَنْ قَرَأَ هَذَا الْكِتَابَ أَنَّ فِيهِ غَيْرَ مُتَأَثِّلٍ مَالاً .
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) খাইবারে একখন্ড জমি লাভ করেন। তখন এ সম্পর্কে পরামর্শের জন্যে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট আসেন এবং বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি খাইবারে এমন একখন্ড জমি লাভ করেছি যে, এর চেয়ে উৎকৃষ্টতর সম্পদ আমি কখনও লাভ করিনি। আপনি এ সম্পর্কে আমাকে কী নির্দেশ দিন। তিনি বললেন, তুমি যদি চাও, তবে তার মূল মালিকানা রেখে তা সদাকাহ্ করতে পার। রাবী বলেন, তারপর ‘উমার (রাঃ) তা সদাকাহ্ করে দেন এ শর্তে যে, এর মূলস্বত্ব বিক্রি করা যাবে না, খরিদ করা যাবে না, উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করা যাবে না এবং দানও করা যাবে না। সুতরাং ‘উমার (রাঃ)- এর আয় দরিদ্র, আত্মীয়, দাস মুক্তি, জিহাদ, পথিক ও মেহমানের উদ্দেশ্যে সদাকাহ্ করে দেন। অবশ্য যে ব্যক্তি এর তত্ত্বাবধায়ক হবে তার জন্যে এর থেকে যুক্তিসংগত পরিমাণ খাওয়া বা কোন বন্ধু-বান্ধবকে খাওয়ানো দূষণীয় হবে না, যদি সে এর থেকে সঞ্চায় না করে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি হাদীসটি মুহাম্মাদ (রহঃ)- এর নিকট বর্ণনা করতে গিয়ে যখন এ স্থানে পৌঁছি, (আরবী) (যদি সে এর থেকে সঞ্চয়কারী না হয়,) তখন মুহাম্মদ (রহঃ) বললেন (আরবী) ( সম্পদ সঞ্চয়কারী হবে না।)
ইবনু ‘আওন (রহঃ) বলেন, এ কিতাব যিনি পড়েছেন তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে, এ স্থলে রয়েছে (আরবী)। ( ই. ফা. ৪০৭৮, ই. সে. ৪০৭৭)
৪১১৭
حَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي زَائِدَةَ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا أَزْهَرُ السَّمَّانُ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، كُلُّهُمْ عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّ حَدِيثَ ابْنِ أَبِي زَائِدَةَ وَأَزْهَرَ انْتَهَى عِنْدَ قَوْلِهِ “ أَوْ يُطْعِمَ صَدِيقًا غَيْرَ مُتَمَوِّلٍ فِيهِ ” . وَلَمْ يُذْكَرْ مَا بَعْدَهُ . وَحَدِيثُ ابْنِ أَبِي عَدِيٍّ فِيهِ مَا ذَكَرَ سُلَيْمٌ قَوْلُهُ فَحَدَّثْتُ بِهَذَا الْحَدِيثِ مُحَمَّدًا . إِلَى آخِرِهِ .
ইবনু ‘আওন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বকর ইবনু আবূ শাইবাহ, ইসহাক্ ও মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) …. সূত্রে ইবনু ‘আওন (রহঃ) থেকে উক্ত সানাদে হুবহু বর্ণনা করেছেন। তবে ইবনু আবূ যায়িদাহ্ ও আযহার (রহঃ)- এর হাদীস এ পর্যন্ত এসে শেষ হয়েছে যে, “অথবা কোন বন্ধু-বান্ধবকে খাওয়ায় এতে সঞ্চয়কারী না হয়ে”, পরের অংশ তিনি উল্লেখ করেননি। আর ইবনু ‘আদী (রহঃ)-এর হাদীসে তাই আছে, যা সুলায়ম (রহঃ) উল্লেখ করেছেন অর্থাৎ “অতঃপর আমি এ হাদীসটি মুহাম্মাদ (রহঃ)- এর নিকট বর্ণনা করি ….শেষ পর্যন্ত।“ (ই.ফা. ৪০৭৯, ই.সে. ৪০৭৮)
৪১১৮
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْحَفَرِيُّ، عُمَرُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ سُفْيَانَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ عُمَرَ، قَالَ أَصَبْتُ أَرْضًا مِنْ أَرْضِ خَيْبَرَ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ أَصَبْتُ أَرْضًا لَمْ أُصِبْ مَالاً أَحَبَّ إِلَىَّ وَلاَ أَنْفَسَ عِنْدِي مِنْهَا . وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمِثْلِ حَدِيثِهِمْ وَلَمْ يَذْكُرْ فَحَدَّثْتُ مُحَمَّدًا وَمَا بَعْدَهُ .
উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি খাইবারের এলাকায় একখন্ড জমি লাভ করি। তখন আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলি, আমি এমন একখন্ড জমি লাভ করেছি, যার চেয়ে বেশি প্রিয় এবং আমার কাছে উত্তম কোন মাল আর পাইনি। রাবী এ হাদীসে পরবর্তী অংশ অন্যান্যের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি এ কথা বর্ণনা করেননি যে, অতঃপর আমি মুহাম্মাদ (রহঃ)- এর নিকট বর্ণনা করি এবং এর পরেরটুকু।“ (ই.ফা. ৪০৮০, ই.সে. ৪০৭৯)
৫. অধ্যায়ঃ
যার কাছে ওয়াসিয়্যাতযোগ্য কিছু নেই, তার ওয়াসিয়্যাত না করা
৪১১৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، قَالَ سَأَلْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي أَوْفَى هَلْ أَوْصَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لاَ . قُلْتُ فَلِمَ كُتِبَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ الْوَصِيَّةُ أَوْ فَلِمَ أُمِرُوا بِالْوَصِيَّةِ قَالَ أَوْصَى بِكِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ .
তালহাহ্ ইবনু মুসার্রিফ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি ওয়াসিয়্যাত করেছিলেন? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে কেন মুসলিমদের উপর ওয়াসিয়্যাত ফারয্ করা হলো? অথবা বললেন, কিভাবে তাদেরকে ওয়াসিয়্যাতের হুকুম দেয়া হলো? তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়াসিয়্যাত করেছেন, আল্লাহ তা’আলার কিতাব সম্পর্কে (‘আমাল করতে)। (ই.ফা. ৪০৮১, ই.সে. ৪০৮০)
৪১২০
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، كِلاَهُمَا عَنْ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّ فِي حَدِيثِ وَكِيعٍ قُلْتُ فَكَيْفَ أُمِرَ النَّاسُ بِالْوَصِيَّةِ وَفِي حَدِيثِ ابْنِ نُمَيْرٍ قُلْتُ كَيْفَ كُتِبَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ الْوَصِيَّةُ
মালিক ইবনু মিগওয়াল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মালিক ইবনু মিগওয়াল (রহঃ)- এর সূত্রে উক্ত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। অবশ্য ওয়াকী’ (রহঃ)- এর বর্ণনায় আছে- আমি বললাম, “তাহলে কী করে মানুষকে ওয়াসিয়্যাতের হুকুম করা হলো”? আর ইবনু নুমায়র (রহঃ)- এর বর্ণনায় আছে, আমি বললাম, কিভাবে মুসলিমের উপর ওয়াসিয়্যাত ওয়াজিব হলো? (ই.ফা. ৪০৮২, ই.সে. ৪০৮১)
৪১২১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي وَأَبُو مُعَاوِيَةَ قَالاَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ مَا تَرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دِينَارًا وَلاَ دِرْهَمًا وَلاَ شَاةً وَلاَ بَعِيرًا وَلاَ أَوْصَى بِشَىْءٍ .
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন দীনার, দিরহাম, বকরী বা উট রেখে যাননি এবং কোন কিছুর ওয়াসিয়্যাত করেননি। (ই.ফা. ৪০৮৩, ই.সে. ৪০৮২)
৪১২২
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، كُلُّهُمْ عَنْ جَرِيرٍ، ح وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ خَشْرَمٍ، أَخْبَرَنَا عِيسَى، – وَهُوَ ابْنُ يُونُسَ – جَمِيعًا عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ . مِثْلَهُ .
যুহায়র ইবনু হার্ব, ‘উসমান ইবনু আবূ শাইবাহ্, ইসহাক্ ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) আর সকলে জারীর হতে ও ‘আলী ইবনু খাশরাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আ’মাশ (রহঃ) হতে উক্ত সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪০৮৪, ই.সে. ৪০৮৩)
৪১২৩
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ – وَاللَّفْظُ لِيَحْيَى – قَالَ أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ بْنِ يَزِيدَ، قَالَ ذَكَرُوا عِنْدَ عَائِشَةَ أَنَّ عَلِيًّا كَانَ وَصِيًّا فَقَالَتْ مَتَى أَوْصَى إِلَيْهِ فَقَدْ كُنْتُ مُسْنِدَتَهُ إِلَى صَدْرِي – أَوْ قَالَتْ حَجْرِي – فَدَعَا بِالطَّسْتِ فَلَقَدِ انْخَنَثَ فِي حَجْرِي وَمَا شَعَرْتُ أَنَّهُ مَاتَ فَمَتَى أَوْصَى إِلَيْهِ
আসওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তাঁরা ‘আয়িশাহ (রাঃ)- এর কাছে উল্লেখ করেন যে, ‘আলী (রাঃ) তো রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ওয়াসিয়্যাতের ব্যাপারে দায়িত্ববান ছিলেন। তিনি বললেন, কখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে ওয়াসিয়্যাত করেছেন? আমি তো তাঁকে (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে) আমার বুকে ভর দিয়ে রেখেছিলাম, অথবা বলেছেন, আমার কোলে; তখন তিনি একটি রিকাব চাইলেন, এরপর আমার কোলে ঢলে পড়েন। আমি বুঝতেও পারিনি যে, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি কখন ওয়াসিয়্যাত করলেন? (ই.ফা. ৪০৮৫, ই.সে. ৪০৮৪)
৪১২৪
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَعَمْرٌو النَّاقِدُ – وَاللَّفْظُ لِسَعِيدٍ – قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سُلَيْمَانَ الأَحْوَلِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَوْمُ الْخَمِيسِ وَمَا يَوْمُ الْخَمِيسِ ثُمَّ بَكَى حَتَّى بَلَّ دَمْعُهُ الْحَصَى . فَقُلْتُ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ وَمَا يَوْمُ الْخَمِيسِ قَالَ اشْتَدَّ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَعُهُ . فَقَالَ ” ائْتُونِي أَكْتُبْ لَكُمْ كِتَابًا لاَ تَضِلُّوا بَعْدِي ” . فَتَنَازَعُوا وَمَا يَنْبَغِي عِنْدَ نَبِيٍّ تَنَازُعٌ . وَقَالُوا مَا شَأْنُهُ أَهَجَرَ اسْتَفْهِمُوهُ . قَالَ ” دَعُونِي فَالَّذِي أَنَا فِيهِ خَيْرٌ أُوصِيكُمْ بِثَلاَثٍ أَخْرِجُوا الْمُشْرِكِينَ مِنْ جَزِيرَةِ الْعَرَبِ وَأَجِيزُوا الْوَفْدَ بِنَحْوِ مَا كُنْتُ أُجِيزُهُمْ ” . قَالَ وَسَكَتَ عَنِ الثَّالِثَةِ أَوْ قَالَهَا فَأُنْسِيتُهَا .
قَالَ أَبُو إِسْحَاقَ إِبْرَاهِيمُ حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ بِشْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، بِهَذَا الْحَدِيثِ
সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সময় ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, বৃহস্পতিবার দিন, হায়রে বৃহস্পতিবার দিন! ব’লে তিনি কেঁদে ফেলেন। এমনকি তার অশ্রুধারায় কংকর ভিজে যায়। আমি বললাম, হে আবূ ‘আব্বাস! বৃহস্পতিবার দিনের ব্যাপার কী? তিনি বললেন, সেদিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর রোগ বেড়ে যায়। তখন তিনি বললেন, আমার নিকট এসো, আমি তোমাদের এমন একটি লিপি লিখে দিই, যাতে আমার পরে তোমরা আর পথহারা হবে না। তখন উপস্থিত সাহাবাগণ পরস্পর বিতর্কে লিপ্ত হলেন। অথচ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে তর্কবিতর্ক করা উচিত নয়। তারা বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর অবস্থা কী হলো? তিনি তা অর্থহীন বলতে পারেন না? তোমরা তাঁর কথা বুঝার চেষ্টা কর। রাবী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের তিনটি বিষয়ে ওয়াসিয়্যাত করছি, মুশরিকদেরকে আরব উপদ্বীপ থেকে বহিস্কার কর। প্রতিনিধি (আগন্তুক) দলকে উপঢৌকন দাও, যেমনি আমি তাদেরকে উপহার দিতাম। বর্ণনাকারী বললেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তৃতীয়টা থেকে নীরব থাকেন অথবা তিনি বলেছেন, কিন্তু তা ভুলে গেছি।
আবূ ইসহাক্ (রহঃ) বলেন, হাসান ইবনু বিশ্র (রহঃ) সুফইয়ান (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪০৮৬, ই.সে. ৪০৮৫)
৪১২৫
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ مَالِكِ بْنِ مِغْوَلٍ، عَنْ طَلْحَةَ بْنِ مُصَرِّفٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ قَالَ يَوْمُ الْخَمِيسِ وَمَا يَوْمُ الْخَمِيسِ . ثُمَّ جَعَلَ تَسِيلُ دُمُوعُهُ حَتَّى رَأَيْتُ عَلَى خَدَّيْهِ كَأَنَّهَا نِظَامُ اللُّؤْلُؤِ . قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ ائْتُونِي بِالْكَتِفِ وَالدَّوَاةِ – أَوِ اللَّوْحِ وَالدَّوَاةِ – أَكْتُبْ لَكُمْ كِتَابًا لَنْ تَضِلُّوا بَعْدَهُ أَبَدًا ” . فَقَالُوا إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَهْجُرُ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি কোন এক সময় বললেন,) বৃহস্পতিবার দিন, আর কী সে বৃহস্পতিবার দিন! এরপর তাঁর অশ্রু প্রবাহিত হতে থাকে। এমন কি, আমি দেখলাম যে, তাঁর উভয় গালের উপরে যেন মুক্তার লহরী। রাবী বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার কাছে হাড় ও দোয়াত নিয়ে আস, অথবা বলেছেন কাষ্ঠফলক ও দোয়াত। আমি তোমাদের এমন একটি কিতাব লিখে দিব যে, এরপর আর তোমরা পথভ্রস্ট হবে না। অতঃপর তারা বললো, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় অনিচ্ছাকৃত) কথা বলছেন? (ই.ফা. ৪০৮৭, ই.সে. ৪০৮৬)
৪১২৬
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، – قَالَ عَبْدٌ أَخْبَرَنَا وَقَالَ ابْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، – أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا حُضِرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَفِي الْبَيْتِ رِجَالٌ فِيهِمْ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ” هَلُمَّ أَكْتُبْ لَكُمْ كِتَابًا لاَ تَضِلُّونَ بَعْدَهُ ” . فَقَالَ عُمَرُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ غَلَبَ عَلَيْهِ الْوَجَعُ وَعِنْدَكُمُ الْقُرْآنُ حَسْبُنَا كِتَابُ اللَّهِ . فَاخْتَلَفَ أَهْلُ الْبَيْتِ فَاخْتَصَمُوا فَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ قَرِّبُوا يَكْتُبْ لَكُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كِتَابًا لَنْ تَضِلُّوا بَعْدَهُ . وَمِنْهُمْ مَنْ يَقُولُ مَا قَالَ عُمَرُ . فَلَمَّا أَكْثَرُوا اللَّغْوَ وَالاِخْتِلاَفَ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” قُومُوا ” . قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ فَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقُولُ إِنَّ الرَّزِيَّةَ كُلَّ الرَّزِيَّةِ مَا حَالَ بَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَبَيْنَ أَنْ يَكْتُبَ لَهُمْ ذَلِكَ الْكِتَابَ مِنِ اخْتِلاَفِهِمْ وَلَغَطِهِمْ .
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুশয্যায় ছিলেন এবং ঘরে বেশ লোক উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ‘উমার ইবনু খাত্তাবও ছিলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এসো, আমি তোমাদের এক কিতাব লিখে দিই। এরপরে আর তোমরা পথভ্রস্ট হবে না। ‘উমার (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর অসুস্থতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তোমাদের কাছে কুরআন বর্তমান আছে। আল্লাহর কিতাব আমাদের জন্যে যথেষ্ট। তখন ঘরের লোকজনের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয় এবং তারা ঝগড়ায় লিপ্ত হন। তাদের কেউ কেউ বলেন, তোমরা (কাগজ) কাছে নিয়ে এসো। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের এমন এক কিতাব লিখে দিবেন, যার পরে আর তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। আর কেউ কেউ সে কথা বলেন, যা ‘উমার (রাঃ) বলেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে যখন তাদের এ ঝগড়া ও কথা কাটাকাটি বৃদ্ধি পায়, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা উঠে যাও।
‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, এরপর থেকে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) আক্ষেপ করে বলতেন, বিপদ সে যে কত বড় বিপদ! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাদের জন্য সে কিতাব লিখে দেয়ার মাঝখানে তাদের মতবিরোধ ও ঝগড়া যে অন্তরায় হয়ে পড়ল। (ই.ফা. ৪০৮৮, ই.সে. ৪০৮৭)