সমাস দিয়ে শব্দ গঠন করা যায়। সমাস অর্থ সংক্ষেপ। অর্থাৎ শব্দ সংক্ষেপ। অনেকগুলো শব্দ একত্র করে একটি নতুন অর্থবোধক শব্দ করা হয়। তবে একত্র করতে বিভক্তি লাগে। যেমন : শব্দ+ বিভক্তি+শব্দ = সমাসজাত শব্দ। যখন ‘হিম+আলয়= হিমালয়’ লেখা হয় তখন সন্ধি হয় আর যখন ‘হিমের আলয়=হিমালয়’ লেখা হয় তখন সমাস হয়। সমাসজাত শব্দ বাক্যে ব্যবহারের পরও তাদের অর্থের পার্থক্য থাকতে পারে। যেমন: বাজার থেকে দুধসাগু (দুধ ও সাগু) কিনে এনে দুধসাগুকে (দুধ মিশ্রিত সাগু) ভালো করে রান্না করে খেও।
শব্দকে আশ্রয় করে অর্থসংগতিপূর্ণ একাধিক শব্দকে একশব্দে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে সমাস বলে। বহুশব্দকে একশব্দ করার প্রক্রিয়াকেও সমাস বলে। অথবা পরস্পর অর্থসংগতিপূর্ণ একাধিক শব্দকে একশব্দে পরিণত করার জন্য যে নিয়মটি বিশেষ ভূমিকা রাখে সেই নিয়মকেই সমাস বলে। অথবা সমাস অর্থ মিলন অর্থাৎ পাশাপাশি দুই বা ততোধিক শব্দের মিলনকে সমাস বলে। অথবা শব্দকে আশ্রয় করে অর্থপূর্ণ একাধিক শব্দ যে সূত্রে একশব্দ করা হয় তাকে সমাস বলে।
ব্যাকরণবিদগণ বিভিন্নভাবে সমাসের সংজ্ঞা দিয়েছেন
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ: পরস্পর অর্থসঙ্গতি বিশিষ্ট দুই বা বহু পদকে লইয়া একটি পদ করার নাম সমাস।
মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী: অর্থ-সম্বন্ধ আছে এমন একাধিক শব্দের একসঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি বড় শব্দ গঠনের প্রক্রিয়াকে সমাস বলে।
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ও গোপাল হালদার: পরস্পর-সম্বন্ধবিশিষ্ট একার্থবাচক একাধিক পদের একপদী ভাবকে বলে সমাস।
জ্যোতিভূষণ চাকী: পরস্পর সম্পর্কিত দুই বা তার বেশি শব্দ একসঙ্গে মিলে সমাস হয়।
ড. মুহম্মদ এনামুল হক: পরস্পর অন্বয়যুক্ত দুই বা ততোধিক পদের (শব্দের নহে, কেননা, শব্দ অন্বিত হইলেই পদে পরিণত হইয়া যায়) মধ্যবর্তী অন্বয়াংশ (তাহা বিভক্তিও হইতে পারে, অন্য পদও হইতে পারে) লোপ করিয়া পদগুলো এক শব্দে (পদে নহে, কেননা, সমাসবদ্ধ পদের শেষে শব্দবিভক্তি যুক্ত হয়) পরিণত করার প্রক্রিয়ার নাম সমাস।
সমাসের বৈশিষ্ট্য
১. পাশাপাশি দুই বা তার অধিক শব্দ থাকতে হবে
২. এসব শব্দের মধ্যে অর্থসংগতি থাকতে হবে
৩. এসব শব্দের মধ্যে বৃহৎ শব্দ তৈরির যোগ্যতা থাকতে হবে
৪. নতুন শব্দ গঠন করার ক্ষমতা থাকতে হবে
৫. একাধিক শব্দকে সংকোচিত করার ক্ষমতা থাকতে হবে
৬. শব্দগুলোর বিভক্তি লোপ পেতে হবে
সমাসের উপাদান
১. সমাসজাত বা সমাসবদ্ধ বা সমস্ত শব্দ : শব্দে শব্দে তৈরিকৃত শব্দই সমাসজাত শব্দ।
২. সমস্যমান শব্দ : সমাসজাত শব্দ বা ব্যাসবাক্যের প্রতিটি পদকে সমস্যমানপদ বলে।
৩. ব্যাসবাক্য বা সমাসবদ্ধ বা বিগ্রহবাক্য : সমস্যমানপদকে ব্যাসবাক্য বলে।
৪. পূর্বপদ : ব্যাসবাক্যে প্রথম শব্দকে পূর্বপদ বলে।
৫. পরপদ বা উত্তরপদ : ব্যাসবাক্যে শেষ পদকে পরপদ বা উত্তরপদ বলে।
সমাসের প্রয়োজনীয়তা
বাংলা ব্যাকরণে সমাসের প্রয়োজন অনেক। সমাসের মাধ্যমে বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধি ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজন মেটানো যায়। যেমন:
১. সমাসের মাধ্যমে অনেক নতুন শব্দ গঠন করা যায়
২. অল্পকথায় ব্যাপকভাব প্রকাশ করা যায়
৩. সহজভাবে শব্দ উচ্চারণ করা যায়
৪. বাক্যকে গতিশীল করা যায়।
৫. ভাষাকে সহজ-সরল, সংক্ষিপ্ত, প্রাঞ্জল ও শ্রুতিমধুর করা যায়
৬. বক্তব্যকে সুন্দর, শ্রুতিমধুর, সংক্ষিপ্ত, সহজ-সরল, অর্থবহ ও তাৎপর্যপূর্ণ করা যায়
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ