সন্ধি ও সমাসের মধ্যে পার্থক্য
১. বর্ণের সঙ্গে বর্ণের মিলনকে সন্ধি বলে। আর শব্দের সঙ্গে শব্দের মিলনকে সমাস বলে।
২. সন্ধি ব্যাকরণের ধ্বনিতত্ত্বে অবস্থিত। আর সমাস ব্যাকরণের রূপতত্ত্বে অবস্থিত।
৩. সন্ধি ৩ প্রকার। যেমন: স্বরসন্ধি, ব্যঞ্জনসন্ধি ও বিসর্গসন্ধি। আর সমাস প্রধানত ৬ প্রকার। যেমন: দ্বন্দ্ব সমাস, দ্বিগুসমাস, কর্মধারয় সমাস, তৎপুরুষ সমাস, অব্যয়ীভাব সমাস ও বহুব্রীহি সমাস।
৪. সন্ধিতে বিভক্তি লোপ পায় না। আর সমাসে অলুক বাদে অন্য সমাসের বিভক্তি লোপ পায়।
৫. সন্ধিতে বর্ণে বর্ণে মিলন ঘটে। সন্ধিতে শব্দের মিলন বর্ণ ও উচ্চারণভিত্তিক। দুটি বর্ণের মিলন ঘটে। আর সমাসে শব্দে শব্দে বা পদে পদে মিলন ঘটে। সমাসে শব্দের মিলন অর্থভিত্তিক। দুই বা দুয়ের অধিক শব্দের মিলন ঘটে।
৬. সন্ধি অল্প সংখ্যক নতুন শব্দ তৈরি করতে পারে।আর সমাস অনেক নতুন শব্দ তৈরি করতে পারে।
৭. সন্ধির ফলে শব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটে না। আর সমাসের ফলে শব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটে।
৮. সন্ধি শব্দকে গতিশীল করে। আর সমাস বাক্যকে গতিশীল করে।
৯. সন্ধির নমুনা হলো বিদ্যা+আলয়—বিদ্যালয়, প্রতি+এক—প্রত্যেক, হিম+আলয়—হিমালয়। আর সমাসের নমুনা হলো: বিদ্যার জন্য আলয়—বিদ্যালয়, একের পরে এক—প্রত্যেক, হিমের আলয়—হিমালয়।
১০. সন্ধি উচ্চারণকে পরিষ্কার করে। আর সমাস বক্তব্যকে সুন্দর, শ্রুতিমধুর ও সংক্ষিপ্ত করে।
উপমান, উপমিত ও রূপক কর্মধারয় সমাসের মধ্যে পার্থক্য
১. উপমান ও উপমেয় পদের মধ্যে সাধারণ ধর্ম বা গুণ বজায় থাকলে যে সমাস হয় তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলে। আর উপমান ও উপমেয় পদের মধ্যে সাধারণ ধর্ম বা গুণ বজায় না থাকলে যে সমাস হয় তাকে উপমিত কর্মধারয় সমাস বলে। আর উপমান ও উপমেয় পদের মধ্যে অভেদ কল্পনা করলে যে সমাস হয় তাকে রূপক কর্মধারয় সমাস বলে।
২. উপমানে উপমানবাচক পদ থাকে, সাধারণ ধর্মবাচক পদ থাকে কিন্তু উপমেয়বাচক পদ থাকে না। আর উপমিতে উপমেয়বাচক পদ ও উপমানবাচক পদ থাকে কিন্তু সাধারণ ধর্মবাচক পদ থাকে না। আর রূপক কর্মধারয় সমাসে তুলনাবাচক শব্দ ‘রূপ’ বসে।
৩. উপমান সমাসের দুটি শব্দের একটি শব্দ বিশেষ্য আর অপরটি বিশেষণ। আর উপমিতের দুটি শব্দই বিশেষ্য শব্দ। আর রূপকের দুটি শব্দই বিশেষ্য শব্দ।
৪. উপমানের সাধারণ ধর্মবাচক শব্দের প্রাধান্য থাকে। যেমন: তুষারের ন্যায় ধবল—তুষারধবল। তুষার—উপমান ও বিশেষ্য, ধবল—উপমিত ও বিশেষণ। আর উপমিতের উপমেয় বাচক শব্দের প্রাধান্য থাকে। যেমন: পুরুষসিংহের ন্যায়—পুরুষসিংহ। পুরুষ—উপমেয় ও বিশেষ্য, সিংহ—উপমান ও বিশেষ্য।আর রূপকের উপমেয় শব্দের পূর্বে বসে আর উপমান পরে বসে।
৫. উপমান সমস্যমান পদে ন্যায় বসে। যদি তুলনামূলক শব্দ অর্থাৎ ‘মতো/ন্যায়’ থাকে তাহলে শব্দের মাঝে বসে। আর উপমিতে সমস্যমান পদে ন্যায় বসে। যদি তুলনামূলক শব্দ অর্থাৎ ‘মতো/ন্যায়’ থাকে তাহলে শব্দের শেষে বসে। রূপকে সমস্যমান পদে ‘রূপ’ বসে। ‘রূপ’ শব্দটি দুটি শব্দের মাঝে বসে।
৬. নমুনায় দেখা যায়, উপমান : তুষারশ্রুভ্র—তুষারের ন্যায়/মতো শুভ্র। উপমিত : মুখচন্দ্র—মুখ চন্দ্রের ন্যায়/মতো। রূপক : মনমাঝি—মনরূপ মাঝি।
অলুক দ্বন্দ্ব সমাস, অলুক তৎপুরুষ সমাস ও অলুক বহুব্রীহি সমাসের মধ্যে পার্থক্য
অলুক অর্থ লোপ হয় না এমন। যে সমাসে পূর্বশব্দের বিভক্তি লোপ হয় না তাকে অলুক সমাস বলে। তিনটি সমাসেই অলুকসমাস হয়। যেমন:
১. যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদের বিভক্তি লোপ পায় না তাকে অলুক দ্বন্দ্ব সমাসবলে। আর যে তৎপুরুষ সমাসে পূর্বশব্দের বিভক্তি লোপ পায় না তাকে অলুক তৎপুরুষ সমাস বলে। আর যে বহুব্রীহি সমাসে পূর্বশব্দের বা পরশব্দের কোন পরিবর্তন হয় না তাকে অলুক বহুব্রীহি সমাস বলে।
২. নমুনায় দেখা যায়, অলুক দ্বন্দ্ব সমাস : দুধেভাতে—দুধে ও ভাতে। হাতেকলমে—হাতে ও কলমে। অলুক তৎপুরুষ সমাস : ঘিয়েভাজা—ঘিয়ে ভাজা। গায়েপড়া—গায়ে পড়া। অলুক বহুব্রীহি : কানেখাটো —কানে খাটো যে। মাথায়পাগড়ি—মাথায় পাগড়ি যার।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ