প্রবাদ-প্রবচনের ধারণা বর্ণনা কর প্রবাদ-প্রবচনের উদ্ভব সম্পর্কে লিখ প্রবাদ-প্রবচনের গুরুত্ব লিখ প্রবাদ-প্রবচন চিহ্নিত কর প্রবাদ-প্রবচনের যথার্থ ব্যবহার কর

আমরা আমাদের দৈনন্দিন ভাষার ব্যবহারে এমন কিছু উক্তি বা কথা বলে থাকি যা বহুদিন ধরে আমাদের
সমাজে প্রচলিত এক-একটি বিশেষ ঘটনার সংক্ষিপ্তসার বা তাৎপর্যময় উক্তি। মানুষের অভিজ্ঞতালব্ধ
জ্ঞানপ্রসূত কালের আবর্তে গ্রহণযোগ্য সংক্ষিপ্ত অথচ ভাব প্রকাশক এসব উক্তিই প্রবাদ-প্রবচন। মানুষ প্রাত্যহিক জীবনের
নানা ঘটনা থেকে যে অভিজ্ঞতা বা শিক্ষা অর্জন করে তা ছোট আকারে কথার মাধ্যমে সূতী² ব্যঞ্জনায় জনসাধারণের মুখে
মুখে প্রচলিত হয়ে গণউক্তিমূলক প্রবাদ-প্রবচনে রূপ নেয়। আবার জ্ঞানী ব্যক্তিদের নীতি-উপদেশমূলক কথাও প্রবাদ
হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমনÑ ধর্মের কল বাতাসে পড়ে। অথবাÑ যেমন কর্ম, তেমন ফল। প্রথম প্রবাদটি
নীতিকথামূলক এবং দ্বিতীয়টি মানব চরিত্রের সমালোচনামূলক। উভয় প্রবাদ-প্রবচনই মানুষের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, শিক্ষা ও
চিন্তার ধারাবাহিক ফসল।
মানুষের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানপ্রসূত কালের আবর্তে গ্রহণযোগ্য সংক্ষিপ্ত অথচ ভাব প্রকাশক উক্তিই প্রবাদ-প্রবচন।
প্রবাদ-প্রবচন দীর্ঘ অভিজ্ঞতার একটি সংক্ষিপ্ত অভিব্যক্তি। তবে সব ক্ষেত্রেই যে এর অর্থ চিরসত্য বা সুনির্দিষ্ট হবে তা বলা
যায় না। যেমনÑ ‘নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো’ Ñএর সঙ্গে ‘দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল শ্রেয়’ এর অর্থ-পার্থক্য
দেখা যায়।
কালের প্রবর্তনে বিভিন্ন উৎস থেকে প্রবাদ-প্রবচনের উদ্ভব হয়েছে। বিভিন্ন অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের মুখ থেকে
যেমন এসব বাক্য উৎসারিত হয়েছে, তেমনি বিভিন্ন কবি-লেখক-বুদ্ধিজীবীদের লেখা থেকেও এগুলো একটা সর্বজনীন রূপ
লাভ করেছে। বিভিন্ন গ্রাম্য লেখক বা কবিয়ালদের উক্তি থেকেও এগুলো এসেছে। এছাড়া ডাক ও খনার বচন, বিভিন্ন
জনশ্রæতি, মেয়েলি ছড়া, লোকসাহিত্য এবং সর্বোপরি আমাদের দৈনন্দিন আচার-আচরণ, রীতিনীতি, চালচলন ও বহুদিনের
অভিজ্ঞতা থেকে এগুলোর উদ্ভব হয়েছে।
পৃথিবীর প্রায় সব ভাষাতেই প্রবাদ-প্রবচনের প্রচলন রয়েছে। ভাব প্রকাশের সহায়ক হিসেবে এসবের গুরুত্ব অনেক। প্রবাদ-
প্রবচনের অর্থব্যঞ্জনা অর্থাৎ কম কথায় গভীর ভাব প্রকাশের প্রক্রিয়া রয়েছে, যা মানব চরিত্রের বৈশিষ্ট্য প্রকাশের সহায়ক।
এগুলো ব্যবহারযোগ্য ভাষায় সরল ও সুচারু আকারে প্রয়োগ করা যায়। শুধু তাই নয়, ভাষার সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যও প্রবাদ-
প্রবচনের ব্যবহার বহুকাল ধরে চলে আসছে। মানুষের মুখে মুখে চলে আসা অজ্ঞাত মানুষের তৈরি এসব প্রবাদ-প্রবচনের
মাধ্যমে মানুষের অভিজ্ঞতা, নীতিকথা, ইতিহাস, সমালোচনা ও সমাজের রীতিনীতি ইত্যাদির প্রকাশ রসযোগ্য করে তুলে ধরা হয়।
নিচে প্রবাদ-প্রবচন ও তার অর্থের সংক্ষিপ্ত একটি তালিকা দেয়া হলোÑ
১. অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী  অল্প শিক্ষিত ব্যক্তির গর্ব বেশি।
২. অভাবে স্বভাব নষ্ট  অভাবে পড়লে স্বভাব নষ্ট হয়ে যায়।
৩. অতি লোভে তাঁতি নষ্ট  বেশি লোভ করলে সর্বস্ব হারাতে হয়।
৪. অতি দর্পে হত লঙ্কা  অহংকার পতনের মুল।
৫. অতি চালাকের গলায় দড়ি- বেশি চালাকি করতে গেলে নিজেরই বিপদ হয়।
৬. অধিক সন্ন্যাসীতে গাঁজন নষ্ট  বেশি লোকের উপস্থিতি বিশৃঙ্খলা আনে।
৭. অল্পশোকে কাতর অধিক শোকে পাথর  সামান্য শোকে মানুষ কাতর হয়ে কান্নাকাটি করে, কিন্তু অধিক শোকে
হতবাক ও স্তব্ধ হয়ে যায়।
৮. অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকায়ে যায়  হতভাগা লোক যে কাজই করে সেই কাজেই বিফল হয়।
৯. অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ  বেশি বাড়াবাড়ি কুমতলবের পরিচয়।
১০. অর্থই অনর্থের মূল Ñ অর্থের লোভ খারাপ কাজকে টেনে আনে।
১১. অসারের তর্জন-গর্জন সার  ক্ষমতাহীনের নিরর্থক আস্ফালন।
১২. আলালের ঘরের দুলাল  অতি আদুরে ছেলে।
১৩. আটে-পিঠে দড়, তবে ঘোড়ায় চড়  যোগ্যতা অর্জন করে কাজে হাত দেওয়া উচিত।
১৪. আঠার মাছে বছর  দীর্ঘসূত্রিতা।
১৫. আদার ব্যাপারির জাহাজের খবর  সাধারণ লোকের বিরাট বিষয়ের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ।
১৬. আপনি বাঁচলে বাপের নাম  আত্মরক্ষাই প্রথম কর্তব্য।
১৭. আপনি শুতে ঠাঁই নেই, শঙ্করকে ডাকে  নিজের বাঁচতে হয় অন্যের অনুগ্রহে, আবার আর একজনকে সাথি করা বা
সাহায্য দিতে যাওয়া।
১৮. আগুন পোহাতে গেলে ধোঁয়া সইতে হয়  কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না।
১৯. ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়  দৃঢ় মনোবল সফলতা লাভের সহায়ক।
২০. ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়  অপরকে মারতে গেলে নিজেকেও মার খেতে হয়।
২১. উঠন্তি মুলো পত্তনেই চেনা যায়  শুরুতেই বোঝা যায় ফলটা কী দাঁড়াবে। ছোটবেলাতেই টের পাওয়া যায় বড়ো
হলে কী হবে।
২২. উদোর পিÐি বুধোর ঘাড়ে  একজনের দোষ আরেকজনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া।
২৩. উলুবনে মুক্তা ছড়ানো  অপাত্রে দান বিফলে যায়।
২৪. এক মাঘে শীত যায় না  বিপদ একবারেই শেষ হয়ে যায় না।
২৫. উনা ভাতে দুনা বল  কম খেলেই শরীর ভাল থাকে।
২৬. এক হাতে তালি বাজে না  বিবাদে দু’পক্ষের ভূমিকা থাকে।
২৭. এক ঢিলে দুই পাখি মারা  এক উপায় অবলম্বন করে দুই কাজ সমাধা করা।
২৮. ওল বলে মান কচু, তুমি বড়ো লাগো  একজন বেশি দোষী, কম-দোষীকে দোষের জন্যে গালি দেয়।
২৯. কনের ঘরে পিসি, বরের ঘরের মাসি  পক্ষের আপন লোক হিসেবে কাজ করে, উভয়কেই লেলিয়ে দিয়ে নিজে
ভালো থাকার মানসিকতার কুটবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি।
৩০. কয়লা যায় না ধুলে স্বভাব যায় না মরলে  খল তার স্বভাব পরিবর্তন করতে পারে না।
৩১. কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না  পরিশ্রম বা সাধনা না করলে জীবনে সাফল্য আসে না।
৩২. কাঁচা বাঁশে ঘুণ ধরা  অল্প বয়সে পেকে যাওয়া বা নষ্ট হওয়া।
৩৩. কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ, পাকলে করে ঠাস ঠাস  ছেলেবেলায় সুশিক্ষা না দিয়ে বড়ো হয়ে দিতে চাইলে আর সে
গ্রহণ করতে চায় না।
৩৪. কাকের বাসায় কোকিলের ছা, জাত স্বভাবে ছাড়ে রা  সহজে স্বভাব ছাড়া যায় না।
৩৫. কানা গরু বামুনকে দান  দুষ্ট ব্যক্তির এমন দান, যা কারো প্রয়োজেেন লাগে না।
৩৬. কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন  যার যেই গুণ নেই, তার প্রতি সেই গুণ আরোপ করা।
৩৭. কাজের বেলায় কাজি কাজ ফুরালেই পাজি  স্বার্থসিদ্ধির পর অকৃতজ্ঞতাপূর্ণ আচরণ করা।
৩৮. কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ  কারো সুসময়, কারো আবার দুঃসময়।
৩৯. খিদে পেলে বাঘে ধান খায়  প্রয়োজনের গুরুত্ব বোঝানো।
৪০. গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না  আপন লোকেরা গুণীর কদর করে না।
৪১. গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল  কাজ শুরুর আগেই ফল ভোগের জন্য তৈরি।
৪২. গরু মেরে জুতো দান  কারও অনিষ্ট করে আবার তার সাহায্যে এগিয়ে আসা।
৪৩. গাছে তুলে দিয়ে মই কেড়ে নেয়া  কোনো বিপজ্জনক কাজে এগিয়ে দিয়ে তাকে অসহায় অবস্থায় ফেলে চলে যাওয়া।
৪৪. গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল  নিজেকে নেতা বলে জাহির করা।
৪৫. ঘোড়া দেখে খোঁড়া  সুযোগ বুঝে অক্ষম সাজা।
৪৬. ঘর পোড়া গরুসিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়  একবার যে বিপদে পড়েছে, পরে অল্পেই সে আতংকিত হয়।
৪৭. ঘর থাকতে বাবুই ভেজা  নিজের সম্পদ থাকতেও কষ্ট করা।
৪৮. ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো  বিনা লাভে কোনো কর্ম করা।
৪৯. চকমক করলেই সোনা হয় না  চেহারা দেখেই কারো বা কোনো কিছুর ভালোমন্দ বিচার করা যায় না।
৫০. চাঁদেরও কলঙ্ক আছে  নিজের দোষ লাঘবের চেষ্টা।
৫১. চেনা বামুনের পৈতা লাগে না  পরিচিত ব্যক্তির পরিচয় পত্র দরকার হয় না বা তাকে পরিচয় করিয়ে দিতে হয় না।
৫২. চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে  প্রয়োজনের সময় সমস্যা সমাধানের উপায় না হয়ে পরে তা সমাধানের উপায় বের হয়।
৫৩. চোরে চোরে মাসতুতো ভাই  মন্দ লোকের সাথে মন্দ লোকের বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক।
৫৪. চোরের ওপর বাটপাড়ি  প্রতারকের ওপর দিয়ে প্রতারণা করা।
৫৫. চোরের মার বড়ো গলা  দোষী ব্যক্তির দোষ ঢেকে সাধু সাজতে সাহায্য করা ও বাগাড়ম্বর করা।
৫৬. চোরের সাক্ষী গাঁট-কাটা  খারাপ লোকেই খারাপ লোককে সাহায্য করে।
৫৭. ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করা  সামান্য লাভের জন্যে মন্দ কাজে হাত না দেয়া।
৫৮. জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ  দুদিকে বিপদ।
৫৯. ঝড়ে বগ মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে  অপরের দ্বারা সাধিত কর্মের কৃতিত্ব নিজের বলে জাহির করা।
৬০. ঝি-কে মেরে বউকে শেখানো  একজনকে মেরে অন্যকে শেখানো।
৬১. ঝোপ বুঝে কোপ মারা  সুযোগের সদ্ব্যবহার করা।
৬২. ডুবে ডুবে জল খাওয়া  গোপনে গোপনে কোনো কাজ সম্পন্ন করা
৬৩. ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সরদার  ক্ষমতা নেই, অথচ আস্ফালন আছে।
৬৪. ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে  যার যা স্বভাব সে তাই-ই করে যায়।
৬৫. দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ  একতাবদ্ধভাবে কাজে নেমে ব্যর্থ হলেও তাতে লজ্জা বা গøানির
কোনো কারণ নেই।
৬৬. দশের লাঠি একের বোঝা  একজনের জন্য যে কাজ কষ্টসাধ্য অনেকে মিলে করলে সে কাজ সহজ হয়ে যায়।
৬৭. দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝে না  সুখের অভাব না ঘটলে সুখের বিষয়টাকে অনুভব করা যায় না।
৬৮. দিনে-দুপুরে ডাকাতি  প্রকাশ্যে অন্যায় করা।
৬৯. দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষা- আদর দিয়ে শত্রুকে লালন করা।
৭০. ধর্মের কল বাতাসে নড়ে  পরিণামে সত্যের জয় হয়।
৭১. ধর্মের ঢাক আপনি বাজে  সত্য কখনো চাপা থাকে না, আপনিই প্রকাশিত হয়।
৭২. ধান ভানতে শিবের গীত  মূল কথা ছেড়ে বাজে প্রসঙ্গ আলোচনা করা।
৭৩. ধরি মাছ না ছুঁই পানি  কষ্ট এড়িয়ে কার্যোদ্ধার।
৭৪. ধরাকে সরা জ্ঞান করা  অতি অহংকারে বা ক্ষমতার দম্ভে বড়োকে ছোট মনে করা।
৭৫. নামে তালপুকুর ঘটি ডোবে না  কেবল নামেই আছে ভেতরে নেই।
৭৬. নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা  নিজের ব্যর্থতা অন্যের ঘাড়ে চাপানো।
৭৭. নিজের পায়ে কুড়াল মারা  নিজের ক্ষতি করা।
৭৮. নুন খায় যার গুণ গায় তার  উপকারীর উপকার স্বীকার করা ও তার পক্ষে কাজ করা।
৭৯. নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা  নিজের ক্ষতি করেও অপরের অনিষ্ট সাধন করা।
৮০. পাপের দান প্রায়শ্চিত্যে যায়  অসৎ উপার্জন অসৎ পথেই যায়।
৮১. পায় না, তাই খায় না  অভাবে কোনো জিনিষের প্রতি কপট অনীহা প্রকাশ।
৮২. পেটে খেলে পিঠে সয়  লাভের সম্ভাবনা থাকলে অনেক কষ্ট সহ্য করা যায়।
৮৩. বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা  দুষ্ট লোকের পাল্লায় পড়লে কিছু-না কিছু ক্ষতি হবেই।
৮৪. বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়  কর্তার চেয়ে কর্মচারির তেজ বেশি।
৮৫. বিনা মেঘে বজ্রপাত  হঠাৎ বিপদ উপস্থিত হওয়া।
৮৬. বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো  বাইরে কাড়কাড়ি ভিতরে ঢিলেমি।
৮৭. বরের ঘরের মাসি, কনের ঘরের পিসি  যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দু’পক্ষেই কথা বলে।
৮৮. বিড়ালের ভাগ্যে শিকা ছেঁড়া  যা পাওয়ার আশা নেই তা লাভ করা।
৮৯. বিষ নেই তার কুলোপনা চক্কর  সামর্থ্য নেই অথচ লাফ-ঝাঁপ বেশি।
৯০. ভিক্ষার চাল কাঁড়া আর আকাঁড়া  যা এমনিতেই পাওয়া যায় তাতে দোষ-ত্রুটি থাকলেও কিছু যায় আসে না।
৯১. ভাগের মা গঙ্গা পায় না  দায়িত্ব ভাগ না করে যদি একই কাজে সবার দায়িত্ব থাকে তো সে কাজ সুসিদ্ধ হয় না।
৯২. মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পতন  যেভাবে হোক কাজে সফল হওয়ার প্রতিজ্ঞা।
৯৩. মরা হাতি লাখ টাকা  যোগ্য ব্যক্তি দুর্যোগে পড়লেও অন্তঃসারশূন্য হয় না।
৯৪. মশা মারতে কামান দাগা  সামান্য কাজের জন্য বিরাট আয়োজন।
৯৫. মুখে চুন কালি পড়া  অপমানিত হওয়া।
৯৬. মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত  সীমার অতিরিক্ত কাজ কেউ করতে পারে না।
৯৭. যার লাঠি তার মাটি  জোর যার মুল্লুক তার।
৯৮. যতোক্ষণ শ্বাস ততোক্ষণ আশ  যতোক্ষণ পর্যন্ত মানুষ বাঁচে, ততোক্ষণই সে আশা রাখে।
৯৯. যার ধন তার নয়, নেপোয় মারে দুই  একজন খাটে, ফল ভোগ করে অন্য জন।
১০০. যার শিল যার নোড়া তারই ভাঙ্গি দাঁতের গোড়া  জিনিসের মালিককে সেই জিনিস নিয়ে জব্দ করা।
১০১. যেমন বুনো ওল তেমনি বাঘা তেঁতুল  দুর্বৃত্তের উপযুক্ত শাস্তি।
১০২. যেমন কর্ম তেমন ফল  যে যেমন কাজ করে, সে তেমন ফল পায়।
১০৩. যে সয় সে রয়  কষ্ট সহ্য করার যার ক্ষমতা আছে, জীবন-যুদ্ধে সে-ই জয়ী হয়।
১০৪. যাকে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা  শত্রুর সব কাজেই দোষ হয়।
১০৫. যত গর্জে তত বর্ষে না  আড়ম্বর অনুযায়ী কাজ হয় না।
১০৬. যেখানে বাঘের ভয় যেখানে রাত হয়  বিপদের উপর বিপদ আসে।
১০৭. রথ দেখা ও কলা বেচা  একটা কাজ করতে গিয়ে সেই সঙ্গের আর একটা কাজ সমাধা করা।
১০৮. রাখে আল্লা মারে কে  ¯্রষ্টা রক্ষা করলে কেউ তার ক্ষতি করতে পারে না।
১০৯. সস্তার তিন অবস্থা  সস্তা জিনিস প্রায়ই খারাপ হয়।
১১০. সবুরে মেওয়া ফলে  ধৈর্য ধরে থাকলে সুফল পাওয়া যায়।
১১১. সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ  সৎ সঙ্গে পরিণাম ভালো কিন্তু অসৎ সঙ্গের পরিণাম খারাপ।
১১২. লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন  প্রয়োজনে অর্থ জোগানোর ব্যক্তি থাকলে তার ভরসায় বেশি খরচ করার জন্য ক্ষোভ
প্রকাশ।
১১৩. সাপের হাঁচি বেদেয় চেনে  যে যেই প্রকৃতির লোকের সাথে চলাফেরা করে সে সেই প্রকৃতির লোকের মেজাজ
ভালোভাবে বুঝতে পারে ।
১১৪. সুখে থাকতে ভূতে কিলায়  দুঃখের অভিজ্ঞতা নেই, এমন ব্যক্তির দুঃখ ডেকে আনার মতো ব্যবহার বা আচরণ।
১১৫. সোনা ফেলে আঁচলে গিরো  মূল্যবান বস্তু বা ব্যক্তিকে অনাদর করে মূল্যহীন বস্তুর আদর।
১১৬. স্বভাব যায় না মলে ইজ্জত যায় না ধুলে  যাদের স্বভাবের পরিবর্তন হয় না তাদের সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ।
১১৭. হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী  অপদার্থ ব্যক্তির অপদার্থ সহকারী বা সমর্থক।
১১৮. হাতি ঘোড়া গেলো তল ভেড়া বলে কতো জল  বড়ো বড়ো লোক যে কাজ করতে পারেনি, সামান্য ব্যক্তির সে- ই
কাজ করতে যাওয়ার স্পর্ধা।
১১৯. হাতির পাঁচ পা দেখা  অহংকারী ব্যক্তির স্পর্ধিত আচরণ।
১২০. হাত ঝাড়া দিয়ে পর্বত  বড়ো লোকের মুখের কথাতেই অনেক কিছু হয়।
১২১. হিসেবের গরু বাঘে খায় না  বিবেচনা থাকলে ঠকতে হয় না।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন :
১। প্রবাদ-প্রবচন বলতে কী বোঝায় লিখুন।
২। কোন কোন উৎস থেকে প্রবাদ-প্রবচনের উদ্ভব হয়েছে লিখুন।
৩। প্রবাদ-প্রবচনের গুরুত্ব লিখুন।
৪। নিচের প্রবাদ-প্রবচনগুলোর অর্থ লিখুন।
অল্পশোকে কাতর অধিক শোকে পাথর, আলালের ঘরের দুলাল, উদোর পিÐি বুধোর ঘাড়ে, ওল বলে মান কচু,
তুমি বড়ো লাগো, গাছে তুলে দিয়ে মই কেড়ে নেয়া, চেনা বামুনের পৈতা লাগে না
৫। নিচের প্রবাদ-প্রবচনগুলোর বাক্যে প্রয়োগ দেখান।
ঝি-কে মেরে বউকে শেখান, দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষা, নুন খায় যার গুণ গায় তার, বিড়ালের ভাগ্যে শিকা
ছেঁড়া, যাকে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা, হাতির পাঁচ পা দেখা
পাঠ ৮.৫ : পারিভাষিক শব্দ
আমরা যদি কম্পিউটার নিয়ে কোনো আলোচনা করি তাহলে হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার, প্রোগ্রামিং, উইন্ডোজ, ডাটা, কমান্ড,
হ্যাং, স্কিপ, ফাইল, ডিরেক্টরি এরকম বেশ কিছু শব্দ অবশ্যই আলোচনায় আসবে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রত্যেক শাখাতেই এমন
কিছু শব্দ ব্যবহৃত হয়, যে শব্দগুলো সাধারণভাবে আমাদের রোজকার কথা-বার্তায় ব্যবহৃত হয় না, বা প্রয়োজন পড়ে না,
কিন্তু ওই বিশেষ জ্ঞান সম্পর্কিত আলোচনায় শব্দগুলোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে প্রায় অনিবার্য। যেমনÑ কম্পিউটার সম্পর্কিত
আলোচনায় আসে হ্যাং, ডাটা, স্কিপ, ফাইল ইত্যাদি শব্দ, তেমনি হয়তো অর্থনীতি সম্পর্কিত আলোচনায় চাহিদা, যোগান,
বাজার, মুদ্রা এসব শব্দ ঘুরেফিরে আসবে। অনেক সময় দেখা যায়, এই বিশেষ শব্দগুলোর ব্যবহার না করে ওই বিশেষ
বিষয়ের আলোচনা করাই যাচ্ছে না। এই শব্দগুলোই হচ্ছে পরিভাষা। হার্ডওয়্যার, সফট্ওয়্যার, ডাটাবেজ, হ্যাং এগুলো
যেমন কম্পিউটার বিজ্ঞানের পরিভাষা, তেমনি বাজার, যোগান, চাহিদা, মুদ্রা এগুলো অর্থনীতির পরিভাষা। আর
পরিভাষাগুলো যেহেতু এক একটি শব্দ সেজন্য আমরা সেগুলোকে পারিভাষিক শব্দও বলতে পারি। যদিও বিশেষ বিশেষ
ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়। আমরা এই পাঠে পরিভাষা নিয়ে আলোচনা করব।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]