মানুষ তার প্রতিদিনের ঘটনাগুলো যখন লিপিবদ্ধ করে রাখে তখন সেটিকেই দিনলিপি বলা হয়। সুখ-দুঃখ, ঘটনা-দুর্ঘটনা,
আবেগ-অনভূতি নিয়েই মানুষের জীবন। জীবনের প্রতিদিনের এই অভিজ্ঞতাকে মানুষ স্মৃতির মতো ধরে রাখতে চায়।
নানাজন নানাভাবে এই অভিজ্ঞতা অক্ষয় করে রাখতে চেষ্টা করে। কেউ লিখে কবিতা, কেউ গল্প, উপন্যাসÑ কেউবা গানের
কথার মধ্য দিয়ে নিজের বিচিত্র কথাকে সাজিয়ে রাখে। দিনলিপি রচনার ব্যাপারটিও সেরকম। নিজের জীবনে প্রতিদিনের
ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো ধারাবাহিকভাবে লিখে রাখলেই দিনলিপি রচিত হয়।
দিনলিপি হচ্ছে তাই, যেখানে মানুষ তার প্রতিদিনের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখে।
দিনলিপি লিখনের শর্তসমূহ
দিনলিপি লিখনে কিছু শর্ত মেনে চলতে হয়Ñ
১। নির্দিষ্ট দিনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে।
২। দিনলিপিতে সময় ও স্থানের উল্লেখ করতে হবে।
৩। দিনের প্রধান উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর বিবরণ সংক্ষেপে লিখতে হবে।
৪। ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পরিচয় উল্লেখ করতে হবে।
৫। ব্যক্তিগত অভিমত বা বিশ্লেষণ থাকতে পারে।
নির্বাচনি পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনের দিনলিপি
ফেব্রæয়ারি ১২, ২০১৬
গ্রাম থেকে আমার সেই প্রথম শহরে আসা। প্রথম এই ধরনের বড় নির্বাচনি পরীক্ষায় বসা। খুব ভালো করার আশা তো
ছিল দুরাশামাত্র, ভীষণ দুঃশ্চিন্তায় পরীক্ষা শেষ করেছিলাম। অবশেষে ফল প্রকাশের দিন চলে আসল। কিছুতেই মনের শঙ্কা
কাটছিল না। নতুন শহরে বন্ধুবান্ধবও তেমন ছিল না। যতই ফল ঘোষণার সময় ঘনিয়ে আসছিল, হৃদকম্পনও ততই বেড়ে
চলল। টান টান উত্তেজনার মধ্যে সবাই অপেক্ষা করছিল। সব আনুষ্ঠানিকতা অবশেষে শেষ হলো। বিকেল চারটার দিকে
ঘোষণা করা হলো ফল। বিস্ময়ের মধ্য দিয়ে শুনলাম আমি প্রথম হয়েছি। আমি নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম
না।
মুহূর্তেই সব কিছু যেন বদলে গেল আমার। কয়েকজন ছুটে এসে আমাকে অভিনন্দন জানালো। আমার দু-একজন আত্মীয়
উপস্থিত ছিলেন সেখানে। তারা ফল শুনেই বাড়িতে আমার মা-বাবাকে ফোনে জানিয়ে দেয়। আমি বাড়িতে খবরটি
জানানোর আগেই তারা ফোন দিয়ে তাদের উচ্ছ¡াস প্রকাশ করে এবং শহরে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য রওনা হয়। প্রথম
হওয়ায় আমাকে পুরস্কার হিসেবে বেশকিছু বই ও একটি সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর দেয়া হয়।
মা-বাবা আমাকে দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরেই কান্না শুরু করে দেন। আমিও
আবেগ সামলাতে পারিনি, শুরু হয় আমারও কান্না। খুশি হয়ে বাবাও আমাকে একটা কম্পিউটার কিনে দিতে চান। একটি
পরীক্ষায় ভালো করে এত পুরস্কার পেয়ে আমার আনন্দ দেখে কে ?
বিজয় দিবসের দিনলিপি
১৬ ডিসেম্বর ২০১৬
বছরের এই দিনটি অন্যরকম আনন্দের, উচ্ছ¡াসের এবং মুক্তির। বিজয় দিবস আজ। বিজয় দিবসের এই দিনটি অসাধারণ
কাটল। আমাদের ইতিহাসের ঘটনাগুলোর মধ্যে অদ্ভুত এক মিল রয়েছে। ৫২-র ২১শে ফেব্রæয়ারিতে ভাষা আন্দোলন,
২৬শে মার্চ ৭১-এ স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু এবং তারই পথ ধরে ১৬ ডিসেম্বর ৭১Ñএ পেলাম বিজয়। বিজয়ের মহাআনন্দের
মধ্য দিয়ে বছরটি শেষ হয়। প্রতিবছর দিনটি আনন্দ-উৎসবে পালিত হলেও এবার আমার ক্ষেত্রে বিজয় দিবসটি নতুন রপে
আবির্ভূত হয়েছে। এ বছর কলেজে পা রেখেছি আমি। বিপুল সমারোহের সঙ্গে কলেজেই উদ্যাপন করা হলো দিবসটি।
খুব ভোরে চলে আসলাম কলেজে। রাঙা সূর্যের প্রথম আলো দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
অধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে শত শত ছাত্রছাত্রী রঙবেরঙের পোশাকে জাতীয় সংগীত গাইল। কলেজে যেন রঙের উৎসব। ধর্মগ্রন্থ
পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হলো। বিজয় দিবসের কথা নানাজনের বক্তব্যে উচ্চারিত হলো, আলোচনায় উঠে এলো
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নাম। গান, কবিতা, দলীয় নাচ, স্মৃতিচারণ, অভিনয়, কৌতুক সবকিছুই ছিল অনুষ্ঠানে। বিজয়
দিবসের রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কারও দেয়া হলো। ৩য় পর্বে দেখানো হলো মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র ‘যুদ্ধজয়ের
গান’। এর পাশাপাশি ছিল সারাদিনব্যাপী রক্তদান ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। একাত্তর আমি দেখিনি কিন্তু আজকের এই দিনে
বুঝতে পেরেছি স্বাধীনতার মূল্য। বুঝতে পেরেছি কত রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই দেশ।
তোমার প্রিয় শিক্ষকের বিদায় দিনের দিনলিপি
১ জানুয়ারি, ২০১৭
প্রত্যেকের জীবনেই কোনো একটি দিন আসে যেদিনের কথা মনে হলে বেদনা ও বিষণœতার স্মৃতি জেগে ওঠে। ১ জানুয়ারি
দিনটি আমার জীবনে তেমনি একটি দিন। সব থেকে কাছের, সব থেকে প্রিয় মানুষটিকে আজ হারিয়েছি আমি। আমার
ভালোলাগার শিক্ষক অশোক স্যারের কথা বলছি। অশোকতরুর মতোই আমার জীবনে ছায়া ফেলে দাঁড়িয়েছিলেন স্যার।
ধনী ঘরের সন্তান ছিলেন বলেই শুনেছি, শখের বশে এসেছিলেন শিক্ষকতা করতেÑ স্যার বলতেন ‘মাস্টারি’। একাত্তরে যুদ্ধ
করেছেন দেশের জন্য। কারো বাধা মানেননি। স্কুলের উজ্জ্বল মেধাবী ছাত্র ছিলেন। বড় চাকরির লোভ ত্যাগ করে চলে
গেছেন লড়াইয়ের মাঠে। গ্রামে জমিদারের ছেলে বলেই সবাই ডাকত। জমি-জমা, খেতি-খোলা ছিল অজস্র। সেজন্যই
বোধ হয় ‘জমিদার’ সম্বোধন। ব্রিটিশ আমলে সত্যিকারের জমিদারি ছিল তাঁদের। এখন জমিদারি নেই, কিন্তু নামটি আছে।
গ্রাম থেকে প্রথম যেদিন শহরের কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম সেদিন খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম। শহুরে ছেলেদের মতো চটপটে নই
আমি, পোশাক-আশাকও সাধারণ মানের। ফর্সা তক্তকে টাকাওয়ালা ছেলেদের দেখে বুক কাঁপতো। অন্য কেউ নয়,
কোনো সহপাঠি বন্ধু নয়Ñ আমার প্রিয় অশোক স্যারই সেদিন ধরতে পেরেছিলেন আমার এই অসহায়ত্বটা। হাতের ইশারায়
কাছে ডেকে নিয়েই জিজ্ঞাসা করেন কোত্থেকে এসেছি। গ্রামের নাম শুনে বললেন চিন্তার কারণ নেই আমিও গ্রামেরই
মানুষ। এক মুহূর্তেই ভরসার একটি জায়গা পেয়ে গেলাম। সেই ভরসা পরিণত হলো পরম মমতা, শ্রদ্ধা, বন্ধুত্ব আর
ভালোবাসায়। ক্লাশে খুব প্রাণবন্ত ছিলেন স্যার। সাহিত্যটা ভালো জানা ছিল তাঁর। তার চেয়ে বেশি জানতেন জীবনের
গল্প। কতো গল্পের ভাÐার যে তাঁর মধ্যে ছিল তার হিসেব নেই। দেখতে দেখতে দুটি বছর কেটে গেল। একদিন কলেজে
গিয়েই শুনলাম আমাদের সবার প্রিয় অশোক স্যার বদলি হয়ে চলে যাচ্ছেন। কোথায় যাচ্ছেন, কেন যাচ্ছেন কিছুই বুঝতে
পারছিলাম না। যশোরে পৈত্রিক বাড়ি স্যারের। সেখানেই নামকরা একটি কলেজে বদলি হয়েছেন স্যার। চাকরি জীবনের
শেষ দিনগুলো বাড়ির কাছেই কাটাতে চান তিনি।
বিদায় অনুষ্ঠানে ছিল এক গভীর বিষণœতা। অধ্যক্ষ মহোদয় অশোক স্যারের অনেক প্রশংসা করলেন। প্রশংসা করলেন তাঁর
প্রজ্ঞার। কিশোর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন সে কথাই বারবার আসলো সবার কথায়।
অশোক স্যার যাবার আগে আমাকে কিছু বই উপহার দিয়ে গেছেন। সেগুলো পড়ার টেবিলে রেখেছি। বইগুলো দেখলেই
স্যারের কথা মনে পড়ছে।
হাসপাতালে বন্ধুর অসুস্থ পিতার শয্যাপাশে রাত কাটানোর দিনলিপি
২ মার্চ ২০১৭
খবরটা হঠাৎ করেই পেলাম। প্রিয় বন্ধু নাজমুলের বাবা হাসপাতালে। বুকে প্রচÐ ব্যথা বোধ করায় তাড়াতাড়ি হাসপাতালে
নেয়া হয়েছে তাঁকে। ওখান থেকেই ফোন করেছে ও। নাজমুল আমার এত কাছের যে, ও ডাকলেই আমাকে ছুটে আসতে
হয়। স্কুল জীবন থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছি। একই গ্রাম, একই স্কুল। কলেজ ছুটি থাকায় বেড়াতে গিয়েছিলাম ধরলা নদীর
পাড়ে। প্রায় প্রতিদিন বিকালে এখানে আসি। নাজমুলের ফোন পেয়েই দে ছুট। হাসপাতালে গিয়ে যখন পৌঁছালাম দেখি
একজন ডাক্তার নাজমুলের বাবাকে পরীক্ষা করছেন। সকালেই ওদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কতক্ষণ কথা বললাম ওর
বাবা-মায়ের সঙ্গে। ভাবতেই পারছি না যে, এভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বেন উনি। ডাক্তার সবকিছু দেখে ইসিজি করার জন্য
বললেন। সন্ধ্যার পর ইসিজি রিপোর্ট পাওয়া গেল। হার্টে সামান্য সমস্যা। দুতিন দিন থাকতে হবে হাসপাতালে। খবর
পেয়ে নাজমুলের আত্মীয়-স্বজনরা আসতে শুরু করলো হাসপাতালে। ওর বড় বোন, খালা এবং খালু চলে আসলেন
কিছুক্ষণের মধ্যে। নাজমুল বলল ভয়ের কিছু নেই। সামান্য ওষুধেই সুস্থ হয়ে উঠবেন। ওর বোন, খালা হাসপাতালে এসেই
কান্না শুরু করলেন। নাজমুলের কথা শুনে কিছুটা স্বস্তি পেলেন এবং ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করার জন্য অন্য ওয়ার্ডে গেলেন।
রাতে হাসপাতালে থেকে যাবার জন্য নাজমুল আমাকে অনুরোধ করলো। আমি সাগ্রহে রাজি হলাম। নিজের বাবা হলে তো
আমি হাসপাতালেই থাকতাম। সে রাতের কথা আজও মনে পড়ে। আমরা দুই বন্ধু সারারাত দুচোখের পাতা এক করিনি।
গল্পের পর গল্প। এমন কোনো কথা নেই যা আমরা বলা বাকি রেখেছি। আমাদের ব্যক্তিগত-পারিবারিক কথা থেকে শুরু
করে চারপাশের সামাজিক পরিস্থিতি সবই আমরা বলাবলি করেছি। প্রথমে ঠিক করেছিলাম একজন ঘুমাবো, অন্যজন জেগে
থাকবো। এভাবে চলবে পালাক্রমে। কিন্তু একবার গল্প জমে ওঠার পর ঘুম পালালো। অনেক রাতে ডিউটির ডাক্তারটি
রোগীকে দেখে খুশি হলেন। আমাদের টেনশনও বেশ কমে গেল। কিছুক্ষণের জন্য নাজমুলের একটু ঝিমুনি এসেছিলো।
আমি ওকে জাগাইনি। ভোরের আজানের সময় ওর ঘুম ভাঙল। খুব লজ্জা পেল আমাকে রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলো বলে।
পরদিন এই আনন্দ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম যে, নাজমুলের বাবা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
তোমার কলেজে নজরুল জয়ন্তী উদযাপনের দিনলিপি
১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২, রোববার
সকাল ১০টা
বাঙালির প্রাণের কবি নজরুল। আমাদের সংগ্রামী চেতনার কবি নজরুল। বিদ্রোহী কবি নজরুল আমার প্রিয় কবি। আজ
কলেজে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৬তম জন্মদিন উদযাপন করা হলো। কয়েকদিন থেকেই নানা প্রস্তুতি
নেয়া হচ্ছিল। বেশ সকালেই হাজির হলাম কলেজে। মঞ্চটি চমৎকারভাবে সাজানো হয়েছিল। প্রখ্যাত একজন শিল্পীর আঁকা
একটি ছবি মঞ্চের পেছনে রাখা হয়েছিল। নজরুলের সেই বিখ্যাত বাবরি চুলের বিদ্রোহী চেহারার ছবিটি দেখে প্রাণ ভরে
গেল।
সকাল ১০টার মধ্যে অডিটরিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ। তিন ভাগে বিভক্ত অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল উদ্বোধনী ও আলোচনা
সভা। কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ মহোদয়ের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রখ্যাত নজরুল
গবেষক ড. রফিকুল ইসলাম।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্য থেকে কয়েকজন আলোচনায় অংশ নেন। আমাদের বাংলা বিভাগের অধ্যাপকবৃন্দও চমৎকার
আলোচনা করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উঠে আসে কবি নজরুলের নানা দিক। নজরুলের অসা¤প্রদায়িক চেতনা, খেটে
খাওয়া মানুষের প্রতি মমত্ব, মানবতার জন্য তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর কথা শুনে আমরা আলোড়িত হই। গোঁড়া মুসলিম ও
গোঁড়া হিন্দু উভয়ের দ্বারাই আক্রান্ত হন কবি। প্রেম ও বিদ্রোহের এমন যুগল মিলন বাংলা সাহিত্যে খুব কমই ঘটেছে বলে
মত দেন শ্রদ্ধেয় প্রধান অতিথি। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ জনাব হামিদুর রহমান নজরুলের চেতনাকে জীবনে ধারণ ও
লালন করার ওপর জোর দেন। নজরুলের সাহিত্য বেশি করে পড়ার জন্য তিনি ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আহŸান জানান। এছাড়া
নজরুলের সাহিত্য নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া উচিত বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
দ্বিতীয় পর্বে আবৃত্তি অনুষ্ঠান। কলেজের বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী কমল ও ফারিয়া নজরুলের একাধিক কবিতা আবৃত্তি করে
সবাইকে মাতিয়ে তোলে। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ স্যার নিজেই নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার কিছু অংশ আবৃত্তি করে শোনান।
সবাই খুব উপভোগ করি স্যারের এই আবৃত্তি।
তৃতীয় পর্বে সংগীতানুষ্ঠান। বিখ্যাত ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটি দিয়ে এই পর্বের যাত্রা শুরু। কলেজের অনেক তরুণ
শিক্ষার্থী গান গেয়ে মুগ্ধ করে শ্রোতাদের। সবশেষে মঞ্চে আসেন শিল্পী কমলকলি। তিনি মঞ্চে ওঠার সাথে সাথেই প্রচÐ
করতালিতে ফেটে পড়ে অডিটরিয়াম। প্রেম ও বিদ্রোহের বেশ কটি গান গেয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন এই শিল্পী। ‘আমি
চিরতরে দূরে চলে যাব’, ‘শিকল পরা ছল মোদের এ শিকল পরা ছল’ প্রভৃতি গান এক অদ্ভুত পরিবেশ তৈরি করে।
মন্ত্রমুগ্ধের মতো তিন ঘণ্টার এই অনুষ্ঠানটি উপভোগ করলাম। অনেক আনন্দ আর একরাশ স্মৃতি নিয়ে ফিরলাম ঘরে।
বইমেলা দেখার অনুভূতি
১৬ ফেব্রæয়ারি ২০১৭
মফস্বল শহরে থাকি। বহুদিনের ইচ্ছে একুশের বইমেলায় যাব। পত্রিকায় পড়ি মেলার খবর, টেলিভিশনে দেখি। কত
লোকজন, ছাত্রছাত্রী, জ্ঞানীগুণী, কবি-সাহিত্যিকরা মেলায় আসেন, কথা বলেন, কত অনুষ্ঠান হয় বইমেলায়। অবশেষে
এবছর ১৬ ফেব্রæয়ারি সেই দিনটি আসল আমার জীবনে। আজ পুরোটা দিনই কাটলো বাংলা একাডেমির বইমেলায়। গেট
দিয়ে ঢোকার পর বিশাল সোহরাওয়ার্দি মাঠ। সুন্দর সারিবদ্ধ প্যাভেলিয়ান আর দোকান। দারুণভাবে সাজানো হয়েছে মেলা
প্রাঙ্গণ। মূল মঞ্চে নানারকম অনুষ্ঠান হয় প্রতিদিন। আজও ছিল চমৎকার আলোচনা আর সংগীতানুষ্ঠান। কিছুক্ষণের জন্য
আমিও দর্শকদের সারিতে বসে গান শুনলাম।
মেলার ঠিক মাঝখানে বাংলা একাডেমির প্যাভেলিয়ান। সুন্দরভাবে সজ্জিত। অসংখ্য ক্রেতা পছন্দের বইয়ের জন্য ভিড়
করেছে সেখানে। আমার কয়েকটি বইয়ের দরকার ছিল, একটি কোষগ্রন্থ এবং অভিধান। জমানো টাকা দিয়ে তার কয়েকটি
বই কিনে ফেললাম। বাংলা একাডেমি অনেকগুলো জীবনীগ্রন্থ বের করেছে এবার। সেগুলো উল্টেপাল্টে দেখলাম। মেলার
একপাশে ছিল শিশুদের জন্য চমৎকার আয়োজনÑ সিসিমপুর। কচিকাঁচাাদের ভিড় সেখানে উপচে পড়ছে।
নতুন লেখকদের প্রকাশিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের জন্য নজরুল মঞ্চ রয়েছে মেলায়। প্রখ্যাত ব্যক্তিদের দিয়ে মূলত
নতুন লেখকরা তাদের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করিয়ে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের বই প্রকাশ পায় এই মেলার সময়। হাঁটতে
হাঁটতে চোখে পড়লো নজরুল মঞ্চের দিকে। কয়েকজন তরুণ লেখক সেখানে অপেক্ষা করে আছেন তাঁদের প্রতিক্রিয়া
জানানোর জন্য। অনেক প্যাভেলিয়ানে লেখকরা নিজেই বসে আছেনÑ উদ্দেশ্য তাঁদের বইবিক্রির সময় ক্রেতাদের
অটোগ্রাফ দেওয়া। প্রখ্যাত লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারকে এই প্রথম স্বচক্ষে দেখলাম। অনেক তরুণ শিক্ষার্থী তাঁর
অটোগ্রাফ নেয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
শেষ বিকেলে মেলা থেকে বেরিয়ে আসার পর ঘুরে দেখলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কত সংগ্রাম আর গর্বের এই
বিশ্ববিদ্যালয়। রাস্তার দুপাশে হরেকরকম জিনিসের দোকান। বাড়ির জন্য কয়েকটি সৌখিন জিনিস কিনে ফেললাম ছোট
ভাইবোনকে দেয়ার জন্য। ভাবছিলাম আগামীকাল সকালেই আবার ফিরে যাব চিরচেনা গ্রামে কিন্তু বুকের ভেতর বয়ে নিয়ে
যাব বইমেলার এই দারুণ উজ্জ্বল স্মৃতি।
সিলেটের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণের দিনলিপি
২০ ফেব্রæয়ারি ২০১৭
ফেব্রæয়ারির এই মিষ্টি শীতের সকালে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে এসে পৌঁছালাম। সৌন্দর্যের চমৎকার লীলাভূমি এই সিলেট।
শাহজালাল (রা.) ও শাহ পরানের (রা.) মাজার ছাড়াও প্রকৃতি অরূপ সাজে সজ্জিত। রাতে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে খুব
ভোরে পৌঁছালাম শ্রীমঙ্গলে। বেশ খানিকটা সময় ঘুম আর বিশ্রাম। সকাল ১০টার দিকে বেরিয়ে পড়লাম টিলা আর
চাবাগান দেখার জন্য। শ্রীমঙ্গল যে কতটা শ্রীমÐিত তা না দেখলে বুঝতাম না। সিলেটে প্রায় ১৫০টি চা বাগান থাকলেও
সবচেয়ে বড় চা বাগান এবং দেশের একমাত্র চা গবেষণা ইন্সটিটিউটও এই শ্রীমঙ্গলেই অবস্থিত। অনেকটা সময় নিয়ে
দেখলাম টিলা আর চা বাগানের মনোরম ছবি। আমাদের দেশ এত সুন্দর কখনো সেভাবে জানতাম না। হোটেল গ্রান্ড
সুলতান দেখার সুযোগ হাতছাড়া করিনি আমরা। সেইদিনই দুপরের পর গেলাম লাউয়াছড়া ইকো পার্ক দেখতে। কত
রকমের গাছপালা যে এখানে আছে তার ইয়ত্তা নেই। লাউয়াছড়ার অদ্ভুত নির্জনতা আর সবুজ দৃশ্য কিছুতেই ভুলে যাবার
নয়। ফেরার পথে এখানকার বিখ্যাত সাতরঙা চায়ের স্বাদ নিতে ভুল করলাম না। কত রকমের চা যে এখানে আছে তা কে
জানে। পিঠে বাচ্চা বেঁধে নিয়ে চা বালিকারা দারুণ আনন্দে চা পাতা তোলার দৃশ্যটি চোখে পড়লো। সারাদিন পাহাড়-টিলা
আর চা বাগানে কাটিয়ে সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরলাম।
২০ ফেব্রæয়ারি ২০১৭
আজ সারাদিন কাটল মাধবকুÐের ঝর্ণায়। শ্রীমঙ্গল থেকে গাড়ি ভাড়া করে দেড় ঘণ্টায় আসি মাধবকুÐে। এই ঝরনার কথা
অনেক আগে শুনলেও কখনো সামনাসামনি দেখা হয়নি। এখন আমি দাঁড়িয়ে আছি সেই সুবিশাল পাহাড়ি ঝরনার সামনে।
বনবনানির মধ্যে ঝরনার জল পড়ার অদ্ভুত শব্দ। অনেক উঁচু থেকে অবিশ্রাম জলের ধারা নেমে আসছে। ইচ্ছেমতো সেই
জলে লাফালাফি করলাম সবাই মিলে। নানা ভঙ্গিতে ছবি তুললাম। পার্কের বাইরে কারুপণ্যের নানা জিনিস সাজিয়ে বসে
আছে দোকানিরা। কিছু কেনাকাটার লোভ সামলাতে পারলাম না।
বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ওপর দিনলিপি
১৪ এপ্রিল ২০১৭
নববর্ষ বাঙালির প্রাণের উৎসব। এই উৎসব আমাদের ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। এই উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির সুখ-
দুঃখ, স্বপ্ন ও সংগ্রামের উজ্জ্বল ছবি। সারাদেশে আজ উদযাপিত হলো নববর্ষ। আজ ধর্মের কোনো ভেদ নেই, বর্ণের ভেদ
নেইÑ আজ প্রত্যেকেই বাঙালি হয়ে শামিল হয় এই উৎসবে। কীভাবে দিনটি উদযাপন করবো এই পরিকল্পনাই করেছি গত
কদিন থেকে। কলেজ মাঠেই নববর্ষের অনুষ্ঠান হবে এটা জানতাম। তাই অনেক সকালেই চলে আসলাম কলেজে।
দেখলাম আমি আসার আগেই পৌঁছে গেছে আমার অনেক বন্ধুসাথি। আমাদের আনন্দ দেখে কে? নতুন ফতুয়া ধরনের
একটি পোশাক পরেছিলাম। মঙ্গল শোভাযাত্রায় যোগ দিলাম সবাই। কলেজের অধ্যক্ষ স্যার, অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ এবং
ছাত্রছাত্রী ছাড়াও বাইরের শত শত নরনারী এই শোভাযাত্রায় শামিল হয়। ছোট্ট শহরটি প্রদক্ষিণ করলাম আমরা
নেচেগেয়ে। রাস্তার দুপাশে অনেক মানুষ ভিড় করেছিল শোভাযাত্রা দেখার জন্য। শহরে যেন আনন্দের রঙ লেগেছিল।
শোভাযাত্রাটি কলেজমাঠে এসে শেষ হয়। দেখলাম মাঠের এক পাশে পান্তা-ইলিশের আয়োজন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ,
সহযোগিতায় ছিল একটি বহুজাতিক কোম্পানির স্থানীয় শাখা। মাঠের দক্ষিণ দিকে ঐতিহ্যবাহী পিঠেপুলির দোকানও চোখে
পড়লো।
এরপর শুরু হয় সংক্ষিপ্ত আলোচনা এবং তারপর চমৎকার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নববর্ষের ঐতিহ্য ও বাঙালি সংস্কৃতির ওপর
কথা বললেন বিশিষ্টজনেরা। কবিতাপাঠ, আবৃত্তি, নাচ-গান সবই ছিল অনুষ্ঠানে। মেলায় হরেক রকমের জিনিস নিয়ে
দোকান বসেছিল। সেখান থেকে পছন্দের টুকিটাকি জিনিস কিনলাম। এতসব হৈচৈ আনন্দের মধ্যে কখন যে বছরের নতুন
দিনটি চলে গেল বুঝতেই পারলাম না।
কলেজে প্রথম দিনের অনুভূতির দিনলিপি
৪ এপ্রিল ২০১৭
কলেজ জীবন প্রত্যেক ছাত্রের কাছেই স্বপ্নের একটি দিন। স্কুলের গÐি পেরিয়ে কলেজের বড় পরিসরে প্রবেশ সব ছাত্রের
কাছেই অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। সেই অদ্ভুত অনুভূতি আজ আমার হচ্ছে। আমার আজ কলেজ জীবনের প্রথম দিন।
গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে একটু বড় শহরের কলেজে ভর্তি হয়েছি। বুকে ভয় ভয় ভাব। ভোরবেলা ঘুম ভেঙে
গেল। তাড়তাড়ি তৈরি হয়ে নিলাম। গোসল সেরে খেতে বসে ঠিকমতো খেতে পারছিলাম না। কোনোরকমে মুখে কিছু
দিয়ে ইউনিফর্মটা পরে নিলাম। আইডি কার্ড তখনও হয়নি বলে ভর্তি রশিদ দেখিয়ে প্রবেশ করলাম কলেজ প্রাঙ্গণে। সোজা
চলে গেলাম ক্লাশ রুমে। ক্লাশভর্তি ছাত্রÑ সবাই অচেনা। পাশের জনকে নাম জিজ্ঞাসা করায় বলল ফারহান। খুব প্রাণবন্ত
হাসিখুশি ছেলে। কথা হলো আরও কয়েকজনের সঙ্গে। দু’একজন ছাত্র বেশ দুরন্ত প্রকৃতির বলে মনে হলো। প্রথমেই বাংলা
ক্লাশÑ যিনি প্রথম শিক্ষক হিসেবে বাংলা ক্লাশটি নিলেন তাঁর নাম অনাদিনাথ রায়। তিনি কথা বললেন অদ্ভুত সাবলীল
ভঙ্গিতে। কলেজ জীবনে কীভাবে পড়ালেখা করতে হবে, আমরা যাতে অহেতুক সময় নষ্ট না করিÑ প্রতিটি মহূর্ত যেন
কঠোর পরিশ্রম করি, না হলে কী ক্ষতি হতে পারে আমাদের, আমরা কে কী হতে চাই সেসব বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা
বললেন এবং আমাদের কাছে জানতে চাইলেন। অনাদি স্যারের আন্তরিক ব্যবহার এবং আমাদের জন্য তাঁর উদ্বেগ সব
ছাত্রকেই স্পর্শ করলো। এরপর আরও দুটো ক্লাশ হয়ে টিফিনের বিরতি। এই ফাঁকে পুরো কলেজটি ঘুরে দেখলাম। বিশাল
ক্যাম্পাস, খেলার মাঠ, একদিকে একটি চমৎকার ঘাটলাবাঁধা পুকুরÑ তাতে শাপলা ফুটে আছে, বিরাট লাইব্রেরি, ক্যান্টিন,
অডিটোরিয়ামÑ মুহূর্তেই মনটা গর্বে ভরে গেল। টিফিনের পরে আরও তিন পিরিয়ড শেষে যখন বাসায় ফিরছিলাম তখন
এই আনন্দ হচ্ছিল যে, আমি আজ থেকে এরকম দারুণ একটি কলেজের ছাত্র। সারাদিন সারারাত এই আনন্দ আমাকে
কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে গেল।
একটি বৃষ্টিমুখর দিনের দিনলিপি
২১ জুলাই ২০১৬
প্রচÐ গর্জনে ঘুম ভেঙে গেল। জানালা খুলে দেখি সকাল হয়ে গেছে। কিন্তু এই সকাল অন্য দিনের মতো নয়। প্রবল
বর্ষণের সঙ্গে চলছে বজ্রপাত। কিছুক্ষণ পর বজ্রপাত কমে গেল বটে কিন্তু বৃষ্টির আর বিরাম নেই। দুচোখে যেন আবারও
রাজ্যের ঘুম নেমে এলো। কতক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম জানি না, যখন বিছানা ছেড়ে উঠলাম ঘন কালো মেঘে আকাশ ছেয়ে
আছে, আর সেই সঙ্গে চলছে অবিরল বৃষ্টি। গরম এক কাপ চা নিয়ে জানালার পাশে বসলাম। গাছপালা ভিজছে, গাছের
ডালে ভিজে চুপসে কাক বসে আছে এক ঠাঁয়। বাইরে যেতে না পেরে বাড়ির কুকুরটা মন মরা হয়ে বসে আছে। বারান্দায়
হাঁস-মুরগিগুলো জড়ো হয়েছে। আমাকে একটুও ভয় পাচ্ছে না ওরা। আমার মতোই ওরাও বৃষ্টির দাপট দেখছে। মনে
পড়লো বর্ষা ও বৃষ্টি নিয়ে রবীন্দ্রনাথ অসাধারণ কবিতা ও গান রচনা করেছেন। মেঘলা দিনে কৃষ্ণকলি নামের কালো মেয়ের
কালো চোখকে দেখেছিলেন কবি। কালিদাসের মেঘদূত তো সর্বকালের বিরহীর মনোবেদনাকেই প্রকাশ করেছে। হঠাৎ
শুনলাম কাছেই কোথাও রেকর্ডে বাজছে Ñ ‘এমন দিনে তারে বলা যায় এমন ঘনঘোর বরিষায়’ গানটি।
এতক্ষণ আমি বর্ষার একটি দিকই কেবল দেখছিলাম। নতুন আরেকটি দিক দেখলাম একটু পরেই। পত্রিকা বিক্রি করে পেট
চালায় যে কিশোর ছেলেটি সে খুব দ্রæত চলে গেল ভিজতে ভিজতে। পত্রিকা বিক্রি করতে না পারলে আজ হয়ত ওকে না
খেয়েই থাকতে হবে। সামনের গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রিক্সাগুলো যাত্রীর জন্য ব্যাকুল। কিন্তু খুব প্রয়োজন ছাড়া এই
বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কে আর বাইরে বেরোবে? ভাবছিলাম সুখি মানুষের জন্য বৃষ্টি বিলাসিতার সুযোগ করে দিলেও গরিব খেটে
খাওয়া মানুষের কাছে বর্ষা কখনোই রোমান্টিক কিছু না।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
১। দিনলিপি কী ?
২। দিনলিপি রচনার শর্তসমূহ উল্লেখ করুন।
৩। নিচের বিষয়গুলো নিয়ে দিনলিপি রচনা করুন :
সুন্দরবন ভ্রমণের দিনলিপি, বনভোজন থেকে ফিরে এসে দিনলিপি, কলেজ থেকে শিক্ষাসফরে যাবার দিনলিপি।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ