প্রতিবেদন কী প্রতিবেদন রচনার বৈশিষ্ট্য লিখতে পারবে

ইংরেজি রিপোর্ট (Report শব্দটির বাংলা পরিভাষা হলো প্রতিবেদন। রিপোর্ট শব্দটির অর্থ বিবরণ, বিবৃতি।
কোনো তথ্য, ঘটনা বা বক্তব্য সম্পর্কে বস্তুনিষ্ঠ বর্ণনা দেয়ার নাম প্রতিবেদন। প্রতিবেদন যিনি রচনা বা তৈরি
করেন তাকে বলা হয় প্রতিবেদক বা রিপোর্টার। প্রতিবেদককে সাধারণত কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে তথ্য, উপাত্ত,
সিদ্ধান্ত, মূল্যায়ন, ফলাফল ইত্যাদি অনুসন্ধানের পর কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য পেশ করতে হয়। সংবাদপত্রে প্রতিদিন
এরকম অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এধরনের প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের নিজস্ব চিন্তাধারা বা মূল্যায়ন প্রকাশ করার
কোনো সুযোগ নেই। তবে অন্যান্য প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের নিজস্ব ধারণা, চিন্তা ও মূল্যায়ন থাকতে পারে। সেই কারণে
অনেকে সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের সঙ্গে অন্যান্য প্রতিবেদনের পার্থক্য রয়েছে বলে মনে করেন।
প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য
১। কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনা করতে হবে।
২। প্রতিবেদনে তথ্য ও বস্তুনিষ্ঠতা থাকতে হবে।
৩। প্রতিবেদন হবে সহজ, সরল ও যুক্তিপূর্ণ। পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে প্রতিবেদন রচনা করা যাবে না।
৪। আবেগ-উচ্ছ¡াস নিয়ে প্রতিবেদন রচনা করা ঠিক নয়।
৫। প্রতিবেদনের বিষয়টি কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করে রচনা করা যেতে পারে।
৬। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোই প্রতিবেদনে প্রধানভাবে আলোচিত হবে।
প্রতিবেদনের নমুনা
‘পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষমেলা’ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন রচনা করুন।
প্রতিবেদনের প্রকৃতি : সংবাদ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : জীবনের জন্য বৃক্ষ
প্রতিবেদন তৈরির সময় : দুপুর ১২.০০ টা
তারিখ : ২০Ñ৮-২০১৬
সংযুক্তি : বৃক্ষরোপণের ছবি (৩টি)
জীবনের জন্য বৃক্ষ
বৃক্ষ প্রকৃতির অংশ। প্রকৃতি ছাড়া পৃথিবী ও মানুষ বাঁচতে পারে না। মানুষের জীবনের অপরিহার্য উপাদান বৃক্ষ।
মানবজীবনের এমন কোনো দিন নেই বা মুহূর্ত নেই যে, বৃক্ষ ছাড়া মানুষ চলতে পারে। কারণ বৃক্ষ থেকেই নির্গত হয়
অক্সিজেন এবং এই অক্সিজেন ছাড়া মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাসের কথা চিন্তাই করতে পারে না। পরিবেশের অন্যতম উপাদান বৃক্ষ ও গাছপালা।
বাংলাদেশে খুব দ্রæত নগরায়ণ ঘটছে। ফলে গাছপালা ও বনভূমির পরিমাণ কমে আসছে। পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলেন যে,
কোনো দেশের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে মোট ভূমির শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা দরকার। কিন্তু আমাদের
দেশে এই বনভূমির পরিমাণ মাত্র ১৬ ভাগ। উত্তরবঙ্গে এই বনভূমির পরিমাণ আরও কম। ফলে একধরনের দীর্ঘ মেয়াদি
খরা ও মরুকরণের শঙ্কায় আছে আমাদের দেশ। যেভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা কেটে নেয়া হচ্ছে তার মারাত্মক
প্রভাব পড়েছে পরিবেশের ওপর। বৃক্ষের প্রতি মানুষ যদি সদয় ও যতœবান না হয় তবে সামনে আরও বিপদ রয়েছে। বিশ্বের
বনভূমি উজাড় হতে হতে অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে। গাছপালার অভাবে প্রকৃতিতে দেখা দিচ্ছে ভূমিক্ষয়, বৃষ্টিহীনতা,
ঊষরতা। ক্রমাগত বেড়ে চলেছে আমাদের জনসংখ্যা। এই বাড়তি মানুষের চাপে বনভূমির পরিমাণ দ্রæত কমে যাচ্ছে।
যেখানে তিনটি গাছ কাটা হচ্ছে সেখানে লাগানো হচ্ছে একটি গাছ। দেশের উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে বনভূমির পরিমাণ
নেমে এসেছে ৩.৫ শতাংশে। এরই বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে। দিনের বেলা প্রচÐ গরম
আর রাত্রিবেলা থাকে কনকনে ঠাÐা। বৃক্ষ শুধু প্রকৃতির ভারসাম্যই রক্ষা করে না, গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙা করেও তোলে।
বাংলাদেশে প্রথম ১৯৭৬ সালে সরকারি উদ্যোগে গাছ লাগিয়ে বনাঞ্চল তৈরির কর্মসূচি নেয়া হয়। ১০-১৫ একর জমি নিয়ে
কৃত্রিম বন সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়।
বৃক্ষের প্রতি মানুষকে আগ্রহী ও মনোযোগী করে তোলার জন্য প্রতিবছর ১৩ জুন সারাদেশে ‘বৃক্ষরোপণ অভিযান’ সরকারি
কর্মসূচি হিসেবে পালিত হচ্ছে। প্রতিটি জেলা ও থানা সদরে কয়েকদিন ব্যাপী বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয় এবং নানা
স্থানে আনুষ্ঠানিকভাবে গাছ রোপণ করা হয়। সবাইকে বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্নরকম পুরস্কার ও পদক
প্রবর্তন করা হয়েছে। ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার’ দেয়া হয় এজন্য। এর ফলে একধরনের সামাজিক সচেতনতা তৈরি
হয়েছে অনেকের মধ্যে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় এখন পুরস্কার হিসেবে বৃক্ষচারাও দেয়া হয়। বৃক্ষরোপণের ক্ষেত্রে
বাংলাদেশে বেসরকারি সংস্থাগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রাস্তার দুপাশে এবং পরিত্যক্ত বিভিন্ন অঞ্চলে তারা
প্রচুর বৃক্ষরোপণ করছে। এইসব বৃক্ষরাজি কেবল চারদিকের শোভাই বৃদ্ধি করেনি, পরিবেশ রক্ষার্থেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করছে।
বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সরকারি বেসরকারি নানাভাবে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা চলছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য
যে, অসাধু বনকর্মকর্তা এবং স্থানীয় ক্ষমতাবান ব্যক্তির কারণে প্রচুর বৃক্ষ লোপাটও হয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে বেশ
কয়েকজন অসাধু বন কর্মকর্তা বৃক্ষনিধনে সহায়তা ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়ায় শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন। রাজনৈতিক
প্রভাবশালীরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে রাস্তার পাশের বহু গাছ রাতের আঁধারে কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন।
এদের বিরুদ্ধে যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়া যায় তবে পরিণতি খুব ভয়াবহ হতে পারে। প্রতিটি নাগরিকের বৃক্ষরোপণ
অভিযানে শরিক হওয়া উচিত। কারণ বৃক্ষই জীবন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আজ শুধু অরণ্য সংরক্ষণ নয়, অরণ্য
স¤প্রসারণেরও কাজ চলছে। তাই বৃক্ষরোপণ শুধু প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসাই নয়, মানবসভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার জন্যও
এক বিরাট প্রয়াস।
‘বাংলাদেশের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা’ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন রচনা করুন।
প্রতিবেদনের প্রকৃতি : সংবাদ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : বাংলাদেশের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা
প্রতিবেদন তৈরির সময় : দুপুর ১২.০০ টা
তারিখ : ২০Ñ৮-২০১৬
বাংলাদেশের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা
শিক্ষার মূল্য অর্থ দিয়ে করা যায় না। শিক্ষার কারণেই মানুষ ও পশুতে পার্থক্য তৈরি হয়। মানবসভ্যতা শিক্ষার ওপর
নির্ভরশীল। জাতীয় ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব সর্বাধিক। মাটিতে কেবল বীজ ছড়িয়ে দিলেই হয় না, সেই
বীজ থেকে সবুজ পাতা সৃষ্টিতে দরকার হয় উর্বর মাটি, জল ও প্রয়োজনীয় আলো। তেমনি একটি মানবশিশু জন্ম নিলেই
হবে না, তাকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে দরকার উপযুক্ত শিক্ষা ও পরিচর্যা। বর্তমান বিশ্ব হলো
প্রতিযোগিতামূলক। তাই বর্তমান প্রজন্মকে কেবল শিক্ষা দিলেই হবে না, তাকে সুশিক্ষায় মানবসম্পদে পরিণত করতে
হবে। মানুষকে মানবসম্পদে পরিণত করার প্রধান উপায় হলো শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা সেই বৃহত্তর শিক্ষার প্রথম সোপান।
জাতীয় শিক্ষার মূল ভিত্তি হলো প্রাথমিক শিক্ষা। ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত হলো প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা। প্রাথমিক
শিক্ষা সবার জন্য বাধ্যতামূলক হওয়ায় একে ‘সার্বজনীন শিক্ষা’ বলা হয়।
আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার মান বেশ নাজুক। শিক্ষার মানের অবনতি পীড়াদায়ক। আগের তুলনায় শিক্ষার
হার বাড়লেও তা যথেষ্ট নয়। বিপুল সংখ্যক নিরক্ষর মানুষ দেশের জন্য বোঝাস্বরূপ। তাদের চিন্তাভাবনা ও ধ্যানধারণাও
পুরোনো। তারা আধুনিক জীবন-জগৎ সম্পর্কে কোনো সুষ্ঠু জ্ঞান রাখে না। ফলে সাধারণ শিক্ষার অভাবে এই জনগোষ্ঠী
দেশ ও জাতির কোন কাজে লাগে না। তারা রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য অভিশাপ। এই অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য
বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়।
সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব দেয়া হয়েছে প্রায় দেড়শ বছর আগে থেকে। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে সংবিধান
প্রণয়ন করা হয়। এই সংবিধানে শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। ১৯৭৪ সালের কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন রিপোর্টেও
সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার ওপর বিশেষ জোর দেয়া হয়। রাজনৈতিক কারণে এই প্রস্তাবও বাস্তবায়ন করা যায়নি। ২০০০
সালের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষাকে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু তারপরও প্রায় সাত কোটি মানুষ
শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছে। কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি কমাতে না পারলে আমাদের সব পরিকল্পনাই ভেস্তে যাবে। গত
বছরগুলোতে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেক বেশি ছিল। জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে।
ফলে অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপে শিক্ষার সুফল লাভে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।
সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা প্রসারের ক্ষেত্রে নানা বাধা-বিপত্তি রয়েছে। দারিদ্র্য তার মধ্যে বড় একটি কারণ। গরিব মাবাবারা তাদের সন্তানদের স্কুলে না পাঠিয়ে কাজেকর্মে পাঠাতে বেশি আগ্রহী। সন্তান টাকা রোজগার করে সংসারে সাহায্য
করবে এই হলো তাদের মনোভাব। লেখাপড়া শেখাকে তারা সময়ের অপচয় বলে মনে করে। সেজন্য দারিদ্র হ্রাস পাবার
সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারের একটি সম্পর্ক রয়েছে। এশিয়ার বহু দেশে শিক্ষার হার অনেক বেশি। শ্রীলঙ্কা, জাপান ও
রাশিয়ায় এই সংখ্যা প্রায় শত ভাগ। সমস্ত বাধা-বিপত্তি দূর করে প্রাথমিক শিক্ষার আলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতেই হবে। তা
নাহলে উন্নয়ন সঠিকভাবে হবে না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে। সরকার ও সাধারণ মানুষের
ঐক্যবদ্ধ চেষ্টার দ্বারা প্রাথমিক শিক্ষাকে সবশ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারলে দেশ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে
যাবে বলে আমরা মনে করি।
‘নগর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা’ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন রচনা করুন।
প্রতিবেদনের প্রকৃতি : সংবাদ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : নগর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা
প্রতিবেদন তৈরির সময় : দুপুর ১২.০০ টা
তারিখ : ২০Ñ৮-২০১৬
সংযুক্তি :
নগর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা
বাংলাদেশ একটি গ্রামপ্রধান দেশ। প্রায় ৬৮হাজার গ্রাম নিয়ে গড়ে উঠেছে আমাদের এই দেশ। কিন্তু ধীরে ধীরে নগরায়ণের
পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশে নগরায়ণ দ্রæত গতিতে শুরু হয়।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে অনেক বেশি সংখ্যায় মানুষ নগর ও শহরে বাস করতে থাকে। বাংলাদেশে নগর উন্নয়ন
পরিকল্পনা বেশি দিনের নয়। ১৯৬৫ সালে নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম থেকেই এই অধিদপ্তর ভূমির
পরিকল্পিত ব্যবহারের মাধ্যমে জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রাখছে।
নগরায়ণের ফলে অনিবার্য কিছু সমস্যা দেখা যায়। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন ও অপরাধপ্রবণতা সাগরিক জীবনে
নিরাপত্তাহীনতার জন্ম দেয়। নগরে বসবাসকারী মানুষ সবাই ধনী নয়, অনেক গরিব লোকজনও নগরে বাস করে। গ্রামের
আর্থিক উন্নতি না ঘটলে নগরের উন্নয়ন ঘটে না। বাংলাদেশের অধিকাংশ নগরের অর্থনৈতিক কাঠামো দুর্বল। পরিবহন
সমস্যা, যানজট সমস্যা, সড়ক দুর্ঘটনা নগরবাসীর জন্য চরম আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। নগরজীবনে নানারকম সেবা পাওয়া
যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেবা পাবার ক্ষেত্রে বহু বৈষম্য দেখা যায়। নগরে অনেক গরিব লোক বাস করে। বস্তিগুলোতে
অনেক গরিব লোক ঠাঁই নিয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বৈষম্য থাকায় মানুষের জীবনযাত্রায় মারাত্মক
প্রভাব পড়ে। নারী ও শিশু নির্যাতন, ছিনতাই ইত্যাদি নানা অপরাধমূলক কর্মকাÐ নগরবাসীর মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
বায়ু, পানি ও শব্দদূষণ তীব্র আকার ধারণ করায় জনজীবন যেমন অসহ্য হয়ে উঠেছে তেমনি অসাধু ব্যক্তিরা উন্মুক্ত স্থান,
পার্ক ও উদ্যান, লেক, নদী, জলাশয় প্রভৃতি দখল করে নেয়ায় নগরের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। তাছাড়া
দখলদারদের হাত থেকে পাহাড়, বনবনানীও রেহাই পাচ্ছে না। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা। বর্তমান সময়ে
এসে নগর উন্নয়নের পরিকল্পনা খুব গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ আমাদের অর্থনীতির মূল ভিত্তি গ্রাম হলেও নগরজীবন আমাদের
উন্নয়নের সূতিকাগার। সে লক্ষ্যেই বর্তমানে সরকার শহর ও নগরগুলোর বিকেন্দ্রিকরণের কথা ভাবছেন। নগরায়ণের ভালো
দিকগুলো চিহ্নিত করে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। নগর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা আজ
ব্যাপকভাবে অনুভব করা যাচ্ছে। সেজন্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন আগে করতে হবে। বিভিন্ন সংস্থা, সুশীল সমাজ, নাগরিক
প্রতিনিধির সহযোগিতায় পরিকল্পিত নগরায়ণের দিকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেজন্য নগরের বিকেন্দ্রীকরণ করতে
হবে। মহানগর, মাঝারি শহর এবং ছোট শহরগুলোকে এই উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। আমরা জানি,
কাজের সন্ধানে প্রতিদিন রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় বড় শহরে অনেক গরিব মানুষ ভিড় করে। এর ফলে নগরে বাড়তি
চাপ পড়ে এবং মানুষের জীবন নানাভাবে বিপন্ন হয়। সেইজন্য নগরায়ণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে
শহরমুখী মানুষের এই স্রোত বন্ধ করা যায়। পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে জনগণকে যুক্ত করতে হবে উন্নয়নের
সঙ্গে এবং লক্ষ রাখতে হবে যাতে বিনিয়োগ বাড়ে। বিনিয়োগ বাড়লে নগরের শিল্পায়ন হবে এবং মানুষের কাজ ও আয়
বাড়বে, দারিদ্র্য কমবে। দারিদ্র্য দূর হলে জীবনযাত্রার মান বাড়বে।
আবাসিক এলাকার সঙ্গে অফিস ও বাণিজ্যিক এলাকা তৈরি করা , গতিশীল পরিবহন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা এবং রাজধানী
ঢাকা ও চট্রগ্রামের দিকে জনস্রোত হ্রাস করা অপরিহার্য। নগরে আবাসন তৈরির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে
এবং সড়ক পথের উন্নয়ন করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি নগর উন্নয়নের জন্য পরিবেশের ক্ষতি করে এমন সব কার্যক্রম বন্ধ করে
ভূমি সংরক্ষণ করতে হবে। এই নগর উন্নয়নের সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে উন্মুক্ত
স্থানসমূহ রক্ষা করা, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, পাহাড়ি জেলাগুলোতে পাহাড়, টিলা রক্ষা করা, শহরের নিকটবর্তী
অঞ্চল বা শহরতলি এলাকাকে অপরিকল্পিত উন্নয়ন থেকে রক্ষা করার মাধ্যমে নগরায়ণজনিত সমস্যা সমাধান করা যায়।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল একটি দেশ। বাংলাদেশ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট ২০২১ পরিকল্পনাকে লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ
করেছে। দেশের সুষ্ঠু উন্ননের জন্য নগরায়ণের কোন বিকল্প নেই। পল্লির মানুষ ও কৃষির উন্নতির সাথে সাথে পরিকল্পিত
নগরায়ণ না হলে সত্যিকারের জীবনমানের উন্নয়ন অর্জিত হবে বলে মনে হয় না। অতএব এখনি দরকার দীর্ঘমেয়াদি
পরিকল্পনা, দরকার তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন।
‘সুখী কমলগঞ্জ কলেজের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা’ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন রচনা করুন।
প্রতিবেদনের প্রকৃতি : সংবাদ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : কলেজের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
প্রতিবেদন তৈরির সময় : দুপুর ১২.০০ টা
তারিখ : ২০Ñ৮-২০১৬
সুখী কমলগঞ্জ কলেজের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
সুখী কমলগঞ্জ কলেজের সপ্তাহব্যাপী বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা গত ৬ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত
হয়। সুখী কমলগঞ্জ কলেজটি এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পড়াশুনোর পাশাপাশি সংস্কৃতিচর্চা ও
খেলাধুলায় এই কলেজের সুনাম দীর্ঘদিনের। জাতীয় পর্যায়েও এই কলেজটি পুরস্কৃত হয়েছে ইতোমধ্যে। স্বনামধন্য সুখী
কমলগঞ্জ কলেজের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সবার আগ্রহ ও মনোযোগ দাবি করে প্রতিবছর।
অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে সুখী কমলগঞ্জ কলেজের সপ্তাহব্যাপী বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজক হিসেবে সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক, ছাত্র সংসদের সাহিত্য ও
সংস্কৃতি সম্পাদক অসামান্য কৃতিত্বের পরিচয় দেন। এছাড়াও সংস্কৃতিমনা অন্য কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রী এই
আয়োজনকে সফল করে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে গেছে। সপ্তাহ ধরে চলা এই প্রতিযোগিতাটি ছিল উন্নত রুচি ও
মূল্যবোধের পরিচায়ক।
সুদক্ষ অধ্যক্ষ মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য
মহোদয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনও করেন তিনি। বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকবৃন্দের উপস্থিতিতে
প্রতিযোগিতার সূচনা হয়। বেশি সংখ্যক ছাত্রছাত্রী যাতে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে সেজন্য অনেক রকম বিষয়কে
প্রতিযোগিতার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। স্বরচিত কবিতা, উপস্থিত বক্তৃতা, আবৃত্তি, নির্ধারিত বক্তৃতা, বিতর্ক, পুথিপাঠ, গল্প বলা,
প্রবন্ধ রচনা, স্বরচিত গল্প-কবিতা, সুন্দর হস্তাক্ষর, একক অভিনয়, চিত্রাঙ্কন, দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুল
সংগীত, উচ্চাঙ্গ সংগীত, পল্লিগীতি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, লালনগীতি, আধুনিক গান, ছড়া গান, নৃত্য, কৌতুক, চিত্রাঙ্কন
প্রভৃতি বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অনেকজন করে প্রতিযোগী এতে অংশ নেয়, যার ফলে তীব্র প্রতিদ্ব›িদ্বতা হয়
প্রতিটি শাখায়। শিক্ষকবৃন্দ আগ্রহ নিয়ে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন এবং উপভোগ করেন সমগ্র অনুষ্ঠানটি। বাড়তি
উৎসাহ যুগিয়েছে অডিটোরিয়াম ভর্তি শিক্ষার্থীর সরব উপস্থিতি। যারা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি, দর্শক হিসেবে উপস্থিত থেকে
তারা অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে রাখে। স্কাউট ও রোভার দলের সদস্যরা শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ দক্ষতার পরিচয় দেয়।
প্রতিযোগিতার শেষ দিনে এলাকার সম্মানিত সংসদ সদস্য প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার
বিতরণ করেন এবং সবার উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। কলেজের এই সাংস্কৃতিক চর্চায় প্রধান অতিথি মহোদয় সন্তোষ প্রকাশ
করে আরও বেশি বেশি সাংস্কৃতিক চর্চা অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেন। তাঁর বক্তব্যে তিনি ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনায় আরও
মনোযোগী হতে পরামর্শ দেন এবং কলেজের উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রæতি দেন। শিক্ষা যেমন আমাদের প্রকৃত
মনুষ্যত্বের অধিকারী করে তোলে তেমনি সংস্কৃতিচর্চা শিক্ষার্থীদের সুকুমার বৃত্তিকে বিকশিত করে তুলবে বলে তিনি দৃঢ়
প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সপ্তাহব্যাপী প্রতিযোগিতায় ১ম, ২য়, ৩য় স্থান বিজয়ীদের মধ্যে মূল্যবান বই ও স্মারক প্রদান করা হয়। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী
সুনন্দা অধিকারী পাঁচটি বিষয়ে বিজয়ী হয়ে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হবার কৃতিত্ব অর্জন করে। এই সাফল্যের জন্য তাকে
বিশেষ পুরস্কার একটি ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।
সুখী কমলগঞ্জ কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ মহোদয় প্রতিযোগিতায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থেকে সবাইকে অনুপ্রাণিত
করেন। পুরো আয়োজনের জন্য অধ্যক্ষ মহোদয়ের প্রচেষ্টা ও আগ্রহের ভূয়সীপ্রশংসা করা হয়। বিপুল সংখ্যক অভিভাবক
সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং তারা অকুণ্ঠচিত্তে এই ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজনের
প্রশংসায় মুখর হয়ে ওঠেন। অভিভাবকদের জন্যও কয়েকটি প্রতিযোগিতা নির্ধারিত ছিল। তাতে অনেক অভিভাবক অংশ
নেন এবং তাদের মধ্যে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। সাত দিনব্যাপী দারুণ উৎসাহ ও উচ্ছ¡াসের মধ্য দিয়ে এই
প্রতিযোগিতার সমাপ্তি ঘটে।
বন্যার পর তোমার এলাকার গৃহীত পুনর্বাসন কাজ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করুন।
প্রতিবেদনের প্রকৃতি : সংবাদ প্রতিবেদন
প্রতিবেদনের শিরোনাম : বন্যার পর তোমার এলাকার গৃহীত পুনর্বাসন কাজ
প্রতিবেদন তৈরির সময় : দুপুর ১২.০০ টা
তারিখ : ২০Ñ৮-২০১৬
সংযুক্তি :
বন্যাকবলিত চিলমারি উপজেলার পুনর্বাসন
উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকা চিলমারি। মঙ্গা আর দারিদ্র্যের ছবি এখানকার নিষ্ঠুর বাস্তবতা। কৃষিনির্ভর এই
অঞ্চলটি মাত্র গত মাসেই ভয়াবহ বন্যার কবলে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। অবিরল বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে চিলমারি উপজেলাটি
স্মরণকালের প্রচÐ বন্যায় তছনছ হয়ে যায়। একই সময়ে দেশের দক্ষিণÑপশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলাও বন্যার
কবলে পড়ে। হঠাৎ এই বন্যায় চিলমারি উপজেলাটি যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তা অবর্ণনীয়। বন্যায় কেবল মানুষই মারা
যায়নি বা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়নি, কৃষি ফসল এবং গবাদি পশুরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
প্রায় মাসব্যাপী এই বন্যায় সমগ্র চিলমারি উপজেলা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। টানা বর্ষণ এবং সীমান্তের ওপার থেকে আসা
পাহাড়ি ঢলে একদিনেই পাল্টে যায় এলাকার চিরচেনা চিত্র। নিচু এলাকার ঘরবাড়ি তলিয়ে যায় পানিতে, জমির ফসল
ভেসে যায়, গবাদি পশুর জীবন বিপন্ন হয়ে ওঠে খাদ্য ও আশ্রয়ের অভাবে। উপজেলার যেদিকে চোখ যায় শুধু পানি আর
পানি। মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বাঁধে-স্কুল-কলেজে এবং শহরের পরিত্যক্ত ভবনে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেয়। গবাদি পশু, হাঁসমুরগি নিয়ে বিপাকে পড়ে মানুষজন। খাবারের অভাবে অনেক পশু দুর্বল হয়ে পড়ে, পানিতে ভেসে যায় কোন কোনটি।
স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা-সরকারি প্রতিষ্ঠান-বাজার-দোকানপাট এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনেও পানি ওঠে।
স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত হয়। সরকারি সাহায্য না পাওয়া পর্যন্ত মানুষ অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটায়।
বন্যার পানি প্রায় দুই সপ্তাহ পরে নেমে যেতে শুরু করে। বর্তমানে এখানে পুনর্বাসন কাজ শুরু হয়েছে এবং সরকারি নানা
কর্মসূচি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। ভেঙে যাওয়া রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় সংস্কার
করা হচ্ছে। এতে করে বেকার লোকেরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। গরিব-অসহায় মানুষদের মধ্যে ভিজিএফ কার্ডের
মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে। কৃষিজমির ফসল পানিতে ভেসে যাওয়ায় তারা পথে বসতে বসেছে। তাই সরকারের পক্ষ
থেকে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক প্রদান করা হচ্ছে। সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করবেন বলে সরকার
ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন এবং অগ্রাধিকারভিত্তিতে তা বাস্তবায়নের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। গৃহহীনদের জন্য গৃহ
নির্মাণেও অর্থ বণ্টন করা হয়েছে। সরকারের এই দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ সকলের প্রশংসা অর্জন করেছে। কিন্তু মহৎ এই উদ্যোগ
সত্তে¡ও অনেক মানুষই বঞ্চিত হয়েছে প্রয়োজনীয় সাহায্য পেতে। অসাধু দুর্নীতিবাজ স্থানীয় কিছু মানুষের জন্য সত্যিকারের
অনেক গরিব লোক এবং বানভাসি মানুষ সাহায্য পায়নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, ব্রিজ, রাস্তাঘাট ইত্যাদি মেরামতের জন্য
সরকারি অনুমোদন দেয়া হয় এই উপজেলার জন্য।
বন্যা পরবর্তী সময়ে এলাকায় বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। চিলমারিতে সে ধরনের কিছু রোগবালাই দেখা গেলেও
তা যাতে মহামারির আকারে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি
হাসপাতালে ওষুধপত্র প্রস্তুত রাখা, ডাক্তারদের ছুটি বাতিল করাসহ এনজিও প্রশিকা, ব্র্যাক ও অন্যান্য স্থানীয় সংস্থাগুলো
সার্বক্ষণিকভাবে স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান করায় প্রাণহানির কোন ঘটনা এখানে ঘটেনি। বিভিন্ন প্রকারের ওষুধ সরবরাহ করা
এবং আক্রান্ত রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দেয়ার ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বন্যা-পরবর্তী কৃষি
কার্যক্রম যাতে চালিয়ে নেয়া যায় এবং ক্ষতি হয়ে যাওয়া ফসলের কারণে যাতে খাদ্যাভাব দেখা না দেয় সেজন্য আগাম
প্রস্তুত থাকতে কৃষিদপ্তরকে ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বীজতলা তৈরি করে কৃষকদের মধ্যে বীজ সরবরাহ নিশ্চিত
করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে দেশের ব্যাপক অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হবার কারণে সরকারের পক্ষে পরিস্থিতি
মোকাবেলা করা বেশ কঠিন। বন্যায় মানুষের যে ক্ষতি হয় তা পূরণ করা খুব কঠিন। তারপরও এসব সামান্য সাহায্য-
সহযোগিতা বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে মানুষকে সাহস জোগায়, তাদের টিকে থাকার লড়াইয়ে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ
হলে সব এলাকার প্রতিই সরকারকে নজর দিতে হয়। তারপরেও চিলমারি এলাকার পুনর্বাসন কাজে সরকারের সহযোগিতা
ও তৎপরতা প্রশংসার দাবি রাখে। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। যেকোনো প্রাকৃতিক সংকটে সরকারের পাশাপাশি
দেশের জনসাধারণকেও পাশে এসে দাঁড়ানো উচিত।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
১। প্রতিবেদন বলতে কী বুঝায় ? সার্থক প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করুন।
২। নিচের বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবেদন রচনা করুন :
ক) কলেজ গ্রন্থাগার সম্পর্কে প্রতিবেদন
খ) লোডশেডিং সম্পর্কে প্রতিবেদন
গ) যানজট সমস্যা সম্পর্কে প্রতিবেদন

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]