সমাসের প্রকরণ

সমাসের প্রকরণ

পাণিনি থেকে সুনীতিকুমার পর্যন্ত প্রায় প্রত্যেক ব্যাকরণবিদ সমাসের সংজ্ঞা, গঠন বা প্রকৃতি অনুসারে সমাসকে ৬ প্রকার দেখিয়েছেন। তবে সমাসের বৈশিষ্ট্য অনুসারে তাঁরা এক সমাসের মধ্যে আরেক সমাস লিপিবদ্ধ করেছেন। যেমন:

প্রধানত

মূলসমাসের অন্তর্ভুক্ত সমাস

অর্থপ্রধান সমাস

১. দ্বন্দ্ব সমাস  

২. দ্বিগু সমাস  

৩. কর্মধারয় সমাস  

৪. তৎপুরুষ সমাস  

৫. অব্যয়ীভাব সমাস 

৬. বহুব্রীহি সমাস

১. নিত্যসমাস    

২. প্রাদিসমাস     

৩. একদেশি সমাস   

৪. নং/নঞ সমাস    

৫. অলুক সমাস

৬. নিপাতনে সমাস 

৭. সংখ্যাবাচক সমাস

৮. বহুপদী সমাস   

৯. একশেষ সমাস 

১০. উপপদ সমাস

১. উভয়পদের অর্থপ্রধান সমাস-দ্বন্দ্ব সমাস

২. তৃতীয়া পদের অর্থপ্রধান সমাস-দ্বন্দ্ব সমাস

৩. পূর্বপদের অর্থপ্রধান সমাস-অব্যয়ীভাব

৪. উত্তর ও পরপদের অর্থপ্রধান সমাস

   -তৎপুরুষ সমাস, কর্মধারয় সমাস, দ্বিগু

 

 

প্রতিটি সমাসের সংজ্ঞা, গঠন ও নমুনা দেয়া হলো :

দ্বন্দ্ব সমাস

দ্বন্দ্ব সমাস অর্থ ঝগড়া-বিবাদ কিন্তু সমাসে দ্বন্দ্ব সমাস অর্থ জোড়া/দ্বিত্ব। দ্বন্দ্ব সমাসকরতে দুটি বিশেষ্যর মাঝে ‘ও/আর’ বসে। ‘এবং’ বসে না কারণ ‘এবং’ শব্দ ও শব্দ নয়-বাক্য ও বাক্য জোড়া লাগাতে প্রয়োজন হয়। যে সমাসে প্রত্যেকটি সমস্যমান পদের অর্থ প্রায় সমান বা অর্থের প্রাধান্য থাকে তাকে দ্বন্দ্ব সমাসবলে। অথবা ‘ও, আর’ ইত্যাদি যোজকযুক্ত ব্যাসবাক্যকে দ্বন্দ্ব সমাসবলে। একই জাতীয় শব্দ ‘ও, আর’ দিয়ে যুক্ত করা হয়।

দ্বন্দ্ব সমাসের নিয়ম

১. একই অর্থবোধক দুটি শব্দকে একটি শব্দ করা হয় তবে মাঝে হাইফেন লাগে। যেমন: মা ও বাবা —মা-বাবা।

২. পূর্বপদ ও পরপদ দুই শব্দই হবে বিশেষ্য। বিশেষ্য+বিশেষ্য। যেমন: ছেলে ও মেয়ে—ছেলে-মেয়ে/ ছেলেমেয়ে।

৩. পূর্বপদ ও পরপদ দুই শব্দই হবে সর্বনাম। সর্বনাম+সর্বনাম। যেমন: তুমি ও আমি—তুমি-আমি।

৪. পূর্বপদ ও পরপদ দুই শব্দই হবে বিশেষণ। বিশেষণ+বিশেষণ। যেমন: ভালো ও মন্দ—ভালো-মন্দ।

৫. পূর্বপদ ও পরপদ দুই শব্দই হবে ক্রিয়া। ক্রিয়া+ক্রিয়া। যেমন: লেখা ও পড়া—লেখা-পড়া।

৬. পূর্বপদ ও পরপদ দুই শব্দই ক্রিয়াবিশেষণ হবে। ক্রিয়াবিশেষণ+ক্রিয়াবিশেষণ। যেমন: আগে ও পিছে, ধীরে ও সুস্থে।

 

দ্বন্দ্ব সমাসের প্রকরণ

১. মিলনার্থক (অভিন্ন সম্পর্ক): মা-বাবা—মা ও বাবা, মাবাপ—মা ও বাপ, দুধভাত—দুধ ও ভাত, সোনারুপা—সোনা ও রুপা, ভাইবোন—ভাই ও বোন, নানা-নানি—নানা ও নানি, দাদা-দাদি—দাদা ও দাদি, খালা-খালু—খালা ও খালু, চোর ডাকাত—চোর ও ডাকাত, গরু ছাগল—গরু ও ছাগল।

২. সমার্থক (একই অর্থবোধক দুটি শব্দ): ঘরবাড়ি—ঘর ও বাড়ি, চিঠিপত্র—চিঠি ও পত্র, হাটবাজার—হাট ও বাজার, ধনদৌলত—ধন ও দৌলত, কাজকর্ম—কাজ ও কর্ম, পথঘাট—পথ ও ঘাট।

৩. সহচর (পরস্পর পরস্পরের সহচর): দয়ামায়া—দয়া ও মায়া, ছলচাতুরি—ছল ও চাতুরি, জামাকাপড়—জামা ও কাপড়, কালপরশু—কাল ও পরশু।

৪. অনুচর (পরস্পর পরস্পরের অনুচর/দ্বিতীয়া পদ অর্থহীন): দোকানপাট—দোকান ও পাট, কাপড়চোপড়—কাপড় ও চোপড়, হাতটাত—হাত ও টাত, ভুলটুল—ভুল ও টুল।

৫. বিরোধার্থক (বৈরিভাব অর্থবোধক দুটি শব্দ): অহীনকুল—অহি ও নকুল, স্বর্গনরক—স্বর্গ ও নরক।

৬. বিপরীতার্থক (বিপরীত অর্থবোধক দুটি শব্দ/ বিশেষণ): দিনরাত—দিন ও রাত, ছেলেমেয়ে—ছেলে ও মেয়ে, জমাখরচ—জমা ও খরচ, ভালোমন্দ—ভালো ও মন্দ, টকমিষ্টি—টক ও মিষ্টি।

৭. বহুশব্দ: এখানে ‘এবং’ বসে না। সব ব্যাকরণ বইতে ‘এবং’ ব্যবহার করা হয়েছে। শব্দকে জোড়া লাগাতে ‘ও’ বসে ‘এবং’ বসে না। ‘এবং’ বসে বাক্যকে জোড়া লাগাতে। যেমন : ইট, বালি, সিমেন্ট, শুরকি—ইট, বালি, সিমেন্ট ও শুরকি। সাহেব, বিবি, গোলাম—সাহেব, বিবি ও গোলাম।

৮. অলুক (এ বিভক্তিলোপহীন শব্দ): দুধেভাতে—দুধে ও ভাতে, জলেস্থলে—জলে ও স্থলে, কোলেপিঠে—কোলে ও পিঠে, তেলেবেগুনে—তেলে ও বেগুনে, মায়েঝিয়ে—মায়ে ও ঝিয়ে, পথেঘাটে—পথে ও ঘাটে।

৯. সংখ্যাবাচক: বিশপঁচিশ—বিশ ও পঁচিশ, সাতসতের—সাত ও সতের, দশবারো—দশ ও বারো, সাতপাঁচ—সাত ও পাঁচ, সত্তরআশি—সত্তর ও আশি।

১০. একশেষ (দুই/অধিক সর্বনাম মিলে একসর্বনাম হয়): তোমরা—তুমি ও সে, আমরা—আমি, তুমি ও সে।

১১. অঙ্গবাচক: হাতপা—হাত ও পা, নাকমুখ—নাক ও মুখ, মাথামুণ্ডু—মাথা ও মুণ্ডু।

১২. দুটি সর্বনাম: যাতা—যা ও তা, তুমি-আমি—তুমি ও আমি, যেসে—যে ও সে, এখানে-সেখান—এখানে ও সেখানে, যথাতথা—যথা ও তথা।

১৩. দুটি বিশেষণ: ভালোমন্দ—ভালো ও মন্দ, কমবেশি—কম ও বেশি, আসলনকল—আসল ও নকল, বাকিবকেয়া—বাকি ও বকেয়া।

১৪. দুটি ক্রিয়া: দেখাশোনা—দেখা ও শোনা, যাওয়াআসা—যাওয়া ও আসা, চলাফেরা—চলা ও ফেরা, আসাযাওয়া—আসা ও যাওয়া।

১৫. দুটি ক্রিয়াবিশেষণ: ধীরেসুস্থে—ধীরে ও সুস্থে, আগেপিছে—আগে ও পিছে, আকারে-ইঙ্গিতে—আকারে ও ইঙ্গিতে, আস্তে আস্তে—আস্তে ও আস্তে।

 

দ্বন্দ্ব সমাসের গাণিতিক গঠন

সমাস শব্দশ্রেণির উপর নির্ভরশীল তাই প্রতিটি সমাসের গাণিতিক গঠন জানা প্রয়োজন।

১. পূর্বপদ +ও/আর + পরপদ          = দ্বন্দ্ব সমাস

২. বিশেষ্য +ও/আর + বিশেষ্য          = দ্বন্দ্ব সমাস

৩. সর্বনাম +ও/আর + সর্বনাম         = দ্বন্দ্ব সমাস

৪. বিশেষণ +ও/আর + বিশেষণ         = দ্বন্দ্ব সমাস

৫. ক্রিয়া  +ও/আর + ক্রিয়া          = দ্বন্দ্ব সমাস

৬. ক্রিয়াবিশেষণ+ও/আর+ ক্রিয়াবিশেষণ    = দ্বন্দ্ব সমাস

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ         ব্যাসবাক্য              সমাস

অত্যাচার অবিচার    অত্যাচার ও অবিচার       দ্বন্দ্ব সমাস  

দয়ামায়া      দয়া ও মায়া            দ্বন্দ্ব সমাস

অহিনকুল         অহি ও নকুল           দ্বন্দ্ব সমাস  

দেখাশুনা         দেখা ও শুনা            দ্বন্দ্ব সমাস

আজকাল         আজ ও কাল    nbsp;        দ্বন্দ্ব সমাস  

সাহেব-বিবি-গোলাম   সাহেব, বিবি ও গোলাম     দ্বন্দ্ব সমাস

আমরা           তুমি, আমি ও সে        নিত্য সমাস  

বাকবিতণ্ডা        বাক ও বিতণ্ডা           নিত্য সমাস

কাজকর্ম           কাজ ও কর্ম            দ্বন্দ্ব সমাস  

ভালোমন্দ         ভালো ও মন্দ           দ্বন্দ্ব সমাস

গণ্যমান্য          গণ্য ও মান্য            দ্বন্দ্ব সমাস &nbsnbsp;

মৃদুমন্দ           মৃদ ও মন্দ             দ্বন্দ্ব সমাস

জনমানব          জন ও মানব            দ্বন্দ্ব সমাস  

সাপে নেউলে       সাপে ও নেউলে           দ্বন্দ্ব সমাস

জমাখরচ          জমা ও খরচ            দ্বন্দ্ব সমাস

সাত সতের        সাত ও সতের           দ্বন্দ্ব সমাস

তরুলতা          তরু ও লতা            দ্বন্দ্ব সমাস

সৈন্যসামন্ত         সৈন্য ও সামন্ত           দ্বন্দ্ব সমাস

দশ-বার          দশ ও বার             দ্বন্দ্ব সমাস       

রক্তমাংস          রক্ত ও মাংস            দ্বন্দ্ব সমাস

দুধেভাতে          দুধে ও ভাতে            অলুক দ্বন্দ্ব সমাস   

লেনদেন           লেন ও দেন            অলুক দ্বন্দ্ব সমাস

দুধ-ভাত/দুধভাত    দুধ ও ভাত            অলুক দ্বন্দ্ব সমাস   

হিতাহিত          হিত ও অহিত           অলুক দ্বন্দ্ব সমাস

দম্পতি           দম/জায়া ও পতি         দ্বন্দ্ব সমাস  

তোমরা           সে ও তুমি             দ্বন্দ্ব সমাস

 

দ্বিগু সমাস

সংখ্যাবাচক শব্দ ও বিশেষ্য মিলে যে সমাস হয় তাকে দ্বিগু সমাস বলে। ‘অ-কার’ হলে ‘এর আর ‘আ/ই/উ-কার’ থাকলে ‘র’ বসে।

 

দ্বিগু সমাসের গাণিতিক গঠন

১. সংখ্যা+ বিশেষ্য+র/এর+ সমাহার = দ্বিগু সমাস

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ    ব্যাসবাক্য                   সমাস

দ্বিরত্ন       দ্বি/দুই রত্নের সমাহার           দ্বিগু সমাস  

ত্রিফলা      ত্রি/তিন ফলের সমাহার      দ্বিগু সমাস  

ত্রিলক       ত্রি/তিন লোকের সমাহার         দ্বিগু সমাস  

ত্রিরত্ন       ত্রি/তিন রত্নে সমাহার           দ্বিগু সমাস  

ত্রিভুবন     ত্রি/তিন ভুবনের সমাহার         দ্বিগু সমাস  

ত্রিভুজ      ত্রি ভুজের সমাহার             দ্বিগু সমাস  

তেপান্তর     তে/তিন প্রান্তরের সমাহার         দ্বিগু সমাস  

চৌরাস্তা     চৌ/চার রাস্তার সমাহার         দ্বিগু সমাস

চৌমুহনী      চৌ/চার মোহনার সমাহার         দ্বিগু সমাস

চতুর্ভুজ      চৌ/চার ভুজের সমাহার          দ্বিগু সমাস  

চতুষ্পদ     চার পায়ের সমাহার            দ্বিগু সমাস  

চতুর্দশপদী    চতুর্দশ/চৌদ্দ পদের সমাহার        দ্বিগু সমাস  

পঞ্চনদ      পঞ্চ/পাঁচ নদের সমাহার      দ্বিগু সমাস

ষড়ঋতু      ষড়/ছয় ঋতুর সমাহার           দ্বিগু সমাস

ষড়ভুজ      ষড়/ছয় ভুজের/বাহুর সমাহার      দ্বিগু সমাস

সপ্তাহ       সপ্ত অহের সমাহার             দ্বিগু সমাস

সেতার      সে/তিন তারের সমাহার          দ্বিগু সমাস  

সপ্তর্ষি       সপ্ত ঋষির সমাহার             দ্বিগু সমাস

সাতসমুদ্র     সাত সমুদ্রের সমাহার            দ্বিগু সমাস

নবরত্ন      নব রত্নের সমাহার             দ্বিগু সমাস

শতাব্দী      শত অব্দের সমাহার             দ্বিগু সমাস

 

কর্মধারয় সমাস

বিশেষণ ও বিশেষ্য মিলে যে সমাস হয় এবং পরপদ প্রধান থাকে তাকে কর্মধারয় সমাস বলে। অথবা যে যা, যা—তা, যিনি—তিনি, যে—সে, যেই—সেই, মতো/ন্যায়, রূপ ইত্যাদি যোগে যে সমাস গঠিত হয় তাকে কর্মধারয় সমাস বলে। কর্মধারয় সমাসে বিশেষ্য বিশেষণ হয়। যেমন: সুন্দরী থাকলে সুন্দর হয়—সুন্দরী যে লতা—সুন্দরলতা। মহান থাকলে মহা হয়—মহান যে নবি—মহানবি। শেষে রাজা থাকলে রাজ হয়—মহান যে রাজা—মহারাজ। রাত্রি থাকলে রাত হয়—দীর্ঘ যে রাত্রি—দীর্ঘরাত। কু থাকলে কদা হয়—কু যে আকার = কদাকার। অহ থাকলে আন হয়—পূর্ব যে অহ্ণ—পূর্বাহ্ণ।

 

কর্মধারয় সমাসের গাণিতিক গঠন

১. বিশেষণ+যে+বিশেষ্য                       = কর্মধারয় সমাস

   অথবা বিশেষ্য+যে+বিশেষণ                  = কর্মধারয় সমাস

২. বিশেষ্য +বিশেষ্য +যে                      = কর্মধারয় সমাস

৩. যা+ বিশেষণ+তাই+বিশেষণ                  = কর্মধারয় সমাস

৪. যে+বিশেষণ+ সে/সেই+বিশেষণ                 = কর্মধারয় সমাস

৫. যে+বিশেষ্য+সেই+ বিশেষ্য                    = কর্মধারয় সমাস

অথবা যে+বিশেষণ+সেই+ বিশেষণ                 = কর্মধারয় সমাস

৬. যিনি+বিশেষ্য+তিনি+বিশেষ্য                  = কর্মধারয় সমাস

৭. বিশেষ্য+চিহ্নিত/মিশ্রিত/বিষয়ক/রক্ষার্থে/মাখা/+বিশেষ্য   = মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

৮. বিশেষ্য +র/এর+মতো/ন্যায়+বিশেষণ            = উপমান কর্মধারয় সমাস

৯. বিশেষ্য+বিশেষ্য +র/এর+মতো/ন্যায়             = উপমিত কর্মধারয় সমাস

১০. বিশেষণ (বিশেষ্য-বিশেষণ অর্থ প্রকাশ পায়)+রূপ+বিশেষ্য= রূপক কর্মধারয় সমাস

নমুনা

১. বিশেষণ+যে+বিশেষ্য—কর্মধারয় সমাস অথবা বিশেষ্য+যে+বিশেষণ= কর্মধারয় সমাস

প্রদত্ত শব্দ         ব্যাসবাক্য         সমাস

মহানবি      &nbnbsp;    মহান যে নবি      কর্মধারয় সমাস    

অত্যাচার         অতি যে আচার     কর্মধারয় সমাস

নীলপদ্ম           নীল যে পদ্ম       কর্মধারয় সমাস

ক্রীতদাস          ক্রীত যে দাস      কর্মধারয় সমাস

সুন্দরিলতা/সুন্দরলতা  সুন্দর যে লতা      কর্মধারয় সমাস

গিন্নিমা           গিন্নি যে মা       কর্মধারয় সমাস

মহার্কীতি         মহান যে র্কীতি      কর্মধারয় সমাস    

নবপৃথিবী         নব যে পৃথিবী      কর্মধারয় সমাস

মহাজ্ঞানী         মহান যে জ্ঞনী      কর্মধারয় সমাস    

নবযৌবন         নব যে যৌবন      কর্মধারয় সমাস

মহারাজ           মহান যে রাজা      কর্মধারয় সমাস    

নীলপদ্ম           নীল যে পদ্ম       কর্মধারয় সমাস

কদাকার      কু যে আকার      কর্মধারয় সমাস    

কুদর্থ            কু যে অর্থ        কর্মধারয় সমাস    

মহাপৃথিবী         মহা যে পৃথিবী      কর্মধারয় সমাস

পূর্বাহ্ণ            পূর্ব যে অহ্ণ        কর্মধারয় সমাস    

মহাজন           মহান যে জন      কর্মধারয় সমাস

আলুসিদ্ধ          সিদ্ধ যে আলু       কর্মধারয় সমাস    

ষড়যন্ত্র           ষট যে যন্ত্র        কর্মধারয় সমাস

নরাধম           অধম যে নর       কর্মধারয় সমাস    

সজ্জন            সৎ যে জন        কর্মধারয় সমাস

 

২. বিশেষ্য +বিশেষ্য +যে = কর্মধারয় সমাস

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ         ব্যাসবাক্য         সমাস

গল্পপ্রেমিক         গল্প প্রেমিক যে      কর্মধারয় সমাস

প্রিয়ংবদা          প্রিয়ং বদা যে

              /প্রিয় বাক্য বলে যে  কর্মধারয় সমাস

৩. যা+ বিশেষণ+তাই+বিশেষণ = কর্মধারয় সমাস

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ         ব্যাসবাক্য         সমাস

কাঁচামিঠা       &nbsnbsp; যা কাঁচা তাই মিঠা   কর্মধারয় সমাস

মিঠাকড়া         যা মিঠা তাই কড়া   কর্মধারয় সমাস

ন্যায়সঙ্গত         যা ন্যায় তাই সঙ্গত  কর্মধারয় সমাস         

৪. যে+বিশেষণ+ সে/সেই+বিশেষণ = কর্মধারয় সমাস

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ    ব্যাসবাক্য         সমাস

মান্যগণ্য     যে মান্য সে গণ্য    কর্মধারয় সমাস

শান্ত শিষ্ট    যে শান্ত সেই শিষ্ট    কর্মধারয় সমাস

৫. যে+বিশেষ্য+সেই+বিশেষ্য—কর্মধারয় সমাস অথবা যে+বিশেষণ+সেই+বিশেষণ=কর্মধারয় সমাস

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ    ব্যাসবাক্য         সমাস

বটবৃক্ষ      যে বট সেই বৃক্ষ    কর্মধারয় সমাস   

চালাকচতুর   যে চালাক সেই চতুর  কর্মধারয় সমাস

৬. যিনি+বিশেষ্য+তিনি+বিশেষ্য = কর্মধারয় সমাস

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ    ব্যাসবাক্য              সমাস

কবিধ্যানী    যিনি কবি তিনি ধ্যানী      কর্মধারয় সমাস

গিন্নিমা      যিনি গিন্নি তিনি মা       কর্মধারয় সমাস

জজসাহেব    যিনি জজ তিনি সাহেব      কর্মধারয় সমাস         

৭. মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস : যে কর্মধারয় সমসে ব্যাসবাক্যের মধ্যপদের লোপ পায় তাকে মধ্যপদলোপী সমাস বলে।

বিশেষ্য+চিহ্নিত/মিশ্রিত/বিষয়ক/রক্ষার্থে/মাখা/+বিশেষ্য =মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ         ব্যাসবাক্য         সমাস

পলান্ন           পল মিশ্রিত অন্ন     মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

জয়মুকুট          জয় লব্ধ মুকুট      মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

সিংহাসন          সিংহ চিহ্নিত আসন   মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস 

জয়পতাকা         জয়সূচক পতাকা     মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

সাহিত্যসভা        সাহিত্য বিষয়ক সভা  মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

ধর্মঘট           ধর্ম রক্ষার্থে ঘট      মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

স্মৃতিসৌধ         স্মৃতি রক্ষার্থে সৌধ   মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

ধর্মকার্য           ধর্ম বিহিত কার্য     মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

আয়কর           আয়ের ওপর কর    মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

মৌমাছি           মৌ আশ্রিত মাছি    মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

অষ্টাদশ           অষ্ট অধিক দশ      মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

সন্ধ্যাপ্রদীপ         সন্ধ্যায় জ্বলানো

হয় যে প্রদীপ       মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

কর্মকর্তা           কর্মের কর্তা        মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

শিক্ষামন্ত্রী          শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী   মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

খেয়াতরী          খেয়া পারাপারের তরী মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

হাঁটুজল           হাঁটু পরিমাণ জল    মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

জ্যোস্নারাত        জ্যোৎস্না স্নাতরাত    মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

আয়কর           আয়ের ওপর কর    মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

জীবনবীমা         জীবনরক্ষার্থে বীমা    মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

পানাপুকুর         পানাভর্তি পুকুর      মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস

 

৮. বিশেষ্য +র/এর+মতো/ন্যায়+বিশেষণ = উপমান কর্মধারয় সমাস

উপমান ও উপমেয় পদের মধ্যে সাধারণ ধর্ম বা গুণ বজায় থাকলে এবং একটি বিশেষ্য ও অপরটি বিশেষণ পদ হলে যে সমাস হয় তাকে উপমান কর্মধারয় সমাস বলে।

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ         ব্যাসবাক্য              সমাস 

কুসুমকোমল        কুসুমের মতো/ন্যায় কোমল   উপমান কর্মধারয় সমাস    

কচুকাটা           কচুর মতো কাটা        উপমান কর্মধারয় সমাস

তুষারশুভ্র         তুষারের ন্যায় শুভ্র        উপমান কর্মধারয় সমাস    

কাজলকাল         কাজলের ন্যায় কাল        উপমান কর্মধারয় সমাস

তুষারশীতল        তুষারের ন্যায় শীতল       উপমান কর্মধারয় সমাস    

অগ্নিশর্মা           অগ্নি ন্যায় শর্মা           উপমান কর্মধারয় সমাস

অরুণরাঙা         অরুণের ন্যায়রাঙা        উপমান কর্মধারয় সমাস    

শশব্যস্ত  &nbsnbsp;       শশকের ন্যায় ব্যস্ত        উপমান কর্মধারয় সমাস

 

৯. বিশেষ্য+বিশেষ্য +র/এর+মতো/ন্যায় = উপমিত কর্মধারয় সমাস

উপমেয় পদের সঙ্গে উপমান পদের সমাস হলে এবং উভয়ের মধ্যে সাধারণ ধর্ম বজায় না থাকলে এবং দুটি পদই বিশেষ্য হলে তাকে উপমিত কর্মধারয় সমাস বলে।

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ    ব্যাসবাক্য              সমাস

মুখচন্দ্র      মুখ চন্দ্রের মতো/ন্যায়      উপমিত কর্মধারয় সমাস    

ফুলকুমারী    কুমারী ফুলের ন্যায়        উপমিত কর্মধারয় সমাস

সিংহপুরুষ    পুরুষ সিংহের ন্যায়        উপমিত কর্মধারয় সমাস    

রক্তকমল     কমলরক্তের ন্যায়         উপমিত কর্মধারয় সমাস

করপল্লব কর পল্লবের ন্যায়         উপমিত কর্মধারয় সমাস    

ওলকপি      ওল কপির ন্যায়          উপমিত কর্মধারয় সমাস

বজ্রকণ্ঠ      কণ্ঠ বজ্রের ন্যায়         উপমিত কর্মধারয় সমাস    

চাঁদমুখ      মুখ চাঁদের ন্যায়          উপমিত কর্মধারয় সমাস

 

১০. বিশেষণ (বিশেষ্য থাকলেও বিশেষণ অর্থ প্রকাশ পায়)+রূপ+বিশেষ্য = রূপক কর্মধারয় সমাস

উপমান ও উপমেয় শব্দের মধ্যে অভেদ কল্পনা করলে যে সমাস হয় তাকে রূপক কর্মধারয় সমাস বলে।

নমুনা

প্রদত্ত শব্দ    ব্যাসবাক্য         সমাস

মনমাঝি      মনরূপ মাঝি       রূপক কর্মধারয় সমাস     

মোহনিদ্রা     মোহরূপ নিদ্রা      রূপক কর্মধারয় সমাস

ক্রোধানল    ক্রোধরূপ অনল      রূপক কর্মধারয় সমাস     

যৌবনসূর্য    যৌবনরূপ সূর্য      রূপক কর্মধারয় সমাস

বিষাদসিন্ধু    বিষাদরূপ সিন্ধু      রূপক কর্মধারয় সমাস     

শোকানল     শোকরূপ অনল      রূপক কর্মধারয় সমাস

কালসিন্ধু     কালরূপ সিন্ধু       রূপক কর্মধারয় সমাস

জীবননদী    জীবনরূপ নদী      রূপক কর্মধারয় সমাস

দিলদরিয়া    দিলরূপ দরিয়া      রূপক কর্মধারয় সমাস     

মনবিহঙ্গ     মনরূপ বিহঙ্গ       রূপক কর্মধারয় সমাস

পরানপাখি    পরানরূপ পাখি      রূপক কর্মধারয় সমাস              

 

তৎপুরুষ সমাস

বিভক্তি যোগে যে সমাস হয় তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে। অথবা যে সমাসে পূর্বশব্দে বিভক্তি লোপ পায় এবং পরপদ প্রধান থাকে তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে।

 

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]