‘সন্ধি’ শব্দের অর্থ মিলন বা সংযোগ। পাশাপাশি অবস্থিত দুটি ধ্বনির মিলনকে সন্ধি বলা হয়। খুব কাছাকাছি
দুটি ধ্বনি দ্রæত উচ্চারণের ফলে কখনো একটি ধ্বনিতে পরিণত হয়, কখনো একটি ধ্বনির লোপ হয় বা
একটির রূপান্তর হয় এবং কখনো বা দুটি ধ্বনিই রূপান্তরিত হয়ে নতুন ধ্বনি তৈরি করে। যেমন:
ধ্বনির মিলন বা রূপান্তর : রবি+ইন্দ্র = রবীন্দ্র
ধ্বনি-লোপ : হিম+আলয় = হিমালয়
পূর্বধ্বনির বদল : চিৎ+ময় = চিন্ময়
পরধ্বনির বদল : রাজ্+নী = রাজ্ঞী
উভয় ধ্বনির বদল : উৎ+হত = উদ্ধত
ওপরের উদাহরণে পাশাপাশি দুটি শব্দ বসে সন্ধি হয়েছে। এতে উচ্চারণ সহজ ও শ্রæতিমধুর হয়েছে। রবি-ইন্দ্র, হিমআলয়, চিৎ-ময়, উৎ-হতÑ এরকম উচ্চারণ কেবল অসুবিধাজনকই নয়, শুনতে শ্রতিমধুরও লাগে না। তার বদলে রবীন্দ্র,
হিমালয়, চিন্ময়, উদ্ধত শব্দগুলো সহজ ও শ্রæতিমধুর। সন্ধি এভাবে শব্দকে সহজ মনোরম করে তোলার মাধ্যমে ভাষার
সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
সন্ধির উদ্দেশ্য
ধ্বনি-পরিবর্তনই শুধু নয়, ভাষার মাধুর্য বাড়াতেও সন্ধির একটি বিশেষ ভূমিকা আছে। ভাষার অন্যতম কাজ মানুষের মনের
ভাব প্রকাশ করা। এই মনের ভাব প্রকাশের কাজটি ধ্বনি উচ্চারণ করেই হয়ে থাকে। কিন্তু ধ্বনিগুলো সবসময় একইভাবে
উচ্চারিত হয় না। উচ্চারণের সুবিধার জন্য শব্দের ধ্বনিগুলোর কিছু অংশ স্বাভাবিকভাবেই বদলে যায়, কিছু অংশ বাদ পড়ে
যায়। কখনও আবার অতিরিক্ত ধ্বনিও এসে যায়। ধ্বনির পরিবর্তনের ফলে শব্দের বানানেও প্রভাব পড়ে। বাংলা ভাষার
শব্দ ভাÐারে দেশি-বিদেশি শব্দ ছাড়াও সংস্কৃত ভাষার অনেক শব্দ জায়গা করে নিয়েছে। বাংলা ভাষার ব্যাকরণের সূত্র
বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে এই শব্দাবলির একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। বাংলা সন্ধির ও সংস্কৃত বা তৎসম শব্দের জন্য আলাদা
সূত্র বেঁধে দেয়া হয়েছে। বাংলা সন্ধির নিয়ম গঠিত হয়েছে অর্ধতৎসম, তদ্ভব, দেশি, বিদেশি শব্দ নিয়ে। আর সংস্কৃত ভাষা
থেকে বাংলায় আগত তৎসম শব্দের সন্ধির জন্য সংস্কৃত ভাষার নিয়ম ব্যবহার করা হয়েছে। একটি বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে
যে, উচ্চারণের সুবিধা হলেও যদি ধ্বনিগত মাধুর্য রক্ষিত না হয় সেক্ষেত্রে সন্ধি করার নিয়ম নেই। যেমন :
কচু+আলু=কচ্চালু, কচু+আদা = কচ্চাদা।
সন্ধির প্রয়োজনীয়তা
সন্ধির প্রয়োজন বহুবিধ। যেমন:
১। ধ্বনি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সন্ধি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
২। নতুন শব্দ গঠনের জন্যে সন্ধির প্রয়োজন হয়।
৩। শব্দের আকার ছোট করতেও সন্ধির প্রয়োজন পড়ে।
৪। সন্ধির ফলে ভাষা সুন্দর ও সাবলীল হয়।
৫। উচ্চারণ সহজ করার জন্যে সন্ধির প্রয়োজন রয়েছে।
৬। উচ্চারণের সৌকর্য ও শ্রæতিমাধুর্য বৃদ্ধি, ভাষার প্রাঞ্জলতা সৃষ্টি ও ভাষাকে সংক্ষিপ্ত করতে সন্ধির প্রয়োজনীয়তা
অপরিসীম।
পাঠোত্তর মূল্যায়ন
পাঠটি ভালোভাবে পড়ুন এবং উত্তরগুলো মিলিয়ে নিন। আপনার উত্তরের সঙ্গে না মিললে পাঠটি আবার ভালোভাবে পড়–ন
এবং নির্দেশ মত কাজ করুন।
১। সন্ধি শব্দের অর্থ কী ?
ক) সমঝোতা খ) মিলন
গ) সংযোগ ঘ) বন্ধুত্ব
২। বাংলা ভাষায় সন্ধির প্রয়োজনীয়তা কী রকম ?
ক) স্বল্প খ) গুরুত্বহীন
গ) খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘ) তেমন না
৩। সন্ধির উদ্দেশ্য কী ?
ক) উচ্চারণ সহজ করা খ) উচ্চারণ ভিন্ন রকম করা
গ) নতুন শব্দ তৈরি করা ঘ) উচ্চারণ সহজ ও মাধুর্যমÐিত করা
উত্তর : ১. খ ২. গ ৩. ঘ
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ