(সংকেত: ভূমিকা, ডিজিটাল জগৎ, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন, ডিজিটাল কমপ্যাক্ট ভিলেজশিপ, উপসংহার)
ভূমিকা
প্রতিদিন বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। বদলে যাচ্ছে মানুষের চিন্তা। আর প্রতিদিন মানুষ এক অন্যরকম স্বপ্নের বীজ বুনে চলেছে। মানুষ চায় নিজেকে নিরাপদ করতে এবং এগিয়ে নিতে। তার খাদ্যের, বাসস্থানের, চিকিৎসার এবং প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে। এই সব আকাঙ্ক্ষা থেকেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আন্দোলনের ভূমিকা। ডিজিটাল বাংলাদেশ কোনো স্বপ্নের নিছক ভাবকল্প নয়, এ হচ্ছে বর্তমান দুনিয়ার বাস্তবতা।
ডিজিটাল জগৎ
সভ্যতা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ভাষার আক্ষরিক রূপ সৃষ্টি, কাগজ প্রস্তুত, ছাপাখানার উদ্ভব প্রভৃতি শুরু হলে মানুষ সহজে তার ভাব ও ধারণা শুধু ভবিষ্যতের জন্য নয়, তার অবস্থান থেকে অনেক দূরবর্তী অঞ্চলে প্রেরণও করতে সক্ষম হয়। তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ ও গ্রহণের প্রযুক্তি এ পযর্ন্ত চারটি পর্যায়ে উন্নয়ন ঘটেছে। দূত এবং পোস্টাল সার্ভিস, যান্ত্রিক এবং ইলেকট্রোমেকানিক্যাল সার্ভিস, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা এবং ডিজিটাল কমিউনিকেশন। টেলিকমিউনিকেশনে প্রেরিত তথ্য, কথা, টেক্সট বা ছবি প্রথমে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বা তড়িৎ চুম্বক সংকেতে রূপান্তরিত হয়। তারপর দূরবর্তী কোনো প্রাপকের মেশিনে পুনরায় তথ্য, কথা, টেক্সট বা ছবিতে পরিণত হয়। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় এনালগ। কিন্তু এতে খুব বেশি দূরবর্তী স্থানে সংকেত পাঠানোর ক্ষেত্রে এবং একই সঙ্গে অনেক তথ্য পাঠাতে বিশেষত নয়েজিং এর মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়। এসব সমস্যা উত্তরণে উদ্ভাবিত হয় ডিজিটাল টেকনোলজি। ডিজিটাল বৈদ্যুতিক স্পন্দন বা পালস দ্রুত সিরিজে চলে। সে বাইনারি ০-তে পরিণত হয় অর্থাৎ বাইনারি ডিজিট বা বিটে পরিণত হয়। ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যাকে ডিজিট বলে। আর ডিজিটাল সংখ্যা হলো এসব অঙ্কসংক্রান্ত বা সংখ্যাঘটিত বিষয়-আশয়। এতে সব ধরনের তথ্য ডিজিটাল স্পন্দন বা পালস হয়ে চলাচল করে এবং পুনরায় পূর্বেকার তথ্যে পরিণত হয়। এ ব্যব¯থায় ফাইবার অপটিক ক্যাবল নামে বিশেষ তার ব্যবহৃত হয়। যাতে প্রতি সেকেন্ডে ৫ বিলিয়ন বিট তথ্য প্রেরণ করা যায়। ডিজিটাল টেকনোলজির আওতায় কম্পিউটারের মাধ্যমে আন্ত:কম্পিউটার যোগাযোগ, লোকাল এরিয়া নেটওর্য়াক, ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক, ই-মেইল, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বা স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়। মূলত এসবের মাধ্যমে ইনফরমেশন সুপার হাইওয়েতে প্রবেশ করা হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, যুগ যুগ ধরে আমাদের চেনা জগৎ থেকে সম্পূর্ণ অন্য এক জগৎ এবং স্থান-নিরপেক্ষ দেশ, মহাদেশ এমনকি পৃথিবী-নিরপেক্ষ এক জগৎ হলো ডিজিটাল জগৎ।
ডিজিটাল বাংলাদেশ
ডিজিটাল বাংলাদেশ বুঝতে ডিজিটাল রাষ্ট্র ব্যবস্থা সম্পর্কে অন্তত প্রাথমিক ধারণা থাকা চাই। কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও ইনফরমেশন টেকনোলজির মাধ্যমে কোনো দেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সব ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলে সেই দেশকে ডিজিটাল রাষ্ট্র বলা হয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে গতানুগতিক পদ্ধতির বদলে হবে ইলেকট্রনিক পদ্ধতি। বাংলাদেশকেও ই-গভর্নেন্স, ই-সিকিউরিটি, ই-এডুকেশন, ই-এগ্রিকালচার, ই-হেলথ, ই-কমার্স, ই-ল্যান্ড ম্যনেজমেন্ট, ই-অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ই-জার্নালিজম, ই-ট্রাফিক সিস্টেম প্রভৃতির ভিতর দিয়ে ডিজিটালাইজড অর্থাৎ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করা যায়। আসলে এর ফলে দেশের এক বর্গ ইঞ্চি জায়গাও ডিজিটাল টেকনোলজির বাইরে থাকবে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, হাজারো সমস্যায় জর্জরিত।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন
উন্নয়নশীল বাংলাদেশকে কেন হঠাৎ করে সব ইস্যুর পরিবর্তে ডিজিটালাইজড হওয়াকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে। আসলে ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে হচ্ছে সূর্যের মতো। তাই সূর্যের আলো যেমন ধনী-দরিদ্র সবাই নির্বিশেষে ব্যবহার করতে পারে তেমনি ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে’র সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নের মূল স্রোতে যুক্ত হতে পারে। উন্নত বিশ্ব নয়, বরং বাংলাদেশের মতো অতি ঘনবসতিপূর্ণ দেশকে সবার আগে ডিজিটালাইজড হওয়া জরুরি। আমাদের সম্পদ সীমিত, চাহিদা ব্যাপক এবং জনসংখ্যা বাড়ছে অব্যাহতভাবে। আবাদযোগ্য ভূমি বাড়ছে না, জনসংখ্যা বাড়ছে, চাহিদাও বাড়ছে। ক্ষুদ্রায়তনের এই দেশে পনেরো কোটি মানুষের ঠাসাঠাসি বসবাস। বাংলাদেশ তো সাম্রাজ্যবাদের মতো অন্য কারো দেশ, অন্যের সম্পদ লুণ্ঠন করতে পারবে না বা সেটি বাঙালির নীতি-আদর্শও নয়। আমরা কিন্তু ডিজিটাল জগৎ-এ প্রবেশের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপি জায়গা করে নিতে সক্ষম হবো। এই ডিজিটাল জগতের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই।
দেশের রাজধানীর গতিশীলতার উপর নির্ভর করে দেশের উন্নয়ন। রাজধানী হচ্ছে দেশের সেন্ট্রাল নার্ভ। পৃথিবীর অন্যতম মেগাসিটি ঢাকা। অথচ এটি স্থবিরতায় পৃথিবীর সব মেগাসিটির শীর্ষে। ট্রাফিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। কর্মব্যস্ত নগরবাসীর গুরুত্বপূর্ণ কর্মঘণ্টা গচ্চা যাচ্ছে প্রতিদিন। শতকরা ২৫ ভাগ রাস্তার স্থলে মাাত্র ৭ ভাগ রাস্তায় ধারণ ক্ষমতার চাইতে ৮ গুণ বেশি যানবাহন চলাচল করে। তার বেশির ভাগ আবার অযান্ত্রিক রিকশা-ভ্যান, ঠ্যালা গাড়ি ও যান্ত্রিক প্রাইভেট কার। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে স্বভাবতই আমরা ট্রাফিক ব্যবস্থার ডিজিটালইজেশান-এর উপর জোর দিতে প্রয়াসী হবো। তবে গবেষণায় দেখা যায়, প্রথমে ট্রাফিক সিস্টেমকে ডিজিটাল আমব্রেলার অন্তর্ভুক্ত না করে বিকল্প পথে এগুতে হবে। অন্য যেসব সেক্টর সরাসরি ট্রাফিক সিস্টেম কিংবা সেই অর্থে ঢাকার গতিশীলতায় প্রভাব রাখে, সেগুলো পর্যায়ক্্রমে ডিজিটালাইজড করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে পাইলট সেক্টর হিসাবে ই-এডুকেশন ও ই-অফিসের কথা বিবেচনায় আনা যেতে পারে। প্রথমে ঢাকার বড় বড় স্কুল ও কলেজকে ডিজিটাল সিস্টেমের আওতায় আনা যেতে পারে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-নেটের মাধ্যমে সারা দেশে ই-এডুকেশনের বিস্তার ঘটানো সম্ভব। ঢাকার প্রথম সারির স্কুল ও কলেজগুলো ডিজিটালাইজড করে এ সার্ভিস দুর্গম পাহাড় থেকে গভীর সমুদ্র দ্বীপেও পৌঁছানো স¤ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে। একে আমরা পাইলট প্রকল্প বলতে পারি। এ প্রকল্পের আওতায় ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু বিষয়ের শিক্ষার্থীদের নোটবুক সাইজের ল্যাপটপ সরবরাহ করে তাদের ডিজিটাল আমব্রেলায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের ১৮,০০০ কলেজ ও ৪০০ বিশ্ববিদ্যালয়কে ই-লার্নিং বা ই-এডুকেশনের আওতায় আনার কর্মসূচি নিয়েছে। ই-লার্নিং এর অবকাঠামো নির্মাণের অংশ হিসেবে সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ভারত সরকার মাত্র ৫০০ রূপিতে ল্যাপটপ সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারত তার ই-লার্নিং কর্মসূচিতে নেটওয়ার্কিং কমিউনিকেশন উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কীভাবে করছে তা বাস্তবে জানতে বাংলাদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ পাঠানো যেতে পারে। উল্লেখ্য, ভারত সরকার আশা করে এর মধ্য দিয়ে ধনী ও দরিদ্রের মাঝে ডিজিটাল বিভাজনে সেতুবন্ধন নির্মিত হবে। বাংলাদেশেও ডিজিটালি শিক্ষা বা¯তবায়নের মাধ্যমে একজন দিনমজুরের সন্তানও উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম হবে। এতে শিক্ষার্থীদের স্কুলে বা কলেজে যেতে হবে না। বাসায় বসেই ই-পদ্ধতিতে শিক্ষকের লেকাচার থেকে পাঠ নিতে পারবে। এর ফলে পিক আওয়ারে যানজট অন্তত ৬০ ভাগ কমে যাবে। ই-অফিসের ক্ষেত্রেও দৈহিকভাবে অফিসে না গিয়ে যথা সময়ে কাজ ডেলিভারি সম্ভব। এক্ষেত্রে কোনো ফাইলও আটকে থাকবে না। তখন অবশ্য গতানুগতিক ফাইলিং সিস্টেম থাকবে না। আসলে কমিউনিকেশন ও ফাইলিং সিস্টেমটাই প্রতিস্থাপিত হয়ে যাবে ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায়। তারপও কাগুজে ব্যবস্থার পুরোটা অন্তত এ মূহুর্তে ঝেড়ে ফেলা যাবে না। এর কারণ মৌলিক বিজ্ঞানের সঙ্গে সমানতালে নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তির অগ্রগতির অভাব। দ্বিতীয়ত, প্রজাতি হিসেবে আমাদের বিকাশ কিন্তু এনালগ পদ্ধতিতে। তাই হঠাৎ করে শতভাগ ডিজিটাল ব্যবস্থায় অর্ন্তভুক্তি মানুষের অভিযোজন ক্ষমতায় মারাত্মক ডিজঅর্ডার সৃষ্টির কারণ হতে পারে। উপর্যুক্ত বিষয় আমলে না-নিয়ে বাংলাদেশের অনেক আইসটি বিশেষজ্ঞ কাগজে ব্যবস্থা পুরোপুরি বাদ দেওয়ার মতো ভুল ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন হরহামেশা। ই-অফিস ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন সংস্থা,কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও সংবাদ মাধ্যমের অফিস ডিজিটাল বাংলাদেশের ভূমিকায় দৃষ্টান্ত হতে পারে। আসলে এসব বিষয়ভিত্তিক সেক্টরকে ডিজিটালাইজড করতে ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার নির্মাণেও অত ঝক্কি-ঝামেলা হবে না। ডিজিটাল ব্যবস্থার সুফল হিসেবে প্রথমেই যানজট থাকবে না। এর সঙ্গে ফুয়েলবার্নিং দূষণও কমে যাবে। তেল আমদানিতে অর্থ সাশ্রয় হবে। এমনকি এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দ্রব্যমূল্য ও মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর। বস্তুত এভাবে পর্যায়ক্্রমে সেক্টর ও শহরভিত্তিক ডিজিটালাইজডকরণের মধ্য দিয়ে মাত্র একদশকে বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল দেশ। আমাদের অস্তিত্বের প্রয়োজনেই এটা করতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ দূরের কোনো অলীক স্বপ্ন নয়, এ এক নিকট বাস্তবতা।
ডিজিটাল কমপ্যাক্ট ভিলেজশিপ
বাংলাদেশে গ্রাম সম্প্রসারণ মানে নতুন নতুন বাড়ি নির্মাণ, পরিকল্পিত ও অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, সড়ক যোগাযোগের বিস্তার। সর্বোপরি নগরায়নের অনিবার্যতায় আবাদি জমি দ্রুত কমে যাচ্ছে। দেশের কয়েকটি অঞ্চলে গ্রামগুলো কাছাকাছি আসতে আসতে মধ্যবর্তী মাঠ রীতিমতো হারিয়ে গেছে। তাই আবাদি জমি রক্ষায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণে সচেতনতা ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে। এদিকে গ্রামীণ আবাসন সম্প্রসারণের হাত থেকে আবাদি জমি রক্ষায় গবেষকরা কমপ্যাক্ট ভিলেজশিপ’র কথা চিন্তাভাবনা করেছেন। আরো মজার বিষয় হলো, বাংলাদেশ এ তত্ত্বের প্রয়োগ সহজে করা সম্ভব। যার প্রয়োজনও এখানে বেশি। কম্প্যাক্ট ভিলেজশিপের অর্থ হলো গ্রামের বাড়িগুলো একক ধরে প্রথমে বাড়ি, এরপর পর্যায়ক্রমে গ্রাম, ওয়ার্ড এমনকি ইউনিয়নকে কাছাকাছি এনে কোনো উপজেলার নিদেনপক্ষে শতকরা ৮০ ভাগ জমিকে অনাবশ্যক আবাসনের হাত থেকে মুক্ত করা সম্ভব। অর্থাৎ উপজেলার বাকি শতকরা ২০ ভাগ জায়গায় মোট জনসংখ্যার বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে। উল্লেখ্য এতে গ্রামীণ জীবনযাপনও ব্যাহত হবে না। কোনো কোনো গবেষণায় দেখা যায়, এমনকি মাত্র শতকরা ৫ ভাগ জায়গায় ঐ উপজেলার মোট জনসংখ্যার বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে। এতেও কিন্তু গ্রামীণ জীবনযাপনও অক্ষুণ্ন থাকবে। বিষয়টি হচ্ছে, কত সূক্ষ্ম ও নিখুঁত তথ্য এক্ষেত্রে আমরা প্রয়োগ করছি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কমপ্যাক্ট ভিলেজের সঙ্গে ডিজিটাল ভিলেজ সেই অর্থে ডিজিটাল বাংলাদেশের সম্পর্ক কী? আসলে কমপ্যাক্ট ভিলেজে দৃশ্যমান অবকাঠামো যথা রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, গবেষণার পাশাপাশি ডিজিটাল ইনফ্রাস্টাকচারও সহজে ও কম ব্যায়ে নির্মাাণ করা সম্ভব। দৃশ্যমান অবকাঠামোতে বেশি দেখা যায় স্থাপনাকে, আর ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারের চেয়ে এর মাধ্যমে কাজই দেখা যাবে বেশি। বস্তুত এখানে নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তির মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক পদ্ধতি ব্যবহৃত হবে। এমনকি ঐ নেটওয়ার্ককে তথ্যপ্রযুক্তির মহাসরণিতেও যুক্ত করা যাবে। যার ফলে বাংলাদেশের সুদূর একজন গ্রামবাসীও গ্লোবাল ভিলেজের অধিবাসী হতে পারে। আবার এর মধ্যে কমপ্যাক্ট ভিলেজের অধিবাসীরা গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করেও ঢাকায় চাকরি করতে পারে। এক্ষেত্রে তাকে কাজের প্রয়োজনে মাসে একবার এমনকি বছরে একবার হয়ত ঢাকায় আসতে হবে। উল্লেখ্য, ডিজিটাল ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে তাকে এক পর্যায়ে ঢাকা আসতে হবে। যেমনটি আগে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রামের প্রত্যেকটি বাড়িকে একক ধরে কমপ্যাক্ট ভিলেজ তথা ডিজিটাল ভিলেজ স্থাপন করতে গেলে ‘জান দেব জমি দেব না’ এই ইস্যুতে রক্তারক্তি বেধে যাবে। তাই অনাবশ্যক ঝামেলা এড়াতে ডিজিটাল ভিলেজ স্থাপনে খাসজমি কিংবা প্রায় পরিত্যক্ত চর এলাকা বেছে নেওয়া যেতে পারে। আনন্দের সংবাদ হলো, একবার দৃষ্টান্ত স্থাপনে সক্ষম হলে পরবর্তীতে বিনা রক্তপাতে গ্রামপ্রধান বাংলাদেশ পরিণত হবে কমপ্যাক্ট ভিলেজ তথা ডিজিটাল ভিলেজ প্রধান বাংলাদেশে। যেহেতু, মানুষ শুধু কোনো স্থান বা দেশের নাগরিক নয়, একই সঙ্গে কালের নাগরিক। অর্থাৎ, সে কোনো কালে জন্মগ্রহণ করেছে, তাও বিবেচ্য। আর আমাদের উত্তর পুরুষেরা কালিক পরিচয়ে পূর্বপুরুষ অপেক্ষা বেশি প্রভাবিত হবে। মানে তারা কোন দেশে জন্ম নিল তার চাইতে কোন কালের মানুষ তা বেশি ব্যবহার করবে অথবা সেই পরিচয়ে নিজেকে জাহির করবে। তাই ডিজিটাল ভিলেজ তৈরিতে ভবিষ্যতে রক্তারক্তি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
উপসংহার
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আজকের এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেবার জন্য শিক্ষিত সকল নাগরিককে ডিজিটাল বাংলাদেশ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে হবে। এবং সরকারকেও তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কেবল আন্তরিকতা নয়-ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে এর বাস্তব ধারণা নিজেদের সর্বাগ্রে জানতে হবে।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ