শীতকালে সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করায় সমগ্র ভারতে উত্তাপের পরিমাণ যথেষ্ট কমে যায়। ডিসেম্বর হতে ফেরুয়ারি মাস পর্যন্ত ভারতে শীতকাল। এ সময় সমগ্র ভারতের উপর দিয়ে পুর্ব মৌসুমি বায়ু বইতে থাকে। হিমমণ্ডল থেকে নির্গত হওয়ায় এবং স্থলভাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বায়ু শুষ্ক ও শীতল। হিমালয় পর্বতমালা উত্তর অঞ্চল জুড়ে প্রাচীরের ন্যায় দণ্ডায়মান থাকায় এ শুষ্ক ও শীতল বায়ু সরাসরি ভারতে প্রবেশ করতে পারে না। এজন্য ভারত শীতের কবল থেকে রক্ষা পায়। শীত ঋতুতে সমগ্র ভারতে আবহাওয়া মোটামুটি শুষ্ক, শীতল ও আরামদায়ক থাকে।
অক্টোবর-নভেম্বর দুই মাস ভারতে শরৎ ও হেমন্তকাল। এ সময় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দিক পরিবর্তন করে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুতে পরিণত হতে থাকে বলে ভারতের কোন কোন স্থানে ঘূর্ণিঝড়ের মাধ্যমে বৃষ্টিপাত হয়। এ সময় পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, উড়িষ্যা ও মেদিনীপুর উপকূলে বৃষ্টিপাত হয়। পশ্চিমবঙ্গের এ ঝড়কে আশ্বিনা ঝড় বলে। হেমন্তকালের শেষদিকে ভারতের সর্বত্র তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে।
মায়ানমারের জলবায়ু উপমাহাদেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং ক্রান্তীয় মৌসুমি ধরণের। এ অঞ্চলের জলবায়ুকে শীত, গ্রীষ্ম এবং বর্ষা- এ তিনটি আলাদা ঋতুর উপস্থিতি স্পষ্ট।
গ্রীষ্মকালঃ মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত মায়ানমারে গ্রীষ্মকাল। এ সময়ের এ দেশের অধিকাংশ স্থান অত্যন্ত উত্তপ্ত এবং গড় তাপমাত্রা প্রায় ২৯ ডিগ্রী সে. এর কাছাকাছি। এ সময় সূর্য উত্তর গোলার্ধে অবস্থান বিধায় মধ্য এশিয়ায় বিরাট নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় এবং এ অঞ্চলে মৌসুমি বায়ু প্রবাহ শুরু হয়। এ সময় ভামোতে ১৯ ডিগ্রী সে. মান্দালয়ে ৩২ ডিগ্রী এবং ইয়াংগুনে প্রায় ২৭ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রা বিরাজ করে।
বর্ষাকালঃ মে থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত মায়ানমারে বর্ষাকাল। এ সময়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এ অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইয়াংগুনে বৃষ্টিপাত শুরু হয় এবং মাসের শেষদিকে এটি সারা দেশে বিস্তার লাভ করে এবং অক্টোবর মাস পর্যন্ত এ বৃষ্টিপাত চলতে থাকে। মায়ানমারেরর বিভিন্ন এলাকায় এ বৃষ্টিপাতের পরিমাণে ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ করা যায়। আরাকান ও টেনাসেরিম উপকূলে প্রচুর পরিমাণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ২০০ সেমি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে, যখন দেশের সর্ব উত্তরের পাহাড়িয়া অঞ্চলেও মাত্র ৮০ সেমি পর্যন্ত বৃষ্টি হয়।
শীতকালঃ এ ঋতুতে সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থান করায় উত্তর গোলার্ধে এশিয়ার মধ্যভাগে এক বিরাট উচ্চ চাপের সৃষ্টি হয়। সেখান হতে দক্ষিণ-পূর্ব দিকের সমুদ্রে অপেক্ষাকৃত অধিক তাপযুক্ত অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। ফলে উত্তর-পূর্ব অয়ন বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। উত্তরের এ শীতল বায়ুপ্রভাবের প্রভাবে মায়ানমারের তখন বেশ শীত হওয়ার কথা থাকলেও উত্তরাংশে পার্বত্য অঞ্চলের উপস্থিতির কারণে শৈত্য তত প্রকট আকার ধারণ করে না। এ বায়ুপ্রবাহ মার্চ মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এ সময়ে উত্তর মায়ানমারে উঁচু পার্বত্য এলাকায় তুষারপাত হয় এবং তাপামাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি চলে যায়।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ুজনিত কারণে এদেশের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থা অধিক মাত্রায় প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভরশীল। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের জীবনযাত্রায় নানা ধরণের পরিবর্তন ঘটেছে। জলবায়ুজনিত ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, দীর্ঘস্থায়ী বন্যা, নদ-নদীর ভাঙ্গন মানুষের জীবন যাত্রায় পরিবর্তন এনেছে।বর্ষাকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এতে বিভিন্ন রকম ফসল ও ফল জন্মে। আবার শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে স্বল্প পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়। ফলে ধান, গম,তামাক এবং নানা জাতের ডাল, তৈলবীজ, গোলআলু, পিঁইয়াজ, রসুন, ধনিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের ধরণের শাকসবজি উৎপাদন করা হয়। জলবায়ুর কারণে সৃষ্ট বন্যার পানিবাহিত মাটি কৃষিক্ষেত্রের উর্বরতা বাড়ায়, এতে ফসল অনেক ভালো হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গড় তাপমাত্রা দেশের সর্বত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে অধিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে আবার বর্ষাকাল দেরিতে আসছে। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। হিরণ পয়েন্ট, চর ডাঙ্গা ও কক্সবাজার এর উচ্চতা প্রতিবছর গড়ে ৪ মিমি হতে ৬ মিমি পর্যন্ত বেড়েছে।
নদীমাতৃক এদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী মানুষের জীবন-জীবিকা ও উৎপাদন বাঁচিয়ে রাখে।পলি জমে বহু নদী হারিয়ে যাচ্ছে। নদীর ভাঙ্গনে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বাস্তহারা হয়ে জীবন জীবিকার পথে শহরে পাড়ি জমাচ্ছে। এতে পারিবারিক ভাঙ্গন এবং শিশু, বৃদ্ধ ও নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তন এবং পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ হয়ে অনেক প্রাণি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। উপকূলীয় অঞ্চলে জেলেদের জীবিকা বদলে যাচ্ছে। জীবিকার টানে শহরে পাড়ি জমাচ্ছে।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ