বাংলাদেশের আইনসভার নাম ‘জাতীয় সংসদ’। জাতীয় সংসদ আইন বিভাগের একটি প্রধান প্রতিষ্ঠান। সংসদ প্রণীত আইন রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভের পর কার্যকর হয়। আইন বিভাগ সরকারের একটি অংশ।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুসারে জাতীয় সংসদ মোট ৩৫০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত। এদের মধ্যে ৩০০ জন জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। জাতীয় সংসদে ৫০টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। তারা সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন।সংরক্ষিত আসন ছাড়াও মহিলারা সাধারণ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে সদস্যদের ভোটে একজন স্পিকার ও একজন ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হবেন। বাংলাদেশে আইন প্রণয়ন, শাসন বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ, অর্থসক্রান্ত তদারকি নির্বাচন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সংসদের ক্ষমতা ও কার্যাবলি বৃদ্ধি পেয়েছে। সংসদের মেয়াদ ৫ বছর।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ক্ষমতা ও কার্যাবলিঃ
১ আইন প্রণয়ন ক্ষমতাঃ সংবিধানের ৬৫ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নামে একটি আইনসভা থাকবে এবং এর উপর প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়ন ক্ষমতা ন্যস্ত হবে। সংবিধান অনুযায়ী সংসদ যেকোনো নতুন আইন প্রণয়ন ও প্রচলিত আইন পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংশোধন করতে পারে। সংসদ আইনের মাধ্যমে যেকোনো সংস্থা বা ক র্তৃপক্ষকে আদেশ প্রদান, বিধি, উপ- বিধি ও প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা দিতে পারে। সংসদ প্রণীত আইনে রাষ্ট্রপতি ১৫দিনের মধ্যে সম্মতি দান করবেন।
২ সরকার গঠন বিষয়ক ক্ষমতাঃ সরকার গঠনে সংসদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সংসদের আস্থাভাজন ব্যক্তই প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন এবং তিনি মন্ত্রীসভা গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রী সংসদের আস্থা হারালে সরকারের পতন হয়।
৩ অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতাঃ রাষ্ট্রের অর্থ কিভাবে ব্যয়িত হবে তাঁর ওপর সংসদ দৃষ্টি নিবন্ধ রাখে। সংসদের অনুমোদন ও কর্তৃত্ব ব্যতীত কোনো প্রকার ব্যয় করা যায় না। আবার কোনো কর আরোপ বা কর সংগ্রহ করতেও সংসদের অনুমতি নিতে হয়। প্রত্যেক অর্থবছরে সরকার সংসদে বাজেট উপস্থাপন করে। সংসদ অনুমোদিত বাজেট অনুযায়ী সরকারকে চলতে হয়।সংযুক্ত তহবিলের ব্যয়সমূহের উপরও সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হয়। মোটকথা রাষ্ট্রীয় ও সরকারি সকল ব্যয় সংসদের সম্মতির ভিত্তিতে করতে হয়।
৪ বিচার বিষয়ক ক্ষমতাঃ সংবিধান লঙ্ঘন, গুরুতর অরাধ, দৈহিক ও মানুসিক অসুস্থতা ও অক্ষমতার জন্য সংসদ রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করতে পারে। প্রয়োজনে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও ন্যায়পালকে অপসারণ করার ক্ষমতাও সংসদের রয়েছে। এ জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিচার সংক্রান্ত কাজ সংসদ পরিচালনা করে।
৫ নির্বাচন সংক্রান্ত কাজঃ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, ন্যায়পাল ইত্যাদি পদের নির্বাচনি ক্ষমতা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যাস্ত। সংসদের বিভিন্ন কমিটি নির্বাচন করার ক্ষমতাও সংসদের রয়েছে।
৬ সংবিধান সংরক্ষণ ও সংশোধনঃ সংবিধানের আমান্তদার হিসেবে সংসদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সংবিধানের যেকোনো সংশোধনীও সংসদে উত্থাপিত ও গৃহীত হয়।
৭ অন্যান্য ক্ষমতাঃ সুপ্রিম কোর্ট ব্যতীত অন্যান্য আদালত প্রতিষ্ঠার জন্য সংসদ আইন প্রণয়ন করতে পারে। যুদ্ধ ঘোষণা ও আন্ত্ররজাতিক চুক্তি অনুমোদন করার ক্ষমতাও সংসদের। স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত বিধি ও প্রবিধান সংসদ প্রণয়ন করে।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ রাখা উচিত এবং এ নিয়ন্ত্রণটি আইন বিভাগের দ্বারা কার্যকর করা হয়।প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভাকে শাসনসংক্রান্ত সকল কাজের জন্য সংসদের কাছে দায়ী থাকতে হয়। সরকার সংসদের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য।সংসদ সরকারের যেকোনো ভালো কাজের যেমন প্রশংসা করতে পারে তেমনি সরকারের যেকোনো মন্দ কাজের সমালোচনাও করতে পারে। সংসদ সদস্যের আস্থা হারালে যেকোনো মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ অর্থ হলো সম্পূর্ণ মন্ত্রিসভার পদত্যাগ। ঐ অবস্থা হলে দেশে আবার নতুন করে সাধারণ নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ