কম্পিউটার ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার :
আজকের কম্পিউটার একটি আধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্র। কম্পিউটার Computer শব্দটি ইংরেজিCompute শব্দ থেকে এসেছে। Compute শব্দের অর্থ গণনা করা আর Computer শব্দের অর্থগণনাকারী যন্ত্র। পূর্বে কম্পিউটার দিয়ে শুধু হিসাব-নিকাশের কাজ করা হতো। কিন্তু বর্তমানেআধুনিক কম্পিউটার দিয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে জটিল হিসাব-নিকাশের কাজ নির্ভুলভাবে করাছাড়াও বহু রকমের কাজ করা যায়। কম্পিউটার দিয়ে সারা জীবনের হিসাব কয়েক মিনিটে করাসম্ভব। এটি অনেকগুলো নির্দেশ নির্ভুলভাবে ও তড়িৎ গতিতে নির্বাহ করতে পারে।
কম্পিউটারের নিজের কোন কাজ করার ক্ষমতা নেই। কম্পিউটার আবিষ্কারকগণ এবংব্যবহারকারীগণই বলে দিচ্ছে তাকে কী করতে হবে এবং কেমন করে করতে হবে। মূলত উপযুক্তনির্দেশের প্রভাবে কম্পিউটার জড় পদার্থ হতে গাণিতিক শক্তিসম্পন্ন এক বুদ্ধিমান যন্ত্রে পরিণতহয়েছে।.... বিস্তারিত..........
একটু জটিল হলো তবে সাধারণ কথা হলো- কম্পিউটার কিছু ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশের সমষ্টি যা বিদ্যুৎপ্রবাহের মাধ্যমে ও সফটওয়্যার এর সহায়তা নিয়ে সচল করা হয় এবং চাহিদা অনুসারে ব্যবহারকরা হয়।
কম্পিউটার বর্তমান অবস্থায় একবারে আসেনি। এটি বিভিন্ন ধাপ বা পর্যায়ে অতিক্রম করে এসেছে। এই এক একটি ধাপ বা পর্যায়কে এক একটি প্রজন্ম বা জেনারেশন বলে। প্রতিটি প্রজন্মপরিবর্তনের সময় কিছু নতুন বৈশিষ্ট সংযোজিত হয় এবং পুরনো বৈশিষ্ট্যগুলোর বিলুপ্তি ঘটে।কম্পিউটারকে প্রজন্ম হিসেবে ভাগ করার প্রথা চালু হয় IBM কোম্পানির একটি বিজ্ঞাপন থেকে।এ প্রজন্ম বিন্যাস নিয়ে মতান্তর আছে। তবে ভালব, আসি-সি, ট্রানজিস্টর, মাইক্রোপ্রসেসরইত্যাদি এক একটি প্রজন্ম নির্দেশ করে।
আধুনিক কম্পিউটারের ধারণা উপস্থাপন করেন কেমব্রিজ বিশ্বদ্যালয়েয়র স্নাতক এবং পরবর্তীতেগণিতের লুকাসিয়ান অধ্যাপক স্যার র্চালস ব্যাবেজ ১৮৩৮ সালে। এজন্য তাকে কম্পিউটারেরজনক বলা হয়। কিন্তু তার সময়ে উপযুক্ত অন্যান প্রযুক্তি না থাকায় তিনি তার প্রস্তাবিত গণনাযন্ত্রপরিপূর্ণভাবে প্রদর্শন করতে পারেনি।
র্চালস ব্যাবেজের ধারণার প্রতিফলন ঘটিয়ে ১৯৪৪ সালে হাওয়ার্ড একিনের নেতৃত্বে মার্ক-১Mark-1 নামের ইলেক্ট্রনিক কম্পিউটার আবিষ্কার হয়। এই কম্পিউটারটি তৈরিতে কাজ করেছিলেনহার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও বিখ্যাত আইবিএম কোম্পনির একদল বিজ্ঞানী।
কম্পিউটারের যে ভাবে কাজ করে থাকে-
সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্য ব্যবহারকারী কর্তৃক তৈরি প্রোগ্রাম (Programs) কম্পিউটার গ্রহণকরে মেমোরিতে সংরক্ষণ করে এবং ব্যবহারকারীর নির্দেশে কম্পিউটার প্রোগ্রাম নির্বাহ(Execute) করে।
কী-বোর্ড, মাউস, জয়স্টিক, ডিস্ক ইত্যাদির মাধ্যমে কম্পিউটার ডেটা (Data) গ্রহণ করে।
ডেটা প্রসেস (Processor) করে
মনিটর, প্রিন্টার, ডিস্ক ইত্যাদির মাধ্যমে কম্পিউটার ফলাফল প্রকাশ করে ।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার-
১. ওয়ার্ড প্রসেসিং বা লেখা-লেখির কাজে(আমাদের দেশেই মুলত) টাইপ রাইটারের বিকল্প হিসেবেঅফিস আদালতে কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়।
২. অফিসের যাবতীয় ব্যবস্থাপনার কাজে আজকাল কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে
৩. বিভিন্ন ধরনের গবেষণামূলক কাজে।
৪. চিকিৎসা ও শিক্ষাক্ষেত্রে।
৫. একস্থান থেকে অন্যস্থানে সংবাদ প্রেরণের ক্ষেত্রে।
৬. বিনোদনের ক্ষেত্রে যেমন টিভি দেখা, ভিডিও দেখা ও গান বাজানো, উপস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
৭. যোগাযোগ ব্যবস্থার টিকিট বিক্রি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ট্রন্সপোর্টের ডিরেকশন ওগতি নির্ণয়ের কাজে।
৮. শিল্পক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণের কাজেও কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে।
৯. মুদ্রণশিল্পে প্রকাশনামূলক যে কোন কাজে।
১০. আধুনিক সামরিক বাহিনীতে নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে ইত্যাদি
মূল কথা হলো আমাদের জীবনের প্রতিক্ষেত্রে আমরা এই প্রযুক্তির সাথে জড়িয়ে পড়েছি।
বর্তমান যুগ কম্পিউটাররের যুগ। আধুনিক সভ্যতায় কম্পিউটারের ব্যবহার দিন দিন বেড়েইচলেছে। বর্তমানে কম্পিউটার দিয়ে চিত্ত বিনোদন হতে মহাকাশযান নিয়ন্ত্রন পর্যন্ত সব কিছু করাহচ্ছে। নিম্নে কম্পিউটারের কিছু ব্যবহার উল্লেখ করা হলোঃ
১. অফিসের কাজ : অফিসের যাবতীয় কাজ দ্রুত ও নির্ভূলভাবে কম্পিউটার দ্বারা করা যায়।অফিসের কাজ বন্টন, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, চিঠিপত্র লেখা, রেকর্ড সংরক্ষণ, ফাইল রক্ষণাবেক্ষণ,দৈনিক আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশ ইত্যাদি কাজ কম্পিউটার দ্বারা করা যায়।
২. ব্যাংকিংয়ের কাজে : আধুনিক উন্নত বিশ্বে প্রতিটি ব্যাংক কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, চেকেরহিসাব , ক্রেডিট ও ডেবিটের হিসাব কম্পিউটার দ্বারা করা হচ্ছে। এতে গ্রাহকদের চেক জমাদিয়ে অপেক্ষায় থাকার বিরক্তি দূর হচ্ছে। ব্যাংকে কম্পিউটার ব্যবহরের ফলে একদিকে যেমনগ্রাহকগণ দ্রুত সেবা পাচ্ছেন তেমনি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কাজের চাপ থেকেমুক্তি পাচ্ছে। বর্তমানে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রতিটি ব্যাংকের হিসাব কেন্দ্রীয়ব্যাংকে দ্রুত জানানো সম্ভব হচ্ছে।
৩. ব্যবসায়-বাণিজ্যের কাজে : ফান্ড ট্রান্সফার, ব্যালেন্স সীট, হিসাবরক্ষণ, পে-রোল, আয়-ব্যয়হিসাব, ইত্যাদি কম্পিউটার দ্বারা দ্রুত সম্ভব।
৪. কল-কারখানার কাজে : কল-কারখানার যাবতীয় কাঁচামাল আমদানির হিসাব, রপ্তানি দ্রব্যেরহিসাব, কর্মকর্তা ও শ্রমিক সংখ্যার হিসাব, শ্রমিক কর্মচারীদের মাসিক বেতনের হিসাব,বার্ষিক রিপোর্ট তৈরি ও বার্ষিক বাজেট তৈরি প্রভৃতি কাজ কম্পিউটার দ্বারা করা যায়।
৫. প্রকাশনার কাজে : কম্পিউটার দিয়ে দ্রুত গ্রফিক্স ডিজাইন, মুদ্রণ, গবেষণা রিপোর্ট, বই,চিঠিপত্র ইত্যাদি প্রকাশিত হচ্ছে। যখন কম্পিউটারের ব্যবহার ছিল না, তখন বই প্রকাশ করাছিল কঠিন, এতে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় হতো।
৬. সংবাদপত্র : কম্পিউটারের মাধ্যমে খুব দ্রুত সংবাদপত্র প্রকাশের বিভিন্ন কাজ করা যায়।কম্পিউটার নেটওয়ার্ক-এর মাধ্যমে একটি দেশের প্রতিটি শহর থেকে একই সময় সংবাদপত্রবের করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন গ্রাহক সংবাদপত্রকম্পিউটারের পর্দায় পড়ে নিচ্ছে অথবা প্রিন্টারের মাধ্যমে প্রিন্ট করে নিচ্ছে।
৭. টেলি কমিউনিকেশনের কাজে : টেলিফোন এবং কম্পিউটারের মধ্যে সংযোগ করে অতি দ্রুতসংবাদ পৃথিবীর একস্থান হতে অন্যস্থানে পাঠানো যাচ্ছে।
৮. চিকিৎসাবিজ্ঞানে : প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা, দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা, ক্যান্সার রোগ নির্ণয়, টিউমারেরগঠন ইত্যাদি কাজে কম্পিউটার দ্রুত ফলাফল দিচ্ছে। বিভিন্ন রোগের ঔষধ নির্ধারণ এবংঔষধের মান নিয়ন্ত্রন কম্পিউটার দিয়ে করা হচ্ছে।
৯. মহাকাশ গবেষণার কাজে : মহাকাশযানের সূক্ষ্ম হিসাব নিকাশ, ডিজাইন, এবং পরিচালনারকাজে কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও দূর আকাশে নভোচারীর গতিপথনির্দেশে সহায়তা করে কম্পিউটার।
১০. প্রতিরক্ষার কাজে : বোমারু বিমান বা যুদ্ধ জাহাজ নিয়ন্ত্রণ, মিসাইল ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণইত্যাদি কাজে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে।
১১. বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ : বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের বিমান যোগাযোগ কম্পিউটার ছাড়া অচল।অনলাইনে সিট রিজার্ভেশন, বিমানের চলাচলের রুট নির্ধারণসহ বিভিন্ন কাজে কম্পিউটারব্যবহার করা হচ্ছে।
১২. শিক্ষার কাজে : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের বেতনের হিসাব নিকাশ, দ্রুত পরীক্ষারফলাফল প্রকাশ, প্রতি বর্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যার হিসাব ইত্যাদি কম্পিউটার দ্বারা করাসম্ভব। এছাড়া বছর অনুযায়ী পাশ ও ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা কম্পিউটার দ্বারা করাযায়।
১৩. বিনোদনের কাজে : কম্পিউটারে গেম খেলা, গান শোনা, ছবি দেখা ইত্যাদি বিভিন্ন বিনোদনেরজন্য কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে। টিভি কার্ড লাগিয়ে কম্পিউটারকে টিভি হিসাবেও ব্যবহারকরা হচ্ছে।
১৪. আবহাওয়ার কাজে : কম্পিউটারের মাধ্যমে আবহাওয়ার বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করেপূর্বাভাস দেওয়া যায়, যার দ্বারা আমরা কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে পারে।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ