একটি কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে অথবা একটি ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইস যেমন- মোবাইল, স্মার্টফোন, পার্সোনাল ডিজিটাল অ্যাসিসটেন্ট জিপিএস নেভিগেটের ইত্যাদির মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান বা তথ্যের বিনিময়কে ডেটা কমেউনিকেশন বা ডেটার স্থানান্তর বলা হয়। ডেটা স্থানান্তর যেকোনো একটি পর্যায়ে কম্পিউটার সরাসরি যুক্ত থাকে। আধুনিক ডেটা কমিউনিকেশনের প্রধান উপাদান হলো কম্পিউটার এবং ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেম। কম্পিউটারকে বলা হয় ডেটা প্রসেসিং ডিভাইস এবং প্রসেসকৃত ডেটা একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়ার প্রক্রিয়া হলো ট্রান্সমিশন সিস্টেম ।
একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো চ্যানেল দিয়ে যে পরিমাণ ডেটা স্থানান্তরিত হয় তার পরিমাণকে ব্যান্ড উইডথ হিসেবে পরিমাপ করা হয়।
ডেটা ট্রান্সফার গতির উপর ভিত্তি করে ডেটা কমিউনিকেশন স্পীডকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (১) ন্যারোব্যান্ড, (২) ভয়েস ব্যান্ড ও (৩) ব্রডব্যান্ড।
ন্যারোব্যান্ড (Narrow band) : এ ডেটা ট্রান্সমিশন সাধারণত ৪৫ থেকে ৩০০ bit per second (bps) হয়ে থাকে। ধীর গতির ডেটা ট্রান্সমিশন যেমন- টেলিফোন ক্ষেত্রে এ ব্যান্ডটির ব্যবহারের আধিক্য দেখা যায়। টেলিফোনের ক্ষেত্রে এ ন্যারোব্যান্ড ৩০০-৪০০ হার্জ ফ্রিকুয়েন্সি প্রদান করে।
ভয়েজ ব্যান্ড (Voice band): এর গতি সাধারণত ৯৬০০bps পর্যন্ত হয়ে থাকে । টেলিফোন লাইনে ভয়েস ব্যান্ড সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় যেখানে তথ্য স্থানান্তরের ফ্রিকুয়েন্সি ২০০-৩৬০০ হার্জ। কম্পিউটার থেকে প্রিন্টার অথবা কার্ড রিডার থেকে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরে ভয়েস ব্যান্ড ব্যবহৃত হয়।
ব্রডব্যান্ড (Broad band): মূলত উচ্চ গতিসম্পন্ন ডেটা স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। এই গতি 1 mbps এর বেশি হয়ে থাকে বলে এরা অধিক তথ্য বহনের ক্ষমতা রাখে। ব্রডব্যাড ডিজিটাল সাবস্ক্রাইবার লাইন, রেডিওলিঙ্ক, অপটিক্যাল ফাইবার, মাইক্রোওয়েভ।
ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডেটা পাঠানোর সময় দুটি কম্পিউটারের মধ্যে সমঝোতা থাকা প্রয়োজন যাতে প্রতিটি সিগন্যালের শুরু ও শেষ বুঝতে পারে।
ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন
বিটের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য একটি বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এ বিশেষ পদ্ধতিকে বিট সিনক্রোনাইজেশন বলে। সিনক্রোনাইজেশনের ওপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশন মেথডকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা
অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission)
সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Synchronous Transmission)
আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Isochronous Transmission)
অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন: এই পদ্ধতির ডেটা ট্রান্সমিশনে প্রেরক হতে গ্রাহকে ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ডেটা ট্রান্সমিট করা হয়। ফলে পর পর দুটি ক্যারেক্টার প্রেরণের মাঝের বিরতি সব সময় সমান হয় না, এ কারণেই এর নামকরণ করা হয়েছে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন মেথড।
সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন: এই পদ্ধতিতে ডেটা ট্রান্সমিশনের পূর্বে ডেটাকে প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসে সংরক্ষণ করা হয় এবং সমান বিরতিতে প্রতিবারে ৮০ থেকে ১৩২ ক্যারেক্টারের একটি ব্লক তৈরি করে ট্রান্সমিট করা হয়।
এ কারণেই এর নামকরণ করা হয়েছে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন।
আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন: আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের উন্নত সংস্করণ। এই পদ্ধতিতে প্রায় কোনো বিরতি ছাড়াই ডেটা ট্রান্সমিট করা হয়।
ডেটা ট্রান্সমিশন মোড ( Data Transmission Mode)
কম্পিউটার থেকে কম্পিউটারে ডেটা কমিউনিকেশনস-এর সময় ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ডেটার প্রবাহকে ডেটা ট্রান্সমিশন মোড হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ডেটা স্থানান্তরের প্রবাহের উপর ভিত্তি করে অর্থাৎ দিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ডেটা ট্রান্সমিশন মোডকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
ইউনিকাস্ট (Unicast)
ব্রডকাস্ট (Broadcast)
মাল্টিকাস্ট (Multicast)
ইউনিকাস্ট (Unicast) : যে ট্রান্সমিশনস -এর পদ্ধতিতে একজন প্রেরক ও একজন প্রাপকের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান হয়ে থাকে, তাকে ইউনিকাস্ট মােড বলা হয়।
ব্রডকাস্ট (Broadcast): এ ট্রান্সমিশন ব্যবস্থায় নেটওয়ার্কভূক্ত কোনো একটি কম্পিউটার বা নোড হতে ডেটা ট্রান্সমিট হলে নেটওয়ার্কভুক্ত সকল নোডই তা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়। উদাহরণ হিসেবে টেলিভিশন, রেডিও সম্প্রচারের কথা বলা যেতে পারে। টেলিভিশনে কোনো অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হলো তা সকল টেলিভিশন বা গ্রাহক যন্ত্র একই সাথে গ্রহণ করতে পারে।
এটি এমন একটি ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতি যেখানে কোনো কম্পিউটার বা নোড হতে ডেটা টান্সমিট করলে গ্রুপভুক্ত কেবল অনুমোদিত নোড বা নোডসমূহই তা গ্রহণ করতে পারবে। নেটওয়ার্কভূক্ত যেকোনো নোডকে এ ব্যবস্থায় ডেটা গ্রহণ হতে বিরত রাখা যায়। উদাহরণ হিসেবে টেলিকনফারেন্সিং এবং ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। টেলিকনফারেন্সিংয়ে অংশগ্রহণরত ব্যক্তিদের মধ্যে কেবল নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ছাড়া অন্যরা এতে অ্যাকসেস করার সুযোগ পায়।
ডেটা প্রবাহের দিকের ওপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশন মোডকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ
১. একমুখী প্রথা বা সিমপ্লেক্স মোড
২. অর্ধ দ্বিমুখী প্রথা বা হাফ ডুপ্লেক্স মোড ও
৩. উভয়মুখী প্রথা বা ফুল ডুপ্লেক্স মোড।
সিমপ্লেক্স (Simplex) : ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ডেটার একমুখী প্রবাহকে সিমপ্লেক্স মোড বলা হয়। এ পদ্ধতিতে একটি কম্পিউটার সবসময় অন্য কম্পিউটারে ডেটা পাঠায়, অপরটি ডেটা গ্রহন করে। উদাহরণ- PABX সিস্টেম, রেডিও।
হাফ-ডুপ্লেক্স (Half-Duplex): এ পদ্ধতিতে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে উভয় দিকে থেকে ডেটা প্রেরণ করা যায় তবে একই সময়ে তা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে কোন প্রান্ত একই সময় কেবল ডেটা গ্রহন প্রেরণ করতে পারে, কিন্তু গ্রহন এবং প্রেরণ একই সময়ে করতে পারে না। উদাহরণ- ওয়াকিটকি।
ফুল-ডুপ্লেক্স : (Full- Duplex): এ পদ্ধতিতে ডেটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে উভয় দিক থেকে একই সময়ে ডেটা প্রেরণ ও গ্রহণ করা যায়। এক্ষেত্রে কোনো প্রান্ত একই সময়ে ডেটা প্রেরণ করার সময় ইচ্ছে করলে গ্রহণও করতে পারে। উদাহরণ- টেলিফোন, মােবাইল।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ