বাংলাদেশ পরিচিতি
প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল
কুষ্টিয়া, যশোর, নদীয়া, শান্তিপুর, ঢাকা, ফরিদপুর এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ।
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণাঞ্চল।
কুমিল্লা ও নোয়াখালী।
পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম, ত্রিপুরা, সিলেট।
- কক্সবাজার, মায়ানমারের কিয়দংশ, কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণাঞ্চল ।
বরিশাল।
রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, মালদহ, পশ্চিম দিনাজপুর।
হরিকেল
আরাকান
চন্দ্রদ্বীপ
গৌড়
বিক্রমপুর
মুন্সীগঞ্জ এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল ।
কামরূপ
বরেন্দ্র/বারিন্দ্রী
বগুড়া, পাবনা ও রাজশাহীর অংশবিশেষ।
সপ্তগাঁও
পৌঁছে
রংপুর, জলপাইগুড়ি, আসামের কামরূপ জেলা ।
খুলনা এবং সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল ।
বগুড়া, রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ।
বাংলার উৎপত্তি
চীনা শব্দ ‘অং’ (যার অর্থ জলাভূমি) পরিবর্তিত হয়ে ‘বং’ শব্দে রূপান্তরিত হয় । ঐতিহাসিক আবুল ফজলের মতে,
বং → বংগ
বংগ + আল (আইল) → বংগাল
* ড মুহম্মদ হান্নান তাঁর ‘বাঙালির ইতিহাস' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, হযরত নূহ (আঃ) এর সময়ের মহাপ্লাবনের পর বেঁচে যাওয়া চল্লিশ জোড়া নর-নারীকে বংশবিস্তার ও বসতি স্থাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করা হয়েছিল। নূহ (আ) এর পৌত্র ‘হিন্দ’ এর নাম অনুসারে “হিন্দুস্তান' এবং প্রপৌত্র ‘বঙ্গ’ এর নামানুসারে ‘বঙ্গদেশ' নামকরণ করা হয়েছিল । বঙ্গ এর বংশধরগণই 'বাঙাল' বা বাঙালি নামে পরিচিত।
ঐতিহাসিক গোলাম হোসেন সলিম তার 'রিয়াজুস সালাতীন' গ্রন্থে বলেছেন, বংগ (জনৈক ব্যক্তি) + আহাল (সন্তান) → বংগাহাল
-
বংগাল
* শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ বাংলার নামকরণ করেন মূলক-ই-বাংগালাহ ।
বাঙ্গালাহ → বাংলা
মূলক দেশ
মূলক-ই-বাঙ্গালাহ
মূলক-ই-বাঙ্গালাহ → বাংলাদেশ
* বাংলার ইতিহাসের প্রথম প্রামাণ্য তথ্য পাওয়া যায় রাজা শশাঙ্কের আমল হতে। সপ্তম শতাব্দীতে রাজা শশাঙ্ক গৌড়ে স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে সমগ্র বাংলা ভূখণ্ডকে দুটি প্রশাসনিক এককে আনার চেষ্টা করেন।
* ১২০৪ সালে বখতিয়ার খলজী হিন্দু রাজা লক্ষ্মণ সেনকে পরাজিত করে বাংলার প্রথম মুসলমান শাসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলার উত্তরাংশ দখল করলেও দক্ষিণাংশে সেন বংশ আরও কিছুদিন টিকে ছিল। তখন বাংলার রাজধানী ছিল বিক্রমপুর। বখতিয়ার খলজী গৌড়ের নাম পরিবর্তন করে 'লক্ষ্মাবতী' রাখেন।
* ১২২৭ সালে দিল্লীর সুলতান ইলতুৎমিশ বাংলা জয় করেন।
* ১২৮১ সালে সম্রাট গিয়াসুদ্দীন বলবনের দ্বিতীয় পুত্র বুগরা খান বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি সোনারগাঁয়ে তাঁর রাজধানী স্থাপন করেন এবং স্বাধীনভাবে রাজ্য শাসন করেন। কথিত যে, বুগরা খানের নামানুসারে বর্তমান বগুড়া জেলার নামকরণ করা হয়। * ১৩২৫ সালে দিল্লীর সুলতান মুহম্মদ বিন তুগলক বাংলাকে নিজের কর্তৃত্বে আনেন। তিনি বাংলা ভূখণ্ডকে তিনটি প্রশাসনিক এককে বিভক্ত করেন। পরবর্তীতে এই তিনটি প্রশাসনিক একককে কেন্দ্র করে বাংলা ভূখণ্ডের রাজ্যনীতি পরিচালিত হয়েছিল।
* ১৩৩৮ সালে ফখরউদ্দিন মুবারক শাহ সোনারগাঁয়ের শাসনভার গ্রহণ করেন। তাঁর শাসনামলে ১৩৪৫ সালে মরক্কোর বিখ্যাত পর্যটক আৰু আবদুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে তা বাংলা সফর করেন।
* ১৩৫২ সালে শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ সমগ্র বাংলাকে একটি প্রশাসনের অধীনে আনার চেষ্টা
করেন। তিনি এ অঞ্চলের নামকরণ করেন ‘মূলক-ই-বাংগালাহ’।
* ১৫৩৮ সালে শেরশাহ বাংলায় পাঠান শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ‘টংকার' (টাকার) স্থলে ‘রূপিয়া' প্রবর্তন করেন । তিনি সোনারগাঁও হতে পাঞ্জাবের সিন্ধু নদ পর্যন্ত দীর্ঘ সড়ক 'গ্র্যান্ড ট্রাংক রোড' নির্মাণ করেন ।
* ১৫৫৭ সালে সম্রাট আকবর ‘সুবহ-ই-বাংলা' নামকরণ করেন।
* ১৫৭৬ সালে সম্রাট আকবর বাংলা ভূখণ্ড মুঘল শাসনাধীনে আনায়ন করেন। তাঁর অমাত্য টোডরমল ও ফতেহউল্লাহ সিরাজী তৎকালীন কৃষকদের নিকট হতে রাজস্ব আদায়ের প্রতিবন্ধকতা এড়ানোর জন্য ১৫৮৫ সালে বাংলা সাল প্রতিষ্ঠা করেন (সাল গণনা শুরু করা হয় ১৫৫৬ সাল থেকে)। বাংলা সালের সাথে ৫৯৩ বছর ৩ মাস ১৩ দিন যোগে ইংরেজি সাল পাওয়া যায় ।
* ১৬১০ সালে মুসা খানকে পরাজিত করে সুবাদার ইসলাম খান বাংলা দখল করেন এবং
রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তরিত করেন।
* ১৬৬৩ সালে শায়েস্তা খান বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন। তাঁর শাসনামলে টাকায় আট মন
চাউল পাওয়া যেত। তিনি ঢাকার লালবাগের কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
* ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পরাজয়ের পর বাংলা ইংরেজদের শাসনাধীনে চলে যায় । * ১৮৫৪ সালে ইংরেজরা বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা এবং আসামকে নিয়ে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি গঠন করে । ১৮৭৪ সালে আসামকে চীফ কমিশনারের অধীন পৃথক প্রশাসনে ন্যস্ত করা হয়। * ১৯০৫ সালে বঙ্গবিভাগ করে পূর্ব বাংলার সাথে আসামকে যুক্ত করা হয়। ১৯১১ সালে
বঙ্গবিভাগ রদ করা হয়।
* ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করলে পূর্ব বাংলা পাকিস্তানের একটি অংশে পরিণত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে।
বাংলাদেশের অবস্থান ও ভূপ্রকৃতি
বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপ। ভূপ্রকৃতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে প্রধানত তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়-
১। টারশিয়ারী যুগের পাহাড়সমূহ X। প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ ৩। সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি
সংক্ষিপ্ত তথ্য :
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ২০° ৩৪ হতে ২৬° ৩৮ ́ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°০১ হতে ৯২° ৪১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে। এর আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। বাংলাদেশের উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় ও আসাম, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার, পূর্বে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা রাজা ও মায়ানমার এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। দেশের মোট সীমান্তদৈর্ঘ্য ৫১৩৮ কি. মি.। এর মধ্যে ভারতের সাথে সীমান্ত দৈর্ঘ্য ৪১৪৪ কি. মি. সমুদ্র উপকূলের দৈর্ঘ্য ৭১১ কি. মি., মায়ানমারের সাথে সীমান্তদৈর্ঘ্য ২৮৩ কি. মি.। দেশের রাজনৈতিক সমুদ্রসীমা ১২ নটিক্যাল মাইল, অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমা ২০০ নটিক্যাল মাইল এবং সমুদ্র অঞ্চলের আয়তন ৪০,০০০ বর্গমাইল বা ১,০৩,৬৪০ বর্গ কিলোমিটার ।
দেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ সর্ব দক্ষিণের থানা
সর্ব উত্তরের থানা
সর্ব পূর্বের থানা সর্ব পশ্চিমের থানা দক্ষিণ-পশ্চিমের থানা সর্বউত্তরের গ্রাম সবচেয়ে বড় গ্রাম সর্ব দক্ষিণের দ্বীপ
সর্ব উত্তরের জেলা সর্ব দক্ষিণের জেলা বৃহত্তম ব-দ্বীপ
উষ্ণ প্রস্রবন রয়েছে
বিজয় (৩২৯০ ফুট)। টেকনাফ (কক্সবাজার)। তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়)। থানচি (বান্দরবান) । শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ)।
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)।
জায়গীর জোত (বাংলাবান্ধা ইউনিয়নভুক্ত)। বানিয়াচঙ, হবিগঞ্জ । সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। পঞ্চগড় । কক্সবাজার ।
সুন্দরবন ।
সীতাকুণ্ডে
বাংলাদেশের লাগা উত্তরে অবস্থিত ভারতীয় রাজ্য আসাম, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গ। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্য ৫টি এবং ভারত সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের জেলা ৩০টি । বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহল ১১১টি এবং ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ছিটমহল ৫১টি।
বাংলাদেশের জলবায়ু
বাংলাদেশের জলবায়ু মোটামুটি উষ্ণ, আর্দ্র ও সমভাবাপন্ন । এর প্রায় মধ্যভাগ দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা চলে গেছে বলে এটা ক্রান্তীয় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের জলবায়ুর উপর মৌসুমী
জলবায়ুর অত্যধিক প্রভাবের কারণে সামগ্রিকভাবে এদেশের জলবায়ু ‘ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায় নামে পরিচিত। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়া ও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
১। বাংলাদেশে মার্চ থেকে জুন (ফাল্গুন থেকে জ্যৈষ্ঠ) পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল। তবে এপ্রিল মাস উষ্ণতর মাস। গ্রীষ্মকালে সময়ের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮° সে. এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১° সে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের প্রায় ২০ ভাগ এ সময়ে হয় । এ সময়ে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে ৪৫.১° সে. তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এটি বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
২। জুন থেকে অক্টোবর (জ্যৈষ্ঠ থেকে কার্তিক) পর্যন্ত বর্ষাকাল। জুন মাসের প্রথম দিকে মৌসুমী বায়ুর আগমনের সাথে সাথে বর্ষাকাল শুরু হয়। বর্ষাকালীন গড় তাপমাত্রা প্রায় ২৬.৬° সে.। বছরের মোট বৃষ্টিপাতের প্রায় ৮০ ভাগ এ সময়ে হয়। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও অধিক বৃষ্টিপাতের জন্য বর্ষাকালে তাপমাত্রা গ্রীষ্মকাল অপেক্ষা কম থাকে।
৩। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি (কার্তিক থেকে ফাল্গুন) পর্যন্ত শীতকাল । এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে তাপমাত্রা থাকে কম। বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১.৬° সে. ১৯০৫ সালে দিনাজপুরে। শীতকালীন গড় তাপমাত্রা ১৭.৭° সে.। এ সময়ে বাতাসের সর্বনিম্ন আর্দ্রতা ৩৬% ।
বাংলাদেশের কৃষি
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের অধিকাংশ মানুষের প্রধান উপজীবিকা কৃষি। শ্রমজীবি মানুষের প্রায় ৪৮.৪% কৃষির উপর নির্ভরশীল। উৎপাদিত নানারকম ফসলকে দুইভাগে ভাগ করা যায় – খাদ্যশস্য ও অর্থকরী শস্য।
• মোট জমির পরিমাণ ৩ কোটি ৬৬ লক্ষ ৫৭ হাজার একর ।
আবাদী জমির পরিমাণ ২ কোটি ১ লাখ ৯৪ হাজার একর।
• মাথাপিছু আবাদি জমির পরিমাণ ০.১৫ একর (১৫ শতাংশ)। খাস জমির পরিমাণ ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৩৫৭ হেক্টর ।
• চাষের অযোগ্য জমির পরিমাণ ২৫ লক্ষ ৮০ হাজার ।
• ফসল তোলার ঋতু ৩টি। ভাদোই, হৈমন্তিক ও রবি ।
• দেশে খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ ৩৬৯.৩৬ লাখ মেট্রিক টন (২০০৯-২০১০) জিডিপিতে কৃষির বিভিন্ন উপখাতের অবদান ২০.১৬% ।
• রপ্তানিতে কৃষিপণ্যের অবদান ০.৮২%
পাট : পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। এটি বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল। বাংলাদেশের মোট আবাদি জমির প্রায় ৫ শতাংশে পাট চাষ করা হয়। দেশে পাটের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হলো নারায়ণগঞ্জে ।
চা : বাংলাদেশ ভূখণ্ডে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সিলেটের মালনীছড়ায় দেশের প্রথম চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৫৪ সালে। চা দেশের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল। বর্তমানে দেশে ১৬৩টি চা বাগান রয়েছে। সর্বশেষ প্রতিষ্ঠিত চা বাগান হলো পঞ্চগড়। বিশ্ববাজারে উৎপাদিত চায়ের মাত্র ২ শতাংশ চা বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। দেশে চা উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি পাউন্ড এবং উৎপাদিত চায়ের প্রায় ৬৫% রপ্তানি করা হয়। রফতানীকারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ১৫তম। দেশে সর্বাধিক চা উৎপন্ন হয় মৌলভীবাজার জেলায়। এ জেলার শ্রীমঙ্গল থানায় বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র অবস্থিত ।
ধান : ধান বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য। বাংলাদেশে আবাদি জমির অধিকাংশতেই ধানের চাষ করা হয়। বর্তমানে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ। দেশে ধান উৎপাদনের পরিমাণ বার্ষিক ২ কোটি ৮৯ লক্ষ টন। BARI উদ্ভাবিত উন্নত জাতের ধান চান্দিনা, মালা, বিপ্লব, ব্রিশাইল, দুলাভোগ, বিব্রালাম, আশা, প্রগতি, মুক্তা প্রভৃতি।
গম : বাংলাদেশে সর্বাধিক গম উৎপন্ন হয় রংপুর জেলায়। তবে গম গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দিনাজপুর জেলায়। দেশে উৎপন্ন উন্নত জাতের কয়েকটি গম হলো অঘ্রাণী, আকবর, বরকত, ইনিয়া ৬৬, পাভন ৭৬, আনন্দ, কাঞ্চন, দোয়েল প্রভৃতি।
তামাক : বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি তামাক উৎপন্ন হয় রংপুর জেলায়। দেশে প্রায় ৭০ হাজার একর জমিতে তামাক চাষ করা হয়। ম্যানিলা হল উন্নতজাতের তামাক ।
রেশম : বাংলাদেশে রেশম গুটির চাষ হয় রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, দিনাজপুর, রংপুর, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে । সবচেয়ে বেশি রেশম গুটির চাষ হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে। বার্ষিক গড় উৎপাদন সরকারি খাতে ১২,৬৭৮ পাউন্ড এবং বেসরকারি খাতে ৩৭,০০০ পাউন্ড (প্রায়)। তৈলবীজ : বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রধান প্রধান তৈলবীজ হচ্ছে সরিষা, চীনাবাদাম, তিল, সূর্যমুখী, সয়াবিন, তিসি প্রভৃতি। দেশে তৈলবীজের উৎপাদন একর প্রতি গড়ে ৩৭০ কেজি ।
তুলা : বাংলাদেশে যশোর জেলা তুলা চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। তুলা শস্যের দু'টি উন্নত জাত ‘রূপালী' ও 'ভেলফোজ’।
কয়েকটি উন্নত জাতের ধান :
বিপ্লব, মুক্তা, আশা, গাজী, সুফলা, প্রগতি, বাউধান, শাহী, চান্দিনা, মালা, মোহিনী, বালাম, ইরাটম-২৪, ব্রিশাইল, নিয়ামত, ময়না, দুলাভোগ, ব্রিবালাম, ভরসা, পাজাম ও পূর্বাচী।
উন্নত জাতের গম :
সোনালিকা, অঘ্রাণী, বরকত, ইনিয়া-৬৬, বলাকা, আকবর, আনন্দ, জোপাটেকো, কাঞ্চন
ও দোয়েল।
উন্নত জাতের আলু :
প্যাট্রোনিস, মূলটা, ডায়মন্ড ও কার্ডিন্যাল ।
গু গোলআলু প্রথম বাংলাদেশে আসে হল্যান্ড থেকে
উন্নত জাতের কলা : মোহনবাঁশী, বীটজবা, কানাইবাঁশী, অগ্নিশ্বর।
উন্নত জাতের সরিষা : সফল, অগ্রণী।
বনজ সম্পদ
বাংলাদেশে মোট বনভূমির পরিমাণ ২৫.২ লক্ষ হেক্টর। এটি বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের ১৭.০১% । মোট বনভূমির ১৫.২ লক্ষ হেক্টর বন বিভাগের সরাসরি ব্যবস্থাপনায় রয়েছে । ৭.৩ লক্ষ হেক্টর অশ্রেণীভুক্ত রাষ্ট্রীয় বন যা ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন । এছাড়া গ্রামীণ বন হিসেবে রয়েছে ২.৭ লক্ষ হেক্টর ।
মোট বনাঞ্চলের মাত্র ৪৫% এলাকায় গাছপালা রয়েছে। দেশজ উৎপাদনে বনজ সম্পদের অবদান ১.৭৫%। কৃষিখাতে এর অবদান ১১%। কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও বিশুদ্ধ পরিবেশ রক্ষার জন্য সে দেশের মোট আয়তনের ২৫% বনভূমি থাকা দরকার ।
পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করার মতো প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পরিমাণ বনভূমি বাংলাদেশের ৭ টি জেলায় রয়েছে। এগুলোর :
গণমাধ্যম :
* স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছিল চট্টগ্রামের কালুরঘাট।
* রেডিও বাংলাদেশ-এর সদর দপ্তর ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত। এ কেন্দ্র থেকে বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, আরবি, নেপালি ও হিন্দি ভাষায় অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। রেডিওর ১২টি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে সারা দেশে এবং প্রতিদিন ৯ ঘণ্টা বহিবিশ্বে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
* ঢাকায় ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন চালু হয়। রামপুরা টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপিত হয় ১৯৭৫ সালে। বিটিভি রজত জয়ন্তী উৎসব পালন করে ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৮৯ সালে। বাংলাদেশে রঙ্গিন টেলিভিশন চালু হয় ১ ডিসেম্বর, ১৯৮০ সালে। বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণাঙ্গ টিভি কেন্দ্র ২টি - ঢাকা ও চট্টগ্রাম। দেশে বর্তমানে ১৪টি টিভি উপকেন্দ্র রয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনা দেশে অনেকগুলো স্যাটেলাইট চ্যানেল চালু রয়েছে। উল্লেখযোগ্য চ্যানেল হল - এটিএন বাংলা, চ্যানেল আই, এনটিভি, বাংলাভিশন, একুশে টেলিভিশন।
* বাংলাদেশে উপগ্রহ ভূকেন্দ্রের সংখ্যা সর্বমোট ৪টি।
কেন্দ্রের নাম
অবস্থান
প্রতিষ্ঠার সন
বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূকেন্দ্র
রাঙামাটি
১৯৭৫
তালিবাবাদ উপগ্রহ ভূকেন্দ্র
গাজীপুর
১৯৮২
মহাখালী উপগ্রহ ভূকেন্দ্র
ঢাকা
১৯৯৫
সিলেট উপগ্রহ ভূকেন্দ্র
সিলেট
১৯৯৭
বাংলাদেশ টিএন্ডটি চারটি অঞ্চলে বিভক্ত। এগুলো হলো- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা । ঢাকায় প্রথম সেলুলার টেলিফোন চালু হয় ৮ আগস্ট, ১৯৯৩। বর্তমানে দেশে ছয়টি কোম্পানি সেলুলার ফোন চালু করেছে। এগুলো হল সিটিসেল, রবি, গ্রামীণ, বাংলা লিঙ্ক, টেলিটক, এয়ারটেল সেলুলার কোম্পানি।
* বাংলাদেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সংবাদ সংস্থা (বাসস) ছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংবাদ সংস্থা। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল ইউএনবি, ইউএনএ, নিউজ মিডিয়া, আনন্দ বাংলা সংবাদ, বাংলাদেশ নিউজ সার্ভিস, ইউএনএ প্রভৃতি। এছাড়া বিশ্বের খ্যাতনামা প্রায় সব সংবাদ সংস্থার শাখা অফিস রয়েছে এদেশে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গৃহীত পদক্ষেপ
বর্তমান বিশ্বায়ন ও বাজার অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয় । এই প্রেক্ষিতে জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা ২০০২ সালের অক্টোবরের ঘোষিত হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশে প্রথম ICT Incubator স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল দেশে মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে কম্পিউটার প্রদান ও স্কুল শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
হাইটেক পার্ক : ঢাকার অদূরে কালিয়াকৈরে ২৩১.৬৮ একর সরকারি জমিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এখানে হাইস্পিড ডাটা ট্রান্সমিশনসহ তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক অবকাঠামো তৈরি করা হবে।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ