বাংলাদেশের বিদ্যুৎ

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলো বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থাপনা। বাংলাদেশে মাথাপিছু বিদ্যুৎশক্তির ব্যবহার খুবই কম, মাত্র ২২০ কিলোওয়াট ঘণ্টা। দেশের মাত্র ৪৭% মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি/বিউবো) দেশের একমাত্র সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বিপিডিবি নিজে এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (আরইবি)। এছাড়া ঢাকা অঞ্চলের জন্য ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ (ডিপিডিসি) ও ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানি (ডেসকো) এবং খুলনার জন্য আছে খুলনা বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানি (কেসকো)। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা। স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ প্রজেক্ট-এর (আইপিপি) অধীনে মন্ত্রণালয় সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন উদ্যোগগুলির উৎপাদন ও বিতরণ কার্যক্রমের উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে।

 

স্বাধীনতা লাভের পরপর বাংলাদেশে মোট ১১টি ইউনিটবিশিষ্ট ৭টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ছিল। এগুলি কাপ্তাই, শাহজীবাজার, সিদ্ধিরগঞ্জ, খুলনা, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী এবং বগুড়ায় অবস্থিত। পরবর্তীকালে আশুগঞ্জ, সিলেট, ফেঞ্চুগঞ্জ, ঘোড়াশাল, হরিপুর, রাউজান, বাঘাবাড়ি, ভেড়ামারা, সৈয়দপুর, বরিশাল, রংপুর, ভোলা, চট্টগ্রাম ও শিকলবাহায় সরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। তবে নববই দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে সরকার শিল্প-কারখানাগুলিতে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উৎসাহিত করছে যাতে লোড শেডিং-এর সময়ও কারখানাগুলিতে বিরতিহীন উৎপাদন চলতে পারে। প্রাইভেট পাওয়ার কোম্পানিগুলিকে নির্দিষ্ট শর্তে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ নীতির সুযোগ নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বেসরকারি কোম্পানি বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রগুলি বাঘাবাড়ি, হরিপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ ও মেঘনাঘাটে অবস্থিত। ২০০৯ সাল নাগাদ সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত মোট ৪৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত ১৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৩৮২৪ মেগাওয়াট এবং বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত ২৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা ২১০৪ মেগাওয়াট। তবে এসব কেন্দ্র থেকে প্রকৃতপক্ষে উৎপাদনক্ষমতার সমপরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় না। পিক আওয়ারে সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে সর্বোচ্চ ৩৩৩১ এবং বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি থেকে ২০৪৫ মেগাওয়াটসহ মোট সর্বোচ্চ ৫৩৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ধরণ  বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়ে থাকে। এগুলি হলো: ১. স্টিম টারবাইন, ২. গ্যাস টারবাইন, ৩. কম্বাইন্ড সাইকেল গ্যাস টারবাইন, ৪. হাইড্রো পাওয়ার প্ল্যান্ট বা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ৫. উইন্ড টারবাইন পাওয়ার প্ল্যান্ট।

স্টিম টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে মূলত প্রাকৃতিক গ্যাসের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জ্বালানি হিসেবে কয়লা এবং ফারনেস অয়েলও ব্যবহূত হয়ে থাকে। দেশের সবচেয়ে বড় স্টিম টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নরসিংদী জেলার ঘোড়াশালে অবস্থিত। ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি এবং ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটের মাধ্যমে এ কেন্দ্রটি সর্বমোট ৯৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। ঘোড়াশালে দ্বৈত জ্বালানির মাধ্যমে পরিচালিত ২০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরেকটি ইউনিটের নির্মাণকাজ চলছে।

দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দিনাজপুর জেলার বড় পুকুরিয়ায় অবস্থিত। এ কেন্দ্রে রয়েছে প্রতিটি ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন মোট দুটি ইউনিট। একই ক্ষমতার আরেকটি ইউনিট স্থাপনের উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফারনেস অয়েলভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্ট রয়েছে খুলনা জেলার গোয়ালপাড়ায়। এ কেন্দ্রের দুটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৬০ ও ১১০ মেগাওয়াট, অর্থাৎ মোট ১৭০ মেগাওয়াট।

বাংলাদেশে ইদানিং দুধরনের গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। যথা: পিকিং প্ল্যান্ট এবং বেজ লোড প্ল্যান্ট। এর মধ্যে পিকিং প্ল্যান্টগুলি মূলত ওপেন সাইকেল গ্যাস টারবাইনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, আর বেজ লোড প্ল্যান্টগুলি পরিচালিত হয় কম্বাইন্ড সাইকেল গ্যাস টারবাইনের মাধ্যমে। গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির মধ্যে হরিপুরে প্রতিটি ৩৩ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি বেজ লোড প্ল্যান্ট ইউনিট এবং সিদ্ধিরগঞ্জে প্রতিটি ১০৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পিকিং প্ল্যান্ট ইউনিট রয়েছে। কম্বাইন্ড সাইকেল গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির মধ্যে মেঘনাঘাট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা ৪৫০ মেগাওয়াট। এছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জ, বাঘাবাড়িসহ আরো কয়েকটি ছোটখাটো ইউনিটে কম্বাইন্ড সাইকেল গ্যাস টারবাইন ব্যবহূত হয়।

বাংলাদেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাইয়ে অবস্থিত। ১৯৬২ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে স্থাপিত পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে এখানে মোট সর্বোচ্চ ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। কেন্দ্রটিতে আরো দুটি ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার খুব সামান্য অংশই এ কেন্দ্র মেটাতে সক্ষম।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহূত প্রাথমিক জ্বালানির সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব্ দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে তাই জ্বালানি হিসেবে কয়লা, এলএনজি, পরমাণুশক্তি, বায়ুশক্তি এবং সৌরশক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ফেনীর মাতামুহুরিতে দেশের প্রথম বায়ূভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে, যেখানে ২২৫ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন চারটি ইউনিটের মাধ্যমে ০.৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কুতুবদিয়ায় এ রকম আরেকটি কেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা ২০ কিলোওয়াট।

পাবনার রূপপুরে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ কেন্দ্রে প্রতিটি ১০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট স্থাপন করা হবে। কেন্দ্রটি ২০১৭-১৮ সাল নাগাদ চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

 

বিদ্যুৎ ব্যবস্থা  একটি সমন্বিত নেটওয়ার্ক যা বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও সরবরাহ সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি ও উপকরণকে সংযুক্ত করে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় ৫০ হার্টজ ফ্রিকোয়েন্সিতে এবং ১১ কিলোভোল্ট বা ১৫ কিলোভোল্টে যা উচ্চ ভোল্টের সঞ্চালন নেটওয়ার্ক বা গ্রিডে প্রেরণের জন্য ট্রান্সফরমার দিয়ে ১৩২ বা ২৩০ কেভিতে উন্নীত করা হয়। বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করার জন্য গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ গ্রিড সাব-স্টেশনে ট্রন্সফরমারের মাধ্যমে ৩৩ কেভি, ১১ কেভি এবং ০.৪ কেভিতে নামিয়ে আনা হয়।

২০০৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ গ্রিডে প্রায় ২,৩১৪ সার্কিট কিলোমিটার ২৩০ কেভি লাইন, ৫,৫৩৩ সার্কিট কিলোমিটার ১৩২ কেভি লাইন এবং ১৬৭ সার্কিট কিলোমিটার ৬৬ কেভি সঞ্চালন লাইন অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২৩০ কেভি এবং ৬৬ কেভি লাইনগুলি ১৩২ কেভি নেটওয়ার্কের সাথে যথাক্রমে ২৩০/১৩২ কেভি এবং ১৩২/৬৬ কেভি আন্তঃবাস ট্রান্সফরমারের মাধ্যমে সংযুক্ত। এ ছাড়া ৮৫টি গ্রিড সাব-স্টেশন আছে যেগুলিতে উচ্চ ভোল্টের সঞ্চালন লাইন থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে লক্ষাধিক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩১ কেভি, ১১ কেভি এবং ০.৪ কেভি বিতরণ লাইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করা হয়।

বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) গ্রাহকদের নিকট সরবরাহকৃত বিদ্যুতের প্রায় ৭৫% উৎপাদন করে। আর দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলির যৌথ মালিকানাধীন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি যেমন স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী (Independent Power Producer-IPP) এবং ভাড়ায় চালিত বিদ্যুৎ প্লান্টগুলি (Rental Power Plant-RPP) অবশিষ্ট ২৫% ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে বিউবোর কাছে গ্রিডের মাধ্যমে বিক্রয় করে। বিউবো আবার বিভিন্ন বিতরণ সংস্থার কাছে বিদ্যুৎ বিক্রয় করে। অবশ্য কয়েকটি ছোট ছোট IPP পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ৩৩ কেভি বিতরণ নেটওয়ার্কে সরাসরি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। গ্রিড সিস্টেম বা সঞ্চালন লাইনের নেটওয়ার্কটি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (PGCB) নামক একটি সরকরি কোম্পানির মালিকানা ও পরিচালনাধীন। সারাদেশে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্ব কয়েকটি সরকারি সংস্থা বা কোম্পানির উপরে নিজ নিজ সুনির্দিষ্ট এলাকা ভিত্তিক ন্যাস্ত আছে। এ সমস্ত প্রতিষ্ঠান হল বিউবো, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, ডিপিডিসি, ডেসকো এবং ওজোপডিকো (পশ্চিম অঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি)।

বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে পদ্মা ও যমুনা নদী দ্বারা দুটি সুস্পষ্ট অঞ্চলে বিভক্ত। পূর্বাঞ্চলে জলবিদ্যুৎ ও পর্যাপ্ত গ্যাসফিল্ড থাকায় বিদ্যুতের সিংহভাগ এ অঞ্চলে উৎপাদিত হয়। পক্ষান্তরে পশ্চিমাঞ্চলে কয়েকটি জায়গায় কয়লার খনির সন্ধান পাওয়া গেলেও শুধুমাত্র বড়পুকুরিয়া থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। সেখান থেকে আহরিত কয়লা ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাবিশিষ্ট একটি বিদুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চলে কয়লার পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ফার্নেস অয়েল দিয়ে এবং পূর্বাঞ্চল থেকে যমুনা সেতুর নিচ দিয়ে একটি পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস নিয়েও কিছু সীমিত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমাঞ্চল একটি বিদ্যুৎ ঘাটতি এলাকা যাকে পূর্বাঞ্চল থেকে ২৩০ কেভির দুটি পূর্ব-পশ্চিম আন্তঃসংযোগ সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনতে হয়। এ কারণে সিস্টেমে কোন গোলযোগ হলে ব্ল্যাকআউট পরিহার বা সীমিত করার লক্ষ্যে দুটি অঞ্চলের সিস্টেমকে তাৎক্ষণিকভাবে আলাদা করে পরিচালনা করার সুযোগ নেই বললেই চলে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টরে বেসরকারি এবং বিদেশি উদ্যোগ ও বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিবিধ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা সত্ত্বেও পুরনো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলির সময়োচিত ওভারহলিং এবং নতুন নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনে অর্থ সংকুলান ও পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহের সমস্যা রয়েই গেছে। অথচ প্রতি বৎসরই গ্রাহকদের বিদ্যুৎ চাহিদা প্রায় ১০% হারে বেড়ে চলছে। তাছাড়া বর্তমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির পুরাতন জরাজীর্ণ দশা, উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাওয়া ও প্রায়ই সমস্যায় পতিত হওয়া এবং কম চাপে গ্যাস সরবরাহের দরুণ বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম হয়। ২০০৯ সালে গ্রীষ্মকালীন একটি দিনে সর্বোচ্চ চাহিদাকালীন সময়ে সচরাচর ৫০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে পূর্বাঞ্চলে ৩৩০০ মেগাওয়াট এবং পশ্চিমাঞ্চলে ৬০০ মেগাওয়াট মাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতো। স্পষ্টতই গ্রিড সিস্টেম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটিকে সিস্টেম স্থিতিশীল ও কর্মক্ষম রাখার স্বার্থে ১০০০ মেগাওয়াট এর মত ব্যাপক লোডশেডিং এর আশ্রয় নিতে হয়।

তবে সরকার কর্তৃক প্রতিবেশী দেশসমূহ যেমন নেপাল, ভুটান, মায়ানমার থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির প্রচেষ্টা এবং গ্রিড বহির্ভূত দুর্গম গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্র পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি আগামী এক দশকের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলে আরো কয়েকটি কয়লাভিত্তিক এবং একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার জন্য আশাব্যাঞ্জক হতে পারে।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]