জলবায়ু বলতে নির্দিষ্ট স্থানের দীর্ঘ সময়ের, সাধারণত ২০-৩০ বছরের আবহাওয়ার বিভিন্ন অবস্থার গড়পড়তা হিসাবকে বোঝানো হয়। জলবায়ু সাধারণত বৃহৎ এলাকার নির্ণীত হয়ে থাকে।
নিয়ামক
জলবায়ু কতিপয় বিষয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়ে থাকে, যেগুলোকে জলবায়ুর নিয়ামক বলা হয়ে থাকে। যথা:
অক্ষাংশ
অক্ষাংশ অনুযায়ী সূর্যকীরণ পতনের তারতম্য ঘটে, কোথাও লম্বভাবে পড়ে, অথবা কোথাও তীর্যকভাবে পড়ে। তাই স্থানভেদে উষ্ণতা ও আর্দ্রতার তারতম্য ঘটে। নিরক্ষরেখা বরাবর স্থানসমূহে সূর্যরশ্মি খাড়াভাবে পড়ে বিধায় ঐসকল অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি। নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে তাপমাত্রা ক্রমেই কমতে থাকে। ১ °C অক্ষাংশে উষ্ণতা 0.28 °C হ্রাস পায় বলেই নিরক্ষরেখা থেকে সবচেয়ে দূরবর্তি উত্তর ও দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে বরফ রয়েছে।
উচ্চতা
উচ্চতার বৃদ্ধিতে তাপমাত্রা হ্রাস পায়। প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় ৬.8° সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায়। এমনকি উচ্চতার তারতম্যে একই অক্ষাংশে অবস্থিত দুই অঞ্চলের তাপমাত্রা দুরকম হয়।
সমুদ্র থেকে দূরত্ব
কোনো স্থান সমুদ্র থেকে কতটা দূরে তার প্রেক্ষিতে বাতাসের আর্দ্রতার মাত্রা নির্ভর করে আর আর্দ্রতার প্রেক্ষিতে জলবায়ুর উষ্ণতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। সমুদ্র নিকটবর্তি এলাকার বায়ুতে গরমকালে আর্দ্রতা ও শীতকালে মৃদু উষ্ণতা বিরাজ করে। এধরণের জলবায়ুকে সমভাবাপন্ন জলবায়ু বলে।
বায়ুপ্রবাহের দিক
সমুদ্র থেকে প্রবাহিত জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু যে অঞ্চল দিয়ে বয়ে যায়, সে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশি হয়। কিন্তু স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত শুষ্ক বায়ু আবার উষ্ণতা বাড়ায়।
বৃষ্টিপাত
কোনো স্থানে বৃষ্টিপাত হলে সেখানকার উত্তাপ কমে আবার বৃষ্টিপাতহীন অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি থাকে। তাই মরুভূমি এলাকায় জলবায়ু উষ্ণ। তাছাড়া বৃষ্টিপাতের মাত্রার উপর আর্দ্রতার মাত্রাও নির্ভরশীল, যা জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে।
সমুদ্রস্রোত
শীতল বা উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের কারণে উপকূলবর্তি এলাকার আবহাওয়ায়ও পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। এর উদাহরণ হিসেবে প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ পানির প্রবাহ এল নিনোর কথা উল্লেখ করা যায়, যার প্রভাবে উপকূলবর্তি দেশগুলোতে দীর্ঘ খরা পর্যন্ত দেখা দিয়েছে।
পর্বতের অবস্থান
উঁচু পর্বতে বায়ুপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে আবহাওয়া ও জলবায়ুগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, হিমালয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মৌসুমী জলবায়ু বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।
বন ভূমি
গাছের প্রস্বেদন ও বাষ্পীভবনের মাধ্যমে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বনভূমির প্রগাঢ়তার কারণে কোনো কোনো স্থানে সূর্যালোক মাটিতে পড়ে না, ফলে ঐসকল এলাকা ঠান্ডা থাকে। তাছাড়া বনভূমি ঝড়, সাইক্লোন, টর্নেডো ইত্যাদির গতিপথে বাধা সৃষ্টি করে বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার রূপ বদলে দেয়।
ভূমির ঢাল
সূর্যকীরণ উঁচু স্থানের ঢাল বরাবর পড়লে ভূমি উত্তপ্ত হয়ে তাপমাত্রা বাড়ে আবার ঢালের বিপরীত দিকে পড়লে তাপমাত্রা অতোটা বাড়ে না। তাছাড়া ঢাল বরাবর লম্বভাবে সুর্যালোকের পতন, তীর্যকভাবে সূর্যালোক পতনের তুলনায় তুলনামূলক উত্তপ্ত আবহাওয়ার সৃষ্টি করে।
মাটির বিশেষত্ব
বেলেমাটির বিশেষত্ব হলো তা যত দ্রুত গরম হয়, তত দ্রুত ঠান্ডাও হয়। সেই তুলনায় কর্দমযুক্ত পলিমাটি দ্রুত গরমও হয়না, গরম হলে ঠান্ডা হতেও দেরি হয়। তাই কোনো স্থানের মাটির বিশেষত্বের উপর আবহাওয়া ও জলবায়ুর পার্থক্য দেখা দিতে পারে।
শ্রেণীবিভাগ
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ