সমুদ্রবন্দর জাহাজে পণ্যদ্রব্য ভরাট এবং খালাসের জন্য সমুদ্র তীরবর্তী স্থাপনা। পৃথিবীর ৮০% লোক সমুদ্র তীরবর্তী (১০০ মাইলের ভিতর) অঞ্চলে বসবাস করে। সমুদ্র তীরবর্তী দেশগুলির অর্থনীতির জন্য সমুদ্রবন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাচীনকাল থেকে সমুদ্র তীরবর্তী দেশগুলিতে গড়ে উঠেছে সমুদ্রবন্দর। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর গুরুত্বপূর্ণ আমদানি-রপ্তানি অবকাঠামো। দেশের সিংহভাগ (৯০%) আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সম্পাদিত হয় এ দু’বন্দরের মাধ্যমে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরকে দেশের লাইফ লাইন বলা হয়ে থাকে। এ বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির তিন-চতুর্থাংশ সম্পাদিত হয়। বাকিটুকু হয় মংলা ও কয়েকটি স্থল বন্দরের মাধ্যমে।
চট্টগ্রাম বন্দর পতেঙ্গার কর্ণফুলি নদীর তীরে অবস্থিত বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর। চট্টগ্রাম বন্দর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ১৮৮৭ সালে। চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের একমাত্র প্রকৃতিগত বন্দর। নদীর কূলে জেটি নির্মাণ করে পণ্য ওঠানামা করা হয়। কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী এ বন্দর কেবল বাংলাদেশের নয়, বরং ভারত উপমহাদেশের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।
মংলা বন্দর ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গোপসাগর হতে ৭০ নটিক্যাল মাইল অভ্যন্তরে এবং খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিমি দক্ষিণে এর অবস্থান। পশুর নদীর দীর্ঘ চ্যানেল (গড় গভীরতা ৬.৫ মিটার) দিয়ে মংলা বন্দরে জাহাজ চলাচল করে। এখানে ২০০ মিটার দীর্ঘ ও ৭ মিটার গভীর জাহাজ যাতায়াত করতে পারে। এ বন্দর দিয়ে পাট, চামড়া, তামাক, হিমায়িত মাছ প্রভৃতি রপ্তানি হয় এবং দেশের ৪০% খাদ্যসামগ্রী, সার, কয়লা, কাঠের মন্ড এবং রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি করা হয়।
বাংলাদেশের মহেশখালীর সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে ভারত, চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশই তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘ডিপ সি-পোর্ট প্রজেক্ট’ নামে তিন পর্বের প্রকল্প বাস্তাবায়িত হবে ২০৫৫ সালের মধ্যে। প্রথম পর্বের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য প্রথম দফায় ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ADP-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বন্দর নির্মাণে মোট ব্যায়ের ৩০% অর্থের যোগান দেবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বাকি ৭০% অর্থসংস্থান হবে সরকারি-বেসরকারি অংশগ্রহণে (PPP)। উল্লেখ্য যে, প্রথম পর্বের কাজ শেষ হলে (২০১৯ সাল নাগাদ শেষ হওয়ার কথা) ১১টি জেটি-বার্থের মাধ্যমে বন্দরের বাণিজ্যিক পরিচালনা চালু করা সম্ভব হবে। ২০২০ সালে দ্বিতীয় পর্বের কাজ শুরু হয়ে ২০৩৫-এ বন্দরে যোগ হবে আরো ২৫টি জেটি-বার্থ। তৃতীয় পর্বের কাজ ২০৩৫ সালে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০৫৫ সালে। বন্দরের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে মোট জেটির সংখ্যা দাঁড়াবে ৯৬টিতে। তখন গভীর সমুদ্রবন্দরে সর্বমোট ৯৬টি জাহাজ ভিড়িয়ে বা নোঙর করে একসঙ্গে পণ্য ওঠানামা করা সম্ভব হবে। গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রথম পর্বের কাজ শেষ হলে দেশের অর্থনীতিতে ১.৫% প্রবৃদ্ধি হবে। এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ১৮ থেকে ৩০% পরিবহণ ব্যয় কমে যাবে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দ্রব্যমূল্যে।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ