বর্ণালীতে সাতটি রং আছে। এর মধ্যে তিনটি রং আছে যাদেরকে মিশিয়ে অন্য রং সৃষ্টি করা যায়। মৌলিক রং তিনটি। যথা- ১. লাল ২. সবুজ ও ৩. নীল।
নীলস বোর
(Niels Bohr)
জন্ম-১৮৮৫ ইং
মৃত্যু-১৯৬২ ইং
ইউরোপের একটি ছোট্ট দেশ ডেনমার্ক। রাজধানীর নাম কোপেনহেগেন। ঐ রাজধানীর এক প্রাসাদে ১৮৮৫ সালের ৭ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন নীলস বোর। বাবার নাম ক্রিশ্চিয়ান বোর এবং মায়ের নাম এলেন। বাবা ছিলেন কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর বিদ্যার অধ্যাপক। মাও ছিলেন শিক্ষিতা। নীলস বোর ১৯০৩ সালে ভর্তি হলেন কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। পদার্থ বিজ্ঞানকেই বেছে নিলেন তিনি। ১৯১১ সালে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধাতুর ইলেকট্রন তত্ত্বের উপর গবেষণা করে ডক্টরেট হয়ে বের হলেন। ১৯১৩ সালে বোর তার পারমাণবিক গঠনের উপর যুগান্তকারী প্রবন্ধটি প্রকাশ করেন। প্রবন্ধটির শিরোনাম ছিল অণু এবং পরমাণুর গঠন বিষয়ে। এদিকে ১৯১১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিজ্ঞানী লর্ড রাদার ফোর্ড আলফা কণার বিচ্চুরণ পরীক্ষা করে পরমাণুর একটা গঠন বলেছেন। সেই পরীক্ষাটি নানা কারণে ঐতিহাসিক ছিল। কিন্তু সমস্যা হচ্ছিল একটাই। ইলেকট্রন যদি নিউক্লিয়াসের চারিদিকে ঘুরতেই থাকে তবে শক্তি হারিয়ে একসময় নিউক্লিয়াসে মুখ থুবড়ে পড়তেই হবে। অথচ কখনই তা হচ্ছে না। বোর বললেন ইলেকট্রনকে নিউটনীয় কণা ভাবলে চলবে না। ওই ভাবনা অনুযায়ী শক্তি হারিয়ে মুখ থুবড়ে পড়বারই কথা। বিশ শতকের শুরুতেই সে কোয়ান্টাম তত্ত্বের কথা বলেছিলেন জার্মান বিজ্ঞানী প্ল্যাঙ্ক, এখানে সেই কথাই চলবে।
আরও কয়েকটি কথা বললেন নীলস বোর। যেমন খুশি বৃত্তাকার পথে ইলেকট্রন ঘুরতে পারবে না। নির্দিষ্ট কতকগুলো পথ থাকবে। যতক্ষণ ঐ পথে ঘুরবে ইলেকট্রন, শক্তির অপচয় হবে না। ইলেকট্রন যদি এক বৃত্তাকার পথ থেকে অন্য বৃত্তাকার পথে যায় তবেই শক্তির গ্রহণ বা বর্জন হবে। এরকম বললেই মানতে হবে কেন? ততদিনে বালমার আর পাশ্চেন হাইড্রোজেন বর্ণালী পরীক্ষা করে একটা দ্রবকের মান বের করলেন।
সেই ধ্রবকের মান পরীক্ষা করে যা এল, বোরের সমীকরণ থেকে কাগজে কলমে হিসেব কষে তাই বেরোল। ফলে সফল হলেন বোর। রাদার ফোর্ডের দুর্বলতা দূর করেছেন বোর। রাদার ফোর্ড খুশিতে অভিনন্দন জানালেন তাকে। ১৯১৬ সালের শেষে কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে তত্ত্বীয় পদার্থ বিদ্যার অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। পারার (Mercury) একটি ফোঁটাকে বড় থেকে বড় করতে করতে সেটা আর গোল থাকে না, লম্বাটে ডাম্বেলের আকার ধারণ করে। সেই সময় একটি সুচঁ ফুটিয়ে তাকে দুটি ফোঁটায় পরিণত করা যায়। তখন তার মধ্যে কি কি শক্তি কাজ করে যাতে পারার ফোঁটাটি অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় বিভক্ত না হয়ে ঠিক দুটি প্রধান গোল আকার পায়। এই তুলনাটি প্রসারিত করে নিয়ে আসা যায় নিউক্লিয়াসের ক্ষেত্রে। মোটামুটি এইভাবে চিন্তা করতে শুরু করেই নীলসবোর ১৯৩৬ খৃষ্টাব্দে নিউক্লিয়াসের লিকুয়িড ড্রপ মডেল বা তরল ফোঁটার মডেল তৈরি করেন। পারার বেলায় কাজ তার মহাকর্ষ আর পৃষ্ঠটান, আর নিউক্লিয়াসের বেলায় আধানের বিকর্ষীবল আর আকর্ষী কেন্দ্রিক বল।বিকর্ষী বল চায় ভেঙে ফেলতে আর আকর্ষী বল চায় ধরে রাখতে। তিনি ১৯২০ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি করেন Institute for theoritical Physics যা এখনও আছে। পরমাণুর গঠনের আবিষ্কারের জন্য তাকে ১৯২২ সালে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৪০ সালের এপ্রিল মাসে দেশটা হিটলারের দখলে চলে যায়। তিনি বাধ্য হয়ে চলে গেলেন সুইডেন, পরে ইংল্যান্ড এবং সবশেষে আমেরিকায়। যুদ্ধ শেষ হলে তিনি নিজের দেশ ডেনমার্কে ফিরে এসেছিলেন। দেশের মানুষ তাকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানায়। ইনস্টিটিউটের কর্মীরা আনন্দে সেদিন চোখের পানি চেপে রাখতে পারেনি। তার স্বপ্ন ছিল বোর ইনস্টিটিউটে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। সবচেয়ে প্রতিভাবান সবচেয়ে দূর দৃষ্টি সম্পন্ন পদার্থ বিজ্ঞানীদের একত্রিত করা। নীলস বোরই বোধ হয় প্রথম পদার্থ বিজ্ঞানী, যিনি পারমাণবিক বোমার বিপদও পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছিলেন।
প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট ও প্রধানমন্ত্রী চার্চিলকেও তিনি বিপদের গুরুত্ব বোঝাতে পারেননি। এটা বুঝতে মানুষের অনেকদিন সময় লেগেছিল। এই মহান বিজ্ঞানী ১৯৬২ সালের ১৬ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এই সঙ্গে পদার্থ বিজ্ঞানের এক গৌরবময় যুগের সমাপ্তি ঘটে। নিউটন, আইনস্টাইনের সঙ্গে একইভাবে সম্মানের সঙ্গে যার নাম চিরকাল উচ্চারিত হবে, তিনি হলেন নীলস বোর।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ