বেয়ার্ড, আল-খাওয়ারিজমী

বেয়ার্ড

জন বেয়ার্ড পূর্ণ নাম জন লগি বেয়ার্ড (আগস্ট ১৩, ১৮৮৮ - জুন ১৪, ১৯৪৬) একজন স্কটল্যান্ডীয় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। বিশ্বের প্রথম কার্যক্ষম ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল টেলিভিশন আবিস্কারের জন্য, তিনি বিশ্ব বিখ্যাত।

আল-খাওয়ারিজমী

আধুনিক তত্ত্বীয় গণিতশাস্ত্র হচ্ছে জ্ঞানের এক জটিল এবং দুর্বোধ্য শাখা। এই বিশেষ জ্ঞান অনেক স্কুল শিক্ষার্থীদের করে হতাশ, অনেককে করে বিরক্ত। কিন্তু এ এমন এক ধরনের জ্ঞান যা এই আধুনিক যুগের সকল বিস্ময়কর প্রযুক্তির ভিত্তি। ৮ম শতকের এক মুসলিম গণিতবিদ আল-খাওয়ারিজমী’র অবিস্মরণীয় দক্ষতা ও বিচক্ষণতা ছাড়া হয়তো আজ আধুনিক গণিতশাস্ত্র দেখতে অনেক ভিন্ন হতো।

মুহাম্মাদ আল-খাওয়ারিজমীর জন্ম ৭৮০ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব-পারস্যের খোরাসান এ। চীন এবং রোম এর মধ্যকার ঐতিহাসিক “সিল্ক রোড” যুক্ত করেছিল বিশ্বের পূর্ব ও পশ্চিমকে, আর সেই সড়ক গিয়েছিল খোরাসানের মধ্য দিয়েই। শুধুমাত্র ব্যবসায়িক পণ্যের লেনদেন হতোনা এই সিল্ক রোডে, পূর্ব-পশ্চিমের জ্ঞানও যাওয়া-আসা করতো। এর মাধ্যমেই অনেক উপকৃত হয়েছিলেন তরুণ আল-খাওয়ারিজমী। যখন আব্বাসীয় খলিফা আল-মামুন ৮৩২ সনে ‘‘বাইতুল হিকমাহ’’ প্রতিষ্ঠা করলেন, খলিফা ব্যক্তিগতভাবে আল-খাওয়ারিজমীকে বাইতুল হিকমাহ-তে আসার আমন্ত্রণ জানান। আল-মামুন যুক্তিবাদী ছিলেন, তিনি আল-খাওয়ারিজমীর জন্য দুঃসাহসিক একটি দায়িত্ব নির্ধারণ করলেন – গাণিতিক জটিলতা এবং সৌন্দর্যের মাধ্যেম আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণ করা।

অন্যান্য সহকর্মীদের মতোই আল-খাওয়ারিজমী প্রাচীন গ্রীক এবং ভারতীয় রচনাবলীর অনুবাদকার্যে নেমে পড়লেন। পীথাগোরাস, ইউক্লিড এবং ব্রহ্মগুপ্ত এর কীর্তির উপর দাঁড়িয়েই সামনের দিকে এগিয়ে চললেন এই প্রজন্মের স্কলারগণ। কিন্তু আল-খাওয়ারিজমীর কাজ শুরু হয় গ্রীক এবং হিন্দু রচনাবলীর অনুবাদের মাধ্যমে। তিনি গণিতের বিখ্যাত এক ভারতীয় বই “দ্যা ওপেনিং অফ দ্যা ইউনিভার্স” (মহাবিশ্বের সূত্রপাত) থেকে ‘শূন্য’ যে একটি সংখ্যা তার ধারণা পান। তিনি ধারণাটি গ্রহণ করেন যা পরবর্তীতে গণিতের সম্ভাবনা এবং জটিলতার এক নতুন জগত তৈরী করে।

রোমান সংখ্যার ব্যবহার গণিতের জটিল গণনাকে প্রায় অসম্ভব করে তুলেছিল। ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা দিয়ে আল-খাওয়ারিজমী বীজগণিতের মতো নতুন ক্ষেত্র তৈরী করেন এবং বিকশিত করেন, যা তিনি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেছিলেন মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের গণনার কাজে। তিনি গ্রীকদের জ্যামিতির উপর আরো অনেক কাজ করেন এবং নতুন নতুন অনেক ধারণা প্রদান করেন, উন্নতিসাধন করেন, যা বর্তমান বিশ্বের হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরা পড়ে থাকে।

কিন্তু তাঁর মূল চিন্তা রয়ে যায় ‘শূন্য’ সংখ্যাটি নিয়ে। গণিতের ব্যবহারের মাধ্যমে এর অস্তিত্ব প্রমাণ করা যায়না। প্রাচীন ভারতীয় রচনা দৃঢ়ভাবে বলে যে শূন্যকে শূন্য দিয়ে ভাগ করলে ফলাফল শূন্যই হয়। কিন্তু আল-খাওয়ারিজমী জানেন কোন কিছুই শূন্য দিয়ে ভাগ করা সম্ভব নয়। অবশেষে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, কোন প্রমাণ ছাড়াই শূন্যের অস্তিত্বের ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে হবে। খলিফা আল-মামুনকে তিনি এ ব্যাপারে বলেন, আল্লাহর উপর বিশ্বাসের ব্যাপারটাও এরকম, যা বিজ্ঞানের মাধ্যমে প্রমাণ করা যাবেনা, ধর্মীয় বিশ্বাসের মাধ্যমেই যাকে গ্রহণ করতে হবে। আল-খাওয়ারিজমী শুধুমাত্র গণিতবিদই ছিলেননা, একজন দার্শনিকও ছিলেন।

গণিতের পাশাপাশি তিনি ভূগোলের উপর একটি সারসংক্ষেপ লিখেন যেখানে বিশ্বের ২৪০০ টি শহরের অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ রেকর্ড করেন। এছাড়াও তিনি অ্যাস্ট্রোল্যাব, সূর্যঘড়ি, এমনকি ইহুদী ক্যালেন্ডার নিয়েও বই লিখেন। তাঁর মৃত্যুর পর ৭০০ বছর ধরে ইউরোপের গণিতবিদগণ তাঁর নাম উদ্ধৃত করেছেন তাদের গবেষণায়, উল্লেখ করেছেন “অ্যালগোরিসমী” (Algorismi) হিসেবে। গণিতের সূত্রের আধুনিক নামঃ “অ্যালগোরিদম” (algorithm) তাঁর নাম থেকেই এসেছে। তাঁর এই উত্তরাধিকার বজায় থাকবে, যদিও এই আধুনিক বিশ্ব গড়তে তিনি সাহায্য করেছিলেন, এই আধুনিক বিশ্বের সবকিছুই আছে, কিন্তু ভুলে গিয়েছে তাঁর অবদান।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]