সিভি রমন, রেডন

সিভি রমন

উপমহাদেশের প্রথম নোবেল পুরষ্কার প্রাপ্ত সিভি  রমন  আবিষ্কৃত ‘রামন ইফেক্ট (Raman Effect)’ বা ‘রামন-প্রভাব’ পদার্থবিজ্ঞানের জগতে এক আশ্চর্য মাইলফলক হয়ে আছে ১৯২৮ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি থেকে – যেদিন এই আবিষ্কারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। রামন-প্রভাব আবিষ্কারের জন্য সি ভি রামন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন ১৯৩০ সালে। শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয়, সমগ্র এশিয়ার মধ্যে তিনিই হলেন বিজ্ঞানে প্রথম নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী। তাঁর নোবেল-বিজয়ী গবেষণার সবটুকুই সম্পন্ন হয়েছিল কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশান ফর দি কাল্টিভেশান অব সায়েন্স’ এর ছোট্ট একটা গবেষণাগারে। এই গবেষণাগারের যন্ত্রপাতি সংযোজন, সংরক্ষণ ও পরীক্ষণের কাজে তাঁকে যিনি সারাক্ষণ সহায়তা করেছিলেন তাঁর নাম আশুতোষ দে – আশুবাবু নামেই যিনি পরিচিত ছিলেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো এই আশুবাবু জীবনে কোনদিন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনার সুযোগ পান নি। অবশ্য গবেষণার ক্ষেত্রে কোন প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ছিল না সি ভি রামনেরও। তাই তাঁর কোন গবেষণা-শিক্ষকও ছিলেন না। গবেষণার ক্ষেত্রে নিজেকেই নিজের পথ খুঁজে নিতে হয়েছিল রামনকে। আর তাঁর এই পথ-খোঁজা শুরু হয়েছিল একেবারে ছোটবেলা থেকেই।

রামন ইফেক্ট আলোক তরঙ্গের অজানা পথ খুলে দিয়েছে। শক্তির স্তর এবং অণু ও পরমাণুর গঠন বুঝতে অনেক সহায়তা করেছে রামন-ইফেক্ট। পদার্থবিজ্ঞানের অনেক শাখায় রামন ইফেক্ট কাজে লাগছে। জীববিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞানেরও অনেক শাখায় রামন-ইফেক্ট কাজে লাগিয়ে অনেক নতুন নতুন গবেষণা হচ্ছে।নোবেল পুরষ্কার পাবার পর খ্যাতি ও সাফল্যের শীর্ষে উঠে গেলেন সি ভি রামন। 

রেডন

রেডন (Radon, Ra) পর্যায় সারণীর ৮৬তম মৌল। নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভারী। এটি অত্যন্ত তেজস্ক্রিয় এবং প্রকৃতিতে এর প্রাচুর্য খুবই কম। আমরা রেডন বলতে যা বুঝি তা প্রকৃতপক্ষে ৮৬তম রাসায়নিক মৌলের তিনটি সমস্থানিক মিশ্রণের নাম। এই মিশ্রণগুলোর একটির পর আরেকটি আবিষ্কৃত হয় এবং প্রত্যেককেই প্রসর্গ বলা হয়।

রেডিয়ামের প্রসর্গ হিসেবে রেডন নামটির উদ্ভব হয়। এই নামটি প্রস্তাব করেছিলেন বিজ্ঞানী রামজে। লাতিন ভাষায় এর অর্থ প্রদীপ্ত।

প্রাকৃতিক প্রাচুর্য কম হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন রেডন মৌলটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডব্লিউ রামজে এবং এম ট্রাভার্স এটি ছাড়া অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলো আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন। রেডন আবিষ্কারের জন্য যথারীতি তেজস্ক্রিয়ামিতি পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয়েছিল। রেডন আবিষ্কার করতে গিয়ে যে প্রসর্গগুলো আবিষ্কৃত হয় সেগুলো ছিল প্রথম গ্যাসীয় তেজস্ক্রিয় পদার্থ। তাই এর মাধ্যমে তেজস্ক্রিয়তা গবেষণার ইতিহাসে নতুন দিগন্তের সূত্রপাত ঘটে। এর আবিষ্কারের ইতিহাসটি এরকম।

১৮৯৯ সালের শুরুর দিকে রসায়নবিদ আর্নেস্ট রাদারফোর্ড তার সহগবেষক আর ওয়েন্‌স-এর সাথে মিলে থোরিয়াম যৌগের তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে গবেষণা করছিলেন। একদিন ওয়েন্‌স গবেনাগারে প্রবেশের সময়ে দরজাটি বেশ জোরে খোলেন। দরজার কাছাকাছিই থোরিয়াম যৌগের বিক্রিয়া সংক্রান্ত গবেষণাটি চলছিল। গবেষকগণ লক্ষ্য করলেন, দরজা খোলার কারণে কক্ষে যে বাতাস প্রবেশ করেছে তার প্রভাবে থোরিয়াম প্রস্তুতকরণের সময়কার বিকিরণের তীব্রকা কমে গেছে। প্রথমে এই ঘটনাটিকে তারা খুব একটা গুরুত্ব দেননি। কিন্তু অচিরেই বুঝতে পারেন হালকা বাতাস প্রবাহিত হলেও থোরিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা অনেক কমে যায়। এ থেকে রাদারফোর্ড ও ওয়েন্‌স মন্ব্য করেন থোরিয়াম থেকে অবিরাম ধারায় তেজস্ক্রিয় গ্যাস নির্গত হয়। তারা একে থোরিয়ামের প্রসর্গ বলেন এবং নাম দেন থোরন। লাতিন ভাষায় থোরন শব্দের অর্থ প্রবাহিত হওয়া।

এরপর ধারণা করা হয়েছিল, অন্যান্য সব তেজস্ক্রিয় পদার্থই প্রসর্গ নির্গত করতে পারে। ১৯০০ সালে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ই ডর্নরেডিয়মের প্রসর্গটি আবিষ্কার করেন এবং এর নাম দেয়া হয় রেডন। এর তিন বছর পর দ্যবিয়েন অ্যাক্টিনিয়ামের প্রসর্গ আবিষ্কার করেন। এভাবে দুটি নতুন গ্যাসীয় তেজস্ক্রিয় পদার্থ তথা প্রসর্গ পাওয়া যায় যাদের নাম রেডন এবং অ্যাক্টিনন। থোরন, রেডন এবং অ্যাক্টিননের মধ্যে কেবলমাত্র অর্ধায়ুর পার্থক্য ছিল। তাদের অর্ধায়ু যথাক্রমে ৫১.৫ সেকেন্ড, ৩.৮ দিন এবং ৩.০২ সেকেন্ড। রেডনের অর্ধায়ু সবচেয়ে বেশী হওয়ায় পরবর্তীতে প্রসর্গ সংক্রান্ত গবেষণায় একে ব্যবহার করা হতো। অর্ধায়ু ছাড়া এদের ধর্মে অন্য কোন পার্থক্য ছিল না। এদের কেউই রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নিত না, অর্থাৎ এরা সবাই নিষ্ক্রিয় গ্যাস ছিল। পরে অবশ্য দেখা যায় এদের পারমানবিক ভর ভিন্ন ভিন্ন। রেডনকে ন হয় পর্যায় সারণীতে স্থান দেয়া গেল। কিন্তু অন্য দুটি গ্যাসীয় মৌলের জন্য জেননের পরে মাত্র একটি ঘর আলি ছিল। অবশেষে এবল রেডনই টিকে যায় এবং একে পর্যায় সারণীতে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়। অন্যতম কারণ একমাত্র এরই অর্ধায়ু যথেষ্ট ছিল।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]