গাঙচিল , মৌমাছি, কাঠঠোকরা, প্লাটিপাস, গরু, কচ্ছপ ,হামিং বার্ড

গাঙচিল

গাঙচিল (Seagull) আকৃতিতে মাঝারি থেকে বড় হয়ে থাকে। রঙ হয় ধূসর বা সাদা; মাঝে মাঝে মাথা ও পাখায় কালো ছোপ দেখা যায়। গাঙচিলের ডাক বেশ কর্কশ। এদের পাগুলো বেশ লম্বা হয়ে থাকে। ডানা লম্বা ও শক্তিশালী। হাঁসের মতো পায়ের পাতা জোড়া। এই কারণে জলে সহজেই সাঁতার কাটতে পারে। এরা অনায়াসে আকাশে দীর্ঘক্ষণ উড়তে পারে। হাওয়া থাকলে খুব কমই ডানা সঞ্চালন করে। দু' চারবার ডানা নেড়ে এরা স্বচ্ছন্দে আকাশে ঘুরে বেড়াতে পারে। মাছ এদের প্রধান খাদ্য। উপকূলের আবর্জনা ঘেঁটে ছোট ছোট পোকামাকড় খায়। এদের বহু প্রজাতি রয়েছে। তাদের অধিকাংশই পরিযায়ী পাখি। এরা বাসা বাঁধে পাথরের খাঁজে। শুকনো শেওলা দিয়ে বাসা তৈরি করে তাতে দুটি ও তিনটি ডিম পাড়ে। গাল পাখির ডিম খাদ্য হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই সমাদৃত। ইউরোপ ও আমেরিকায় হেরিং গাল, কালো মাথা গাল, কমন গাল সুপরিচিত। গ্রেট ব্ল্যাক হেডেড গাল হলো সবচেয়ে বড় আকারে সোনালি ঈগলের মতো। গৃহপালিত পায়রা থেকে গাল পাখি ছোট। আমাদের দেশে এদের দেখা খুবই কম মিলে। এদের প্রধান খাদ্য মাছ, পোকামাকড়, ডিম, বিভিন্ন লতা। এরা অঙ্গুরিঠুঁটো (Ring-billed Gull) নামেও পরিচিত।

মৌমাছি

মৌমাছি বা মধুমক্ষিকা বা মধুকর (Bee) বোলতা এবং পিঁপড়ার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত মধু সংগ্রহকারী পতঙ্গবিশেষ। মধু ও মোম উৎপাদন এবং ফুলের পরাগায়ণের জন্য প্রসিদ্ধ। পৃথিবীতে ৯টি স্বীকৃত গোত্রের অধীনে প্রায় বিশ হাজার মৌমাছি প্রজাতি আছে, যদিও এর বেশিরভাগেরই কোন বর্ণনা নেই এবং এর প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশী হতে পারে। এন্টার্কটিকা ব্যতীত পৃথিবীর সকল মহাদেশে যেখানেই পতঙ্গ-পরাগায়িত সপুষ্পক উদ্ভিদ আছে, সেখানেই মৌমাছি আছে। বাংলাদেশে সচরাচর যে মৌমাছি দেখা যায় তার বৈজ্ঞানিক নাম Apis cerana (এপিস সেরানা) এই অঞ্চলে আরো তিন প্রজাতির মৌমাছি দেখা যায় যথা এপিস মেলিফেরা, এপিস ডরসাটাএপিস ফ্লোরিয়া

কাঠঠোকরা

কাঠঠোকরা এবং এ জাতীয় অন্যসব পাখি; যেমন- কুটিকুড়ালি, ঘাড়ব্যথা ইত্যাদি একত্রে Picidae (পিসিডি) পরিবারের অন্তর্গত। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মাদাগাস্কার আর দুই মেরু ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলেই কাঠঠোকরা দেখা যায়। বেশিরভাগ কাঠঠোকরার প্রজাতি বন বা বৃক্ষপূর্ণ অঞ্চলে বসবাস করে। কয়েক প্রজাতির কাঠঠোকরার আবাস মরুভূমি ও পাথুরে অঞ্চলে।

পিসিডি গোত্রটি পিসিফর্মিস বর্গের অন্তর্গত আটটি টিকে থাকা গোত্রের একটি। পিসিফর্মিস বর্গের অন্যান্য গোত্রের (বসন্ত বৌরি, টুক্যান, হানিগাইড) সাথে কাঠঠোকরার গভীর সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হত। আধুনিক ডিএনএ পর্যাক্রমের মাধ্যমে এর সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

কাঠঠোকরা গোত্রে প্রায় ৩০ গণে ২০০ প্রজাতির স্থান সংকুলান হয়েছে। বেশিরভাগ প্রজাতি বন ধ্বংস বা আবাসসথল উজাড়ের ফলে আইইউসিএন প্রণীত বিপদগ্রস্ত তালিকাভুক্ত হয়েছে। শ্বেতচঞ্চু কাঠঠোকরা (Campephilus principalis) ও রাজকীয় কাঠঠোকরা (Campephilus imperialis) নামের দুটি প্রজাতিকে প্রায় ত্রিশ বছর যাবৎ বিলুপ্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

প্লাটিপাস

হংসচঞ্চু বা প্লাটিপাস (Platypus) মনোট্রিমাটা বর্গের অন্তর্ভূক্ত ছোট্ট স্তন্যপায়ী প্রাণী। তাসমানিয়া এবং দক্ষিণ ও পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় এরা বসবাস করে।

নদী ও নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো এদের আবাসস্থল হিসেবে বিবেচিত। দু'টি স্তন্যপায়ী প্রাণী গোত্রের (অন্যটি একিদনা) একটি হিসেবে প্লাটিপাস ডিম পাড়ে। উনবিংশ শতকে প্লাটিপাস সম্বন্ধে ইংল্যান্ডের জীববিজ্ঞানীরা সর্বপ্রথম বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেন।

প্লাটিপাস দেখতে বীভারের ন্যায় একই রকম। এর দেহের রঙ বাদামী প্রকৃতির, লোমশ দেহ এবং প্রশস্ত ও সমান্তরাল লেজ রয়েছে। পায়ের আঙ্গুলের মাঝখানে চামড়া থাকার ফলে এটি ভাল সাঁতার কাটতে পারে। নাক বেশ বড় এবং রবারের ন্যায়। এ ধরনের নাকের বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি হংসচঞ্চু নামে পরিচিত। হাঁসের চঞ্চু বা ঠোঁটের ন্যায় দেখতে। প্লাটিপাস বড় কিংবা ছোট উভয় ধরনের হতে পারে। বৃহৎ আকৃতির প্লাটিপাস তাসমানিয়া এবং ছোটটি কুইন্সল্যান্ডে দেখা যায়। প্রাপ্তবয়স্ক প্লাটিপাস ১ কেজি থেকে ৩ কেজি  ওজনের হতে পারে। এর দেহ ৩০ সেমি (১২ ইঞ্চি) থেকে ৪০ সেমি (১৬ ইঞ্চি) লম্বা হয়। লেজ ১০ সেমি (৪ ইঞ্চি) থেকে ১৫ সেমি (৬ ইঞ্চি) লম্বাটে আকৃতির হয়। পুরুষ প্লাটিপাসগুলো স্ত্রীজাতীয় প্লাটিপাসের তুলনায় গড়পড়তা এক-তৃতীয়াংশ বড় হয়। পুরুষ প্লাটিপাসের পায়ে ধারালো নখর রয়েছে যাতে বিষাক্ত পদার্থ বিদ্যমান। এ বিষে আক্রান্ত হয়ে মানুষ না মরলেও কুকুরের ন্যায় ছোট ছোট প্রাণীগুলো মৃত্যুবরণ করতে পারে। প্রায় চার মাসের মতো আক্রান্ত জায়গায় ব্যথা অনুভব হতে পারে। ক্ষতস্থানে রক্ত ঝরে পড়া অবস্থায় বিষের মাত্রা বাড়তে পারে।

গরু

গরু এক প্রকারের গৃহপালিত রোমন্থক পশু। এটি বোভিডি পরিবারের বোভিনি গোত্রের অন্তর্গত। মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, চামড়ার জন্য, এবং কৃষিকাজ ও গাড়ি টানার কাজে গরু ব্যবহৃত হয়। কোনো কোনো দেশ, যেমন ভারতে ধর্মীয় কারণে গরুকে গুরুত্ব ও মর্যাদা দেয়া হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে প্রায় ১৩০ কোটি গরু রয়েছে। অতি প্রাচীন কালে মানুষ যখন সভ্যতার ছোয়া পায়নি তখন গরু ছিল মানুষের অতি প্রয়োজনীয় প্রাণী। এ বিজ্ঞানের যুগে মানুষ এখন অনেক সভ্যতার মধ্যে বসবাস করছে, কিন্তু এখনো গরু মানুষের অপরিহার্য প্রাণী।

কচ্ছপ

কচ্ছপ একধরনের সরীসৃপ যারা পানি এবং ডাঙা দুই জায়গাতেই বাস করে। এদের শরীরের উপরিভাগ শক্ত খোলসে আবৃত থাকে যা তাদের শরীরকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রক্ষা করে। কচ্ছপ পৃথিবীতে এখনও বর্তমান এমন প্রাচীন প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে কচ্ছপের প্রায় ৩০০ প্রজাতি পৃথিবীতে রয়েছে, এদের মধ্যে কিছু প্রজাতি মারাত্মক ভাবে বিলুপ্তির পথে রয়েছে। কচ্ছপ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তার নিজের শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা পরিবর্তন করতে পারে, সাধারণত এ ধরনের প্রাণীদের ঠান্ডা-রক্তের প্রাণী বলে অভিহিত করা হয়। অন্যান্য প্রাণীর মত এরা নিশ্বাস গ্রহণ করে। কচ্ছপের অনেক প্রজাতি পানিতে বা পানির আশেপাশে বাস করলেও এরা ডাঙায় ডিম ছাড়ে।কচ্ছপ (Tortoise) Testudines বর্গের অন্তর্গত ডাঙ্গায় বসবাসকারী সরীসৃপ। এদের দেহ খোলসদ্বারা আবৃত থাকে। খোলসের উপরের অংশকে Carapace(ক্যারাপেস) এবং নিচের অংশকে Plastron(প্লাসট্রন )বলে।এরা কয়েক সে.মি. থেকে ২ মিটার পর্যন্ত বড় হতে পারে। এরা সাধারণত দিবাচর প্রাণি তবে তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে তারা গোধূলীতেও সক্রিয় হয়ে থাকে। তারা সাধারণত দলবদ্ধ প্রানি নয় এবং একাকি জীবন যাপন করে থাকে। যদিও “Tortoise” শব্দটি জীববিজ্ঞানীরা Testudinidae গোত্রের প্রানিদের বোঝাতে ব্যবহার করে থাকেন তবে সাধারনভাবে ডাঙ্গায় বসবাসকারী Testudines দের বোঝাতে শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

হামিং বার্ড

পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট পাখি হলো হামিং বার্ড। এই পাখি খুব শৌখিন। অতি উজ্জ্বল গায়ের রং। পালকের উজ্জ্বল রং ও বৈচিত্র্যের কারণে স্ত্রী পাখিদের তুলনায় পুরুষ হামিং বার্ড দেখতে বেশি সুন্দর। গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার উড়তে পারে এরা। ওড়ার সময় এদের ছোট্ট দুটি ডানা গড়ে প্রতি সেকেন্ডে ৮০ বার ওঠানামা করে। তখন এদের ডানার পালক পর্যন্ত দেখা যায় না। চোখে পড়ে শুধু আবছা এক রঙের ছটা। দ্রুত ডানা সঞ্চালনের আশ্চর্য এই ক্ষমতার জন্য হামিং বার্ড উড়ন্ত অবস্থায় শূন্যে এক জায়গায় স্থির হয়ে ভেসে থাকতে পারে। একটি হামিং বার্ডের সারা দিন যে ক্যালরি লাগে, তা একজন বয়স্ক মানুষের প্রয়োজনীয় ক্যালরির তুলনায় প্রায় ৪০ গুণ বেশি। এই পাখি দৈর্ঘ্যে হয় মাত্র ৫.৭ সেন্টিমিটার এবং ওজন হয় মাত্র ১.৬ গ্রাম। স্ত্রী হামিং বার্ড একবারে সাধারণত দুটি ডিম পাড়ে। সাদা রঙের এই ডিম আকারে যত ছোটই হোক তা স্ত্রী হামিং বার্ডের ওজনের ১৩ শতাংশ। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে সময় লাগে তিন সপ্তাহ। তারপর এক মাসের মধ্যেই বাচ্চা উড়তে শিখে যায়। হামিং বার্ড বেজায় সাহসী।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]