জোনাস এডওয়ার্ড সক একজন মার্কিন মেডিকেল গবেষক এবং ভাইরাসবিদ। তিনি প্রথম পোলিও প্রতিষেধক আবিষ্কার করেন।তিনি ১৯১৪ সালের ২৮ অক্টোবর নিউ ইয়র্ক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সিটি কলেজ অব নিউ ইয়র্ক থেকে ১৯৩৪ সালে ব্যাচেলর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
বংশগতির ধারক ডিএনএ রহস্য
বংশগতির ধারক ও বাহক ডিএনএ-এর গাঠনিক রহস্য উদ্ঘাটনকারী নোবেল বিজয়ী জেমস ওয়াটসন ও ফ্রান্সিস ক্রিকের মতে ডিএনএ দেখতে প্যাঁচানো সিঁড়ির মতো। ডিএনএ-এর গঠন দাঁড় করাতে ওয়াটসন ও ক্রিককে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়েছিল এবং সেটাই ছিল খুব স্বাভাবিক। স্বনামধন্য ব্যাপক অভিজ্ঞ বিজ্ঞানীদের তিনটি দল সে সময় ডিএনএ গঠনের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য কাজ করেন। ডিএনএ রহস্য নিয়ে লিখেছেন ওবায়দুল গনি চন্দন
১৯৫১ সালে, খুব স্বল্প জ্ঞান নিয়ে আর অনেকটা অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার মতোই ওয়াটসন ও ক্রিক ডিএনএ সম্পর্কে তাদের প্রথম মডেলটি উপস্থাপন করেন। সেই সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মরিস উইলকিন্স, রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনসহ লন্ডন কিংস কলেজের আরো দু’জন বিজ্ঞানী। ওয়াটসন ক্রিক শাখা-প্রশাখাসহ গাছের মতো অদ্ভুত এক মডেল উপস্থাপন করেন যার ভেতরের দিকে ছিল সুগার ফসফেট এবং তার সঙ্গে লাগানো বাইরের দিকে থাকা নাইট্রোজেন বেস। তাদের উপস্থাপিত এ মডেলটি নানা জনের নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। তাদের মধ্যে ফ্রাঙ্কলিন ছিলেন অন্যতম। তিনি ডিএনএ হেলিকাল ও ফসফেট গ্রুপের বাইরে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ভুলে ভরা এই মডেল উপস্থাপনের পর ওয়াটসন ও ক্রিকের সুপারভাইজর প্রফেসর ব্র্যাগ এতটাই হতাশ ও লজ্জিত হলেন যে তিনি তাদের ডিএনএ নিয়ে আর কাজ না করার অনুরোধ করেন। এতসব সমালোচনার মুখে থেমে যাওয়ার পাত্র তারা ছিলেন না। বরং আরো নতুন উদ্যম নিয়ে তারা কাজ করতে শুরু করলেন। তবে তাদের কাজের ধরনটা পাল্টে গেল, গোয়েন্দাদের মতো তারা এখানে-সেখানে ছুটে বেড়ালেন নতুন সূত্রের সন্ধানে, জোগাড় করতে শুরু করলেন সে সময়ের গণ্যমান্য বিজ্ঞানীদের ডিএনএ নিয়ে গবেষণার ডাটা। সে সময় রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন ছিলেন এক্সরের মাধ্যমে ডিএনএ নিয়ে গবেষণার পথিকৃত। ওয়াটসন তার কাছে গিয়েও হাজির হলেন, হেলিকাল থিওরির মাধ্যমে জোড় দাবি করলেন ডিএনএ অবশ্যই হেলিকাল। পূর্বের মতো ফ্রাঙ্কলিন আবারো ওয়াটসনের বিরোধিতা করলেন যে, ডিএনএ হেলিকাল হওয়ার পক্ষে কোনো পোক্ত প্রমাণ নেই। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে ফ্রাঙ্কলিন এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন যে, মার খাওয়ার ভয়ে ওয়াটসন সেখান থেকে সটকে পরেন। নিরাশ মনে ফ্রাঙ্কলিনের ল্যাব থেকে বের হয়ে আসার সময়, দেবদূতের মতো তার সামনে এসে হাজির হোন উইলকিন্স। ওয়াটসনের অনেক কাকুতি মিনতির পর, ফ্রাঙ্কলিনকে না জানিয়েই, উইলকিন্স ডিএনএ এক্সরে রিপোর্টটির এক ঝলক দেখতে দেন তাকে। ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার পথে সেই ডিএনএ এক্স-রে রিপোর্টের একটা স্কেচ তৈরি করে ফেলেন ওয়াটসন। আবার নতুন উদ্যমে কাজ করতে শুরু করলেন দু’জন। প্রায় বছরখানেক আগে তাদের সঙ্গে ক্যামব্র্রিজে এক খ্যাতনামা বায়োকেমিস্ট চারগফের দেখা হয়। ওয়াটসন ও ক্রিক চারগফের দেয়া তথ্যগুলোকে ডিএনএ গঠনের রহস্য উদ্ঘাটনের কাজে লাগানো শুরু করলেন। তাদের সেই স্মৃতি ও খুব একটা সুখকর ছিল না। ডিএনএতে নাইট্রোজেন বেস এডেনিনের সমান সংখ্যক থাইমিন বেস আর গুয়ানিনের সমান সংখ্যক সাইটোসিন বেস থাকে, চারগফের এই বিখ্যাত সূত্র ও তাদের জানা ছিল না। চারগফকে অবাক করে দিয়ে ক্রিক নিজেই স্বীকার করেন যে, ডিএনএ-এর চারটি নাইট্রোজেন বেসের গঠন ও তার কাছে সম্পূর্ণ অজানা। ‘BETTER LATE THAN NEVER’ দেরিতে হলেও চারগফের তথ্যগুলো ডিএনএ গঠনের রহস্যের কূল-কিনারা পেতে বেশ সাহায্যই করেছিল তাদের। ফ্রাঙ্কলিনের ডিএনএ এক্স-রে রিপোর্টটি থেকে তারা ধারণা পান যে, নাইট্রোজেন বেসগুলোকে সুগার ফসফেট কাঠামোর ২০ অ্যাংস্ট্রমের মাঝে স্থাপন করতে হবে। বড় আকারের পিউরিন নাইট্রোজেন বেস এডেনিন অথবা গুয়ানিনের সঙ্গে ছোট আকারের পাইরিমিডিন নাইট্রোজেন বেস থাইমিন অথবা সাইটোসিনকে হাইড্রোজেন বন্ধনী দিয়ে যুক্ত করে দিলে তা ২০ অ্যাংস্ট্রম জায়গার মাঝে খুব সুন্দরভাবে সেঁটে যায়। ডিএনএ এক্স-রে রিপোর্ট আর নানা হিসাব-নিকাশের মাধ্যমে তারা আরো জানতে পারেন যে, দুটি প্যাঁচের প্রতিটি ঘূর্ণনে বেসের সংখ্যা দশ। ট্রিপল হেলিক্স মডেলে তার সমন্বয় করা সম্ভব ছিল না। তাই ডিএনএ-এর ট্রিপল হেলিক্সের ধারণাও তারা দ্রুত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেন।
কার্ডবোর্ডের টুকরো নিয়ে অনেকটা বাচ্চাদের মতো খেলার ছলেই ডিএনএ-এর গঠন দাঁড় করে ফেলেন ওয়াটসন ও ক্রিক। ১৯৫৩ সালের ২৫ এপ্রিল জার্নালে প্রকাশিত হয় ৯০০ শব্দের একটি আর্টিকেল। আর তার লেখক ছিলেন অখ্যাত দু’জন ব্যক্তি জেমস ওয়াটসন ও ফ্রান্সিস ক্রিক। এর পরের গল্পটা আমাদের সবার জানা। দু’জন ছন্নছাড়া যুবকের জিরো থেকে রীতিমতো হিরো বনে যাওয়া। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৩ সালে নোবেল বিজয়ীদের খাতায় নাম লিখিয়ে বিজ্ঞানের ইতিহাসে আজো দুটি স্মরণীয় নাম, জেমস ওয়াটসন ও ফ্রান্সিস ক্রিক।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ