আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন (জানুয়ারি ১,১৯৩০ - নভেম্বর ৩০, ১৯৯৮) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞান লেখক, বিজ্ঞান কর্মী এবং একজন সরকারি কর্মকর্তা। তবে তিনি আবদুল্লাহ আল-মুতী নামেই সমধিক পরিচিত। বাংলাদেশের বিজ্ঞান লেখকদের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় যিনি ইউনেস্কো কলিঙ্গ পুরস্কার লাভ করেন।
রবার্ট কচ (১৮৪৩-১৯১০)
আজ থেকে ৪০-৫০ বছর আগেও যক্ষ্মাকে মরণব্যাধি বলে গণ্য করা হত। আজ যেমন এইডস রোগ নিয়ে বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক, অর্ধশতাব্দী কাল আগে যক্ষ্মা নিয়েও এমনি ছিল আতঙ্ক। একটি সাধারণ প্রবাদ ছিল- যার হয়েছে যক্ষ্মা তার নেই রক্ষা। কিন্তু সেই ঘাতকব্যাধি যক্ষ্মা আজ পোষ মেনেছে মানুষের হাতে। যক্ষ্মা কে আজকাল কেউ বড় রোগ বলে গণ্যই করে না। যার আবিষ্কারের ফলে এই মরণব্যাধি যক্ষ্মা আজ মানুষের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তিনিই হলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানী রবার্ট কচ। তিনিই প্রথম যক্ষ্মার জীবাণু (Mycobacterium Tuberculosis) শনাক্ত করেন এবং পরে তা ধ্বংস করার ওষুধ আবিষ্কৃত হয়। বিশ্বের মানুষ মুক্তি লাভ করে যক্ষ্মার হাত থেকে।
রবার্ট কচের পুরো নাম হল হেইনরিখ হারম্যান রবার্ট কচ (Heinrich Hermann Robert Koch)। তিনি ছিলেন জার্মানীর প্রখ্যাত চিকিৎসাবিজ্ঞানী এবং জীবাণুতত্ত্ব বিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনিই প্রথম যক্ষ্মার জীবাণু এবং কলেরার জীবাণু আবিষ্কার করেন। এই বিস্ময়কর আবিষ্কারের মাধ্যমে চিকিৎসা শাস্ত্রে অবদানের জন্য তাকে ১৯০৫ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। তার জন্ম হয়েছিল জার্মানীর ক্লাউস্থাল (Clausthal) নামক শহরে ১৮৪৩ সালের ১১ ডিসেম্বর। নিজ শহরে স্কুলের পড়া শেষ করে তিনি ১৮৬৬ সালে চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে পড়াশুনা করার জন্য ভর্তি হলেন গটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ে (University of Gottingen)।
পাস করার পর তিনি কয়েকটি মফস্বল শহরে ডাক্তারি করেন। তিনি ছিলেন শল্য চিকিৎসক। সার্জারিতে তার ছিল প্রচন্ড দক্ষতা। ১৮৭০-৭১ সালের ফ্রান্স-প্রুশিয়া যুদ্ধের সময় সামরিক হাসপাতালে সার্জারিতে তিনি দারুণ নাম করেন। ফলে প্রমোশন পেয়ে জার্মানীর ওলস্টেইন (Wollstein) জেলার ডিস্ট্রিক্ট সার্জন পদে মনোনীত হন।
এই সময়ে তিনি জেলা শহর হাসপাতালে নিজের চেষ্টায় একটি ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু এখানে আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। থাকার মধ্যে ছিল একটি মাইক্রোস্কোপ এবং মাইক্রোটোম নামে একটি যন্ত্র যা দিয়ে সুক্ষ্ণভাবে টিস্যু কাটা যায়। এছাড়া ছিল তার নিজের হাতে তৈরি করা একটি ইনকিউবেটর। এই ল্যাবরেটরিতেই তিনি Algae এবং রোগ জীবাণু নিয়ে গবেষণা করতেন।
তখনকার সময়ে Wollstein জেলার গবাদিপশুর খামার গুলোতে মাঝে মাঝে অ্যানথ্রাক্স এর আক্রমন দেখা যেত। কিন্তু কিসের দ্বারা গবাদি পশু এই রোগে আক্রান্ত হত সেটা সবার কাছে অজানা ছিল। রবার্ট কচ এর শিক্ষক এবং গটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীরতত্ত্ব বিদ্যার অধ্যাপক ফ্রেডরিখ গুস্তাভ জ্যাকব হেনলে (Friedrich Gustav Jacob Henle) ১৮৪০ সালে একটি বৈজ্ঞানিক সূত্র আবিষ্কার করেছিলেন- ছোঁয়াচে রোগ বিস্তার লাভ করে এক ধরনের জীবাণুর দ্বারা। এরপর ফ্রান্সের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরজীবীবিদ্যার অধ্যাপক ক্যাসিমির জোসেফ জ্যাভাইন (Casimir Joseph Davaine) ১৮৫০ সালে অ্যানথ্রাক্স এর সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষ ও গবাদি পশুর রক্তে একধরনের জীবাণুর সন্ধান পেলেন। কচ তখন এটা নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন। সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত একটি ভেড়ার রক্ত নিয়ে ইনজেকশন দিলেন একটি সুস্থ সবল ভেড়ার শরীরে। দেখা গেল কয়েকদিনের মধ্যে সেই সুস্থ ভেড়াটিও রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। রোগাক্রান্ত ভেড়াটির রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেল তার রক্তেও রডের (Rod) এর মত এক ধরনের অণুজীবী রয়েছে, যেগুলো সুস্থ অবস্থায় এর শরীরে ছিল না। তা হলে রক্তে এই অণুজীবীদের উপস্থিতির কারণেই ভেড়াটি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। সত্যি সত্যি ভেড়াটি দিন কয়েক রোগ ভোগ শেষে মারা গেল। অর্থাৎ তাহলে বোঝা গেল, কোনো প্রাণীর দেহে এই ধরনের অণুজীবীর অনুপ্রবেশ ঘটলেই সে রোগাক্রান্ত হয় এবং এর পরিণাম হয় মৃত্যু।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ