রেশম বমবিকস মোরি বর্গভুক্ত রেশমপোকার গুটি থেকে তৈরি সুতা দিয়ে বোনা একপ্রকার সূক্ষ্ম ও কোমল তন্তু। বাংলায় দীর্ঘদিন থেকে চার ধরনের রেশম তৈরি হয়ে আসছে: মালবেরি, এন্ডি, মুগা এবং তসর। প্রথমটি তৈরি হয় বমবিকস বর্গের রেশমপোকার গুটি থেকে, যে পোকা মালবেরি বা তুঁত গাছের পাতা খায়; দ্বিতীয়টি তৈরি হয় ফিলোসেমিয়া বর্গের রেশমগুটি থেকে যারা ক্যাস্টর গাছের পাতা খায়; তৃতীয়টি অ্যান্থেরিয়া আসমেনসিন বর্গের রেশমগুটি থেকে, যারা কুল, তেজপাতা ও কর্পুরের পাতা খায় এবং চতুর্থটি অ্যানথেরি বর্গভুক্ত রেশমগুটি থেকে যারা ওক গাছের পাতা খায়। সচরাচর মালবেরি রেশম সবচেয়ে মূল্যবান হিসেবে বিবেচিত।
রেশমগুটি বা কোকুন দেখতে অনেকটা কবুতরের ডিমের ন্যায়। কোকুনের সুতা অবিন্যস্ত, কিন্তু ভেতরে ৫০০ মিটারেরও বেশি লমতা একটি মাত্র সুতা সমকেন্দ্রীয়ভাবে বিন্যস্ত থাকে। কোকুন তৈরি হতে তিনদিন সময় লাগে। কোকুনের আকৃতি ও রঙে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। ৮ দিনের মধ্যে গুটির ভেতর শুককীট পিউপায় পরিণত হয়। পিউপায় পরিণত হওয়ার পূর্বেই কোকুন গরম পানিতে সিদ্ধ করে ভেতরের পোকাটি মেরে ফেলতে হয়। এই কোকুন থেকেই রেশম সুতা সংগ্রহ করা হয়। পূর্ণাঙ্গ পিউপা মথে পরিণত হয়ে গুটির প্রান্ত ফুটা করে যদি বের হয়ে আসে তবে সুতার ধারাবাহিকতা ছিন্ন হয় এবং রেশম সুতার গুণগত মান হ্রাস পায়। ২ থেকে ৬টি গুটির ভেতরের সুতা একত্রিত করে একটি রিল তৈরি করা হয়। বাইরের পরিত্যক্ত সুতোগুলি পাকিয়ে স্প্যান সিল্ক প্রস্তুত করা হয় যার দ্বারা তৈরি হয় মটকা জাতীয় সিল্ক।
রেশম সুতা উৎপাদনের লক্ষ্যে রেশমপোকা প্রতিপালনকে রেশম চাষ বলে। রেশম চাষের তিনটি পর্যায় রয়েছে: তুঁত গাছ চাষ, রেশমপোকা পালন এবং কাপড় তৈরির জন্য রেশমগুটির সুতা পৃথক করা। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে পুরোপুরি কৃষিভিত্তিক, তৃতীয় পর্যায় মূলত শিল্পগত ব্যাপার, যা নিষ্পন্ন হয় কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠানে যা ফিলাচার নামে পরিচিত। রেশম উৎপাদন একটি জটিল প্রক্রিয়া। রেশমগুটি আসলে রেশম মথের শুঁয়াপোকা, এদের একমাত্র খাদ্য তুঁত পাতা। রেশমগুটি ডিম থেকে জন্মায় এবং গুটিতে রূপান্তরিত হওয়ার পর্যায় শেষ করে রেশম মথ হিসেবে আবির্ভূত হয়। স্ত্রী মথ তখন কালচক্র পুনরায় শুরু করার জন্য ডিম পাড়ে। গুটিবদ্ধ অবস্থায় রেশম পিউপা বা কীটগুলিকে মেরে ফেলে সেগুলিকে গরম পানিতে সেদ্ধ করে সুতা ছাড়ানো হয় এবং পরে তা গোটানো হয়। এই সুতা বিভিন্ন ধরনের বস্ত্র তৈরির জন্য প্রস্তুত করা হয়। বাংলাদেশে বছরে চার থেকে পাঁচটি রেশম মৌসুম থাকে। আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে একটি রেশম মৌসুম ৩০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। প্রধান প্রধান মৌসুমগুলি হচ্ছে চৈত্র, জ্যৈষ্ঠ এবং অগ্রহায়ণ।
রেশম থেকে প্রথমে হ্যান্ডলুম কিংবা পাওয়ার লুমে থান কাপড় প্রস্তুত করা হয়। রেশম থেকে প্রস্তুত পোশাকের মধ্যে শাড়ি, কামিজ, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, ওড়না, সার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, স্কার্ফ, রুমাল, টাই, বেবি ওয়্যার ইত্যাদি অন্যতম। শাড়ি এবং অন্যান্য তৈরি পোশাকে বৈচিত্র্য আনার জন্য বিভিন্ন ধরনের নকশা করা হয়। এসকল নকশায় রং, রঙিন সুতা, জরি, পুতি, কাঁচ, পাস্টিক নানাবিধ উপকরণ ব্যবহূত হয়ে থাকে।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ