সংক্রামক রোগ , পানি বাহিত রোগ

সংক্রামক রোগ

কিছু রোগ আসে যা একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায়।এ সকল রোগের জীবাণু রোগীর কফ,থুতু,হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। সর্দিজ্বর বা ইনফ্লুয়েঞ্জা সহ সোয়াইন ফ্লু, জন্ডিস,বসন্ত,হাম,পাঁচড়া(এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ।),চুলকানি ইত্যাদি সংক্রামক রোগ। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এবং খাদ্য,পানি ও বায়ুর মাধ্যমে ছড়ায়। এছাড়া এনোফিলিস জাতীয় স্ত্রী মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া রোগ হয়। কিউলেক্স মশার কামড়ে গোদ রোগ হয়।

 

সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পেতে হলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। এজন্য আমাদের নিয়মিত দাঁত মাজা,নখ কাটা,হাত ধোয়া, গোসল করা উচিত। এছাড়া জামা-কাপড়,বালিশ,বিছানা, চাদর ইত্যাদি ও পরিষ্কার রাখতে হবে।

সংক্রামক রোগ হলে যেখানে সেখানে কফ, থুতু ইত্যাদি ফেলবে না। হাঁচি, কাশি হলে মুখে হাত বা রুমাল দিয়ে ঢাকতে হবে। 

কেঊ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে তার শরীরে জ্বর থাকবে, মাথা-ব্যথা করবে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলে উঠবে,বমি হবে। ডেঙ্গু জ্বরে কেউ আক্রান্ত হলে ঠিকমত খাবার খেতে হবে, পানি পান করতে হবে। প্রয়োজনে স্যালাইন দিতে হবে। জরুরিভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রতিরোধঃ 

যেহেতু ডেঙ্গুর কোন প্রতিষেধক বের হয়নি তাই সবাইকে  সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু  প্রতিরোধ করতে হলে এডিস মশার আবাসস্থল যেমন- কোন ভাঙ্গা দ্রব্যাদি,ফুলের টব, টায়ার ইত্যাদি তে পানি জমতে দেয়া যাবে না। কারণ এসব পানিতে এডিস মশা বংশবৃদ্ধি করে। এডিস মশা সাধারণত সকাল ও সন্ধ্যার পূর্বে কামড়ায়। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।এছাড়া কিছু জ্বর আছে যা সহজেই সংক্রমিত হতে পারে।পূর্বে এ ধরণের জ্বরে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হল।কিন্তু, নিকলাই কর্তৃক এর টিকা আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে এই অনেক প্রকোপ হ্রাস পেয়েছে। 

এইচ ওয়ান এন ওয়ান নামক এক ধরণের ভাইরাসের কারণে সোয়াইন ফ্লু হয়। আক্রান্ত পশু-পাখির সংস্পর্শে এলে বা অল্প সিদ্ধ মাংস খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে মানুষ আক্রান্ত হয়।

 

লক্ষণঃ

যদি কার জ্বর ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপর হয় এবং নিচের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তবে বুঝতে হবে সোয়াইন ফ্লু তে আক্রান্ত হয়েছেঃ

১. অস্বাভাবিক অবসাদগ্রস্ততা

২. মাথাব্যথা

৩.নাক দিয়ে পানি পড়া

৪. গলা খুশখুশ করা

৫.ঘনঘন শ্বাস প্রশ্বাস বা কাশি থাকা

৬.ক্ষুধা কম হওয়া

৭. মাংসপেশি বা গিঁটে ব্যথা হওয়া

৮. ডায়রিয়া বা বমি হওয়া

 

আক্রান্ত হলে করণীয়ঃ

সোয়াইন ফ্লুর লক্ষণ দেখা দেয়ার সাথে সাথে রোগীকে সম্পূর্ন বিশ্রাম নিতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ মত ওষুধ খেতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা কোনো কিছু যেমন কম্পিউটার, টেলিফোন, টেবিল ইত্যাদি স্পর্শ করা যাবে না। বারে বারে হাত ভাল করে ধুতে হবে।

পানি বাহিত রোগ

আমাদের জীবনে পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুকুর, জলাশয়, নদী,খাল,বিল,হ্রদ, ভূ-গর্ভের গভীর ও অগভীর পানির স্তর থেকে আমরা পানি পেয়ে থাকি। যা আমরা পান করি ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করি। পানি যদি নিরাপদ না হয় তবে এর মাধ্যমে কিছু রোগ ছড়ায়। যেমন- ডায়রিয়া, আমাশয়, কলেরা ইত্যাদি।এ রোগে আক্রান্ত হলে  মুহূর্মহু প্রচুর জলের মত পাতলা পায়খানা, সঙ্গে পেটব্যথা, জলাভাবে শারীরিক দৌর্বল্য এবং চিকিৎসা না হলে শেষপর্যন্ত দেহে জলাভাবের ফলে মৃত্যু হয়। তাই পানিশূণ্যতা পূরণে কলেরা আক্রান্ত রোগীদের খাবার সেলাইন দেয়া হয়।উল্লেখ্য,খাবার স্যালাইন বানানোর পর ১২ ঘন্টা  পর্যন্ত খাওয়ানো যায়।এর পর এর কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। পানিবাহিত রোগ ছাড়াও কিছু রোগ আছে যেগুলো বায়ুর মাধ্যমে ছড়ায়।

যে সকল রোগের জীবাণু বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় সেগুলো বায়ুবাহিত রোগ নামে পরিচিত।

যেমন- সর্দিজ্বর ইনফ্লুয়েঞ্জা, বসন্ত,হাম ইত্যাদি।

সর্দিজ্বর হলে রোগীর কফ-থুতু মুখবন্ধ কৌতায় ফেলে মাটি চাপা দিতে হবে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। রোগীর কফ, থুতু,হাঁচি,কাশি ইত্যাদির মাধ্যমে এসব রোগের জীবানু ছড়ায়। সুস্থ মানুষের শ্বাস নেওয়ার সময় বাতাসের সঙ্গে ঐ রোগের জীবাণু অন্যদের শরীরে প্রবেশ করে।

তোমরা বসন্ত রোগের নাম শুনেছ। বসন্ত রোগের জীবাণুও বায়ুর মাধ্যমে ছড়ায়। বিশেষ করে বসন্ত রোগের গুটি শুকিয়ে যাওয়ার সময়। সুতরাং এসময় রোগীর কাছের মানুষদের সতর্ক থাকতে হবে।

যক্ষ্মা প্রতিরোধের  জন্য শিশুকে বিসিজি টীকা দিতে হবে। রোগীর বিছানা,থালা-বাসন ইত্যাদি আলাদা রাখতে হবে। যক্ষ্মা রোগীর কফ, থুতু,হাঁচি,কাশির মাধ্যমে এর জীবাণু বাতাসে ছড়ায়। কাজেয় কফ,থুতু যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না। হাঁচি,কাশির সময় মাস্ক দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে। প্রয়োজনে রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।কারণ সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যক্ষ্মা রোগের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বায়ুর ব্যবহার

বায়ুপ্রবাহকে ব্যবহার করে বড় চরকা বা টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এ ছাড়া বায়ুপ্রবাহকে কাজে লাগিয়ে ফসল ঝেড়ে ময়লা দূর করা হয়, পালতোলা নৌকা চালানো হয়।

ভেজা কাপড় রোদে ও খোলা জায়গায় কেন শুকাতে দিই? খোলা জায়গায় তাপের কারণে কাপড় থেকে পানি বাষ্পাকারে বায়ুতে মিশে যায়। আজকাল ভেজা চুল শুকাতে অনেকেই চুল শুকানোর যন্ত্র ব্যবহার করেন। এ যন্ত্র চালালে গরম বায়ু প্রবাহিত হয়, যার ফলে তাড়াতড়ি চুলের পানি বাষ্পাকারে বায়ুতে মিশে যায় এবং দ্রুত চুল শুকিয়ে যায়।

প্রবাহিত বায়ু তাপকে শোষণ করে। তাই আমাদের গায়ে বায়ুপ্রবাহ এসে লাগলে আমাদের ঠান্ডা লাগে। আমরা অমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে তাই হাতপাখা ও বৈদ্যুতিক পাখা থেকে বায়ুপ্রবাহকে ব্যবহার করি।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]