একটি মেয়ে সাইকেল চালাচ্ছে। আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। একটি মেয়ে হারমোনিয়াম বাজাচ্ছে। তাপ পেয়ে পানি গরম হচ্ছে এবং এক সময় বাষ্পে রূপান্তরিত হচ্ছে। সাইকেলটি গতি লাভ করেছে মেয়েটির পেশি শক্তির প্রয়োগে।
বিদ্যুৎ চমকানোর পেছনে তড়িৎ শক্তি কাজ করছে। হারমোনিয়াম থেকে শক্তি শব্দরূপে ভেসে আসছে।
নানা রকম ঘটনা বা পরিবর্তনের আড়ালে যা দায়ী, তা হলো শক্তি। আমরা বলতে পারি, শক্তি হচ্ছে পরিবর্তনের সংঘটক বা এজেন্ট।
প্রকৃতির নানা ঘটনার বর্ণনায় দুটি ধারণা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো পদার্থ অন্যটি হলো শক্তি। তোমরা জান, পদার্থের ওজন আছে এবং পদার্থ জায়গা দখল করে। কিন্তু শক্তির কি ওজন আছে? শক্তি কি জায়গা দখল করে? খেয়াল কর তাপ, আলো, শব্দ, বিদ্যুৎ এগুলোর কোনো ওজন, আকার ও আয়তন নেই। কিন্তু এগুলো পদার্থের উপরে ক্রিয়া করে এবং পরিবর্তন সাধন করে। তাপ না দিলে পানি ফুটত না। শক্তি প্রযোগ না করলে সাইকেল গতি লাভ করত না। আলো না পেলে ফসলের বৃদ্ধি ঘটত না। শব্দ শক্তির জন্যই নীরব হারমোনিয়াম সরব হয়ে উঠছে।
পদার্থ যেমন নানা রকম হতে পারে এবং নানা দশায় থাকতে পারে, তেমনি শক্তিরও নানা রূপ আছে। পদার্থকে আমরা চিনতে পারি এর মূল বৈশিষ্ট্য থেকে। এর ওজন ও স্থান দখল করা থেকে। শক্তিকেও আমরা শনাক্ত করতে পারি বস্তুর উপরের ক্রিয়া থেকে।
আমাদের সমস্ত কাজকর্ম, পরিবর্তন ও উন্নয়ন প্রচেষ্টায় শক্তি প্রয়োজন। শক্তির যথাযথ প্রয়োগ না হলে শক্তির অপচয় ঘটে। শক্তি সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না। শক্তি শুধু রূপান্তরিত হয় এক দশা থেকে অন্য দশায়। এই রূপান্তরের ভিতর দিয়ে শক্তির অবনতি ঘটতে পারে। ফলে শক্তি ধ্বংস না হলেও ব্যবহারের যোগ্যতা হারায়।
তুমি কি প্রতিরাত্রে আকাশের চাঁদ দেখ? চাঁদ কি সবসময় একরকম দেখায়? খেয়াল কর কখনো চাঁদকে বড় দেখায় পূর্ণাঙ্গ উজ্জ্বল থালার মত। কখনো অর্ধেক থালার মত বা কখন বা বাল্বের মত। চাঁদের আকার এরকম বদলায় কেন?
সূর্যের আলো একসঙ্গে চাঁদের অর্ধেকটা আলোকিত করে, বাকি অর্ধেকটা অন্ধকারে থাকে।
চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার সময় কখনো কখনো আমরা চাঁদের আলোকিত অংশের পুরোটাই দেখতে পাই। কখনো আলোকিত অর্ধেক গোলকের অংশবিশেষ দেখতে পাই। সেই সঙ্গে অন্ধকারে থাকা অর্ধাংশের অংশবিশেষ দেখতে পাই। এর ফলে চাঁদের অন্ধকার অংশ কখনো পৃথিবীর দিকে থাকে। চাঁদ পৃথিবীর চার দিকে ঘুরে। ঘুরতে ঘুরতে এক সময় চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে। এতে আমরা অমাবস্যা দেখতে পাই। কিন্তু চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার পরবর্তী এর আলোকিত পর্যায়ে এর আলোকিত অংশের অংশবিশেষ পৃথিবীর দিকে চলে আসে। আমারা তখন ফালি চাঁদ দেখতে পাই। এই পরিবর্তনটি পর্যায়ক্রমে ঘটে বলে সাড়ে ২৯ দিন পর চাঁদ যখন এর পরিক্রমা শেষ করে তখন চন্দ্রমাস পূর্ণ হয়।
পৃথিবীর নানা গতি
প্রাচীনকালে মনে করা হত পৃথিবী স্থির। পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আকাশের অন্য জ্যোতিষ্কগুলো ঘুরছে। আমরা এখন জানি পৃথিবী মোটেও স্থির নয়। পৃথিবীর অনেকগুলো গতি আছে। এর গতি বেশ জটিল । আমরা এখন দুটো গতি নিয়ে আলোচনা করব। একটি হল আহ্নিক গতি অন্যটি হল বার্ষিক গতি।
পৃথিবীর আহ্নিক গতি
পৃথিবী আপন অক্ষের উপর দিনে একবার পাক খায়। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় দিন ও রাত্রি হয় এই আহ্নিক গতির ফলে।
পৃথিবীর যে দিকটা সূর্যের দিকে মুখ করা সেই দিকে দিন হয়, যে দিকটা উল্টোদিকে থাকে অর্থাৎ ছায়ায় পড়ে সেই দিকটায় রাত হয়। অন্ধকার ঘরে একটি বাতি জ্বালাও, একটি ভূগোলককে কিছুটা দূরে হাত দিয়ে ঘুরাও। ভূগোলকের যে পাশে আলো পড়ছে সেখানে দিন হচ্ছে এবং যে অংশে আলো পড়ছে না সেখানে রাত্রি হচ্ছে।
পৃথিবীর বার্ষিক গতি
পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ৩৬৫ দিন ৬ ঘন্টায় একবার চক্রাকারে ঘুরে আসে। আকাশে নক্ষত্রদের গড় অবস্থান দেখে এই হিসাবটি করা হয়। যে পথে পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে তা বৃত্তাকার নয়, উপবৃত্তাকার। এর ফলে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব কখনো একটু বাড়ে, কখনো একটু কমে। পৃথিবীতে যে ঋতু পরিবর্তন ঘটে তা অবশ্য এই পার্থ্যকের জন্য নয়। পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরছে এক পাশে একটু হেলে। ফলে পৃথিবীর মেরুরেখাটি কক্ষের সঙ্গে ৬৬ ডিগ্রি কোণ করে আছে।
সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় পৃথিবীর অক্ষের হেলানো অবস্থা ঋতু পরিবর্তনের জন্য দায়ী। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ যখন সুর্যের দিকে ঝুকে থাকে তখন সূর্যরশ্মি অপেক্ষাকৃত খাড়াভাবে পড়ে এই গোলার্ধে। সূর্য থেকে বেশি পরিমাণ বিকিরিত রশ্মি এই গোলার্ধে পড়ে প্রতি একক এলাকায়। এছাড়া পৃথিবী যখন একক অক্ষের দিকে মুখ করে থাকে তখন এই গোলার্ধের এলাকা বেশীক্ষণ হরে সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। অর্থাৎ সে সময়টায় দিন হয় বড়, রাত্রি হয় ছোট। এই সময়টা হচ্ছে উত্তর গোলার্ধের জন্য গ্রীষ্মকাল। বেশিক্ষণ ধরে সূর্য রশ্মি পায় বলে এই গ্রহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই সময় দক্ষিণ গলার্ধে উল্টো ব্যাপারটি ঘটে বলে দক্ষিণ গোলার্ধে হয় শীতকাল। এটা লক্ষণীয় যে উত্তর গোলার্ধে যখন শীত এবং দক্ষিণ গোলার্ধে যখন গরম,তখন পৃথিবী সূর্যের নিকটতম থাকে। অর্থাৎ বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে আমরা সূর্যের নিকটতম থাকি।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ