ভূপৃষ্টের চারপাশে বায়ুর যে আবরণ তাকে বায়ুমন্ডল বলা হয়।এটি মধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে ভূপৃষ্ঠের সাথে লেপ্টে থাকে।ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমন্ডলের গভীরতা প্রায় ১০০০০ কি.মি.।বিজ্ঞানীদের হিসাবমতে, এর বয়স প্রায় ৩৫ কোটি বছর।বায়ু একটি মিশ্র পদার্থ,যা নিম্নলিখিত উপাদান নিয়ে গঠিত।
উপাদান শতকরা পরিমাণ
নাইট্রোজেন ৭৮.০১%
অক্সিজেন ২০.৭১%
কার্বন ডাই অক্সাইড ০.০৩%
ওজোন ০.০০০১%
আরগন ০.৮০%
নিয়ন ০.০০১৮%
হিলিয়াম ০.০০০৫%
ক্রিপ্টন ০.০০০১২%
জেনন ০.০০০০৯%
হাইড্রোজেন ০.০০০০৫%
নাইট্রাস অক্সাইড ০.০০০০৫%
মিথেন ০.০০০০২%
খ। জলীয় বাষ্প ০.৪১%
গ। ধুলিকনা ও অন্নান্য ০.৪৩৯৯%
সুতরাং বায়ুমন্ডলে নাইট্রোজেনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
জলীয় বাষ্পঃ
বায়ু সূর্যের তাপে বাষ্পীভূত হয়ে জলীয়বাষ্পে রূপ নেয়। বায়ুর শতকরা ০.০০৩ ভাগ জলীয়বাষ্প থাকে।জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়েই মেঘ,বৃষ্টি ও কুয়াশার সৃষ্টি হয়।
বায়ুর প্রবাহ
বায়ু প্রবাহ তাপমাত্রা ও চাপের উপর নির্ভর করে।বায়ুমণ্ডলে চাপের সমতা রক্ষার জন্য এটি উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্ন চাপে অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে বায়ুর চাপ বাড়ে এবং জলীয়বাষ্পের পরিমাণ হ্রাস পেলে বায়ুর চাপ কমে।উচ্চতা বাড়লে বায়ুর চাপ বৃদ্ধি পায় ও উচ্চতা কমলে বায়ুর চাপ হ্রাস পায়।বাতাসের উষ্ণতা বাড়লে বায়ুর চাপ হ্রাস পায়।ফলে বায়ু প্রবাহের হ্রাস বৃদ্ধি ঘটে।
আবার তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে যায় এবং এতে করে যে শূণ্যতার সৃষ্টি হয় তা পূরণে নিম্ন তাপমাত্রা অঞ্চল থেকে উচ্চ তাপমাত্রা অঞ্চলের দিকে বায়ু প্রবাহিত হয়।
প্রবাহের দিক দিয়ে বায়ুকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়।যেমন-
সমুদ্র বায়ুঃসমুদ্র বায়ু সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়।সূর্য কিরণে দিনের বেলা স্থলভাগ সমুদ্রের পানি অপেক্ষা শীঘ্র ও অধিক উত্তপ্ত হয় এবং সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।এই সময় বায়ুর চাপের সমতা রক্ষার জন্য সমুদ্র থেকে শীতল ও উচ্চচাপ বিশিষ্ট বায়ু স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়।যাকে সমুদ্র বায়ু বলা হয়ে থাকে। অপরাহ্নে সমুদ্র বায়ু প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়।
স্থলবায়ুঃস্থলবায়ু স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়।
মৌসুমী বায়ুঃমৌসুমী শব্দটি আরবি মৌসুম থেকে এসেছে। যার অর্থ ঋতু।ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে এ বায়ুর দিক পরিবর্তন হয় বলে একে মৌসুমী বায়ু বলা হয়।উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ পশ্চিমে এবং শীতকালে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়।
নিয়ত বায়ুঃপৃথিবীর চাপ বলয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে উচ্চচাপ বলয় থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলে প্রবাহিত হওয়ার সময় উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যায়।এভাবে উচ্চচাপ বলয় থেকে নিম্নচাপ বলয়ের দিকে নিয়মিতভাবে যে বায়ু সারা বছর প্রবাহিত হয় তাকে নিয়ত বায়ু বলা হয়।
ফেরেলের সূত্রঃ
পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তনের ফলে বায়ু সোজাসোজি নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে অথবা মেরু থেকে নিরক্ষরেখার দিকে প্রবাহিত হতে পারে না।এজন্য বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেকে যায়।আর এটিই ফেরেলের সূত্র নামে পরিচিত।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল চারটি প্রধান স্তরে (একে বায়ুমণ্ডলীয় স্তরবিন্যাস বলা হয়) ভাগ করা যায়।সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন পর্যন্ত এই স্তরগুলো হচ্ছেঃ
থার্মোস্ফিয়ারঃএটি ৪র্থ স্তর,যা ৯০ কি.মি. থেকে ৫০০ ও ১০০০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত।আবহাওয়া ও জলবায়ুজনিত যাবতীয় প্রক্রিয়ার বেশিরভাগ তাপমন্ডলে ঘটে থাকে।এ স্তর আয়নোস্ফিয়ার,এক্সোস্ফিয়ার ও ম্যাগনিটোস্ফিয়ার এই তিন ভাগে বিভক্ত। তাপমন্ডলের আয়নোস্ফিয়ারে বেতার তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়।আয়্নমন্ডলের ঊর্ধ্বস্তরে উল্কা ও কসমিক কণার সন্ধান পাওয়া যায়।
মেসোস্ফিয়ারঃএটি বায়ুমন্ডলের ৩য় স্তর।এর গড় গভীরতা ৫০ থেকে ৮৫ কিলোমিটার।এটি ৩টি স্তরে বিভক্ত।এগুলো হল-আয়নোস্ফিয়ার,এক্সোস্ফিয়ার ও ম্যাগনেটোস্ফিয়ার।এর শেষ অংশ মেসোবিরতি নামে পরিচিত।
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারঃবায়ুমন্ডলের ২য় স্তর।এর গড় গভীরতা ১১ থেকে ৫০ কিলোমিটার।এর শেষ অংশ স্ট্রাটোবিরতি নামে পরিচিত।স্ট্রাটোমন্ডলে ওজন স্তর অবস্থিত।
ট্রপোস্ফিয়ারঃএটি বায়ুমন্ডলের প্রথম স্তর।এর গড় গভীরতা প্রায় ১৭ কি.মি বা ১১ মাইল।এর শেষ অংশ ট্রপোবিরতি নামে পরিচিত।আর্দ্রতা,কুয়াসা,মেঘ,বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি এই স্তরে অবস্থিত।এটি মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় স্তর।
বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলো একের পর এক সজ্জিত অবস্থায় আছে। পৃথিবীর বায়বীয় এই আবরণ প্রধানত ৪ স্তরের।উপরের স্তরগুলো নিচের স্তরগুলোকে চাপ দিচ্ছে বলে নিচের স্তরগুলো উপরের স্তরের তুলনায় ঘন।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ