সৃষ্টির প্রথম অবস্থায় পৃথিবী ছিল এক উত্তপ্ত জ্বলন্ত মন্ডল । ধীরে ধীরে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে তরল অবস্থায় আসে এবং অবিরাম তাপ বিকিরণ করে পৃথিবী ক্রমশ শীতল ও সংকুচিত হয় । আর সংকোচনের ফলে ভূপৃষ্ঠের গায়ে উঁচুনীচু আবরণের সৃষ্টি হয় । এই সময় পৃথিবীতে গ্যাস ও বাষ্প শীতল হয়ে অঝোরে বৃষ্টি শুরু হয় । সেই বৃষ্টির জল ভূপৃষ্ঠের নীচু অংশে জমে সাগর, মহাসাগর প্রভৃতির সৃষ্টি হয়েছে । নদ-নদী, হ্রদ, সাগর, মহাসাগর প্রভৃতি নিয়ে এই যে বিশাল জলভাগ তার নাম বারিমন্ডল [Hydrosphere] । ভু-পৃষ্ঠের সমগ্র আয়তনের শতকরা 70 ভাগ জল ও মাত্র ৩০ ভাগ স্থালভাগ।বেশিরভাগ পানি সমুদ্রে অবস্থিত হলেও প্রকৃতিতে বৃষ্টির পানি থেকে সবচেয়ে বেশি মৃদু পানি পাওয়া যায়। অঞ্চল ভিত্তিতে পানির প্রকৃতির পার্থক্য লক্ষ করা যায়।যেমন- নিরক্ষীয় অঞ্চলের পানি উষ্ণ ও হালকা।আবার মেরু অঞ্চলের পানি শীতল ও ভারী।
পানির একক আয়তনের ভরকে তার উপাদানের ঘনত্ব বলা হয়।ঘন পানিতে সাতার কাটা হালকা পানির চেয়ে অধিকতর সহজ। যে পানির ঘনত্ব বেশি সেখানে সাঁতার কাটা সহজ।যেহেতু, সমুদ্রের পানিতে ২.৫% থেকে ৩.৫% লবণ দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে যার ফলে পুকুর,লেক বা নদীর চেয়ে সাগরে সাঁতার কাটা অধিকতর সহজ।
ভু-পৃষ্ঠে প্রধান পাঁচটি জলভাগ আছে । এগুলি মহাসাগর নামে পরিচিত । (i) প্রশান্ত মহাসাগর, (ii) আটলান্টিক মহাসাগর, (iii) ভারত মহাসাগর, (iv) সুমেরু বা উত্তর মহাসাগর এবং (v) কুমেরু বা দক্ষিণ মহাসাগর।
সমুদ্রস্রো্ত- পৃথিবীর আবর্তন, নিয়ত বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্র জলের লবণত্ব, ঘনত্ব ও উষ্ণতার পার্থক্যের জন্য সমুদ্রের জল এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়মিতভাবে সারাবছর নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত হয় । সমুদ্র জলের এই গতির নাম সমুদ্রস্রোত।যদিও বায়ু প্রবাহ,উষ্ণতার তারতম্য,লবণাক্ততার তারতম্য,গভীরতার তারতম্য,পৃথিবীর আবর্তন,বাষ্পীভবনের তারতম্য ও স্থলভাগের অবস্থানের কারণে সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি হয়।এদের মধ্যে বায়ু প্রবাহ হল সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণ।সমুদ্রস্রোতগুলোকে মহাসাগরীয় অবস্থান অনুসারে আটলান্টিক মহাসাগরীয় স্রোত, প্রশান্ত মহাসাগরীয় স্রোত, ভারত মহাসাগরীয় স্রোত এই তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
সমুদ্রস্রোতের প্রভাব [Impact of Ocean Current]- ভৌগলিক পরিবেশ ও মানুষের কাজকর্মের ওপর সমুদ্রস্রোতের নানা রকম প্রভাব দেখা যায়-
(১) শীতল স্রোত উপকূলের জলবায়ুকে অপেক্ষাকৃত শীতল রাখে । উষ্ণ স্রোত উপকূলের জলবায়ুকে অপেক্ষাকৃত উষ্ণ রাখে। যেমন-শীতল স্রোতের প্রভাবে নিউইয়র্কের জলবায়ু অপেক্ষাকৃত শীতল হয় । আর উষ্ণ উত্তর আটলান্টিক স্রোতের প্রভাবে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ ও নরওয়ে এবং উষ্ণ কুরোশিয়ো স্রোতের প্রভাবে জাপানের প্রচন্ড ঠান্ডা হ্রাস পায় ।
(২) উষ্ণ স্রোতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু শীতল প্রদেশে এলে সেখানে বৃষ্টিপাত ঘটায় ।
(৩) উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে কুয়াশা ও ঝড় হয় । যেমন- উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের উপর দিয়ে প্রবাহিত উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু এবং শীতল ল্যাব্রাডার স্রোতের উপর দিয়ে প্রবাহিত শীতল ও শুষ্ক বায়ু পরস্পর সংমিশ্রণের ফলে এই অঞ্চলে প্রবল ঝড় ও ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হয় । এইজন্য এই অঞ্চলে জাহাজ চলাচল বিপজ্জনক ।
(৪) উষ্ণ স্রোতের প্রভাবে শীতপ্রধান দেশের বন্দর ও পোতাশ্রয় বরফ মুক্ত থাকে ।
(৫) স্রোতের মুখে জাহাজ চালানো সুবিধাজনক ।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ