বায়ু একক ক্ষেত্রফলে লম্বভাবে যে বল প্রয়োগ করে তা বায়ুর চাপ নামে পরিচিত।হাইগ্রোমিটারের সাহায্যে বায়ুর চাপ নির্ণয় করা হয়।পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বায়ুর চাপ বিভিন্ন হয়।ভূপৃষ্ঠের প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে স্বাভাবিক বায়ুমন্ডলীয় চাপ ১৪.৭২ পাউণ্ড এবং সমুদ্রপৃষ্ঠে প্রতি বর্গ সেমিতে বায়ুর চাপ ১০ নিউটন।আর স্বাভাবিক বায়ুমন্ডলীয় চাপ ৩৪ ফুটের বেশি উচ্চতায় পানি ধরে রাখতে পারে না।
বায়ুর চাপ ও চাপের তারতম্যের কারণঃ [Air Pressure and Major factors influencing it]:- পৃথিবীর যাবতীয় পদার্থের মত বায়ুরও ওজন আছে । ফলে বায়ুও চাপ দেয় । ভুপৃষ্ঠে প্রতি এক বর্গ সেন্টিমিটারে বায়ুর চাপ এক কিলোগ্রামের সমান । বায়ু চারদিক থেকে চাপ দেয় । তাই সাধারণভাবে বায়ুর চাপ অনুভূত হয় না । চাপমান যন্ত্র বা ব্যারোমিটারের পারদ-স্তম্ভের উচ্চতা থেকে বায়ুর চাপ মাপা হয় । সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর স্বাভাবিক চাপ ২৯.৯২ ইঞ্চি বা ৭৬০ মিলিমিটার পারদ-স্থম্ভের সমান । বেশির ভাগ দেশে ইঞ্চির বদলে মিলিবার-এ বায়ুর চাপ প্রকাশ করা হয় । ৭৬০ মিলিমিটার বা ২৯.৯২ ইঞ্চি ১০১৩ মিলিবারের সমান । পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের বায়ুর চাপ দেখা যায় । নিম্নলিখিত কারণগুলির জন্য বায়ুমণ্ডলের চাপের তারতম্য হয়, যেমন:- ১. বায়ুর উষ্ণতা ২.বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৩.ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা ।৪.বায়ুস্তরের উচ্চতা
বায়ুর উষ্ণতাঃবায়ুর উষ্ণতার জন্য বায়ুর চাপের তারতম্য ঘটে । বায়ু উত্তপ্ত হলে বায়ু আয়তনে বাড়ে এবং বায়ুর ঘনত্ব কমে যায় । ফলে বায়ু হালকা হয়ে যায় । হালকা বায়ুর চাপও কম হয় । অতএব, বায়ুতে যখন তাপ বেশি হয় তখন বায়ুর চাপ কম হয় । একইভাবে বায়ুর উষ্ণতা হ্রাস পেলে বায়ূর ঘনত্ব বেড়ে যায় বলে বায়ুর চাপও বৃদ্ধি পায় । বায়ুচাপ সম্পূর্ণভাবে উষ্ণতার ওপর নীর্ভরশীল । উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুর চাপ বিপরীত অনুপাতে পরিবর্তিত হয়, অর্থাৎ উষ্ণতা কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে এবং উষ্ণতা বাড়লে বায়ুচাপ কমে ।
বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণঃবায়ুতে জলীয়বাষ্পের তারতম্যের জন্য বায়ুর চাপের তারতম্য ঘটে । জলীয়বাষ্প বিশুদ্ধ বায়ুর চেয়ে হালকা । সেইজন্য যে বায়ুতে জলীয়বাষ্প বেশি থাকে সেই বায়ু শুকনো বায়ুর চেয়ে হালকা এবং তার চাপ ও অপেক্ষাকৃত কম । এইকারণে বর্ষাকালে বায়ুতে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় বায়ুর চাপ কম হয় । শুষ্ক বায়ু ভারী এবং তার চাপ ও বেশি হয়।উল্লেখ্য, বাতাসে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিকে বায়ুর আর্দ্রতা বলা হয়।কোন এলাকার বায়ুতে প্রকৃতপক্ষে যতখানি জলীয় বাষ্প আছে এবং যতখানি জলীয় বাষ্প থাকতে পারে তার শতকরা অনুপাতই বায়ুর আর্দ্রতা নামে পরিচিত।বায়ুমণ্ডল ৯০% আর্দ্র বলতে বুঝায়, বায়ু যতখানি জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে তার ৯০% জলীয় বাষ্প এতে রয়েছে।
ভূপৃষ্ঠের উচ্চতাঃভূপৃষ্ঠের উচ্চতার জন্য বায়ুর চাপের তারতম্য ঘটে । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে ওঠা যায় বাযুস্তরের গভীরতা ও ঘনত্ব তত কম হয় । অর্থাৎ উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুস্তরের ঘনত্ব কমতে থাকে । বায়ুর ঘনত্ব কমলে স্বাভাবিকভাবে বায়ুর ওজন কমে যায়, এবং ওজন কমলে বায়ুর চাপও কম হয় । সাধারণত প্রতি ৯০০ ফুট উচ্চতায় ১ ইঞ্চি বা প্রতি ২৭৪ মিটারে ৩৪ মিলিবার বায়ুর চাপ কম হয় । তবে এই হারে বায়ুর চাপ উপরের বায়ুস্তরে সব সময়ে কমে না । কারণ উপরের বায়ুস্তর ক্রমশ পাতলা ।
বায়ুস্তরের উচ্চতাঃবায়ুস্তরের উচ্চতার জন্য বায়ুর চাপের তারতম্য ঘটে । বায়বীয় পদার্থের নিম্নতম স্তরের যে অংশ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে (Gravitational attraction) ভূপৃষ্ঠের সংলগ্ন হয়ে থাকে, সেই অংশ সাধারণত বায়ুমন্ডল নামে পরিচিত । বায়ুমণ্ডলের উপরিসীমা প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার ধরা হলেও বায়ুমণ্ডলের ৯৯% ভর ভূপৃষ্ঠের ৩২ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করে । বায়ুমণ্ডলের এই অংশেই সৌরতাপ সংরক্ষণ করে এবং এই অংশের চাপই আমরা অনুভব করি ।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ