খুশকি সমস্যা সারা বিশ্বেই কম বেশি আছে। আমাদের দেশে খুশকির সমস্যা বেশ প্রকট। প্রতিটি মানুষই কখনও না কখনও খুশকির সমস্যায় ভুগে থাকে । শারীরিক সমস্যার চেয়ে মানসিক ও সামাজিক বিড়ম্বনাই এ সমস্যায় বেশি। তাই উপযুক্ত বৈজ্ঞানিক চিকিৎসার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
খুশকি হলো মাথার ত্বকের মৃত কোষ। আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষই প্রতিনিয়ত স্বাভাবিক নিয়মে ঝরে যাচ্ছে। কিন্তু এ প্রক্রিয়া এত সূক্ষ্ম যে আমাদের চোখে ধরা পড়ে না। কিন্তু আমাদের মাথার ত্বক পুরু হওয়াতে এ কনাগুলো বড় হয়ে থাকে এবং তা ঘাম, ধুলো ময়লা এবং তৈলগ্রন্থির গোড়ায় এসে আটকে যায়। কখনও মাথার ত্বকের ঝরে পড়ার গতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে খুশকিও বেড়ে যায়। তৈলগ্রন্থি মাথার ত্বকেই বেশি থাকে। তাই তৈলগ্রন্থি হতে তৈলাক্ত পদার্থের উৎপাদন ও নিঃসরণ বেড়ে গেলেও বিপত্তি ঘটে থাকে। শীতের দিনে সাধারণত খুশকি বেশি হয়ে থাকে। খুশকির সমস্যা বয়স্কদের তুলনায় কম বয়সীদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। মাথায় খুশকি হলে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায় এবং চুল পড়তে থাকে। যদি জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়, তবে পরবর্তীতে প্রদাহের সৃষ্টি হয়ে তীব্র আকার ধারণ করে। কিন্তু মাথা চুলকালে, মাথার চুল উঠলে কিংবা আঁশ উঠলেই যে তা খুশকি হবে এরকম ভাবা ঠিক নয়। আমাদের শরীরের ত্বকে যেমন নানা ধরনের চর্মরোগ হয়ে থাকে, মাথার ত্বকেও তেমনি হয়ে থাকে। মাথার ত্বকে খুশকি ছাড়াও একজিমা কিংবা ফাংগাস ইনফেক্শন ইত্যাদি হয়ে থাকে। তাই মাথার ত্বকে কোনও সমস্যা হলে খুশকি বলে ধরে না নিয়ে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে।
৮৬
খুশকির চিকিৎসা
১। চুলকে খুশকিমুক্ত রাখতে হলে নিয়মিত ভাল শ্যাম্পু ও সাবান দিয়ে চুলকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
২। চিরুনী দিয়ে দিনে কয়েকবার চুল আঁচড়াতে হবে এবং নিজের জন্য পৃথক চিরুনী রাখতে হবে।
৩। চুল যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে ফেলতে হবে।
৪। মাথায় বেশি তেল ব্যবহার করা ঠিক নয়। অনেকে চুলে তেল দিয়ে খুশকি ধামাচাপা দেয়ার ব্যবস্থা করেন। তেল দিলে খুশকি কমে এ ধারণা ভুল। বরঞ্চ তেল দিলে চুল ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে থাকায় চুলে ময়লা ও খুশকি আটকে গিয়ে সমস্যা বাড়ায় ।
৫। মাথার ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করার জন্য নিয়মিত শ্যাম্পু ব্যবহার করাই উত্তম। সাবানের চেয়ে মাথার ত্বক পরিষ্কার করার জন্য শ্যাম্পুই উত্তম।
৬। খুশকি যদি হয়েই যায় তবে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা করতে হবে। অনেকে মনে করে থাকেন খুশকির কোনও চিকিৎসা নেই। আবার অনেকে ভেবে থাকেন যে, খুশকির চিকিৎসার কোনও প্রয়োজন নেই। এ দুটো ধারণাই ভুল ।
৭। খুশকির জন্য আজকাল অনেক ওষুধ বের হয়েছে। তীব্রতা ও উপসর্গ লক্ষ্য রেখে একেকজনের বেলায় একেক ধরনের চিকিৎসা করতে হবে।
খুশকি প্রতিকারে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা
১। দই, পাতিলেবুর রস, নিমপাতা বাটা এবং গোলমরিচ মাথায় ও চুলে লাগিলে এক ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে, এভাবে সপ্তাহে একবার এটি করতে হবে।
২। কিছুটা আমলকী ও রিঠাফল রাত্রে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন ঐ পানি দিয়ে মাথা ও চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি সপ্তাহে দু'দিন করতে হবে।
উকুন
উকুন মাথার ত্বকের এবং চুলের আরেকটি বড় সমস্যা। এটি এক ধরনের পরজীবী জীবাণু। মাথায় উকুন হলে তা থেকে চুলকানির সৃষ্টি হয়। মাথার ত্বকে ছোট ইনফেক্শন, ক্ষত এবং প্রদাহ হতে পারে। ছেলেদের চুল থেকে মেয়েদের
৮৭
চুল বড় থাকে বিধায় মেয়েদের চুলে বেশি উকুন দেখা যায়। বাড়িতে যদি কারও মাথায় উকুন থেকে থাকে, তবে একই বিছানায় শোবার কারণে উকুন হয়। আক্রান্তজনের চিরুনী যদি অন্যজন ব্যবহার করে থাকে তাহলেও উকুন হয়। এজন্য উকুন সারাতে হলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে। উকুন হলে ঘন ঘন চুল পরিষ্কার করতে হবে। যার উকুন হয়েছে তাকে অন্যদের সাথে ঘুমোতে দেওয়া যাবে না ।
ঘরোয়া চিকিৎসা
১। কেরোসিন তেল ও মাথার তেল সম পরিমাণে মাথায় লাগাতে হবে। ২। সমস্ত মাথার চুলে যাতে তেল ভালভাবে লাগে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। ৩। তেল লাগানোর পর একটি কাপড় দিয়ে চুলগুলো জড়িয়ে রাখতে হবে। ৪। এরপর রিঠা মিশ্রিত পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। ৫। সরু চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াতে হবে এবং উকুনগুলো বের করে মেরে
ফেলতে হবে।
৬। উকুনের ডিম যদি থাকে তবে গরম পানি ও ভিনিগারে আধ ঘণ্টা ভিজিয়ে সরু চিরুনি দিয়ে আঁচড়াতে হবে ।
৭। এভাবে প্রতি ১০ দিন অন্তর অন্তর এটি করতে হবে।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ