সাপে কামড়ালেই মানুষ ধরে নেয় বুঝি বিষাক্ত সাপে কামড় দিয়েছে। অধিকাংশ সাপই বিষাক্ত নয়। বিষাক্ত সাপ চেনার উপায় হচ্ছে বিষাক্ত সাপের ওপরের চোয়ালে অবস্থিত বিষ থলিতে বিষ সংরক্ষিত অবস্থায় থাকে। বিষাক্ত সাপের দুটি বিষ দাঁত থাকে। এ দাঁতগুলো ভেতরের দিকে বাঁকা থাকে। বিষ দাঁতে দুটো ছিদ্র থাকে এই ছিদ্র বিষ থলির সাথে যুক্ত থাকে। সাপ যখন দংশন করে তখন বিষ থলি থেকে বিষ ছিদ্র দিয়ে মানব বা অন্য কোনও প্রাণীর দেহে প্রবেশ করে।
বিষাক্ত সাপ বোঝবার উপায়
১। বিষাক্ত সাপের কামড়ে দুটি বিষ দাঁতের দাগ থাকে। আর কখনও ছোট ছোট দাঁতের দাগও থাকে ।
২। আক্রান্ত স্থানে অত্যধিক যন্ত্রণা হতে পারে।
৩। রক্তে কতটা বিষ ঢুকেছে তার ওপর নির্ভর করে জায়গাটা কতটুকু ফুলে ওঠেছে তার ওপর।
৪ । আক্রান্ত স্থানে ঝি ঝি ধরে।
৫। কামড়ের স্থানের চারিদিকে চামড়ার রঙ বদলে যায়।
৬। রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে।
৭। রোগীর ঘুম ঘুম ভাব হয় ।
বিষধর সাপের বিষক্রিয়া শরীরে যেসব প্রতিক্রিয়া ঘটায়
১। স্নায়ুকে আক্রমণ করে। ২। পেশীতে পক্ষাঘাত ঘটায়।
৩। রক্ত কনিকার ক্ষতি সাধন করে।
৪। মস্তিষ্কের ক্ষতি সাধন করে থাকে ।
৫। রোগী শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যেতে পারে।
সাপের কামড়ের স্থানে গতানুগতিক লক্ষণগুলো
১। রোগীর রক্ত সঞ্চালনে বাধার সৃষ্টি হয়।
২। রক্তচাপ কমে আসে এবং নাড়ীর গতি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে।
৩। রোগীর শ্বাসকষ্ট আরম্ভ হয় এবং সেই সাথে তীব্র পানির পিপাসা হতে
পারে ।
৪। মাথা ধরে ও মাথা ঘোরে।
৫। গা বমি বমি ভাব হয় ।
৬। রক্ত বমিও হতে পারে।
বিষাক্ত সাপের কামড়ের চিকিৎসা
১। বিষাক্ত সাপে কামড়ালে রোগীকে যতটা সম্ভব শান্ত রাখতে হবে। রোগী যাতে কিছুতেই নড়াচড়া না করে কারণ নড়াচড়া করলে বিষ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এজন্য রোগীকে হাঁটা চলা করতে দেওয়া উচিত নয়।
২। বিষ দাঁতের ২ থেকে ৩ ইঞ্চি ওপরে আক্রান্ত স্থানের চারদিকে কাপড় দিয়ে বাঁধতে হবে। খুব বেশি শক্ত করে বাঁধা যাবে না। আধ ঘণ্টা পর পর ১ মিনিটের জন্য বাঁধন আলগা করে দিতে হবে।
৩। ক্ষতস্থানের ত্বক ছেদন করে বিষ অপসারণ করতে হবে ।
৪। প্রথমে ছুরিকে আগুনের শিখায় জীবাণুমুক্ত করে নিয়ে জখমের স্থানে এক সেঃ মিঃ লম্বা এবং অর্ধ সেঃ মিঃ গভীর করে ত্বক ছেদন করতে হবে।
৫। এরপর আপনার মুখে এবং দাঁতে যদি ঘা না থাকে তবে ১৫ মিনিট ধরে বিষটা চুষে থু করে ফেলে দিতে হবে।
৬। মনে রাখতে হবে, ছেদন যেন খুব বেশি গভীর না হয়। কারণ বিষ যদি শিরার রক্তের সাথে মিশে তবে তা হৃদপিণ্ডের মাধ্যমে মস্তিষ্কে গিয়ে সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটাবে।
৭। মুখে বিষ চোষার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অন্য কোনও পাম্পারের সাহায্যেও সাক করা যেতে পারে ।
৮। আক্রান্ত স্থানে বরফ দিতে হবে। বরফ পাওয়া না গেলে কাপড়ের কয়েক টুকরো মুড়ে যে জায়গায় কামড়েছে তার চারপাশে গুঁজে দিতে হবে।
৯। অতিসত্ত্বর হাসপাতালে পাঠাতে হবে। এবং ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ মতো এন্টিভেনিনের ইনজেকশন দিতে হবে।
তাই বিষাক্ত সাপে কামড়ালে ডাক্তারি সাহায্য চাইতে হবে। সেই সাথে প্রাথমিক চিকিৎসাও চালিয়ে যেতে হবে।
বিষাক্ত কীট পতঙ্গের দংশন
ভীমরুল, বোলতা, কাঁকড়া, বিছা ইত্যাদি কীটগুলো মানুষকে দংশন করে থাকে। দংশিত স্থানে জ্বালা যন্ত্রণা হতে থাকে। যদি শক্ হয়ে থাকে তবে শক্ থেকে রোগী মৃত্যুবরণ পর্যন্ত করতে পারে। শুঁয়োপোকা হলে আক্রান্ত স্থান চুলকোতে থাকে ।
প্রাথমিক চিকিৎসা
১। যদি ভীমরুল কিংবা বোলতা কামড় দেয়, তবে ছুরি কিংবা সূঁচ দিয়ে এগুলোর হুল বের করতে হবে। এরপর ক্ষতস্থানে লবণ-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
২। শুঁয়োপোকা কামড়ালে হলগুলো ব্লেড দিয়ে চেঁছে এরপর চুন লাগিয়ে দিতে হবে।
৩। বিষাক্ত কোনও কীট হলে তবে ঐ স্থানে লেবুর রস লাগিয়ে তার ওপর চুন লাগিয়ে দিতে হবে ।
৪। আক্রান্ত স্থানে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে বরফ পানির পট্টি দিতে হবে, এন্টিহিস্টামিন বড়িও দেওয়া যায় ।
৫। প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ডাক্তার প্রয়োজন মনে করলে এ্যানেসথেসিয়ান ইনজেকশন বা ক্রিম দেবেন কিংবা ব্যথানাশক কোনও ওষুধ দেবেন। এতে রোগী আরাম বোধ করবে।
৬। হুল ফোটানার জায়গায় গরম সেঁক দিতে হবে।
৭। যন্ত্রণার জন্য এসপিরিন দিতে হবে।
৮। শ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে মুখে মুখ দিয়ে শ্বাস প্রশ্বাস চালাতে হবে। ৯। রোগী শক্ প্রাপ্ত হলে এলার্জির শকের মতো চিকিৎসা করতে হবে।
FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ