আলসার , আলসারের কারণ ,আলসারের লক্ষণ আলসার হলে করণীয় প্রতিরোধ পাথমিক চিকিৎসা

পেটের যে বিভিন্ন রোগ রয়েছে এর মধ্যে আলসার একটি বড় রোগ । আলসার একদিনে হয় না আবার হঠাৎ করে কোনও সমস্যাও দেখা দেয় না। বিভিন্ন কারণে পেটের ভেতরে যদি কোনও সমস্যা থাকে, তবে তা ধীরে ধীরে আলসারের দিকে এগিয়ে যায়। আলসার হলে প্রথম প্রথম বদহজম হয়, বুক জ্বালা করে এবং টক ঢেঁকুর ওঠে। এ ধরনের উপসর্গ অতি সাধারণ এবং এত
মানুষের মধ্যে এ ধরনের উপসর্গ রয়েছে যে, ব্যাপারটাকে আমরা তেমন গুরুত্ব দেই না। এ ধরনের সমস্যা হলেই আমরা এন্টাসিড খেয়ে নেই। এভাবে এন্টাসিড খাওয়াটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। এরপর আমরা যখন দেখি আমাদের রোগ ভাল হচ্ছে না তখনই আমরা ডাক্তারের কাছে ছুটে যাই।
আলসারের কারণ
আমাদের পাকস্থলী কিংবা স্টমাকে যদি কোনও ভাবে এসিড বেশি উৎপন্ন হয় তাহলেই আলসার দেখা দেয়। অনেক সময় গলব্লাডারে পাথর হওয়ার জন্যও এ রকম হয়ে থকে। প্রতিটি মানুষের পাকস্থলীতে কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে । অনেক সময় এই ব্যাকটেরিয়া থেকে আলসার হয়। আবার খাওয়া দাওয়ার অনিয়ম কিংবা অতিরিক্ত টেনশন থেকেও আলসার হয়ে থাকে।
আলসারের লক্ষণ
১। গলা, বুক ও পেট জ্বালা করে।
২। ওপরের পেটের মাঝখানে কিংবা সামান্য ডান দিকে ব্যথা হয় ।
৩। পেট যখন খালি থাকে তখনই ব্যথা বাড়ে ।
৪। কিছু খেলে কিংবা যখন এন্টাসিড খাওয়া হয় তখন জ্বালা কমে যায়। ৫। অনেক সময় রক্ত বমি বা কালো পায়খানা হতে পারে।
আলসারের প্রকারভেদ
আলসার সাধারণত দু'রকমের হয়ে থাকে। পেটের যে কোনও আলসারকেই ডাক্তারি পরিভাষায় পেপটিক আলসার বলা হয়ে থকে। পেপটিক আলসারের দুটো ভাগ রয়েছে। এর একটি হচ্ছে ডিয়োডিনাল আলসার। এই আলসার পাকস্থলীতে হয় না এবং এটি অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিকর। এ আলসারের থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা নিরানব্বই ভাগ ক্ষেত্রেই থাকে না।
গ্যাস্ট্রিক আলসার
এই আলসার পাকস্থলীর মধ্যে হয় এবং এই আলসার হলে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দেয়। এই আলসার হলে রক্ত বমি হয় এবং শরীরের ওজন কমে যায়। ক্ষুধা কমে যায় এবং ওপরের পেটে ব্যথা থাকে। এভাবে কোনও না কোনও কষ্ট লেগেই থাকে। ঠিক সময়ে যদি এ আলসারের চিকিৎসা না হয়
তবে এর থেকে ক্যান্সারও হয়ে যেতে পারে।
আলসার হলে করণীয়
১। নিয়মিত ভাবে এবং ঠিক সময়মত খাওয়া দাওয়া করতে হবে।
২। যদি মনে করে থাকেন যে, আলসার হয়েছে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩। নিয়মিত ও সময়মত ঘুমোতে হবে। দুঃশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে।
৪। আস্তে আস্তে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করতে হবে। চিবানো একটি অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হজমের কাজের অংশবিশেষ। মুখের লালায় যে এনজাইম আছে তা খাদ্যকে সহজপাচ্য করে এবং পাকস্থলীর হজম শক্তিকে সহায়তা করে।
কি করা উচিত নয়
১। অকারণ টেনশন পরিহার করুন।
৩। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাবেন না ।
৪। কোনও অবস্থাতেই মদ্যপান করবেন না।
৫। ধূমপান বন্ধ করুন।
৬। অনুসন্ধান করুন কোন্ কোন্ খাদ্য আপনার পাকস্থলীকে অশান্ত করে। এবং যথাসম্ভব তা এড়িয়ে চলুন।
৭। হালকা মশলাযুক্ত খাবার আলসারের রোগী খাবেন। যে সকল খাবার সহজপাচ্য এবং ঝালবিহীন তরল খাবার খাবেন।
৮। অতিরিক্ত ঝাল, টক এবং মশলাযুক্ত খাবার বর্জন করুন।
৯। চটপটি, ফুচকা ইত্যাদি খাবার খেলে আলসার তো হতেই পারে সেই সাথে জণ্ডিস এবং টাইফয়েডও হতে পারে।
অন্যান্য কিছু নিয়ম
জীবনযাত্রাকে নিয়মমাফিক করা উচিত, গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নিয়মমাফিক বলে তাদের এ ধরনের রোগ কম হয়। পক্ষান্তরে শহরের জীবন টেনশনের এবং প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ওষুধ সেবনের কারণেও এ ধরনের রোগ হয়ে জীবনকে দূর্বিসহ করে তুলছে। এজন্য কিভাবে মনোদৈহিক রিলাক্সড অনুভব করবেন তা শিখে নিয়ে মানসিক চাপ কমাবেন । নিয়মিত ব্যায়ামের চেষ্টা করুন কিন্তু কোনও কষ্টসাধ্য কাজ করবেন না যা আপনি সহ্য করতে পারেন না। মৃদু ব্যায়াম আপনাকে সাহায্য করবে মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
আমাদের দেহের বিশেষ করে পেটের নানাবিধ অসুখের জন্যই কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। যেমন- খাওয়া দাওয়ার অনিয়ম, ভেজাল খাদ্য গ্রহণ এবং খাওয়া দাওয়ার অভ্যাস পরিবর্তনের ফলেই রোগটি হয়ে থাকে। মানুষের ভেতর উদ্বেগ টেনশন বেড়ে যাওয়াতে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়। কারণ মানুষ যখন অতিমাত্রায় টেনশন করে তখন মানুষের মধ্যে হজমের গোলযোগ দেখা দেয়। এতে করে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাঁধে। এ ধরনের অনেকগুলো অসুখ বিসুখের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্যও একটি রোগ। কোষ্ঠকাঠিন্য হলে হজমের গন্ডগোল ঘটে। পুরনো দিনের লোকেরা নিয়ম কানুন মেনে চলতো, যেমন- নিয়ম করে শুয়ে পড়া, ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, শারীরিক শক্তি ব্যয় করা, শারীরিক শক্তি ব্যয় হয় এমন কাজ করা। বর্তমানে এসব অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। অনেকেই রাত জেগে কাজকর্ম করে থাকেন এবং অনেক বেলা করে ঘুম থেকে উঠে থাকেন। কায়িক পরিশ্রমের চাইতে এখন মানসিক পরিশ্রমই বেশি করে থাকেন। আবার শিশুদের ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যের আরেকটা কারণ হচ্ছে কৌটোর দুধ। যেসব মা শিশুদের স্তন্যপানের পরিবর্তে কৌটোর দুধ পান করিয়ে থাকেন এসব শিশুদেরও কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখে শিশুদের যে কোনও জিনিস খেতে দেওয়া উচিত নয়। বাসি খাবার খেতে দেওয়াও উচিত নয়। শিশুদের পেট ঠিক রাখতে হলে মাঝে মধ্যে কাঁচা কলা ও কাঁচা পেঁপে সেদ্ধ করে খাওয়ানো উচিত। শিশুদের পেটে যদি সামান্য গন্ডগোল দেখা দেয় তবে সাথে সাথে ওষুধ খাওয়ানো ঠিক নয়। অনেক সময় বদহজম থেকে পেট খারাপ হয়ে থাকে। আবার আপনা আপনিই সেরে যায়। তবে ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হলে অতি সত্ত্বর ডাক্তার দেখাতে হবে। ঘন ঘন এন্টাসিড খাওয়া ঠিক নয়। এন্টাসিডের অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে যা শরীরের ক্ষতি করে থাকে।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]