দেহের ছোটখাটো কিছু উপসর্গ নিরাময়ে ম্যাসেজের ভূমিকা মাথা ব্যথার কারণ মাইগ্রেণ বা মাথা ধরার লক্ষণ

আপনার শরীরে কি কখনও কোনও ব্যথা অসহ্য হয়ে উঠেছে ? তখন আপনি কি করেছেন ? নিশ্চয়ই ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছেন । আপনার শরীরের যে কোনও অংশে হঠাৎ করে যদি কোনও ধরনের মারাত্মক ব্যথা অনুভব করে থাকেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভাল। কারণ অনেক সময় কিছু কিছু ব্যথা যে কোনও মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত বহন করে থাকে আবার নাও করতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে এমন অনেকেই আছেন যারা ব্যথাকে কোনও রকম আমল দিতে চান না। এবং কোনও রকম ডাক্তারের পরামর্শও নিতে চান না।
মাথা ব্যথা
কখনও মাথা ব্যথা হয়নি এমন লোকের সংখ্যা অত্যন্ত নগন্য। মাথা ব্যথা হলে অনেক সময় দেখা যায়, মাথা ব্যথার সাথে ঘাড়ের মাংসপেশীতেও ব্যথা হয় ৷
অনেক সময় মাথা ব্যথার সাথে বমির ভাব হয়। ঘুম ঘুম ভাব হয় এবং অনেক সময় আলো ও শব্দের প্রতিও সংবেদনশীলতা দেখা যায়। মাথা ব্যথার ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের উপসর্গ দেখা যায়। চিকিৎসা ছাড়াই ৮৫/৯০ ভাগ মাথা ব্যথা ভাল হয়ে যায় ।
মাথা ব্যথার কারণ
উত্তেজনা, মানসিক অস্থিরতা, টেনশন, সাইনাসের প্রদাহ, চোখ, নাক, কান, গলা, কিংবা মেনিনজাইটিস ও মস্তিষ্কের টিউমার জনিত কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। আবার মাইগ্রেণের কারণেও মাথা ব্যথা হয় ।
টেনশনের মাথা ব্যথার লক্ষণ
১। টেনশন থেকে মাথা ব্যথা হলে তা সমস্ত মাথাজুড়ে হয়। ঘাড়ে এ ধরনের ব্যথা বেশি অনুভূত হয়ে থাকে ।
২। এই ব্যথা বেশ কয়েকদিন ধরে চলতে পারে। এই ব্যথা কখনও বাড়ে
কখনও কমে।
৩। কাজের চাপ যখন বেশি থাকে কিংবা মানসিকভাবে অস্থির হলেই এ ব্যথা হয়ে থাকে ।
৪। এ ধরনের মাথা ব্যথায় বমি হয় না। মাথা ব্যথা নিয়েই স্বাভাবিক সব কাজ কর্ম চালিয়ে নেওয়া যায় ।
মাইগ্রেণ বা মাথা ধরার লক্ষণ
১। মাইগ্রেণ সাধারণত কমবয়সী মেয়েদের বেশি হয়ে থাকে। মেয়ে ও ছেলের রোগের অনুপাত হয়ে থাকে ৩ঃ১।
২। এ রোগের প্রকোপ দেখা যায় মেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাবের পূর্বে এবং
বন্ধের পরে।
৩। এ ব্যথা যে কোনও মুহূর্তে শুরু হতে পারে এবং কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
৪ । মাইগ্রেণে আক্রান্ত রোগী আলোর দিকেও ঠিকভাবে তাকাতে পারে না । ৫। রোগীর বমির ভাব হতে পারে কিংবা বমি হতেও পারে ।
মাইগ্রেণের তীব্রতা বৃদ্ধির কতগুলো কারণ বা ট্রিগার ফ্যাক্টর আছে
মনোদৈহিক- মানসিক চাপ, দুঃশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদ, দুর্ভাবনা ইত্যাদি। পরিবেশগত কারণ— ঋতু পরিবর্তন জনিত, শিল্প কারখানায় পরিবেশ দূষণ জনিত ।
ব্যক্তিগত- ধূমপান, সুগন্ধি ব্যবহার, ঝকঝকে আলোকিত, পরিবেশগত কারণ ।
শারীরিক পুষ্টিজাত কারণ সমূহ - পনির, চকলেট, লেবুজাতীয় ফল এবং কফিজাতীয় পানীয় ।
ঔষধাদি - ড্রাগস বা নেশাজাতীয় ওষুধ সমূহ, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ।
মাথা ব্যথা যদি মৃদু ধরনের হয় তবে বেশি গুরুত্ব দেওয়া ঠিক নয় । প্রত্যেকবার মাথা ব্যথায় বেদনা নাশক ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। অধিক মাত্রায় প্যারাসিটামল ট্যাবলেট লিভারের ক্ষতি করে। মাইগ্রেণের জন্য যে মাথা ব্যথা হয় ঐ মাথা ব্যথায় ট্রিগার ফ্যাক্টর কিংবা কার্যকারণ সমূহ এড়িয়ে চলতে হবে। এজন্য ঐ কার্যকারণ সমূহ চিহ্নিত করে ওগুলো এড়িয়ে চললে চমৎকার ফল লাভ করা যায় ।
মাথা ব্যথায় কি ধরনের ম্যাসেজ কার্যকরী
মাথা ব্যথা হলে অনেক সময় দেখা যায় যে, সামান্য ম্যাসেজ করলেই সেরে যাচ্ছে। মাথা ব্যথার সাতটি স্থান এবং ব্যথা নির্গমনের ছয়টি স্থান চিহ্নিত আছে, চীন দেশীয় অন্য চিকিৎসা পদ্ধতি হলো আকু প্রেসার। এ পদ্ধতিতে মাথার দু'দিকে চারটি স্থানে মাথা ধরার সময়ে বেদনা অনুভূত হয়। এবং ঐ অঞ্চলে যদি বৃত্তাকারে দৃঢ় চাপ প্রয়োগ করা যায় তবে বেদনার উপশম হয়। এই চারটি স্থান হচ্ছে
১। গলা এবং কাঁধের প্রান্ত বিন্দুর মাঝামাঝি স্থান ।
২। টেম্পলের মাঝামাঝি স্থান ।
৩। মাথার খুলির পেছনে ।
৪। নাকের উৎসের উপরিভাগে দৃঢ় চাপ দিয়ে বৃত্তাকারে এবং হালকা ভাবে এবং চারটি স্থানেই মৃদুভাবে মালিশ করে দিতে হবে।
কিভাবে ম্যাসেজ করবেন
১। প্রথমেই চোখের ওপরে আলতো ভাবে চেপে ধরতে হবে।
২। কপালের মাঝলাইন দিয়ে ভুরু থেকে চুলের গোড়া পর্যন্ত চাপ প্রয়োগ করে যেতে হবে।
৩। কপালের ওপর খুবই আস্তে আস্তে হাত দিয়ে মালিশ করতে হবে।
৪। নাকের উৎসের ওপরে চেপে চেপে ম্যাসেজ করতে হবে।
৫। চোখের ভুরুর ওপরও বুড়ো আঙ্গুল ও তজনির সাহায্যে চেপে চেপে ম্যাসেজ করতে হবে।
৬। বুকে এবং কাঁধের ওপরেও বৃত্তাকার ভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসেজ করে এর পরবর্তীতে ঘাড়ও ঐ প্রক্রিয়ায় ম্যাসেজ করতে হবে।
৭। ঘাড় ও কাঁধ ম্যাসেজের পর কাঁধ বেয়ে মাথার খুলির দিকে চলে যেতে হবে। এসময় কানের চারিধারে ম্যাসেজ করা উত্তম।
মাথা ব্যথা এড়াবেন কিভাবে
১। রোদে যখন বের হবেন তখন সানগ্লাস কিংবা ছাতা ব্যবহারের চেষ্টা করবেন।
২। একটানা অনেকক্ষণ যাবত টি.ভি. কিংবা ভি.সি.আর দেখবেন না ।
৩। একটানা দীর্ঘসময় ধরে কোনও কাজের দিকে অতিরিক্ত মন যোগ দেবেন না।
৪। নিয়মিত এবং পরিমিত ঘুমোনোর চেষ্টা করুন।
৫। মুক্ত আলো বাতাসে কিছু সময় ধরে বেড়ান ।
শরীর এবং মনের অবসর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘরোয়া অবসাদ দূর করার জন্য রিলাক্সিং এক্সারসাইজ বা অনুশীলনী উপকারী।
একটি অনুশীলনী- একটি চেয়ারে পিঠ সোজা ও দৃঢ় করে বসুন। পা দুটি আরাম করে রেখে হাত দুটি কোলের ওপরে রাখুন। চোখ বন্ধ করে অবসাদ শূন্য ভাবে তিন চার মিনিট নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে হবে। এই অনুশীলন ১৫ মিনিট করলে শরীরের পেশী সমূহ শিখিল হবে এবং মাথা ব্যথাও দূর হবে।
রিফ্লেক্সোলজি ঃ এই তত্ত্ব মোতাবেক মানুষের শরীরের অধিকাংশ রোগের উৎপত্তি ঘটে বলপ্রয়োগে বিঘ্ন ঘটার ফলে। মানব দেহের পদতলের বিভিন্ন অংশ দেহের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব করে। ঐ অঞ্চলসমূহ ম্যাসেজ করলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের বলপ্রবাহ পুনঃপ্রবাহিত হয়ে রোগ নিরাময় ঘটে। তাই আপনার মাথা ব্যথা হলে ধরে নিতে হবে যে, উদর ভাগে বল প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটেছে। উদর ভাগের প্রতিনিধিত্বকারী অংশ হলো বুড়ো আঙ্গুল । তাই পদতলের সামনের দিকটা ভালভাবে ম্যাসেজ করলে মাথা ব্যথা নিরাময় সম্ভব !

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]