গর্ভাবস্থায় ম্যাসেজের প্রয়োজনীয়তা ও প্রসবের পরবর্তী ম্যাসেজ প্রয়োজনীয়তা

ম্যাসেজ আমাদের ক্লান্তি মোচনে সহায়তা করে থাকে এবং শিশুর বৃদ্ধি গঠনেও সহায়ক। তবে সাধারণ অবস্থায় যে ম্যাসেজ চলে, গর্ভাবস্থায় সে ধরনের ম্যাসেজ করা কোনও ক্রমেই উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় সঠিক ম্যাসেজ শিশু এবং মা উভয়ের জন্যই ভাল। গর্ভাবস্থায় প্রতিটি নারীরই দেহে পরিবর্তন ঘটে থাকে। গর্ভাবস্থায় সঠিক পদ্ধতিতে ম্যাসেজ মায়েদের দেহ ও মনে প্রশান্তি এনে বিভিন্নরকম ভীতি দূর করে থাকে। তবে গর্ভাবস্থায় ম্যাসেজের ক্ষেত্রে ম্যাসেজকারীকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে যেন কোনও ক্রমেই পেটে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।
পেট ম্যাসেজ
গর্ভাবস্থার প্রথম চার মাস পেট ম্যাসেজ খুব সাবধানে করতে হবে। চাপ প্রয়োগও খুব সাবধানে করতে হবে। কোনও অবস্থাতেই যেন চাপ বেশি না
লাগে। চার মাসের পর পেট যখন আস্তে আস্তে বড় হতে শুরু করে তখন হাতের মধ্যে অল্প তেল নিয়ে পেটের চার ধারে হাত গোল করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসেজ করবেন। এতে করে গর্ভবতী বেশ আরাম বোধ করবেন।
পিঠের নিম্নাংশ ও নিতম্বের ম্যাসেঞ্জ
এই ম্যাসেজের সময় গর্ভবতীকে যে কোনও একপাশে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। এরপর ম্যাসেজকারী পিঠের দিকে হাঁটু গেড়ে বসুন। প্রথমে আঙ্গুল পিঠের নিচের দিকে রাখুন। এরপর গোল করে ঘুরিয়ে, আলতো ভাবে হাতের ওপর ভর রেখে চাপ দিয়ে ম্যাসেজ করতে করতে নিতম্ব ও পিঠের সন্ধিস্থলের দিকে নিয়ে আসুন। এবার হাতকে মুঠো করুন, নিতত্ত্বের ওপর আলতো করে চাপ দিন। এরপর গর্ভবর্তীকে বলুন ওই অংশের পেশীগুলোকে পুরোপুরি শিথিল করে দিতে।
উরু ম্যাসেজ
গর্ভাবস্থায় অনেক সময়ই দেখা যায় পা কাঁপে। এ ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হলে গর্ভবতীকে বলুন সামনে পা ছড়িয়ে বসতে। যতদূর সম্ভব পা ফাঁক করে সোজা হয়ে বসতে বলুন। এরপর ম্যাসেজকারী হাঁটু গেড়ে বসে উরুর ভেতরের অংশে হাত রাখুন। এরপর উরুর ওপরের অংশ থেকে হাতের তালুর সাহায্যে খুবই ধীরে ধীরে চাপ দিয়ে হাঁটু পর্যন্ত হাতটা নামান, এভাবে চাপ দিয়ে দিয়ে পায়ের পাতা পর্যন্ত ম্যাসেজ করুন। বার বার এভাবে ম্যাসেজ করার ফলে পা কাঁপা কমে যাবে।
প্রসবের পরবর্তী ম্যাসেজ
প্রসবের পরবর্তী সময়টুকুতে মহিলারা বিপুল পরিমাণে অবসাদগ্রস্থ থাকেন । অতিমাত্রায় পেশীর দৌর্বল্যের কারণেও এ রকম হয়ে থাকে। গর্ভবতী থাকাকালীন যে অবসাদ বা ক্লান্তি শরীরে জমা হয়, ম্যাসেজ করলে তা অনায়াসে দূর হয়ে যায়। প্রসবের এক সপ্তাহ পরেই এ ম্যাসেজ শুরু করা যায়। প্রসবের পরবর্তী ম্যাসেজ শরীরের জন্য খুবই উপকারী ম্যাসেজ করলে কিছুদিনের মধ্যেই পেটের আকৃতি পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে। শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা ও জড়তা কেটে যায়। মহিলারা পুনরায় গৃহস্থালী এবং বাইরের কাজে যোগদানের উপযুক্ত হয়ে গড়ে ওঠেন
১। পেটের নিচে থেকে ওপরের দিকে হাত দিয়ে ঘষে ঘষে মালিশ করুন। ২। পেটের চারিদিকে উভয় হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসেজ করুন। ৩। নিতম্বের ওপর দৃঢ়ভাবে চাপ দিয়ে ম্যাসেজ করুন। এরপর পেটের ওপর আড়াআড়ি ভাবে ম্যাসেজ চালিয়ে যান ।
৪। শরীরের উভয় পাশ দিয়ে দু'হাত দিয়ে ম্যাসেজ করুন। হাতের গোড়ালির সাহায্যে দৃঢ়ভাবে চাপ দিয়ে দিয়ে ম্যাসেজ করুন। তবে সিজারিয়ান অপারেশন হলে কাটা দাগের ওপর ম্যাসেজ করবেন না।
পিঠের ব্যথা ও ঘাড়ের ব্যথা
আপনার অঙ্গভঙ্গি আপনার পিঠের ঘনিষ্ঠ বন্ধু অথবা জঘন্য শত্রু হতে পারে। সুন্দর অঙ্গভঙ্গি মেরুদন্ডের সন্ধিসমূহে সুষম চাপ ফেলে এবং স্বল্পতম প্রচেষ্টায় নাড়াচাড়া সম্ভব করে তোলে। অস্বাভাবিক দেহ ভঙ্গিমা অসুবিধার সৃষ্টি করে। কারণ এটি পেশী সমূহে টান পড়ায় এবং ক্লান্তির সৃষ্টি করে ।
কাঁধ এবং পিঠের ম্যাসেজ কিভাবে করবেন
১। অনেকগুলো তেল কিংবা লোশন কাঁধের নিচে ভালভাবে দিয়ে নিতে হবে। দু'হাত থাকবে ঘাড়ের দু'পাশে। কাঁধ থেকে আরম্ভ করে ঘাড়ের গোড়া পর্যন্ত ম্যাসেজ করতে হবে।
২। যেদিক থেকে ম্যাসেজ আরম্ভ করবেন সেদিকে ঝুঁকে বসবেন। দু হাত ঘাড়ের দু'পাশে রেখে ম্যাসেজ করতে করতে ঘাড় বেয়ে ওপরে উঠে কান পর্যন্ত আসবেন।
। ঘাড়ের পেশীর যদি প্রসারণ ঘটানো যায় তবে পিঠ ও মাথার ব্যথা কিছুটা দূর করতে পারবেন। আপনার হাতের অগ্রভাগ দিয়ে পিঠের মধ্যে চাপ প্রয়োগ করবেন এবং পিঠ এক ইঞ্চির মতো হাত দিয়ে টেনে তুলে শিরদাঁড়ার উভয় পাশ দিয়ে ঘাড় পর্যন্ত টেনে আনুন ।
৪। শিরদাঁড়ার উভয় পাশে আপনার হাতের তালু ও আঙ্গুলগুলো দিয়ে পিছলানোর মতো করে ম্যাসেজ করবেন। এ ম্যাসেজের সময় ঘাড় থেকে আরম্ভ করে নিচের দিকে নেমে যেতে হবে, কিন্তু শিরদাঁড়ার ওপরে ম্যাসেজ করবেন না। ম্যাসেজকারীর হাত কয়েকবার ওঠানামা করাবেন।
৫। হাতের তালুর ঢালু অংশ দিয়ে ঘাড়ের পাশ থেকে ম্যাসেজ করে কাঁধ পর্যন্ত নেমে আসুন। এভাবে কাঁধের দু'পাশে কয়েকবার করে করবেন। বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ঘাড় থেকে কাঁধ পর্যন্ত ম্যাসেজ করুন।
৬। পিঠের দু'পাশে ক্রমান্বয়ে ম্যাসেজ করবেন। প্রথমে শিরদাঁড়ার ডান পাশে বৃত্তাকার ভঙ্গিতে দু'হাতে পাশাপাশি রেখে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসেজ করুন। তেমনি ভাবে বাম পাশে আবার দু'হাত পাশাপাশি রেখে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসেজ করুন। এ ধরনের ম্যাসেজ অত্যন্ত আরামদায়ক।
৭। পিঠের পেশীকে শিরদাঁড়ার দিকে টেনে টেনে ম্যাসেজ করুন ।
৮। ম্যাসেজকারী মুখ নিচের দিকে নামিয়ে রেখে ঘাড়ের দু'পাশে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসেজ করুন।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]