কিভাবে সুস্থ থাকবেন এবং জীবনকে উপভোগ করবেন তার কিছু ঘরোয়া টিপ্‌স মেদ কেন জমে ? টেনশন মুক্তির কয়েকটি উপায়

১। শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে ভোরে ওঠার অভ্যাস করুন। বেরিয়ে পড়ুন খোলা আকাশের নিচে, প্রকৃতির কাছাকাছি। ভোরের মনোরম বাতাসে শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনও হয়ে উঠবে তরতাজা।
২। ছাদে বা খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে যতদূর দৃষ্টি যায় ততদূর একদৃষ্টে ৩/৪ মিনিট তাকিয়ে থাকুন ।
সবুজ মাঠ বা সবুজ গাছের দিকে তাকিয়ে থাকুন। চোখ ভাল থাকবে। ঘুম থেকে ওঠার পর এবং রাতে ঘুমোতে যাবার পূর্বে পরিষ্কার ঠান্ডা পানির ঝাপটা দেবেন এতে করে চোখের দৃষ্টি ঠিক থাকবে এবং চোখ দুটিও উজ্জ্বল থাকবে । প্রতিদিন গোসলের পূর্বে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখে তেল দিন। এতে দৃষ্টি উজ্জ্বল হবে।
৩। ভোরে প্রাতঃভ্রমণে বেরোনোর পূর্বে ভেজানো কাঁচা ছোলা খেলে হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা এড়ানো যায়।
৪। আটার ভূষিতে অল্প আটা মিশিয়ে চাপাটি তৈরি করে প্রতিদিন একটি করে খান এতে করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। এভাবে এই চাপাটি ঢেঁড়স কিংবা পেঁপে সেদ্ধ দিয়ে অন্ততপক্ষে ১৫ দিন খেলে তবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হবে।
৫। সকালে অন্তত একদিন খালিপেটে ত্রিফলা (আমলকি, হরিতকি, বহেড়া), চিরতা অথবা নিম গাছের ছাল ভেজানো পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে লিভার ভাল থাকবে।
৬। ভোরে ঘুম থেকে জেগে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস পানি পান করলে ভেতরের সব গ্লানি দূর হয়ে যাবে। ভাত খাওয়ার অন্তত আধ ঘণ্টা পরে পানি পান করবেন। পানি পান করার সময় ঢক ঢক করে পান না করে আস্তে আস্তে পান করুন।
৭। যদি কোনও কারণে হঠাৎ করে উত্তেজিত হয়ে পড়েন তবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের রাগ রাগ চেহারার দিকে মিনিট খানেক তাকিয়ে থাকুন
এতে করে উত্তেজনা কমে যাবে।
৮। মাসে একদিন হালকা শাক সবজি, ফলের রস কিংবা বাড়িতে পাতা দই এর ঘোল খেলে শরীর ঝরঝরে থাকবে। সেদিন কোনও রকম ভারী খাবার (ভাত/রুটি) খাবেন না। এছাড়া যদি সপ্তাহে একদিন নিরামিষ খাবার, পর্যাপ্ত ফল এবং টক দই খেতে পারেন তবে সুস্বাস্থ্য অর্জন করতে পারবেন। সেই সাথে শরীর থেকে অবাঞ্চিত মেদও ঝরে যাবে।
৯। মলমূত্র ত্যাগ করার সময় দাঁতে দাঁত চেপে রাখলে দাঁত মজবুত হয়। এছাড়া দাঁত ব্রাশ করার পরে আঙ্গুল দিয়ে মাঢ়ি ম্যাসেজ করলেও দাঁত ঝকঝকে থাকে।
১০। শীতের শেষে বাজারে প্রচুর পরিমাণে কাঁচা আমলকি পাবেন, তখন প্রতিদিন একটি করে কাঁচা আমলকি খাবেন। কাঁচা আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি' থাকে যা চোখ, চুল ও দাঁতকে ভাল রাখবে, পেটের গ্যাসকে সারিয়ে তুলে ত্বকে আনবে এক উজ্জ্বল্য ।
১১। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর বজ্রাসনে বসে চুল আঁচড়ান। এতে করে চুল পড়া রোধ হবে এবং চুল সহজে পাকবেও না ।
১২। ভাত খাওয়ার পূর্বে প্রতিদিন কিছু রসুন খাবেন। এতে করে বাত হবে না এবং চুলও পড়বে না।
রোগ নিরাময়ে শরীর চর্চা
শরীরের স্বাভাবিক সৌন্দর্য আপনাকে যে মর্যাদা দান করবে, ভাল পোষাক কখনও তা পারবে না। সুন্দর কোনও বন্য প্রাণীর পোষাকের দরকার পড়ে না তবুও ওরা সুন্দর। এবং এটিই তাদের স্বাভাবিক সৌন্দর্য। বছর দশেক পূর্বেও আমরা দৈহিক সৌন্দর্য নিয়ে ততটা সচেতন ছিলাম না, আজ হয়েছি। আগে আমরা নাক, চোখ এবং মুখ নিয়েই শুধু মাথা ঘামাতাম । আজ টিকলো নাকের চাইতেও মানুষকে সুন্দর করে তার সুন্দর শরীর। পাতলা ঠোঁটের চেয়েও মানুষকে সুন্দর করে তোলে তার চটপটে দ্রুত হাঁটাচলা ।
আমাদের শরীর অনেকটা ব্যাংকের মতো। ব্যাংকে যদি আমরা টাকা জমিয়েই রাখি কিন্তু খরচ না করি, তবে বছর শেষে সুদে আসলে দ্বিগুণ হবে। ঠিক সেরকম ভাবে আমরা যদি কায়িক পরিশ্রম না করে শুধু খেয়েই যাই তবে শরীরে বাড়তি মেদ জমে যাবে।
মেদ কেন জমে ?
আমি মনে করি মেদ জমার প্রধান কারণ আলস্য ও নিষ্ক্রিয়তা। প্রতি ছ'বছর অন্তর আমাদের শরীরের মেটাবলিক রেট কমতে থাকে। তাই আমরা ২০ বছর বয়সে যে খাবার খাই ২৬ বছর বয়সেও যদি সে খাবার খেয়ে থাকি তখনই আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যাবে।
মেদ মজা কি কোনও ধরনের অসুস্থতা ?
মেদ জমা তখনই অসুস্থতায় রূপ নেবে যখন পুরুষদের দেহের ওজন তার স্বাভাবিক ওজনের চাইতে ২০ শতাংশ বেশি হবে এবং মেয়েদের ২৫ শতাংশ বেশি হবে ।
শরীরের মেদ বৃদ্ধিতে করণীয়
মেদ বৃদ্ধি পেলে আপনাকে খাদ্যের পরিমাণ কমাতে হবে নতুবা কায়িক পরিশ্রম বাড়াতে হবে।
মেদ বৃদ্ধিতে খাওয়া দাওয়ার বিশেষ ভূমিকা
আমাদের একটি বিশেষ স্বভাব আছে যখন তখন আমরা হুটহাট করে এটা সেটা মুখে দিয়ে ফেলি। এটি অনুচিত। আমাদের এ স্বভাব ত্যাগ করতে হবে। যদি কখনও অসময়ে খিদে পায় তবে মুড়ি, ছোলা কিংবা শশা ও টমেটোর সালাদ খেয়ে নিন। ভাজাভুজি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন না। দুপুরের খাবারের চেয়ে রাতে হালকা খাবার খাবেন। রাত আটটার মধ্যেই রাতের খাবার শেষ করুন। কারণ রাতের দিকে আমাদের শরীরের মেটাবলিক রেট কমে যায়। যার ফলে ক্যালরির পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং শরীরে মেদ জমে যায়। রাতে যদি খাবার খেতে দেরী হয় তবে গ্যাস্ট্রিক সহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য প্রতি রাতে খাবার পরে ১৫/২০ মিনিট হাঁটুন। বাইরে হাঁটার ব্যবস্থা না থাকলে ঘরেই পায়চারি করুন ।
টেনশন কি
কোনও মা হয়তো জানালা দিয়ে দেখছেন যে, তার ছেলে গাছে উঠছে তখন তার মনে মাতৃসুলভ একটি উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। এই উদ্বেগই হচ্ছে টেনশনের প্রাথমিক অবস্থা। এই উদ্বেগ থেকেই টেনশনের জন্ম। সব উদ্বেগের পরিণতি
কিন্তু টেনশন নয়। ধরুন কোনও ঘটনা হয়তো ঘটতে পারে আবার নাও ঘটতে পারে। মা যখন দেখতে পাবেন যে, ছেলে গাছে উঠতে উঠতে মগডালে উঠে গিয়েছে তখনই সেই উদ্বেগ টেনশনে পরিণত হয়। সব ধরনের টেনশনের জন্ম হয় ‘ভয়' থেকে। যেমন ধরুন পঞ্চাশজন লোকের সামনে দাঁড়িয়ে আপনাকে জীবনের প্রথমবার অভিনয় করতে হচ্ছে, তখনই আপনার ভেতরে টেনশনের সৃষ্টি হচ্ছে। এ সবই ভয়ভীতির অন্যরূপ। আরও যদি গভীরভাবে দেখতে যান তবে দেখবেন- একটি অহংবোধ এই ভীতির জনক।
'আপনি অহংকারী তাই আপনি টেনশনে ভুগে থাকেন' এ কথা যদি আপনি কাউকে বলতে যান তবে দেখা যাবে, সে অত্যন্ত অবাক হয়ে যাবে। কিন্তু টেনশনের গভীর কারণ এটিই। আমরা যে সমালোচনা করি তা কিন্তু এই অহংবোধ থেকেই। আমরা অন্যকে নিজের চাইতে কাজে কর্মে কিংবা চিন্তা ধারায় খাটো কিংবা অপটু ভেবে থাকি। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে, 'প্রতিটি মানুষই নিজেকে অন্যের চাইতে উৎকৃষ্ট ভাবতে ভালবাসে এবং বিশ্বাসও করে।' প্রতিটি মানুষের মনেই এমন একটি বোধ কাজ করে যে, 'আমি বুঝি পৃথিবীর সব বিষয় জেনে ফেলেছি। কিংবা আমি যা করছি বা ভাবছি সেটি বুঝি শুদ্ধ আর অন্যরা যা ভাবছে সবই বুঝি ভুল। মানুষ যদি চুরিও করে থাকে, তবে সে অবচেতন মনে নিজের পক্ষেই রায় দিয়ে বলে, 'অভাব ছিল বিধায় চুরি করেছি।'
আবার যে ক্ষেত্রে নিজের চাইতে ভাল কাজ কেউ করে থাকে এবং সে সেটি করতে পারছে না সে ক্ষেত্রে যে হতাশা বা হীনমন্যতা জন্ম নেয় তাও কিন্তু এই অহংবোধ থেকেই। নাম, যশ, প্রতিষ্ঠা, ঈর্ষা, ক্রোধ ইত্যাদির জনক যেমন- অহংবোধ ভীতির জনকও তেমনি অহংবোধ। আমরা প্রতিটি কাজেই স্বীকৃতি আশা করে থাকি। যেক্ষেত্রে এই স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভবপর হয়ে ওঠে না, তখনই এই টেনশনের জন্ম নেয়। অভিনয়ের সময় আপনার মুখে কথা আটকে গেলে আপনার মনের মধ্যে যে ভাবনার সৃষ্টি হয়, সে ভাবনা থেকে কষ্ট এবং কষ্ট থেকেই টেনশন।
কারা বেশি টেনশনে ভোগেন
সব মানুষই কম বেশি টেনশনে ভুগে থাকেন। আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তি থেকে আরম্ভ করে আত্মবিশ্বাসহীন ব্যক্তি । জীবনে ব্যর্থ মানুষ থেকে শুরু করে সফল ব্যক্তিটি পর্যন্ত কখনও না কখনও টেনশনে ভুগে থাকেন। কেউ অল্প কেউ বা বেশি টেনশন করে থাকেন। মনস্তাত্বিকদের মতে যারা অমিশুক প্রকৃতির, অত্যন্ত ছোটখাটো সমস্যা যাদেরকে ভোগায়, অল্পতেই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন, নিজের ওপরে আস্থা কম, যারা স্বপ্ন বিলাসী, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব সম্পন্ন এবং স্বার্থপর লোক— এরাই বেশি টেনশন করে থাকেন। যাদের নিজের ওপর আস্থা নেই টেনশন করলে এরা মানসিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েন। যারা দুশ্চিন্তাপ্রবন তারা টেনশন করলে আরও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। এবং যিনি স্বপ্ন বিলাসী তিনি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আরও বেশি স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরেন। এতে করে সমস্যা তো কমেই না বরং বেড়ে চলে ।
টেনশন মুক্তির কয়েকটি উপায়
কি করে মানসিক চাপ এড়াবেন তার জন্য এখন থেকেই চেষ্টা শুরু করুন । মানসিক চাপমুক্ত জীবন পালন করা কারও পক্ষেই খুব একটা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। উচ্চ মানসিক চাপ এখন অতি সাধারণ ঘটনা।
নিম্নে বাস্তবসম্মত কয়েকটি পন্থা উল্লেখ করা হলো যার মাধ্যমে আপনি মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে পারেন ।
১। পথে যাকে পাবেন তার সাথেই দ্বন্দে জাড়িয়ে পড়বেন না। আপনি যদি কারও সাথে যোগাযোগ রাখেন তবে আসলেই কম মানসিক চাপ বোধ করবেন এবং ভারমুক্ত থাকবেন ।
২। ধীরে ধীরে কথা বলার অভ্যাস রপ্ত করুন। দ্রুত কথা বলা মানসিক চাপের ইঙ্গিতই তুলে ধরে। আপনি যদি শাস্ত্র ভঙ্গিতে কথা বলে থাকেন এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কথা বলেন, তবে আপনার শ্বাস প্রশ্বাস নিম্ন গতিসম্পন্ন হবে এবং আপনিও কম উত্তেজিত হবেন ।
৩। দেহের উত্তেজনা দূর হলে মনের উত্তেজনাও দূর হয়ে পড়ে। এজন্য হালকা ভাবে পায়চারি করুন। দেহের উত্তেজনা তাড়াবার জন্য দেহের পেশীগুলোকে শিথিল রাখুন, দেহে নিস্পৃহ ভাব আনুন ।
৪। সব কিছুতে গতি সঞ্চার করুন। যদি আপনার হাতে অনেক কাজ করার ফাঁক থাকে তবে প্রথমে একটি কাজে মনোনিবেশ করুন । আবার কিছুক্ষণ পর অন্যটিতে মনযোগ দিন। পরবর্তীতে আবার প্রথমটিতে ফিরে আসুন। এতে করে আপনি কাজ করার প্রতি যে ভীতিজনক অবস্থার সৃষ্টি হবে তা কাটাতে পারবেন এবং নতুন উদ্যম ও গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে পারবেন।
৫। চা, কফি ইত্যাদি বার বার খাবেন না। দু'কাপ কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন আপনার হৃদযন্ত্রের কম্পনকে প্রতি মিনিটে ১৬ বার বৃদ্ধি করবে এবং সেই সাথে আপনি আরও উদ্বিগ্ন ও খিটখিটে হবেন।
৬। টেনশন হলে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ না হয়ে প্রথমেই টেনশনের মূল কারণ খুঁজে বের করুন। এবং কারণটির সঠিক মূল্যায়ন করুন। এজন্য আপনি বিষয়টিকে একতরফা ভাবে না দেখে তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টি দিয়ে ব্যাপারটিকে পুরোপুরি দেখুন। এতে করে নিজের অবস্থানটা বুঝতে পারা যায় এবং সমস্যার সমাধান
করা যায়।
৭। যখনই টেনশন হবে তখনই চিন্তাকে অন্যখাতে বইয়ে দিন। দীর্ঘসময় একই বিষয় নিয়ে চিন্তা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এক্ষেত্রে নামতা পড়তে পারেন কিংবা ১০০ থেকে ১ পর্যন্ত উল্টো দিকে গুনতে পারেন ।
৮। হাঁটতে হাঁটতে কথা বলতে পারেন। অন্যের সাথে এই আলোচনা কম আনুষ্ঠানিক মনে হবে এবং পরস্পর দৃষ্টি সংযোগ কম হওয়ার জন্য বাড়তি উদ্বেগ ও মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে না ।
৯। দিন শুরুর সাথে সাথেই কাজ আরম্ভ করবেন। কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ রেখে গুরুত্বপূর্ণ কাজ দিয়ে দিন শুরু করুন এতে করে বাড়তি সময় বাঁচিয়ে সামান্য আগেই অফিস ছাড়তে পারবেন।
১০। যখনই আপনি মানসিক চাপ বোধ করবেন তখনই শরীর চর্চার জন্য কিছুটা বিরতি গ্রহণ করুন ।
১১। যখনই আপনার মন বিদ্রোহ করবে তখনই দৃষ্টি অন্য ঘটনার দিকে নিবদ্ধ করুন। যা আপনার মনযোগ আকর্ষণ করবে। কিংবা এমন কিছু দেখা কিংবা শোনায় মনোনিবেশ করুন যা আপনার মনটাকে ভুলিয়ে রাখবে। তদুপরি ঐ ধরনের ঘটনায় কখনই মনোনিবেশ করতে যাবেন না যা টেনশন বাড়াবে।
১২। খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারেন যেমন- কম্পিউটার গেম, একা একা কোনও খেলা অথবা শব্দ হেয়ালী ইত্যাদি। যখন আপনি শব্দ গঠনে হিমসিম খাবেন তখন মানসিক চাপের কথা চিন্তাই করতে পারবেন না।
১৩। টেনশন তাড়াতাড়ি কমিয়ে ফেলার সহজ উপায় ইচ্ছে এমন কোনও ব্যক্তির কাছে আপনার সমস্যাটি বলুন যিনি সহৃদয়, সহানুভূতিসম্পন্ন এবং আপনাকে ভাল পরামর্শ দেবার ক্ষমতা রাখে। এতে করে আপনার মনের কষ্ট উপশম না হলেও অধিকাংশ সমস্যাটিকে অন্য আলোয় দেখতে পারবেন। এ ধরনের সমস্যায় আপনার যদি কোনও ভুল থেকে থাকে তবে ঐ ব্যক্তি আপনার সামনে তা তুলে ধরতে পারবেন।
১৪। কোনও সমস্যায় পড়লে তা নিয়ে একা না ভেবে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে আলোচনা করলে সমাধানের জট খুলে একাধিক সমাধানের পথ উন্মোচিত হবে ।
১৫। যখন আপনার প্রাণ প্রাচুর্য খুব উন্নত থাকে, তখন সবচাইতে বিরক্তিকর কাজগুলো করুন এবং যখন দিনের শেষে নিম্নমাত্রার উদ্দীপনা বোধ করবেন ঐ সময়টাতে শিল্প চর্চা করুন।
১৬। আপনার ঘরবাড়ি যদি জঞ্জালে পরিণত হয়, তখন আপনি নিয়ন্ত্রণহীনতা বোধ করেন। তাই সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে চলে নিজেকে মানসিক চাপমুক্ত রাখুন ।
১৭। অন্যের ওপর দোষ দেবেন না। নিজেকে নির্দোষ ভেবে অন্যের ওপর দোষ চাপানোটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এটি মস্ত ভুল। কারণ জীবনটা আপনার । তাই জীবনের সমস্ত ব্যর্থতার দায়িত্বও আপনার
১৮। বিপর্যয় মুহূর্তে অকথ্য গালিগালাজ না করাই শ্রেয়। ওসব আপনার সমস্যা সমাধানে কোনও ভূমিকা রাখবে না ।
১৯। কিছু সময়ের জন্য কাজকর্ম এড়িয়ে চলুন। বাড়ি ফিরে এসে টেলিভিশন দেখলে আপনার ওপরে 'বোঝার ওপর শাকের আঁটি'র মতো চাপ আরও বাড়বে। ঐ সময়টা পরিবার পরিজনদের সাথে কাটান অথবা গান শুনুন ।
২০। দীর্ঘ সময় ধরে নানা ঘটনা কল্পনায় ঠাঁই দেবেন না। ভাবতে থাকুন আপনি যা ভাবছেন তা সত্য নয় ওগুলো কল্পনা মাত্র ।
২১। সমালোচনার ভয়ে অনেকের মনে টেনশনের জন্ম হয়। মনে করুন যিনি আপনার সমালোচনা করছেন তিনি আপনার কাজের সমালোচনা করছেন- ব্যক্তি আপনাকে নয়। যিনি আপনার সমালোচনা করছেন তিনি সঠিক নাও হতে পারেন। ভাবুন সমালোচনা থেকেই আপনি আপনার কাজের পদ্ধতি এবং নিজের সম্পর্কে চিন্তা করতে পারছেন ।
২২। নিয়মিত ভাবে শরীর চর্চা করুন। মনে রাখবেন সুস্থ দেহেই সুস্থ মনের বিকাশ ।
২৩। এ পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত এমন কোনও ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেননি যিনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অপরাজিত থেকেছেন। আপনি যদি বুদ্ধি, বিবেক, নীতি এবং মনের জোর দিয়ে লড়াই করেন তবে পরাজয় আপনার মনকে গ্লানিতে ভরে তুলবে না। পরাজয় যেমন কাম্য নয় তেমন পরাজয় অপমানজনকও নয়। এ সাবলীল দৃষ্টিভঙ্গিটুকু আপনাকে টেনশনের হাত থেকে মুক্তি দেবে। ‘কেন পারব না' এই মনোভাব থাকা ভাল কিন্তু বার বার চেষ্টার পরও যদি না পারেন তবে হতাশ হবার কারণ নেই। 'আমি পারি' তবে সব কাজ পারি এটি আপনার দাম্ভিকতারই প্রকাশভঙ্গি। আপনি মনে রাখবেন অনেক বিখ্যাত ক্ষমতাবান ব্যক্তিই অনেক ব্যাপারে অপদার্থ। আপনাকেই যে সুপারম্যান হতে হবে এমন কোনও কথা নেই।
২৪। স্বপ্ন দেখুন একটু আধটু, তবে পা যেন মাটিতেই থাকে আকাশে না উড়ে। টেনশন যখন খুব বেশি হবে তখন মাঝে মধ্যে জীবন থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে নিজেকে এসকেপিস্ট ভেবে ফেলার কারণ নেই। প্রকৃতির কাছাকাছি ঘুরে আসুন। প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা এবং প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়ানোটা সুস্থ সুন্দর মন ও শরীরের চাবিকাঠি।
২৫। পূর্ব পরিকল্পিত ছক অনুযায়ী কাজ করুন, ঘুমোতে চেষ্টা করুন । প্রয়োজনীয় ঘুম মাত্রাতিরিক্ত হতাশা, আবেগ এবং মানসিক সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ
করে থাকে।
২৬। মনের শান্তি অর্জনের একমাত্র শক্তিশালী উপায় হলো জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া। এটি করা যায় সমাজ সেবায় আত্মনিয়োগের মাধ্যমে ।
২৭। সব সময়ে নিজেকে নিয়ে ভাববেন না, এতে করে টেনশন বেড়ে যায়। নিজের থেকে মন সরিয়ে অন্য কাজে কিংবা অন্যের কাজে মন দিন। নিজের ভালবাসা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিন।
২৮। নিজেকে একজন অতি সাধারণ মানুষ ভাবুন। দোষ ত্রুটি আপনারও হতে পারে। সব সময় মনে করবেন না যে, আপনি সাধু। বুঝতে চেষ্টা করুন যে, কোনও সংকট সৃষ্টিতে হয়তো আপনারও ভুল ভ্রান্তি থাকতে পারে।
২৯। আপনার বাড়ির আশে পাশেই অনেক ছিন্নমূল মানুষ বাস করে থাকে। যারা নিত্য বিপদের সাথে লড়াই করছে, কিন্তু বিপদে মুষড়ে পড়ছে না । ওরাও কিন্তু মানুষ। মনে রাখবেন, জগতের সবচেয়ে দুঃখী ব্যক্তিটি আপনি নন, বিপদ যাদের নিত্যসঙ্গি তারা যদি বিপদে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারে আপনি কেন পারবেন না। আপনার সাময়িক ব্যর্থতার অর্থ আপনার পুরো জীবনের ব্যর্থতা নয় ।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]