প্রশান্তিময় ঘুমের কয়েকটি উপায় ভালো ঘুমের জন্য মধ্যযুগের সাতটি উপায়

দুপুর বেলা আপনি যদি দুর্বল বোধ করেন, তবে ধরে নিতে হবে আপনার আরও বেশি পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। মনে রাখবেন, আপনার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম জরুরী এবং সুখনিদ্রা হচ্ছে চূড়ান্ত। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আপনি যদি মনে করেন আরও খানিকক্ষণ ঘুমিয়ে নিতে পারলে ভাল হতো, তবে বুঝে নিতে হবে আপনার ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা রোগ আছে। আজকাল মানুষের অনেক কাজের চাপ বেড়েছে। এছাড়াও সাংসারিক ঝঞ্ঝাট এবং অন্যের বেগার খাটাতেও ঘুমের নির্ধারিত সময় টুকুতে টান পড়ছে। এ ধরনের ঘুমের ব্যাঘাতজনিত অবসাদের জন্য আপনার শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিবে। শরীর ম্যাজম্যাজ করবে, শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। কোনও ব্যাপারে মনযোগ দিতে ব্যর্থ হবেন। সারাদিন তন্দ্রাচ্ছন্নতায় ভুগবেন। অবশেষে মানসিক ভারসাম্যও নষ্ট হবার উপক্রম হয়। বিশ্বের অসংখ্য লোক এ রোগে ভুগছে। খোদ আমেরিকাতে ১০ কোটি লোক বিশ্রাম নেবার সময় পাচ্ছে না ।
সুখনিদ্রার পরিমাণ
ঘুমের গভীরতা ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে। তাই প্রতিটি ধাপে কোনও রকম ব্যাঘাত সৃষ্টি করা যাবে না। গণ্ডগোলের মধ্যে আট ঘণ্টা ঘুমোনোর চাইতে আপনার নিরিবিলি ছ'ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। গবেষকদের মতে সুখনিদ্রা চারটি পৃথক পর্বের সমন্বয়ে গঠিত। এবং এ পর্বগুলো ধীরে ধীরে গভীরতর পর্যায়ে প্রবেশ করে। পর্বগুলো ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেলে আপনার ঘুম ভাল হবে না । শরীর ম্যাজম্যাজ করবে। তাই আপনি যদি ঘুমের সময় নাও বাড়াতে পারেন তবুও ঘুমের মানের উন্নয়ন ঘটান। সবচাইতে ভাল বিশ্রামের জন্য ঘুমের কয়েকটি কৌশল জানিয়ে দেওয়া হলো :
ঘুমের নির্দিষ্ট সময় মেনে চলুন
প্রতিদিন সকালে নির্দিষ্ট সময়ে বিছানা ছাড়ুন। নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোতে গেলে এবং ঘুম থেকে জেগে উঠলে অল্প কয়দিনেই দেখবেন আপনার চমৎকার ঘুমের অভ্যাস গড়ে উঠছে। যারা সাধারণত ঘুমের ব্যাপারে অনিয়ম করে থাকেন তাদেরই ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। দেখা যায় এরা কখনও ৫ ঘণ্টা ঘুমোচ্ছেন আবার কখনও ৮/৯ ঘণ্টাও ঘুমোচ্ছেন। ঘুমোনোর সময় আগপিছ করে পরীক্ষা করে দেখা উচিত কতক্ষণের সুখনিদ্রায় আপনার অবসাদ দূর হবে।
ঘুমের ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন
যারা প্রতিরাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে অভ্যস্থ হয়ে গেছেন তারা ঘুমের ওষুধের অভ্যাস ত্যাগ করুন। এগুলো নেশার সৃষ্টি করে। এবং ধীরে ধীরে ঘুমের ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস করে।
ঘুম আসছে না কেন, ভেবে ঘাবড়াবেন না
অনেক সময় হয়তো দীর্ঘক্ষণ যাবৎ এপাশ ওপাশ করলেও ঘুম আসতে চায় না । রাতে ঘুমোতে গেলে যদি বিভিন্ন ধরনের বাজে চিন্তা মাথায় এসে মন বিক্ষিপ্ত হয়, তবে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করবেন। এই সময়টা আপনি উপভোগ করতে পারেন এবং আরামপ্রদ কিছু করতে পারেন, যেমন- আপনি কোনও একটি বই পড়তে পারেন। এভাবে মনযোগ যদি অন্য খাতে বইয়ে দিতে পারেন তবে অল্প সময় পরেই আপনি দেখবেন উদ্বেগ কাটিয়ে উঠে ঘুম ঘুম ভাব অনুভব করছেন ।
যদি খাদ্যের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে থাকে
অতিরিক্ত মশলা যুক্ত খাবার খাবেন না
অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার আমাদের বদহজম ঘটায় এবং বুক জ্বালার উপসর্গ ঘটিয়ে থাকে। এ কারণে অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার না খাওয়াই উচিত রাতের বেলা ভারী খাদ্য পরিত্যাগ করুন। যেমন- রাতে যদি চাইনীজ খান তবে তা আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে। আবার শশা, মটরশুটি, ফুলকপি ইত্যাদি খাদ্যও অনেক সময় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
রাতের বেলা কম খাবার গ্রহণ
কথায় বলে ‘সকালে খাও রাজার মতো, দুপুরে প্রজার মতো এবং রাতে ফকিরের মতো।' গবেষণায় দেখা গেছে দিনের বেলা মানুষ বেশি কর্মক্ষম থাকে এবং শরীরের সমস্ত ক্রিয়া চালু থাকে। তাই দিনের খাদ্যের ক্যালরি রাতের চাইতে বেশি পাওয়া যায়। অনেকে মনে করে থাকেন যে, বেশি খেলে ঘুম ঘুম ভাব আসবে, তাই রাতে বেশি মাত্রায় খেয়ে থাকেন। এতে হিতে বিপরীত ঘটে থাকে দেখা যায় যে, তখন পরিপাকতন্ত্রের অতিরিক্ত কাজ করতে হচ্ছে। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে থাকে। আবার যদি স্বল্পাহারের জন্য ঠিকমত ঘুম না আসে তবে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য ও সবজি বেশি করে খাবেন।
খাদ্যের এলার্জি
যদি আপনি বুঝতে পারেন আপনার এই নির্ঘুম অবস্থার জন্য খাদ্যের এলার্জি দায়ী, তবে সে ব্যবস্থা আপনাকেই গ্রহণ করতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন জনের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন খাদ্যের প্রতি এলার্জি হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় যদি দুধে এলার্জি হয়, তবে পেটের ব্যথায় সমস্ত রাত শিশু কাঁদতে থাকে । এজন্য প্রথমেই আপনাকে নজর দিতে হবে কোন্ খাদ্য থেকে আপনার এলার্জি হচ্ছে। ঐ সকল খাদ্য আপনার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন এবং ঘুম পর্যবেক্ষণ করুন। দ্বিতীয় সপ্তাহে আবার ঐ খাদ্যটিই খেয়ে দেখুন আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে কি-না। যদি ঘটে থাকে তবেই বুঝতে পারবেন যে, ঐ খাদ্য থেকেই আপনার এলার্জির উৎপত্তি ।
মাঝরাতে ক্ষুধার্ত বোধ করা
এমন অনেক লোক দেখা যায় যারা হঠাৎ করে মাঝরাতে ক্ষুধার্ত বোধ করেন এবং জেগে উঠেন। এবং যতক্ষণ পর্যন্ত কিছু না খাবেন ততক্ষণ পর্যন্ত শান্তি পাবেন না। প্রকৃত পক্ষে এটি একটি অভ্যাস। এ অভ্যাস দূরীকরণে আপনার সদিচ্ছাই একমাত্র উপায় হতে পারে। কারণ এ অবস্থা বেশ ক্ষতিকারক। যারা সাধারণত একবেলা খান কিংবা আলসারের কারণে বার বার খেয়ে থাকেন, এদের মধ্যে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে দেখা যায়। মধ্যরাতে যখনই আপনি ক্ষুধা অনুভব করবেন, তখনই এ অবস্থা কিছুক্ষণ ধরে চলতে দিন এবং পুনরায় কিন্তু না খেয়ে যদি শুধুমাত্র এক গ্লাস পানি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন, তবে ধীরে ধীরে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাবেন ।
ওজন যাতে না বাড়ে সেজন্য উপবাস থাকা
এমন অনেকে আছেন যারা ওজন কমানোর জন্য রাতে একেবারেই খান না । রাতে একেবারে না খেলে ক্ষুধার যন্ত্রণায় ঘুম নষ্ট হয়। ফলে অনেকে বেশ শক্ত ধরনের সমস্যায় পড়ে যান। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এবং বিভিন্ন মানসিক ও শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও এভাবে না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে ভিটামিনের অভাবও হতে পারে। তাই রাতের বেলা একেবারে উপবাস থাকার চাইতে হালকা কিছু খেয়ে নেওয়া ভাল ।
রক্তে শর্করা কম থাকার কারণে
যাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ কম থাকে এরাও রাতে ক্ষুধার্ত বোধ করে থাকেন। এরা রাতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে ভাল হয়। কারণ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হজম হয় দেরীতে। আবার শর্করার পরিমাণ কমে যাওয়া রোধ করে। তবে ভাজাপোড়া বা মিষ্টি খাওয়া ঠিক নয়। কারণ এতে দ্রুত শর্করার পরিমাণ বাড়লেও আবার তাড়াতাড়ি কমেও যায় ।
কফি কিংবা মদে আসক্ত হবেন না
কফির ভেতরে যে ক্যাফেইন থাকে তা আট ঘণ্টা পর্যন্ত শরীরকে উত্তেজিত রাখে। অতএব ক্যাফেইন সমৃদ্ধ অন্যান্য খাবার যেমন- চকোলেট, কোক, চা ইত্যাদিও পরিহার করুন। অ্যালকোহলে আসক্ত হবেন না। কারণ অ্যালকোহল ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে ঠিকই, কিন্তু দেহে তা শোষিত হবার পর পুনরায় দেহকে উত্তেজিত করে ফেলে। তাই পেটে এ দ্রব্য যত বেশি পড়বে তত বেশি ঘুমের বিঘ্ন সৃষ্টি করবে।
সব সমস্যার সমাধান যদি হতে পারে, তবে ঘুমের সমস্যাও সমাধানের উর্ধে নয়। ওপরে উল্লেখিত নিয়ম মেনে চলুন, দেখবেন এক সময় আপনারও সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।
নিয়মিত হাঁটার সুফল
আমাদের এই ব্যস্ত ও যান্ত্রিক জীবনে ব্যায়াম করার অবকাশ অনেকেই পান না । কিন্তু শরীরকে সুস্থ ও সক্ষম রাখার জন্য ব্যায়াম প্রতিটি সুস্থ লোকের জন্যই করণীয়। শুধু খাওয়া দাওয়া এবং বিশ্রাম করাই শারীরিক সুস্থতার একমাত্র উপায় নয়। ব্যায়াম করা মানেই যে আপনাকে দৌড়োতে হবে কিংবা সাঁতার
কাটতে হবে তা কিন্তু নয়। নিয়মিত হাঁটাও কিন্তু আপনার জন্য অত্যন্ত ভাল এবং সহজ ব্যায়াম। প্রতিদিন আধ ঘণ্টা করে আপনি যদি সপ্তাহে চারদিন হাঁটেন তবে আপনার শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অত্যন্ত উপকৃত হবে। সুতরাং আপনি যদি
সুস্থ থাকতে চান, তবে আপনার পা দুটিকে কাজে লাগান ।
হাঁটলে কি উপকার হয়
১। মেরুদণ্ড সুস্থিত হয়। মাংসপেশী টানটান হয় এবং পিঠের ব্যথা কমে । ২। আপনি যদি হাঁটেন তবে দাঁড়ানোর চেয়ে মেরুদণ্ডের হাড়ে কম চাপ পড়বে, এমনকি বসে থাকার তুলনাতেও কম চাপ পড়বে ।
হাঁটার ফলে পেটের উপকার
নিয়মিত হাঁটার ফলে আপনার পাকস্থলীর কার্যাবলী সুস্থিত হবে, এবং পেটের
মেদ কমার ফলে আপনার ওজনও কমবে।
১। নিয়মিতভাবে হাঁটলে আপনার হজম ক্ষমতা বাড়বে।
২। ক্ষুধামান্দ্য প্রতিরোধ হবে।
৩। জগিং করার সময় যে পরিমাণ ক্যালরি ক্ষয় হয় হাঁটলেও সমপরিমাণে ক্যালরিই ক্ষয় হয়।
মাথার উপকার
১। হাঁটার ফলে মাথার খুলিতে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। এর ফলে মাথা ব্যথার অস্বস্থিকর অবস্থা দূর হয়।
২। প্রাকৃতিক রাসায়নিক এনডোরফিন নিঃসরণের মাধ্যমে উদ্যম বৃদ্ধি পায় । ৩। হাঁটলে মস্তিষ্কের অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে। এর ফলশ্রুতি স্বরূপ চিন্তাশক্তিও বাড়ে ৷
৪। মস্তিষ্কের শিরা স্থিতিস্থাপক থাকে এবং রক্ত প্রবাহের সচলতা বৃদ্ধি পেয়ে স্ট্রোকের সম্ভাবনা হ্রাস পায় ।
হাড়ের উপকার
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের হাড়ের দুর্বলতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে অনেকে ক্যালসিয়াম সেবন করে স্থূলত্ব অর্জন করে থাকেন। এর শিকার থেকে বাঁচতে হলে হাড়ের ব্যায়াম আবশ্যক। শরীরের ওপর ভর নির্ভর ব্যায়াম হাড়ের জন্য উপকারী। যেমন- হাঁটা। ভিটামিন 'ডি' শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই প্রতিদিন রোদের মধ্য দিয়ে কিছু সময় হাঁটুন। সূর্যালোক আপনার শরীরে ভিটামিন 'ডি' তৈরিতে সাহায্য করবে।
ফুসফুসের উপকার
দৌড়োলে আমরা যেমন হাঁসফাস করতে থাকি, হাঁটলে তেমনটি হয় না । তবুও এটি ফুসফুসের কার্যাবলীকে সংহত করে।
১। ডায়াফ্রামের মাংসপেশীকে শক্তিশালী করে।
২। ব্রঙ্কাইটিসের সম্ভাবনা হ্রাস করে।
৩। ধূমপানের আগ্রহ কমায় ।
হৃদপিন্ডের উপকার
১। ধমনীতে জমাটবদ্ধ রক্তের স্নেহপদার্থ দূর করে।
২। রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।
৩। হৃদসংবহনালীর উপকার হয়।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]