মেয়েদের কয়েকটি মানসিক সমস্যা ও তার চিকিৎসা মহিলাদের গর্ভকালীন মানসিক সমস্যা

আমাদের দেশের মেয়েদের অর্থনৈতিক অধিকার না থাকায় মেয়েরা সমাজে সমান অধিকার থেকে বঞ্চিত। সামাজিক বাধা-নিষেধের শিকার প্রধানতঃ তারাই। আর সম্ভবত এসব কারণেই মহিলারাই বেশি মানসিক সংঘাতে ভুগে থাকেন। মহিলাদের কিছু মানসিক সমস্যা, ঋতু সমাপ্তি, সন্তান প্রসব ও ঋতুস্রাবের সাথে জড়িত এ ধরনের কিছু সমস্যা নিম্নে বর্ণনা করা হলো :
মহিলাদের গর্ভকালীন মানসিক সমস্যা
গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলার মধ্যে বিষাদ দেখা যায়। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণেই এ ধরনের বিষাদ সৃষ্টি হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থা মহিলাদের দুশ্চিন্তার একটি প্রধান কারণ। কিন্তু গর্ভাবস্থায় মানসিক রোগ খুব কম ঘটে থাকে। গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে মেজাজের খিটখিটে ভাব পরিলক্ষিত হয়। এর কারণ হচ্ছে অধিকাংশ মহিলাই ভেবে থাকেন পরিবারে কোনও রকম অর্থনৈতিক চাপ বাড়বে কি-না, বাচ্চা কোনও রকম খুঁত নিয়ে জন্মাবে কি-না এবং সংসারের বাড়তি দায়িত্ব তিনি পালন করতে পারবেন কি-না ইত্যাদি ।
চিকিৎসা
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জনে বিভিন্ন রকম কথা বলে থাকেন। এভাবে অনেকের কাছ থেকে পাওয়া ভুল তথ্য ও ভুল ধারণা রোগিনীকে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ করে তোলে। এ ব্যাপারে পরিবারের অন্যান্যদের সাথে খোলাখুলি আলোচনা করা ভাল। স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করা এ সময় বেশি প্রয়োজন। সবার সহযোগিতা ও সমঝোতা রোগিনীকে বিশেষ সাহায্য করবে।
মাসিক-পূর্ব মানসিক সমস্যা
মাসিকের প্রায় এক সপ্তাহ পূর্ব থেকেই রোগিনীর মধ্যে দৈহিক, মানসিক এবং আচরণগত পরিবর্তন দেখা দেয়। ঋতুস্রাব শুরু হয়ে গেলে এ ধরনের সমস্যা আর থাকে না।
কি কি লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়
এ সময় প্রায় সবাই ব্যথা বোধ করে থাকে। এছাড়াও মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। আবার অনেকের মধ্যে দুশ্চিন্তা, বিষাদ গ্রস্থতা, অস্থিরতা ইত্যাদি দেখা যায়। মাথা ধরা, বুক ধড়ফড় করা ও নিদ্রাহীনতা ইত্যাদি প্রায় সবার মধ্যেই দেখা যায়। এ ছাড়া বমি ভাব, মাথা ঘোরা ইত্যাদিও ঘটে থাকে । এমন অনেকে আছেন যারা অতিরিক্ত ক্ষুধা ও তৃষ্ণাবোধ, যৌনবোধের আধিক্য, নিদ্ৰাধিক্য ইত্যাদি বোধ করে থাকেন ।
অনেকের স্তনের স্ফীতি ও ব্যথা, তলপেট ভারী বোধ হয়ে থাকে ! গবেষণায় দেখা গেছে যে, শতকরা ৮০ জন মহিলাই মাসিক পূর্ব অস্থিরতা বোধ করে থাকেন। কারণ নির্ণয়ের জন্য অনেকে বলে থাকেন ইস্ট্রোজেন হরমোনের আধিক্য এবং প্রজেসট্রোজেনের স্বল্পতা এর জন্য দায়ী। অনেকে মনে করেন জৈবিক কারণে এ রকম হয়ে থাকে। তারা মানসিক ও সামাজিক সমস্যাকে এজন্য দায়ী করে থাকেন।
চিকিৎসা
রোগিনীর মনে যদি কোনও নৈরাশ্য জন্মে থাকে, তবে তা দূর করে আত্মবিশ্বাস জন্মাতে হবে। এর জন্য স্বামীর সহযোগিতা ও সহানুভূতি প্রয়োজন । দৈনন্দিন জীবনে কোনও সমস্যা থাকলে সেগুলো দূর করার জন্য রোগিনীর সাথে খোলামেলা ভাবে আলোচনা করতে হবে। যারা একটু বেশি পরিমাণে অসুবিধা বোধ করেন তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বিষাদ দূরীকরণ ওষুধ কিংবা ঘুমের ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন ।
প্রসবের পরবর্তী মানসিক সমস্যা
সন্তান প্রসবের পর কিছু কিছু মহিলার মানসিক সমস্যা দেখা যায়। তবে এদের সংখ্যা কম। যারা পূর্ব থেকেই হর্ষবিষাদোন্মতায় ভুগে থাকেন এদের ক্ষেত্রেই এরূপ ঘটে থাকে। শতকরা ৫ ভাগ মহিলার এ ধরনের সমস্যা হয়। সাধারণত প্রথম প্রসবের পরই এ রকম হয়ে থাকে।
এ রোগের লক্ষণ সমূহ
রোগ শুরু হবার প্রথমে চেতনার আচ্ছন্নতা থাকে। এরপর ধীরে ধীরে চঞ্চলতা, উত্তেজনা, নিদ্রাহীনতা, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি দেখা দেয়। সন্তান প্রসবের প্রথম দুইদিন কোনও উপসর্গ থাকে না। আস্তে আস্তে বিশেষ একটি রোগ নির্দিষ্ট রূপ নেয়।
চিকিৎসা
এ ধরনের মানসিক সমস্যায় অন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সংসারের দৈনন্দিন সমস্যা ও দুশ্চিন্তা দূর করার চেষ্টা করতে হবে। প্রসবোত্তর নারীকে মানসিক সমর্থন দান করতে হবে।
রজবন্ধ বা মেনোপজ জনিত মানসিক সমস্যা
মেনোপজের সময়টাতে শতকরা ৭৫ জন মহিলা কোনও না কোনও সমস্যায় ভুগে থাকেন। হরমোনের পরিবর্তনকে অনেকে বিষাদের কারণ বলে মনে করেন। বিভিন্ন কারণে বিষাদ ঘটে থাকে। যেমন- অনেক মহিলাই মনে করে থাকেন মাসিক বন্ধ হওয়া মানে যৌন জীবনের পরিসমাপ্তি কিংবা বার্ধক্যের শুরু। এছাড়াও ঘরোয়া কিছু ব্যাপার যেমন- সস্তানরা তাদের সংসার শুরু করে এবং দূরে সরে যায়। অধিকাংশ মহিলা এ সময় রাতে উষ্ণ প্রবাহ বোধ করে থাকেন।
চিকিৎসা
ইস্ট্রোজেন হরমোন রাতে ঘেমে যাওয়া রোধ করে। কিন্তু মানসিক সমস্যার জন্য মনোবিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা প্রয়োজন।
গর্ভ নিরোধ বড়ি কিংবা বন্ধ্যাকরণ
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভনিরোধ বড়ি সেবনে বিষাদোন্মত্ততা, যৌনতা হ্রাস, রক্তনালীতে অস্বাভাবিকতা এমন কি ক্যান্সারের কথাও অনেকে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু নিশ্চিত ভাবে এখনও কিছু জানা যায়নি।
গর্ভাবস্থার পরিসমাপ্তির সাথে মানসিক সমস্যা
---
রোগিনীর কিংবা তার গর্ভের সন্তানের যদি স্বাস্থ্যহীনতা কিংবা জীবন সংশয় দেখা দেয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ মতো গর্ভাবস্থার পরিসমাপ্তি ঘটাতে হবে। এ অবস্থায় কখনও মানসিক সমস্যা দেখা দিতেও পারে, আবার নাও হতে পারে।
অস্ত্রপচার দ্বারা জরায়ুর অপসারণে মানসিক সমস্যা
পূর্বে জরায়ুর অপসারণকে মানসিক সমস্যার কারণ মনে করা হতো। বর্তমানে এ ধারণা সঠিক বলে বিবেচিত নয়।

FOR MORE CLICK HERE
বাংলা রচনা সমূহ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য
English Essay All
English Grammar All
English Literature All
সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ বিষয়াবলী
সাধারণ জ্ঞান আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী
ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
বি সি এস প্রস্তুতি: কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি
বি সি এস প্রস্তুতি: নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন
বি সি এস প্রস্তুতি: সাধারণবিজ্ঞান
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়
ভাবসম্প্রসারণ

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]