রপ্তানি উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত ব্যবস্থাবলী

রপ্তানি উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত ব্যবস্থাবলী Measures Taken by the Government to Improve Exports
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ'। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন বৈদেশিক মুদ্রার। এ জন্য বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নতি করতে হলে রপ্তানি বৃদ্ধি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে । রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার কর্তৃক যেসব ব্যবস্থাবলী গৃহীত হয়েছে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো ।
১। টাকার মূল্যমান যৌক্তিকীকরণ ঃ রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে টাকার বাস্তব ভিত্তিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয়েছে।
২। রপ্তানি উন্নয়ন কাউন্সিল গঠন : রপ্তানির ক্ষেত্রে রেসরকারি খাতকে সুসংগঠিত করে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য রপ্তানি কাউন্সিলও গঠন করা হয়েছে ।
৩। আমদানি নীতি উদারকরণ ঃ রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি পদ্ধতি পূর্বের চেয়ে উদার ও সহজ করা হযেছে ।
৪। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পুনর্গঠন : রপ্তানি দ্রব্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, মান উন্নয়ন, বাজারের অনুসন্ধান, ও ব্যাপক প্রচারের মাধ্যম রপ্তানি বাণিজ্যকে উন্নয়নের জন্য রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোকে আরও শক্তিশালী ও পুনর্গঠন করা হয়েছে।
৫। শুল্ক রেয়াত ঃ রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহ প্রদান করার জন্য রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল ও অন্যান্য উপাদান আমদানির উপর হতে বাণিজ্য শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
৬। আয়কর সুবিধা ঃ রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯২-৯৩ অর্থবছর থেকে বিভিন্ন রপ্তানি দ্রব্যের উপর সর্বোচ্চ ৫০% হারে আয়কর রেয়াত প্রদান করা হচ্ছে।
৭। রপ্তানি সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি গঠন ঃ রপ্তানি বাণিজ্যের সমস্যাবলির সুষ্ঠু সমাধান ও রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির সঠিক দিক নির্দেশনা প্রদানের জন্য একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে । এ কমিটির সভাপতি হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেছেন ।
৮। রপ্তানি ঋণ ঃ রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার রপ্তানিকারকদের কম সুদে, কোথাও কোথাও বিনা সুদে ঋণ দিচ্ছে । বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো প্রি-শিপমেন্ট ও প্যাকিং ঋণের সুদের হার আগের তুলনায় অনেক কমিয়েছে ।
৯। বিদেশ ভ্রমণের সুবিধা : বিদেশি ক্রেতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য রপ্তানিকারকদের সরকার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করছে । বর্তমানে নিয়ামানুযায়ী যাদের বার্ষিক রপ্তানি : আয় অনুর্ধ ২৫ লক্ষ টাকা তারা রপ্তানি আয়ের ১% হিসেবে অনুর্ধ ৩,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত বিদেশ ভ্রমণে ব্যয় করতে পারবে । নবাগত রপ্তানিকারকদের বিদেশ ভ্রমণে উৎসাহ প্রদানের জন্য সরকার বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতা করছে ।
১০। রপ্তানি পারফরমেন্স লাইসেন্স : রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার জন্য কতিপয় দ্রব্যের রপ্তানিকারকদের সরকার অতিরিক্ত আমদানি সুবিধা প্রদান করছে।
১১। ক্রেডিট কার্ড প্রবর্তন : রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য রপ্তানিকারকরা যাতে সুবিধাজনক, সম্মানজনক ও মর্যাদাসম্পন্নভাবে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারে, সেজন্য সরকার রপ্তানিকারকদের অনুকূল বরাদ্দকৃত বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে ক্রেডিট কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ।
১২। বাণিজ্য প্রতিনিধি দল প্রেরণ ঃ সরকার বিশ্ব বাজারে বাংলাদশের দ্রব্যের চাহিদা নিরুপণ, বৃদ্ধি ও বাজার সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন সময় বাণিজ্য প্রতিনিধি দল প্রেরণ করে থাকে ।
১৩। পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি : রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করেছে । সে লক্ষ্যে সরকার সমুদ্রগামী মালবাহী জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে ।
১৪ । জাতীয় রপ্তানি বেলা ঃ রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর উদ্যোগে সরকার প্রতি বছর রপ্তানি মেলার আয়োজন করে থাকে । বিগত কয়েক বছর যাবত এ মেলা মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় ।
১৫। বিদেশে বাণিজ্যিক অফিস খোলা : রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার লন্ডন, ওয়াশিংটন, মস্কো, টোকিও, দিল্লী, কলিকাতা, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি বড় বড় শহরে বাণিজ্যিক অফিস খুলেছে ।
১৬। বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন ঃ রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে । ১৭। রপ্তানি ঋণ নিশ্চিতকরণ স্কীম ঃ রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার ১৯৭৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে রপ্তানি ঋণ নিশ্চিতকরণ স্কীম চালু করেছে। এটি একটি বীমা জাতীয় প্রকল্প। এ স্কীমের আওতায় রাজনৈতিক বা অন্যকোন কারণে রপ্তানিকৃত দ্রব্যের মূল্য প্রাপ্তিতে অসুবিধা সৃষ্টি হলে সরকার প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে ।
১৮। বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন : সরকার রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদন করেছে। এর ফলে রপ্তানির পরিমাণ ও আয় উভয়ই বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
১৯। আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ ঃ বিদেশে বাংলাদেশের দ্রব্যের ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্যে বিদেশে ও দেশে বিভিন্ন মেলা ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে
২০। পৃথক ক্রেডিট লাইন সৃষ্টি ঃ সরকার কোন কোন দেশে অপ্রচলিত দ্রব্যের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য
রপ্তানিকারকদের অর্থ যোগানের জন্য একটি পৃথক ক্রেডিট লাইন চালু করেছে।
২১। ডিজাইন সেন্টার স্থাপন ও রপ্তানি দ্রব্যের মান উন্নয়ন, নমুনাকরণ ও শ্রেণী বিভাগকরণ এবং রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উপদেশ ও পরামর্শ প্রদানের জন্য সরকারি উদ্যোগে ঢাকায় একটি ডিজাইন সেন্টার স্থাপন করা হয় ।
২২। রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল গঠন ও রপ্তানি দ্রব্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, উন্নয়ন, বহুমুখীকরণ, বিপণন তথা রপ্তানির সার্বিক উন্নতি সাধনের জন্য রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে। এ তহবিল থেকে রপ্তানিকারকদের ঋণ ও বিভিন্ন সাহায্য প্রদান করা হয় ।
২৩। পুরস্কারের ব্যবস্থা : রপ্তানি বৃদ্ধিতে উৎসাহ প্রদানের জন্য সরকার সর্বোচ্চ রপ্তানিকারকরে রাষ্ট্রপতির ট্রফি সনদসহ বিভিন্ন পুরস্কারের ব্যবস্থা করছেন ।
উপরিউক্ত ব্যবস্থাবলি গ্রহণের ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১.৭ শতাংশ ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]