ডব্লিউটিও এবং বাংলাদেশ World Trade Organization (WTO) and Bangladesh

ট্যারিফ হ্রাসকরণ Reduction of Tariff
দেশীয় শিল্পের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং বিশ্বব্যাপী আমদানি শুল্ক হ্রাসের প্রক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের আমদানি শুল্কহার হ্রাস করার যে প্রক্রিয়া ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে শুরু করা হয়েছিল তা ২০১৪- ১৫. সালেও অব্যাহত রাখা হয়েছে। আমদানি শুল্কের অভারিত গড় ছিল ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে ৫৭.২২ শতাংশ, যা ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৪.৪৪ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে । বর্তমানে ৯৯.৫৭ শতাংশ ট্যারিফ লাইনের উপর মূল্যভিত্তিক শুল্ক আরোপ করা হয় । ৫টি ট্যারিফ লাইনের বিপরীতে কিছু সংখ্যক পণ্য যেমন- সিমেন্ট, ক্লিংকার, বিটুমিন, সোনা, স্টিল প্রডাক্ট এবং পুরাতন জাহাজের উপর বিভিন্ন হারে স্পেসিফিক শুল্ক বলবং রয়েছে । আমদানি শুল্কের পাশাপাশি আমদানিতব্য পণ্যের উপরে মূল্য সংযোজন কর, রেগুলেটরি ডিউটি, সম্পূরক শুল্ক, অগ্রিম আয়কর, অগ্রিম মূল্য সংযোজন কর আরোপিত হয়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছর সম্পূরক শুল্কের ধাপগুলো ছিল ২০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ, ৪৫ শতাংশ, ৬০ শতাংশ, ১০০ শতাংশ, ১৫০ শতাংশ,
২৫০ শতাংশ, ৩৫০ শতাংশ ও ৫০০ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এই ধাপগুলো অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আগের মতই আমদানির উপর ১৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর, ৫ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর ও ৪ শতাংশ হারে অগ্রিম মূল্য সংযোজন আরোপিত করা হয়েছে। এছাড়া ২০১২-১৩ অর্থবছরের মত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২৫ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্যের উপর ৫ শতাংশ হারে রেগুলেটরি শুল্ক আরোপিত রয়েছে । নিম্নের সারণিতে এমএফএন অভারিত গড় আমদানি শুল্ক হারের উপর সংস্কারের প্রভাব দেখানো হলো ।
আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহযোগিতা Regional and International Trade Cooperation
ডব্লিউটিও এবং বাংলাদেশ World Trade Organization (WTO) and Bangladesh

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত ডব্লিউটিও সেল (বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা) সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ সকল কার্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডব্লিউটিও'র বিধি-বিধান প্রতিপালনে সহায়তা করা, ডব্লিউটিও সংক্রান্ত বিষয়ে সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ করা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করাসহ অধিকতর বাজার সুবিধা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করা, বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের অবস্থান নির্ধারণ করে নেগোসিয়েশনে অংশগ্রহণ করা, এবং স্টেকহোল্ডারদের সাথে বিভিন্ন ইস্যুতে নিয়মিত মত বিনিময় করা। বিগত তিন বছরে ডব্লিউটিও সেল যে সকল উল্লেখযোগ্য কার্য সম্পাদন করেছে তা নিম্নে উল্লেখ করা হল ।
১। গত ৩০ নভেম্বর ২০০৯ হতে ০২ ডিসেম্বর ২০০৯ সময়কালে জেনেভাস্থ ডব্লিউটিও সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ৭ম মিনিষ্টারিয়াল কনফারেন্সে মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে। মিনিষ্টারিয়াল কনফারেন্সে যোগদানের পূর্বে নেগোসিয়েশনের বিভিন্ন ইস্যুতে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের অভিন্ন অবস্থান নির্ধারণের লক্ষ্যে গত ১৪-১৬ অক্টোবর ২০০৯ সময়ে তাঞ্জানিয়ার রাজধানী দারুস-সালামে অনুষ্ঠিত স্বল্পোন্নত দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীদের সম্মেলনেও বাংলাদেশ যোগদান করে। ৭ম মিনিষ্টারিয়ান্স কনফারেন্সে উন্নত বিশ্বের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার, সার্ভিস খাতে "মোড-৪" এর আওতায় বাংলাদেশী জনশক্তি রপ্তানির অধিকতর সুযোগ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল প্রচেষ্টা চালায় ।
২। স্বল্প উন্নতদেশসমূহের বাণিজ্যিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থার (ডব্লিউটিও, আংকটাড, আইটিসি, ইউএনডিপি, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ) যৌথ উদ্যোগে গঠিত Enhanced Integrated Framework (EIF) process এ বাংলাদেশ গত নভেম্বর ২০০৯ এ যোগদান করেছে। এই প্রক্রিয়ার আওতায় বাংলাদেশের বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে Diagnostic Trade Integration Study (DTIS) সম্পন্ন করার জন্য ইতোমধ্যে বিশ্ব ব্যাংককে মনোনীত করা হয়েছে। এ স্ট্যাডির মাধ্যমে দেশের বাণিজ্য ব্যবস্থায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাসমূহ চিহ্নিত করা একটি অগ্রাধিকার ভিত্তিক এ্যাকশন মেট্রিক্স প্রণয়ন করা হবে।
৩। মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা নিরুপণ (Needs Assessment) করে একটি প্রতিবেদন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় দাখিল করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে গত জুলাই ২০১০ তারিখে ঢাকায় এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রতিনিধিদের নিয়ে ডব্লিউটিও'র সহায়তার একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয় ।
৪ । বিগত সময়ে ডব্লিউটিও টেকনিক্যাল এ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রামের আওতায় ট্রিপস, এসপিএস, নোটিফিকেশন, সার্ভিস ও নন-এগ্রিকালচারাল মার্কেট একসেস (NAMA), Enhanced Integrated *Framework (EIF) process এর ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয় । তাছাড়া ৩০ জন মাননীয় সংসদ
সদস্যকে নিয়ে ডব্লিউটিও সম্পর্কিত ০২ (দুই) দিনের একটি বিশেষ ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয় ।
৫ । সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্বল্পোন্নত দেশের তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের বিষয়ে কংগ্রেসে New Partnership for Trade Development Act (NPDTA) ২০০৯ শীর্ষক একটি বিল উপস্থাপন করা হয়েছে । বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্পের শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রাপ্তির জন্য উক্ত বিলে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বাণিজ্য স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়ে জোর প্রচেষ্টা চালানো হয় ।
৬। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রতিযোগিতা ব্যাহত করে এ জাতীয় কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে বাজারে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার পরিবেশ বজার রাখা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে “কম্পিটিশন আইন, ২০১১” এর প্রণয়ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে, এ “কম্পিটিশন আইন, ২০১১” জাতীয় সংসদে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে ।
৭ । বাংলাদেশের তৈরী পোষাক শিল্পে শ্রম সংক্রান্ত কমপ্ল্যায়েন্স ইস্যুসমূহ, যেমন- শ্রমিকদের কর্মের পরিবেশ, নিরাপত্তা, বেতন-কাঠামো, আন্তর্জাতিক বাজারে তৈরী পোষাক শিল্পের গুণগত মান বৃদ্ধির মাধ্যমে 'কান্ট্রি ব্রান্ডিং' সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে “Better Work Programme" শুরু করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে । এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে রপ্তানিমুখী তৈরী পোষাক শিল্প, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা এবং চিংড়ি খাতে শ্রম অধিকার ও সোস্যাল কমপ্ল্যায়েন্স নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমের আলোকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি বুকলেট প্রকাশ করা হয় ।
৮। আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটা-মুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে ডব্লিউটিও সেল নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কানাডা, অষ্ট্ৰেলিয়া, সুইজারল্যাণ্ড এর বাজারে বাংলাদেশের পণ্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছে। এছাড়া ভারত, কোরিয়া, ব্রাজিল এবং চীনের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য যথাক্রমে ৮৫ শতাংশ, ৮০ শতাংশ, ৮০ শতাংশ এবং ৯৫ শতাংশ শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছে। উল্লেখ্য যে, ডব্লিউটিও'র দোহা ঘোষণার আলোকে হংকং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশের নূন্যতম ৯৭ শতাংশ পণ্যকে উন্নত এবং সক্ষম উন্নয়নশীল দেশ কর্তৃক শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা প্রদান এবং ক্রমান্বয়ে এ তালিকা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। বাংলাদেশ গত ২০১১ সালে ডব্লিউটিও'র এলডিসি কো-অর্ডিনেটর হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এতে বাংলাদেশ নিজের এবং স্বল্পোন্নত দেশসমূহের সকল ইস্যু'র সমর্থনে নেগোসিয়েশনে সফল নেতৃত্ব প্রদান করেছে। গত ১৫-১৬ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে জেনেভায় ডব্লিউটিও'র ৮ম মিনিস্টোরিয়াল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কনফারেন্স-এ বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেছে। এবারের সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় নতুন সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শক্তিশালীকরণসহ বাণিজ্য স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়েছে ।
(ক) উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের বাজারে স্বল্পোন্নত দেশের সেবা খাতের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে একটি ওয়েভার দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় (MFN Waiver);
(খ) স্বল্পোন্নত দেশের আবেদন প্রাপ্তির প্রেক্ষিতে ট্রিপস চুক্তির অব্যাহতির মেয়াদ জুলাই, ২০১৩ সময়ের পরেও মেয়াদ বৃদ্ধি করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে; এবং
(গ) স্বল্পোন্নত দেশের জন্য ডব্লিউটিও'র সদস্য পদ প্রাপ্তির শর্তসমূহ নির্দিষ্ট বেঞ্চমার্কের ভিত্তিতে সহজ ও সুবিধাজনক করা হয়েছে ।
সেবা খাতে প্রদত্ত অব্যাহতির মাধ্যমে আমাদের সেবা বাণিজ্যের প্রসার, বিশেষ করে মোড-৪ অর্থাৎ শ্রমের অবাধ যাতায়াত নিশ্চিতকরণে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে । এছাড়া, মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষণ সংক্রান্ত ট্রিপস চুক্তির অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধি পেলে দেশীয় শিল্পের বিকাশ এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধিত হবে ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]