বাংলাদেশের কৃষির বৈশিষ্ট্য Features of Agriculture in Bangladesh

কৃষি প্রধান হলেও অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় কৃষি ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয় । যদল উৎপাদনের দিক থেকে এদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। কৃষিতে বিনিয়োগের পরিমাণ কম হওয়ায় জমির উর্বরতা বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। নিম্নে বাংলাদেশের কৃষির বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হল ।
১। প্রাচীন পদ্ধতির চাষাবাদ : চাষাবাদের কাছে অতি প্রাচীনকালে মানুষ যে সকল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতো তার প্রায় সব কয়টি এখন ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন- লাঙ্গল, জোয়াল, মই, দূর্বল বলদ ও অন্যান্য স্থানীয় উপকরণ। উন্নত দেশসমূহ কৃষিকাজেই কলের লাঙ্গল, কীটনাশক, সার ইত্যাদি ব্যবহার করে উৎপাদনে বিপ্লব এনেছে। এ বিষয়ে জাপান, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র বেশ অগ্রগামী । এসব দেশে একর প্রতি উৎপাদন আমাদের দেশের তুলনায় অনেক বেশি।
২। মাটির উর্বরতা শক্তির হ্রাস : অন্যান্য কিছুর মত মাটির উৎপাদন ক্ষমতারও একটি নির্দিষ্ট সীমা আছে, তাই মাটিকে শক্তিশালী করার জন্য পরিবেশ উপযোগী সার প্রয়োগ করে মাটির ওলটপালট করা আবশ্যক। বাংলাদেশের কৃষকেরা এ বিষয়ে অনভিজ্ঞ বলেই ইতোমধ্যে গ্রামে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পেতে শুরু করেছে।
৩। ছোট ছোট কৃষি জোত ঃ জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে একান্নভূক্ত পরিবারগুলো ভেঙ্গে বড় কৃষি জোতকে দিনে দিনে ছোট করে চলেছে। বর্তমানে কোথাও কোথাও দেশী লাঙ্গল পর্যন্ত চালানো যায় না।
৪ । ভূমিহীন কৃষক ঃ অর্থনৈতিক চাপে গ্রামের গরীব জনসাধারণ ক্রমেই ভূমিহীনে পরিণত হচ্ছে। এসব ভূমিহীনেরা জীবন বাঁচানোর জন্য গ্রাম্য মহাজনদের জমিতে বর্গা চাষাবাদ করে। মালিকানা স্বত্বের অধিকার না থাকায় উৎপাদনের জন্য যথাযথ বিনিয়োগ এমনকি জমিতে শ্রমদানেও অনীহা করে। এর কারণে জমিতে ভাল ফসল উৎপাদন হয় না।
৫। মাথাপিছু আবাদী জমির পরিমাণ হ্রাস : ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা দেশের সীমাবদ্ধ জমিতে ভাগ বসানোর জন্যই দিনে দিনে আবাদী জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে।
৬। জীবনধারণের জন্য চাষাবাদ : বাংলাদেশে ছোট বড় প্রায় সকল কৃষকের মধ্যে জীবনধারণের জন্য ফসল উৎপাদনের মনোবৃত্তি ছাড়া ভিন্ন কিছু না দেখা যায়। জমিতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ফসল ফলানোর প্রবণতা এ যাবতকালেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেনি।
৭। প্রকৃতির উপর নির্ভরশীলতা : বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থা প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। প্রতি বছরই ক্ষেতের ফসল প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিকট জিম্মি থেকে যায়। নিয়তির শুভ দৃষ্টির উপর নির্ভর করে ফসল ঘরে উঠানো হয়। আজকাল বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গীর প্রয়োগ শুরু হওয়ায় কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিকতা ফিরে আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে গ্রাম বাংলায় কৃষিকাজে সেচ, জৈব ও রাসায়নিক সার, ঔষধ, কলের লাঙ্গল ইত্যাদি ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
৮। পতিত জমি : বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের অনেক জমি এখনো পতিত রয়েছে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সিছে সুনামগঞ্জ ইত্যাদি জেলার বেশকিছু জমি জলাবদ্ধ থাকায় এখানে চাষাবাদ করা যায় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ সকল জমিকে কৃষিকাজে কিংবা মৎস্য উৎপাদনের কাজেও আনা সম্ভব হয় না। এ সকল জমি উদ্ধার করে খাদ্য উৎপাদনের কাজেও আনা সম্ভব হয় না । এ সকল জমি উদ্ধার করে খাদ্য উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা একান্তই আবশ্যক ।
৯। সমতল ভূমি ঃ প্রাকৃতিক গঠন অনুযায়ী বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল যেমন- ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকা অঞ্চলের কৃষিজোত কিছুটা অসমতল, এ কারণে অনেক জমিকে সেচের আওতায় আনা যায় না। অসমতল জমিতে পানি ধরে রাখা সম্ভব হয় না। তাই এসব জমির একর প্রতি গড় উৎপাদন সমতল ভূমির চেয়েও কম ।
১০। কৃষির বাণিজ্যিকীকরণের অভাব ঃ কৃষি বাণিজ্যিকীকরণের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি নেয়া প্রয়োজন, গ্রাম বাংলায় কৃষিকে একটি শিল্প হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]