বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব

মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব Importance of Fish Resources of Bangladesh Economy
কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙালি । এ থেকেই বুঝায় তে মৎস্য সম্পদে গুরুত্ব কত। অতীতে পুকুর ভরা মাছ, আর গোলা ভরা ধান ছিল বাঙালি জাতীয় বৈশিষ্ট্য। বর্তমানের বাস্তবতায় এ কথা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। একদিকে অতিরিক্ত জন্যসংখ্যা, অন্যদিকে নদী, বিল, খাল পুকুরের ভরাট ও সংকীর্ণতা মৎস্য জাতীয় প্রোটিন খাবারকে সীমিত করে ফেলেছে। ১৯৮৮ সালের পর থেকে এ দেশে মৎস মড়কের মহামারী মৎস্য সম্পদকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এসব সমস্যা থাকলেও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে মোট মৎস্য উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩৫.৫৫ লক্ষ মেট্রিক টন। নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব রয়েছে।
১। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র : বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৬% লোক মৎস্য কাজে নিয়োজিত থাকে । মাছ ধরা, বিক্রি, সংরক্ষণ ইত্যাদি কাজে জেলে, মৎস্যচাষী, পুকুর শ্রমিক, সকল রকমের বিক্রেতা, জাল ও নৌকা নির্মাতা, প্রশাসন প্রভৃতি কাজে অসংখ্য লোক নিয়োজিত আছেন। ফলে মৎস্য সম্পদের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের জন্য একটি বড় রকমের সুযোগ। বাংলাদেশে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মৎস্য চাষের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি করতে পারলে আরও অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।
২। অভ্যন্তরীণ জাতীয় উৎপাদন ঃ বাংলাদেশে মৎস্য কৃষিখাতের একটি উপখাত। এ খাত থেকে অভ্যন্তরীণ জাতীয় উৎপাদনের ৫ শতাংশ এসে থাকে। বাংলাদেশ খাল, বিল, নদী-নালার দেশ। এসব স্থানে যে মাছ উৎপন্ন হয় তার জন্য কোন অতিরিক্ত খরচ নেই। অথচ খরচ ব্যতীত জাতীয় উৎপাদনে এ অবদান কম কথা নয় । এক্ষেত্রে কিছু খরচ বৃদ্ধি করলে জাতীয় উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে আশা করা যায় ।
৩। বৈদেশিক আয় ঃ বাংলাদেশ থেকে যেসব পণ্য রপ্তানি হয় তাদের মধ্যে হিমায়িত চিংড়িসহ মৎস্যজাত পণ্য একটি বৃহত্তর রপ্তনিযোগ্য পণ্য। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ০.৪৮ লক্ষ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে ৩০৮০.১৫ মিলিয়ন টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে ।
৪ । গ্রামীণ শিল্পের বিকাশ ঃ মৎস্যকে কেন্দ্র করে এখনও গ্রামীণ অনেক শিল্প বেচে আছে। যেমন মাছ ধরার জাল, নৌকা তৈরিসহ মাছের দাঁত, তেল, হাড়, পাখনা, লেজ, চামড়া ইত্যাদি দ্বারা বিভিন্ন ধরনের সৌখিন জাতীয় দ্রব্য তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে জীবনধারন করছে ।
৫। তেল ও অন্যান্য উপজাত দ্রব্য ঃ সামুদ্রিক মৎস্য থেকে বিশেষ করে বড় বড় হাঙ্গর, কুমীর, জলহস্তী ইত্যাদি থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ তেল সংগ্রহ করা যায় । যা বনজ জাতীয় ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া এ জাতীয় মাছ রপ্তানি করেও প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায় ।
৬। প্রোটিন জাতীয় খাবার : মাছ প্রোটিন জাতীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম । ভাতের পরেই মাছের স্থান । বাঙ্গালি জাতির জন্য মাছ একটি সুস্বাদু খাদ্য । বাংলাদেশে এমন লোক কমই আছে যারা মাছ খায় না । কাজেই মাছ না হলে এ জাতির একদিনও চলে না । বাংলাদেশের মানুষের এই মৎস্যই মোট প্রোটিনের বৃহৎ অংশ পূরণ করছে ।
৭। চিংড়ি চাষ প্রকল্প : রপ্তানিতে মাছের মধ্যে চিংড়িই প্রধান। এ জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে কয়েক শত চিংড়ি খামার রয়েছে। এসব প্রকল্পে উৎপাদন বৃদ্ধি করে বিদেশে রপ্তানি করছে। এসব প্রকল্পের সাথে জড়িত রয়েছে মাছের খাবার তৈরিকরণের জন্য আরও কিছু প্রকল্প ।
৮। সহায়ক শিল্পের বিকাশ ঃ মৎস্য সম্পদের সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু শিল্পের বিকাশ এবং কমসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। যেমন- ট্রলার, লঞ্চ, নৌকা তৈরি এবং হিমাগার মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, পরিবহন, ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি এবং এর সাথে অসংখ্য লোক কর্মে নিযুক্ত আছে ।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায়, বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]