বাংলাদেশের খাতওয়ারি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । Give the short analysis on sector-wise of Bangladesh economy.

সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সংস্কার কর্মসূচি Reform Programmes in Macroeconomic Management
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজার রাখার লক্ষ্যে ২০১০-১১ অর্থবছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় যে সকল কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে তা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো ।
বাজেট ব্যবস্থাপনা Budget Management
সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে 'সরকারি অর্থ ও বাজটে ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯ -এর বিধানমতে প্রতি প্রান্তিকে বাজেট বাস্তবায়ন ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
জাতীয় বাজেটকে সরকারের নীতির সাথে সম্পদ বন্টনকে মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তরসমূহের কর্মকৃতি (Performance indicator) সম্পর্কিত করে বাজেট বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে চলতি অর্থ বছরে সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে মধ্যমেয়াদী বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) আওতায় আনা হয়েছে ।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন Annual Development Programme Implementation

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং বাস্তবায়ন পরিস্থিতি আরো ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে গত অর্থ বছরের ন্যায় এ বছরেও প্রতি একনেক সভায় দু'টি করে মন্ত্রণালয়/বিভাগের এডিপির বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা, বৃহৎ ১০টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বাজেট বাস্তবায়ন কার্যক্রম পর্যালোচনার উদ্দেশ্যে গঠিত টাস্ক ফোর্সের কার্যক্রম পরিচালনা এবং বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্ত সর্বাধিক ব্যয় সাপেক্ষ ৫০টি প্রকল্পের অগ্রগতি পরিবীক্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
রাজস্ব আহরণ Revenue Mobilisation
১। কর আইন ২০১১ এবং ভ্যাট আইন ২০১১ এর খসড়া প্রণয়ন ও মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে ।
২। ভ্যাট আইন ২০১১-এর খসড়া মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে ।
৩ । রাজস্ব সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ৪টি Dedicated Bench স্থাপন করা হয়েছে ।
৪ । বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (Alternative Dispute Resolution) বিষয়ক আইন কার্যকর হয়েছে এবং ইতোমধ্যে এডিআর এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে ।
৫ । করের ভিত্তি সম্প্রসারণ এবং কর নেট বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে কর বিষয়ক প্রচারণার মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা ও করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য কর মেলা, জাতীয় কর দিবস উদযাপন, রোড শো প্রভৃতি কার্যক্রম চলছে।
৬ । কর প্রদানকে আরো সহজতর করার লক্ষ্যে E-payment কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
৭। ঢাকা কাস্টমস হাউসকে অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ সকল স্টেশনকে অনলাইনের আওতায় আনা এবং ASYCUDA + + Software এর মাধ্যমে শুচ্চায়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে ।
৮। কর বহির্ভূত রাজস্বের হারসমূহ যৌক্তিকীকরণ ও চলতি বাজার মূল্যের সাথে সমন্বয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মুদ্রা, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত
Currency, Banking and Financial Sector
১। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মূলধন ভিত্তিকে সুসংহতকরণের লক্ষ্যে ব্যাসেল-২ নীতিমালার আলোকে মূলধন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো কর্তৃক ঋণ ঝুঁকি (Credit Risk), বাজার (Market) ও কার্যসম্পাদন (Operational) ঝুঁকি ছাড়াও তাদের সুপারভাইজরী রিভিউ প্রসেস এর আওতায় সামগ্রীক ঝুঁকির বিপরীতে পর্যাপ্ত মূলধন নিরুপণের পাশাপাশি অতিরিক্ত অন্যান্য সকল ঝুঁকির বিপরীতে পর্যাপ্ত মূলধন সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে ।
২। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কর্তৃক Hybrid মূলধন উপাদান হিসাবে Subordinated Debt ইস্যুর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ইতোমধ্যে ৮টি ব্যাংককে Subordinated Debt ইস্যু করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে ।
৩। ব্যাংকগুলোর সুপারভাইজরি রিভিউ প্রসেস মূল্যায়নের লক্ষ্যে Guidelines on Supervisory Review Evaluation Process (SREP) ইস্যু করার পাশাপাশি ব্যাসেল-২ এর ২য় পিলারের নীতিমালার আলোকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও মূলধন সংরক্ষণের মধ্যে সংযোগ স্থাপনপূর্বক স্ব স্ব ব্যাংক কর্তৃক নিজস্ব সুপারভাইজরি রিভিউ প্রসেস ডকুমেন্ট প্রণয়ন এবং সামগ্রিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সাথে সংযোগ রেখে মূলধন সংরক্ষণের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে ।
৪ । সরকারি ট্রেজারী বিল/বণ্ডের Markign to Market ভিত্তিক পুনঃমূল্যায়ণ থেকে উদ্ভূত ক্ষতি রোধ করে তারল্য বৃদ্ধির প্রয়োজনে সরকারী সিকিউরিটিজ ধারণকারী প্রাইমারী ডিলার ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রদত্ত Liquidity Support প্রক্রিয়াটি সহজতর করে তা Outright buy/sell এর পরিবর্তে Collateralised Repo লেনদেন হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে ।
৫। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ট্রেজারী বিল এবং বণ্ডের অভিহিত মূল্যের ওপর যথাক্রমে ১৫.০ শতাংশ এবং ৫.০ শতাংশ মার্জিন প্রয়োগপূর্বক অভিহিত মূল্যের অবশিষ্ট অর্থ Liquidity Support হিসেবে প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
৬। তারল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যাংকসমূহের ঋণ প্রদান সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে শুধুমাত্র সরকারি সিকিউরিটিজের প্রাইমারি ডিলারদের জন্য সাময়িকভাবে HTM (Held to Maturity) সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের পরিমাণ সংশ্লিষ্ট মাসে রক্ষিত 'সহজে বিনিয়োগযোগ্য সম্পদের ৮৫.০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
পুঁজি বাজার Capital Market
১। পুঁজি বাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানিসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কর্পোরেট গভার্নেস গাইড লাইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
২। বুক বিল্ডিং পদ্ধতির সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে তা সংশোধন ও পরিমার্জন করার মাধ্যমে বুক বিভিং পদ্ধতিকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে ।
৩। প্রাইভেট প্লেসমেন্ট-এর মাধ্যমে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধির জন্য নতুন বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে।
৪। মার্চেন্ট ব্যাংক-এর কার্যক্রমে অধিকতর স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গতিশীলতা আনয়ন করার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফোলিও ম্যানেজার বিধিমালায় সংশোধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে ।
৫। স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা, ব্যবস্থাপনা ও ট্রেডিং কার্যক্রম পৃথক করার লক্ষ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন (Demutualisation of Stock Exchange) শুরু হয়েছে ।
বীমা খাত সংস্কার
Reforms in Insurance Sector
বীমা খাতের সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান, বীমা পলিসি গ্রাহক ও পলিসির অধীনে উপকারভোগীদের স্বার্থ সংরক্ষণ, বীমা খাতের আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালীকরণ এবং এ খাত পরিচালনায় সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিদ্যমান বীমা অধিদপ্তরকে বীমা আইনের সাথে সামঞ্জস্য বিধানের লক্ষ্যে 'বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১০' বিলটি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে। এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে আইন প্রণয়নের কার্যক্রমও হাতে নেয়া হয়েছে । বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে ।
খাতভিত্তিক বিশ্লেষণ Sectoral Analysis
কৃষি
Agriculture
কৃষির অগ্রগতির সাথে বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত । এছাড়া দারিদ্র্য বিমোচন, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ইত্যাদি ক্ষেত্রেও কৃষিখাতের অগ্রগতির প্রত্যক্ষ যোগসূত্র রয়েছে । লাভজনক, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব একটি কৃষি ব্যবস্থা জনসাধারণের দীর্ঘমেয়াদী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অপরিহার্য। বাংলাদেশকে ২০১৩ সালের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে সার্বিক কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। যষ্ঠ পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা, জাতীয় কৃষি নীতি ও সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রাকে সামনে রেখে কৃষি খাতের উন্নয়নে সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাময়িক হিসাব অনুযায়ী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের মোট
উৎপাদন ৩৮৩.৪৯ লক্ষ মেট্রিক টন (আউশ ২৩.২৮ লক্ষ মেট্রিক, আমন ১৩১.৯০ লক্ষ মেট্রিক টন, বোরো ১৮৯.৭৭ লক্ষ মেট্রিক, গম ১৩.৩৩ লক্ষ মেট্রিক টন ও ভুট্টা ২৫.২১ লক্ষ মেট্রিক টন) হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাজেটে অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ১৫.৫০ লক্ষ মেট্রিক টন (চাল ১৪.০০ লক্ষ মেট্রিক টন এবং গম ১.৫০ লক্ষ মেট্রিক টন)। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে (ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ পর্যন্ত) সার্বিকভাবে দেশে খাদ্যশস্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮.৪৩ লক্ষ মেট্রিক টন । ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট ১৫,৫৫০ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ করা হয়েছে ৯,৯১৪.১০ কোটি টাকা (ফেব্রুয়ারী, ২০১৫ পর্যন্ত) যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬৩.৭৬ শতাংশ । উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি উপকরণে ভর্তুকি বৃদ্ধি, কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করা ও কৃষি ঋণের আওতা বৃদ্ধি এবং প্রাপ্তি সহজীকরণ করা হয়েছে। শস্যমূল্য সহায়তার জন্য কৃষি বীমা এবং কৃষিপণ্যের নায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্যও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মাটির স্বাস্থ্য বজায় রাখা ও অধিক ফলন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুষম সার ও জৈব সারের ব্যবহার কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে । দেশজ কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কৃষকদের সহায়তা প্রদানের জন্য সার ও অন্যান্য কৃষি কার্যক্রমের ভর্তুকি বাবদ ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে ৯০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ।
কৃষি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি । বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী ২০১২- ১৩ অর্থবছরের জিডিপি'তে এ খাতের অবদান ছিল ১৩.০৯ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে স্থির মূল্যে জিডিপি'তে সার্বিক কৃষিখাতের অবদান ১৫.৯৬ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে। এছাড়া সার্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে এ খাতের পরোক্ষ অবদানও রয়েছে। বিশেষ করে বৃহৎ সেবাখাতের মধ্যে পাইকারী ও খুচরা বিপণন, হোটেল ও রেঁস্তোরা এবং পরিবহণ, সংরক্ষণ ও যোগাযোগ খাতের প্রবৃদ্ধিতে এ খাতের অবদান রয়েছে। অন্যদিকে. দেশের শ্রমশক্তির মোট ৪৩.৬ শতাংশ কৃষিখাতে নিয়োজিত (এমইস, ২০০৯, বিবিএস)। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার । কৃষিখাতের প্রধান প্রধান রপ্তানি পণ্য যেমন- হিমায়িত খাদ্য, কাঁচা পাট, পাটজাত দ্রব্য, চা ছাড়াও সরকার অপ্রচলিত কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিয়েছে ।
শিল্প Industry
২০১৪-১৫ অর্থবছরে শিল্পখাতের অবদান ৩০.৪২ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে (বিবিএস, সাময়িক হিসাব) । ২০১২-১৩ অর্থবছরে স্থির মূল্যে দেশজ উৎপাদনে জিডিপি'তে বৃহৎ খাতসমূহের মধ্যে শিল্প খাতের অবদান ছিল ২৯ শতাংশ । খনিজ ও খনন; ম্যানুফ্যাকচারিং; বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহ এবং নির্মাণ-এ চারটি খাতের সমন্বয়ে শিল্পখাত গড়ে উঠেছে । এ সকল খাতের মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের অবদান সর্বোচ্চ। স্থির মূল্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের সাময়িক হিসাবে জিডিপি'তে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের অবদান ২০.১৭ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে । শিল্পায়ন উন্নয়নশীল দেশে দ্রুত ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামাজিক অগ্রগতি অর্জনের একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত । এজন্য সরকার শিল্পায়নকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসাবে বিবেচনা করছে এবং উপযোগী সব ধরনের শিল্পের পরিবেশ বান্ধব বিকাশ ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। একইসাথে দেশের সব ধরনের শিল্পখাত যথা উৎপাদন শিল্প, জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য জ্বালানি শিল্প, কৃষি ও বনজ শিল্প, খনিজ সম্পদ আহরণ ও প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, পর্যটন ও সেবা শিল্প, নির্মাণ শিল্প, তথ্য ও প্রযুক্তি ভিত্তিক শিল্পসহ উপযোগী সব ধরনের শিল্পের পরিবেশ বান্ধব বিকাশ ও উন্নয়নকল্পে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ণ অব্যাহত রয়েছে। দেশের শিল্পায়নের গতিকে বেগবান করতে "শিল্পনীতি ২০১০” নামে একটি যুগোপযোগী শিল্পনীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এ নীতির অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে,
১। উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
২। নারীদেরকে শিল্পায়ন প্রক্রিয়ার মূলধারায় নিয়ে আসা এবং
৩। দারিদ্র্য দূরীকরণ।
এ উদ্দেশ্যে যেখানে সম্ভব সেখানে পুঁজিঘন শিল্পের পরিবর্তে শ্রমঘন শিল্প স্থাপনকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে শিল্পনীতিতে নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণসহ কুটির শিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারের কার্যক্রম গ্রহণ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে । ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে জমি ও অর্থায়ন এবং ব্যবসায় সহায়তামূলক সেবা লাভের ক্ষেত্রে নারীদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার পদক্ষেপ শিল্পনীতিতে বিধৃত হয়েছে । মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসারে উৎসাহ প্রদান করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে শিল্প ঋণ বিতরণ ও অন্যান্য সহযোগিতা প্রদানের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। ফলে শিল্পখাতে ঋণ বিতরণ ও আদায় ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে শিল্পখাতের দ্রুত বিকাশের জন্য ইপিজেডসমূহ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণসহ দেশে শিল্পখাত বিকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে । ইপিজেডসমূহে বিনিয়োগ ও রপ্তানি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাট ও পাট শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট কৃষক ও শ্রমিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি উদ্দেশ্যে সরকার বন্ধ পাটকল পুনরায় চালু করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে খুলনার পিপলস জুট মিল লিঃ, খালিশপুর জুট মিল লিঃ নামে এবং সিরাজগঞ্জের কত্তমী জুট মিল লিঃ, জাতীয় জুট মিল লিঃ নামে চালু করা হয়েছে ।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্পোদ্যোগসমূহ State Owned Enterprises

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাসমূহ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে । বেসরাকরি খাত উন্নয়নে অনুসৃত ‘রাষ্ট্রায়ত্ত খাত বেসরাকারিকরণ কর্মসূচি' সত্ত্বেও রাষ্ট্রায়ত্ত খাত এখনও জাতীয় উৎপাদন, মূল্য সংযোজন, কর্মসংস্থান ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এসব সংস্থার পরিচালন রাজস্ব বৃদ্ধির হার ছিল ২০.২৬ শতাংশ। তবে উৎপাদন ব্যয়ের হিসাবে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মূল্য সংযোজনের পরিমাণ ছিল ৮,৪০৫ কোটি টাকা, যা ২০১২-১৩ অর্থবছরে হ্রাস পেয়ে ৫,৭৬০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এ সকল সংস্থার নীট মুনাফা ছিল ২,৬২৬.১৫ কোটি টাকা । অন্যদিকে, যেসব সংস্থা মুনাফা করেছে তারা লভ্যাংশ হিসেবে ১,০৪০.২২ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করেছে। ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত অ-আর্থিক রাষ্ট্রীয় সংস্থার নিকট মোট ডিএসএল বাবদ পাওনার পরিমাণ ১,৪০,৭৯,২২৫.৭৯ কোটি টাকা। ডিসেম্বর, ২০১৪ পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের নিকট ২১টি রাষ্ট্রীয় সংস্থার মোট ঋণের পরিমাণ ৩২,৯৭১,১৩ কোটি টাকা, যার মধ্যে শ্রেণিবিন্যাসিত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১৬৫.৬১ কোটি টাকা। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের মোট সম্পদের উপর পরিচালন মুনাফার হার (ROQ) ১.৯৪ শতাংশ হলেও ২০১২-১৩ অর্থবছরে তা -০.৬৭ শতাংশে পৌঁছে। পরিচালন রাজস্বের ওপর নীট মুনাফার হার ২০১২-১৩ অর্থবছরে, -২.১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ইক্যুয়িটির ওপর লভ্যাংশের হার ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ১.৪৮ শতাংশ, যা ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৪.১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এবং সম্পদের টার্নওভার বিবেচনায় ২০১২-১৩ অর্থবছরে সম্পদ ব্যবহারে দক্ষতা ২০১১-১২ অর্থবছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে ।
শক্তি ও জ্বালানি Power and Energy
বিদ্যুৎ বর্তমান সভ্যতার অন্যতম চালিকাশক্তি। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও জনগণের জীবনযাত্রার মানন্নোয়নে বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাস ও অন্যান্য প্রাকৃতিক জ্বালানি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অবকাঠামোগত উপাদান । স্থির মূল্যে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সম্পদ খাতের অবদান ১.৪৬ শতাংশ এবং প্রাকৃতিক গ্যাস ও অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম' এবং 'কয়লা ও অন্যান্য খনিজ সম্পদ' খাতের সমন্বিত অবদান ১.৬৪ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে (বিবিএস, সাময়িক হিসাব)। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ দুটি খাতের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ৭.৪০ শতাংশ ও ৫.২২ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে (বিবিএস, সাময়িক হিসাব)। কৃষি, শিল্প, পরিবহণ ও যোগাযোগ, গৃহস্থালী, সেবাখাতসহ বিভিন্ন আয়বর্ধনকারী কর্মকাণ্ডে বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাস ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । গ্রামীণ অর্থনীতিতে সকল উপাদনের চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে । তবে দেশের মোট চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রাপ্তি এখনও পর্যাপ্ত নয়। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারী খাতকে যেমন পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি), রেন্টাল পাওয়ার প্রডিউসার (আরপিপি) ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্লান্ট (আইপিপি) নির্মাণ উৎসাহিত করার জন্য সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। অপরদিকে, কৃষি, শিল্প, পরিবহণ ও যোগাযোগ, গৃহস্থালী কাজে পেট্রোলিয়াম দ্রব্যাদি, গ্যাস ও অন্যান্য বিভিন্ন প্রাকৃতিক জ্বালানির চাহিদাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে । সরকারের ঘোষিত ভিশন ২০২১ অনুযায়ী বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করার জন্য এবং উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের বাহন হিসেবে বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাস ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক জ্বালানীর ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণকল্পে সরকার বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি সম্পদ খাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে । তাছাড়া, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে এ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেছে।
পরিবহণ ও যোগাযোগ Transport and Communication
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি টেকসই, পরিবেশ বান্ধব, অত্যাধুনিক এবং সাশ্রয়ী পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন অনস্বীকার্য। উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদনের উপকরণ ও উৎপাদিত পণ্যের সঠিক বাজারজাতকরণ এবং দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা বজার রাখার ক্ষেত্রে যুগোপযোগী, সুসংগঠিত ও আধুনিক পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যাবশ্যকীয় ভৌত অবকাঠামো হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃত । বর্তমান বিশ্বায়ন ও বাজার অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যুগোপযোগী আধুনিক পরিবহণ এবং তথ্য যোগাযোগসহ অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে সকল অবকাঠামোগত ব্যবস্থাপনার মধ্যে পরিবহণ ও যোগাযোগ অবকাঠামো অন্যতম । ইতোপূর্বে পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা যায় যন্ত্রচালিত সারফেস পরিবহণের মধ্যে সড়ক পরিবহণ টন-কিলোমিটারে শতকরা ৬০ ভাগের অধিক মালামাল এবং যাত্রী-কিলোমিটারে শতকরা ৭০ ভাগের অধিক যাত্রী বহন করে । স্থির মূল্যে ২০১২-১৩ অর্থবছরে দেশজ উৎপাদন 'পরিবহণ ও যোগাযোগ' খাত (স্থল পথ পরিবহণ; পানি পথ পরিবহণ; আকাশপথ পরিবহণ; সহযোগী পরিবহণ সেবা ও সংরক্ষণ এবং ডাক ও তার যোগাযোগ উপ-খাত সমন্বয়ে গঠিত) এর অবদান ও প্রবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ১১.৫০ শতাংশ ও ৬.২৭ শতাংশ । দেশজ উৎপাদনে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ খাতের অবদান ১১.৫৪ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৬.৪৭ শতাংশ (বিবিএস, সাময়িক হিসাব)। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিবহণ এবং তথ্য ও অন্যান্য যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সাথে বাংলাদেশকে অন্তর্ভূক্ত করার উপযোগী উন্নত এবং সুসমন্বিত পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা একান্ত জরুরী । তাই পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে বিভিন্ন প্রকল্প অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্ত বায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রেলপথ, জলপথ ও সড়কপথ এবং অভ্যন্তরীণ পরিবহণ ব্যবস্থার মধ্যে অন্যতম সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনার আওতাধীন মূলত সড়ক নেটওয়ার্ক । সড়ক নেটওয়ার্ক ছাড়া এলজিইডির আওতায় উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক নেটওয়ার্কের অন্তর্ভূক্ত সড়ক নেটওয়াক পুনঃনির্মাণ/পুনর্বাসনসহ এসকল সড়কে ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ/পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে। ফলে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর যাতায়াত ব্যবস্থাসহ তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে । পরিবেশ বান্ধব, নিরাপদ এবং সুলভে মালামাল পরিবহনের নির্ভরশীল মাধ্যম হিসেবে রেলের ভূমিকা অব্যাহত রাখার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়েকে বাণিজ্যিক ও আর্থিক সফলতা অর্জনে এবং পেশাগত জ্ঞানের ভিত্তিতে পরিচালনার লক্ষ্যে অর্গানাইজেশনাল রিফর্মস, সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রভৃতি বিষয়ে উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নৌ-পথের নাব্যতা সংরক্ষণ ও নৌ-পথ উদ্ধার, নিরাপদ নৌ-যান চলাচল নিশ্চিতকরণ, অভ্যন্তরীণ নৌ-বন্দরসমূহের উন্নয়ন, ঢাকার চারপাশের নৌ-পথ সচলকরণ, অভ্যন্তরীণ নৌ-পথে কন্টেইনার পণ্য পরিবহনের অবকাঠামো সৃষ্টি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে হাইড্রোগ্রাফিক চার্ট প্রণয়ন ইত্যাদি কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে । আকাশ পথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা এবং সীমিত সম্পদ নিয়ে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতক গন্তব্যে সার্ভিস পরিচালনা করছে। দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং এর মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সাবমেরিন কেবল এর মাধ্যমে একটি আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরীর জন্য কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, যা হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ।
মানব সম্পদ উন্নয়ন Human Resource Development.
বর্তমান বিশ্বায়নের পটভূমিকায় মানব সম্পদ উন্নয়নের গুরুত্ব নতুন মাত্রা লাভ করেছে । অথনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মানব সম্পদ উন্নয়নও তাই অপরিহার্য। এ কারণেই ১৯৯৫ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলন এর ঘোষণা মোতাবেক বাংলাদেশ সরকার শতকরা ২০ ভাগের অধিক অর্থ সামাজিক খাতে ব্যয় করে আসছে। একই সাথে মানব সম্পদ উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত খাতসমূহ যেমন- শিক্ষা ও প্রযুক্তি; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ; নারী ও শিশু; সমাজকল্যাণ; যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন; সংস্কৃতি এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান এর ক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, কারিগরি ও উচ্চ শিক্ষার সকল স্তরে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি ও শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষ ও যোগ্য মানব সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়নসহ বহুবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে । সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শতকরা ৬০ ভাগ মহিলা শিক্ষক নিয়োগের বিধি প্রবর্তনের ফলে মহিলা শিক্ষকের হার ১৯৯১ সালের ২১ শতাংশ থেকে বর্তমান ৬৪.২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০১৫ সালের মধ্যে নিরক্ষরতা দূরীকরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যালয়ে ভর্তি, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, উপবৃত্তি, ছাত্র-শিক্ষক সংযোগ ঘণ্টা বৃদ্ধির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে । শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তরে জেন্ডার বৈষম্য বিলোপ করে ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে সংখ্যাসাম্য অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শ্রীলংকার পরেই বাংলাদেশ সক্ষম হয়েছে যা স্বল্পোন্নত দেশসমূহের মধ্যে এক বিরল অর্জন। সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে সরকার স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাতকে অগ্রাধিকার প্রদান করায় দেশের স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে । অপুষ্টির হার ও মৃত্যুর হার কমেছে। গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ নবজাত শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে । অপুষ্টির হারও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে । স্বাস্থ্য সেবায় অর্জিত সাফল্য অব্যাহত রেখে এ খাতের আরও উন্নয়নের জন্য ২০১১-১৬ মেয়াদে সমন্বিত স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি উন্নয়ন সেক্টর (HPNSDP) কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নারীদের শিক্ষিত ও দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা ও জাতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং নারীর রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সম্প্রতি ঘোষিত হয়েছে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা-২০১১ । এছাড়া শিশু স্বার্থ ও অধিকার রক্ষা এবং শিশু কল্যাণের লক্ষ্যে ২০১১ সালে গৃহীত হয়েছে জাতীয় শিশু নীতিমালা-২০১১ ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]