বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ঘাটতি দূরীকরণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ

Steps Taken by Government to Reduce Power Shortage in Bangladesh বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের শ্লোগান হচ্ছে "২০২০ সালের মধ্যে সকলের জন্য বিদ্যুৎ" এই লক্ষ্য অর্জনে জনগণের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করার জন্য সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে । বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ হল নিম্নরূপ।
১। বন্ধ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুকরণ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার বন্ধ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ইউনিটগুলো চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ।
২। পিপিপি-এর মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন : সরকারী ও বেসরকারী অংশীদারিত্ব (পিপিপি) মাধ্যমে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দু'একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে ।
৩। ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ খাতে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা উন্নয়ন করা সম্ভব হলে দুর্নীতি, অপচয় ও সিস্টেম লস কমিয়ে আনা সম্ভব হবে ।
৪। উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ ঃ চালু ও বিদ্যমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে পুরনো-বিকল যন্ত্রপাতির পরিবর্তে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে বিদ্যমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ।
৫। উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্টকরণ ঃ বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ উদ্দেশ্যে সরকার আগামী ২০২১ সালের মধ্যে ২৪,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্জনের পরিকল্পনা নিয়েছে। এই লক্ষ্যে সরকার বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং বিদ্যুৎ খাতের পুর্নগঠনের মাধ্যমে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে ।
৬৷ বিদেশী বিনিয়োগ আমন্ত্রণ : নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার জন্য সহজ শর্তে বিদেশী বিনিয়োগকারিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে । বেশ কয়েকটি প্রস্তাব এরই মধ্যে সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।
৭ । পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন : বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ২০০৭ সালের জুনে আস্ত র্জাতিক আণবিক সংস্থা বাংলাদেশকে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে অনুমতি প্রদান করে। ১৩ মে, ২০০৯ রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশ একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে ।
বাংলাদেশের কয়েকটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের বিবরণ Description of Some Power Plants in Bangladesh
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে প্রধানত তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায় । যথাঃ
(ক) গ্যাসভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় সেগুলোকে বলা হয় গ্যাসভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। যেমন-
১। ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঃ ঢাকার নিকটবর্তী ঘোড়াশালে এটি অবস্থিত ।
২। হরিপুর বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঃ সিলেট জেলার হরিপুর নামক স্থানে বেসরকারি উদ্যোগে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এই কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৩। সিদ্ধিরগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র : নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ।
৪। আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ নামক স্থানে মেঘনা নদীর পূর্ব তীরে এই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
৫। শিকলবাহা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ৪ চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত শিকলবাহা নামক স্থানে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এখানেও প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়। মূলত চট্টগ্রাম মহানগরীর বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করার জন্য এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।
৬। সিলেট কম্বাইণ্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র : সিলেটে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অবস্থিত। এই কেন্দ্রে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
৭। শাহজী বাজার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্ৰ ৪ হবিগঞ্জ জেলার শাহজী বাজার নামক স্থানে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার করে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয় ।
(খ) জলবিদ্যুৎ বা পানি বিদ্যুৎ প্রকল্প ৪ নদীর পানির স্রোত, জলপ্রপাত, জোয়ার-ভাটার টান ইত্যাদিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় যেসব কেন্দ্রে সেগুলোকে বলা হয় জলবিদ্যুৎ বা পানি বিদ্যুৎ প্রকল্প । বাংলাদেশের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো নিম্নরূপ ।
১। কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঃ চট্টগ্রাম জেলার কাপ্তাই নামক স্থানে কর্ণফুলি নদীতে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় এই প্রকল্পে ।
২। ব্রহ্মপুত্র প্রকল্প ঃ ময়মনসিংহ শহরের নিকটবর্তী ব্রহ্মপুত্র নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় এই প্রকল্পে ।
৩। সাংগু নদী প্রকল্প : পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংগু নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় এই প্রকল্পে ।
(গ) তেলভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঃ যে সকল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তেল, ফারনেস অয়েল ও ন্যাফতা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় সেগুলোকে বলা হয় তেলভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশের তেলভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো নিম্নরূপ ।
১ । চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঃ চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানায় এই কেন্দ্রটি অবস্থিত ।
২। খুলনা বার্জ মাউন্ডেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঃ খুলনা জেলায় অবস্থিত তেলভিত্তিক কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত ।
৩। গোয়াল পাড়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঃ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানী হিসেবে ন্যাফথা ও ফারনেস তেল ব্যবহার করা হয় । এই কেন্দ্রটি খুলনা জেলার গোয়াল পাড়া নামক স্থানে অবস্থিত ৷
৪ । ভেড়ামারা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্ৰ : কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা নামক স্থানে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অবস্থিত । উক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফারনেস অয়েল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় ।
৫। সৈয়দপুর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঃ নীলফামারি জেলার সৈয়দপুর নামক স্থানে উক্ত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অবস্থিত । এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানী হিসেবে ফারনেস তেল ব্যবহার করা হয় ।
৬। ঠাকুরগাঁও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঃ ঠাকুরগাঁও জেলায় অবস্থিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও জ্বালানী হিসেবে ফারনেস তেল ব্যবহার করা হয় ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]