বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)

Bangladesh Road Transport Corporation (BRTC)
দেশে একটি সুষ্ঠু পরিবহণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাকল্পে ১৯৬১ সালে এক অধ্যাদেশ বলে বিআরটিসি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরিবহণের ক্ষেত্রে মান ও ভাড়া নিয়ন্ত্রণ এবং তুলনামূলকভাবে উন্নত ও মানসম্মত পরিবহণ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে দেশে সাশ্রয়ী মূল্যে দ্রুত, দক্ষ, আরামপ্রদ, আধুনিক ও নিরাপদ সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে এ সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । বিআরটিসির উল্লেখযোগ্য অন্যান্য কার্যক্রমগুলো হলো ।
১। দেশে স্বল্প মূল্যে দ্রুত, দক্ষ ও আরামপ্রদ, আধুনিক ও নিরাপদ সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা;
। বেসরকারি সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা বিকাশে সহায়তা প্রদান;
৩। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার মধ্যে থেকে গাড়ি পরিচালনা; ৪। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সড়ক পরিবহণের ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি;
৫। সুষ্ঠু পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত রাখার লক্ষ্যে স্ট্রাটেজিক ইন্টারভেনশনাল ভূমিকা পালন করা;
৬ । ভলভো ও অন্যান্য বাসের ইলেক্ট্রোনিক টিকেটিং সিস্টেম চালু ।
বিভিন্ন সংস্কারমূলক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করায় প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে আর্থিক দিক থেকে লোকসানি এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে গতিশীলতা, দক্ষতা ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিআরটিসি কর্তৃক এনডিএফ ঋণে ২৭৫টি চাইনীজ এবং কোরিয়ান ইডিসিএফ ঋণে ২৫৫টি সিএনজি একতলা বাস ও যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করেছে। ইন্ডিয়ান ডলার ক্রেডিট লাইনের আওতায় ৩০০টি দ্বিতল, ১০০টি একতলা এসি ও ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাস সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় ২৯০টি অশোক লিল্যান্ড দ্বিতল বাসের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৭টি বাস সংগ্রহ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৫০টি আর্টিকুলেটেড বাস এবং ১০০টি একতলা এসি বাস সংগ্রহ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলাদেশের সড়ক পথের বিবরণ Description of Road Transport in Bangladesh
১৯৪৭ সাল হতে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সড়ক ব্যবস্থা অত্যন্ত অনুন্নত ছিল । এ সময় বাংলাদেশে মাত্র ১৯৫৩ কি.মি. পাকা রাস্তাসহ প্রায় ৩৫ হাজার কি.মি. সড়কপথ ছিল । এর অধিকাংশই বর্ষাকালে চলাচলের অযোগ্য হয় পড়তো । ১৯৬০ সাল হতে বাংলাদেশের সড়ক পথের উন্নয়ন আরম্ভ হয় এবং ১৯৭১-৭২ সালে বাংলাদেশে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক নির্মিত পাকা ও আধা পাকা সড়কের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪১৭৫ কি.মি. । এর মধ্যে প্রায় ৩৬৯০ কি.মি. সড়ক ছিল পাকা এবং ৫৬৬ কি.মি. ছিল আধাপাকা । এছাড়া জেলা পরিষদ, থানা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ ও বিবিধ পৌরসভার অধীনেও প্রায় ৫২০০ কি.মি. পাকা রাস্তা ছিল । ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশে অসংখ্য পুল, কালভার্ট ও সড়ক পথের প্রভূত ক্ষতি সাধিত হয়। ফলে স্বাধীনতার পরপরই সড়ক পথের উন্নয়নের ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথের অধীনে জাতীয় মহাসড়ক ছিল ৩৪৭৮ কি.মি., আঞ্চলিক মহাসড়ক ছিল ৪২২২ কি.মি. এবং ফিডার রোড এ-টাইপ ছিল ১৩,২৪৮ কি.মি. । ফেব্রুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত হিসাবে স্থানীয় সরকারের অধীনে পাকা সড়ক নির্মাণ/ পুনঃনির্মাণ/পুনর্বাসন ছিল ১৯৯,১৩৩ কি.মি. এবং কাঁচা সড়ক নির্মাণ/ পুনঃনির্মাণ/পুনর্বাসন ছিল ৬৪,৬৯১ কি.মি. ।
সড়ক পথের প্রকারভেদ ঃ বাংলাদেশে সড়ক পথকে মোট ৪ ভাগে ভাগ করা যায় । যথাঃ
১। জাতীয় জনপথ : বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের সমুদ্রবন্দর, বিভাগীয় ও জেলা সদর এবং প্রধান শহর ও বন্দরের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী সড়ক পথসমূহকে জাতীয় জনপথ বলে । এ সড়ক পথগুলো বেশ চওড়া, মসৃণ ও মজবুত। বাংলাদেশ সরকারের সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ রাস্তাগুলো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।
জেলাবোর্ড সড়ক ঃ প্রত্যেক জেলার অভ্যন্তরে বেশ কিছু রাস্তা আছে যেগুলোর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ জেলাবোর্ড কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত । এগুলোকে জেলাবোর্ড সড়ক বলে । বাংলাদেশে জেলাবোর্ড কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত রাস্তার পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার ৮৭০ কি.মি. । তন্মধ্যে প্রায় ১২ হাজার কি.মি. পাকা ২৩৮৭০ কি.মি. কাঁচা সড়ক ।
৩। পৌরসভার সড়কপথ ঃ বাংলাদেশের বিভিন্ন পৌরসভার অধীনে প্রায় ১৫ হাজার ৩৯৫ কি.মি. সড়কপথ আছে । তন্মধ্যে ৯ হাজার ৫৭৯ কি.মি. পাকা এবং ৫ হাজার ৮১৬ কি.মি. কাঁচা । ঢাকা শহরে মোট সড়কপথের পরিমাণ প্রায় ১০০০ কি.মি. ।
৪। থানা পরিষদের রাস্তা ও থানা কাউন্সিল কর্তৃক নির্মিত এবং রক্ষণাবেক্ষণকৃত এলাকাধীন রাস্তাঘাট এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। থানা কাউন্সিলের রাস্তার পরিমাণ প্রায় ৪৫ হাজার ৬২৭ কি.মি. । তন্মধ্যে মাত্র ১২৩৫ কি.মি. পাকা ।
৫। ইউনিয়ন কাউন্সিলের রাস্তাঘাট ঃ প্রত্যেক ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ কাঁচা রাস্তা, পথঘাটগুলো ইউনিয়ন কাউন্সিল কর্তৃক নির্মিত ও মেরামত করা হয়। বাংলাদেশে এ রাস্তার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এর পরিমাণ প্রায় লক্ষাধিক কি. মি. ।
বাংলাদেশের প্রধান প্রধান সড়কপথসমূহ ঃ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সাথে বিভিন্ন জেলা ও বন্দরের যোগাযোগরক্ষাকারী অনেকগুলো সড়ক পথ রয়েছে । তন্মধ্যে মহানগরী ঢাকার সাথে চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ প্রভৃতি জেলার সংযোগকারী জাতীয় জনপথগুলো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ । নিম্নে বাংলাদেশের কয়েকটি সড়ক পথের বর্ণনা দেওয়া হলো ।
১। ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কপথ : এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান জাতীয় জনপথ । এ পথ চট্টগ্রামকে ঢাকার সাথে দীর্ঘ ২৮৭ কি.মি. সড়ক দ্বারা সংযুক্ত করেছে । এ পথটি ঢাকা হতে দাউদকান্দি পার হয়ে কুমিল্লা ও ফেনী জেলার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম গিয়ে পৌঁছেছে । চট্টগ্রাম হতে এর একটি শাখা কক্সবাজার, একটি কাপ্তাই এবং অপর শাখাটি রাঙ্গামাটি গিয়ে শেষ হয়েছে ।
২। ঢাকা সিলেট সড়কপথ ঃ এ পথটি ৩৪৬ কি.মি. লম্বা । ঢাকা-দাউদকান্দি, ময়নামতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে এ পথটি সিলেট গিয়েছে । এখন অবশ্য আশুগঞ্জ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওপর দিয়ে নতুন সড়ক নির্মিত হয়েছে ।
৩। ঢাকা-রাজশাহী সড়কপথ ঃ এর দৈর্ঘ্য ২৬৯ কি.মি. । ঢাকা হতে আরিচা ও পাবনা হয়ে রাজশাহী গিয়েছে । ৪। ঢাকা-খুলনা সড়ক পথ ঃ এ পথটি ৩৪৬ কি.মি. লম্বা । পথে একটি ফেরি পড়ে । ঢাকা হতে সড়ক পথটি আরিচা ঘাট হয়ে ফরিদপুর ও যশোরের ওপর দিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর নগরী খুলনায় গিয়ে পৌঁছেছে । তথা হতে একটি শাখা পটুয়াখালী এবং অপর একটি শাখা সাতক্ষীরার দিকে গিয়েছে । ৫। ঢাকা-রংপুর সড়কপথ ঃ এ পথটি আরিচা-পাবনা ও বগুড়া হয়ে ৩৪৮ কি.মি. পথ অক্রিমের পর রংপুর গিয়েছে এবং তথা হতে একটি শাখা ঠাকুরগাঁও পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
৬। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কপথ ঃ এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯৭ কি.মি. । ঢাকা হতে জয়দেবপুর হয়ে এ পথটি ময়মনসিংহ গিয়েছে তথা হতে একটি শাখা জামালপুর গিয়েছে ।
৭। ঢাকা-বরিশাল সড়কপথ ঃ ঢাকা হতে ১টি ফেরি অতিক্রম করে ফরিদপুরের ওপর দিয়ে এ পথটি বরিশালে গিয়েছে এবং বরিশাল হতে পটুয়াখালী সদর পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়েছে ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]