বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা/যোগাযোগের মাধ্যমসমূহ

বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা/যোগাযোগের মাধ্যমসমূহ Communication System of Bangladesh/Mediums of Communication
বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয়। তবে বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে টেলিফোন ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশে যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে ১) ডাক বিভাগ ২) টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন ৩) রেডিও ৪) টেলিভিশন ৫) ভূ-উপগ্রহ ৬) টেলেক্স প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব উপলদ্ধি করে দেশের সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর ফলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধিত হয়েছে। নিম্নে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়া হলো ।
১। টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন (Telegraph and Telephone) : দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশে দ্রুত খবর আদান-প্রদানের জন্য টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন টেলিগ্রাফ ও টেলিফোনের উন্নতি। বাংলাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল। তবে বর্তমান কালে টেলিফোন ব্যবস্থা বেসরকারি মালিকানায় ছেড়ে দেওয়ার পরে টেলিফোনের জগতে একটি বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। বিশেষ করে মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতার কারণে জনগণের মধ্যে টেলিফোনের ব্যবহার বেড়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন বেসরকারি মোবাইল প্রতিষ্ঠান তাদের নেটওয়ার্ক প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বৃদ্ধি করেছে। ফলে সমগ্র বাংলাদেশই এখন মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের আওতায়। ল্যান্ড ফোনের ক্ষেত্রেও বেসরকারি মালিকানা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মোবাইল ফোনের পাশাপাশি ল্যান্ড ফোনের ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে। টেলিফোন ব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য সরকার কার্ড ফোনের ব্যবস্থা করেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণের সুবিধার্থে অপারেটর ট্যাংক ডায়ালিং (ওটিভি) ব্যবস্থা আছে। যার মাধ্যমে গ্রামের লোকজন দেশ বিদেশে যোগাযোগ করতে পারে। বহির্বিশ্বে ডাটা আদান- প্রদানের সুবিধার জন্য 'ভি-স্যাট' ব্যবস্থা, উপজেলা পর্যায়ে ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ, সেলুলার মোবাইল সার্ভিস, নৌ-টেলিযোগাযোগ, পল্লী টেলিযোগযোগ, পেজিং ও পার্সোনাল হ্যান্ডি ফোন সার্ভিস চালু করা হয়েছে এবং এইসবে বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য সরকার সকল প্রকার সাহায্য সহযোগীতা করছে।
২। ডাক বিভাগ (Postal Department) : বাংলাদেশ ডাক বিভাগ সরকারের একটি অন্যতম সেবামূলক প্রতিষ্ঠিান । ২০০৭ সালের জুন পর্যন্ত দেশে ডাকঘরের সংখ্যা মোট ৯,৮৮৭ টি । নিম্নে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের বিশেষ বিশেষ কার্যাবলীর বিবরণ দেয়া হলো ।
অভ্যন্তরীণ ডাক ঃ দ্রুততার সাথে ডাক আদান প্রদানের লক্ষ্যে জাতীয় সদর দপ্তরের সঙ্গে জেলা সদর এবং জেলা সদরের সাথে উপজেলা সদরের সরাসরি ডাক ব্যবস্থা রয়েছে। ডাক পরিবহণের জন্য বিমান, রেল, বাস, লঞ্চ, নৌকা, বিভাগীয় রানার, অবিভাগীয় মেইল কুরিয়ার রয়েছে । বিভাগীয় মেইল মোটর সার্ভিস ও ঠিকাদারের মাধ্যমে ডাক পরিবহণ ব্যবস্থা রয়েছে। সড়ক অবকাঠামো উন্নত হওয়ায় ও যমুনা সেতু উদ্বোধনের ফলে উত্তর বঙ্গের সাথে ডাক আদান-প্রদান দ্রুততর হচ্ছে। বিভাগীয় মেইল মোটর বহরে নতুন গাড়ীও সংযোজন করা হয়েছে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিভাগীয় মেইল মোটরে ও দ্রুত ডাক পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ্যাডমেইল / বাল্ক মেইল সার্ভিস চালু করার কার্যক্রম পরীক্ষা নিরীক্ষাধীণ রয়েছে। এছাড়া ক্রমবর্ধমান গ্রাহক চাহিদা পূরণের নিমিত্তে অনেকগুলো বিশেষ সার্ভিস চালু করা হয়েছে ।
ডাক বিভাগের বিশেষ সার্ভিস
১। ইপিপি - দেশের অভ্যন্তরে মালামাল ও পণ্য সামগ্রী দ্রুত প্রেরণ করা হয় ।
২। জিইপি দ্রব্য বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পরিবহণ ও বিলির ব্যবস্থা করা হয় ।
-
৩। আন্তর্জাতিক মেইল - ইসরাইল ব্যতীত অন্যান্য দেশে সাধারণ ও রেজিস্টার্ড চিঠিপত্র আদান-
প্রদান করা হয়ে থাকে।
৪। অভ্যন্তরীণ মানি অর্ডার - দেশের অভ্যন্তরে টাকা পয়সা প্রেরণ করা যায় ।
৫ । স্মারক ডাক টিকিট - বছরের বিশেষ বিশেষ দিনগুলোতে বিষয়ভিত্তিক ডাক টিকিট প্রকাশ করা হয় ।
৬। দেশের অভ্যন্তরে ও বহির্বিশ্বের সাথে ই- পোস্ট নামে ই-মেইল সর্ভিস চালু করা হয়েছে ।
৭। ইন্টেল পোস্ট সার্ভিস - ফাক্সিমিলি মেশিনের মাধ্যমে বার্তা ও ডকুমেন্ট ইত্যাদি স্বদেশে ও বিদেশে প্রেরণ করা যায়।
৮। এক্সপ্রেস মেইল সার্ভিস - এটি আন্তর্জাতিক ডাক পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত হয় ।
৯। আন্তর্জাতিক মানি অর্ডার - বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা এর মাধ্যমে দেশে অর্থ প্রেরণ করতে পারেন ।
ডাক বিভাগের উন্নয়ন কার্যক্রম ও আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার এ বিভাগের উন্নয়নে ও আধুনিকায়নে বদ্ধ পরিকর। ডাক বিভাগের সঞ্চয়ী হিসাব ও জীবন বীমার হিসাব ইতোমধ্যে কম্পিউটারাইজড করা হয়েছে । এছাড়া প্রতিটি সার্ভিসের পরিধিও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
৩। ইন্টারনেট (Internet ) : আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার আলোচিত মাধ্যম ইন্টারনেট (Internet)। ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে অতি দ্রুত যোগাযোগ করা যায়।
৪। বেতার (Radio) : বাংলাদেশে যোগাযোগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো বেতার। সংবাদ প্রচারসহ সকল শ্রেণীর মানুষের শিক্ষা, বিনোদন ও তথ্যমূলক অনুষ্ঠান প্রচার করে বাংলাদেশ বেতার । স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ বেতারের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করা হয়। বর্তমানে ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, ঠাকুরগাও, কুমিল্লা, রাঙ্গামাটি, রংপুর প্রভৃতি স্থানে বেতার কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় রয়েছে বেতার উপকেন্দ্র। এর ফলে সমগ্র বাংলাদেশ বেতার যোগাযোগের আওতাভুক্ত হয়েছে ।
১৯৬১ সালে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে ১০০ কিলোওয়াট শক্তি সম্পন্ন একটি ট্রান্সমিটার বসানো হয়। পরবর্তীকালে ঢাকার অদূরে নয়ারহাটে ১০০০ কিলোওয়াট মিডিয়াম ওয়েভ বিশিষ্ট একটি নতুন ট্রান্সমিটার নির্মাণ করা হয়েছে । তাছাড়াও রয়েছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সর্টওয়েভ ।
বাংলাদেশ বেতার সপ্তাহে প্রায় ৮৭ ঘন্টা অনুষ্ঠান প্রচার করে । এর মধ্যে বেশির ভাগই বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান এবং কিছু শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ বেতারের প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১ । উন্নয়নমূলক কাজে উদ্বুদ্ধকরণ অনুষ্ঠান । যেমন- বনায়ন কর্মসূচি, গণশিক্ষা কার্যক্রম, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক কার্যক্রম, কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম, শিশু শিক্ষা ও যুব কল্যাণমূলক অনুষ্ঠান, মহিলা বিষয়ক অনুষ্ঠান ইত্যাদি ।
২। নাটক; ম্যাগাজিন ও সংবাদ বিষয়ক অনুষ্ঠান ।
৩ । খেলাধুলা বিষয়ক অনুষ্ঠান ।
৪। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ অনুষ্ঠান ।
৫ । জনগণের বিভিন্ন মতামতমূলক অনুষ্ঠান ।
৫। টেলিভিশন (Television) : গণযোগাযোগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো টেলিভিশন । তথ্য, বিনোদন, শিক্ষা কার্যক্রম, খবরা-খবর প্রচারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সম্পাদন করে টেলিভিশন । বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিভিশনের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে কিছু চ্যানেল চালু আছে যেমন - NTV, RTV, বৈশাখী, চ্যানেল আই, এটিএন বাংলা, সময়, দিগন্ত, একুশে টিভি ইত্যাদি । আরো কয়েকটি প্রাইভেট চ্যানেল চালু করার প্রস্তাব রয়েছে।
১৯৬৪ সালে ঢাকায় ডি.আই.টি ভবনে সর্বপ্রথম টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপিত হয় যা পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে রামপুরায় নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হয়। বর্তমানে ঢাকা টেলিভিশন কেন্দ্র থেকে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ০৯টি রিলে-ষ্টেশন স্থাপন করা হয় এগুলো হলো চাম, নাটোর, খুলনা, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, কক্সবাজার ও সাতক্ষীরায়।
কার্যক্রম ঃ বাংলাদেশ টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য অতিরিক্ত সময় ব্যতীত ও প্রতিদিন সাধারণত ৭ ঘন্টার বেশি এবং সপ্তাহে ৫৭ ঘণ্টা অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠানসমূহের মধ্যে ৭৮.৫৪% স্থানীয় এবং ২১.৪৬% বিদেশি অনুষ্ঠান। দৈনন্দিন খবরা খবর ও নানাবিধ গংগীত ছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশন হতে যেসব অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় এর মধ্যে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, শিশু কিশোর অনুষ্ঠান, নাট্যানুষ্ঠান, নৃত্যানুষ্ঠান, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক অনুষ্ঠান, খেলাধূলা বিষয়ক অনুষ্ঠান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যা বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ।
৬। টেলেক্স (Telex) ও বহিবিশ্বের সাথে যোগাযোগের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো টেলের । এটা মূলত ভূ-উপগ্রহের মাধ্যমে কাজ করে। টেলেন্সের সাহায্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এবং এক দেশ থেকে অন্য দেশে অতিদ্রুত সংবাদ প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশের ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রামে স্বয়ংক্রিয় এক্সচেঞ্জ রয়েছে।
৭। ফ্যাক্স (Fax) ও বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত মাধ্যম হলো ফ্যাক্স। ফ্যাক্স যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকতম সংযোজন হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। ফ্যাক্সের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে মূহুর্তের মধ্যে শব্দ, ছবি, ডকুমেন্ট ইত্যাদি প্রেরণ করা যায়। একটি জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যমের নাম ফ্যাক্স ।
৮। ভূ-উপগ্রহ ঃ বর্তমান তথ্য বিপ্লবের যুগে বহিবিশ্বের সংগে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভূ-উপগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ব্যবস্থায় মহাশূন্যে কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনের মাধ্যমে বেতার তরঙ্গ প্রতিফলন করে একদেশ থেকে অন্য দেশে সংবাদ প্রেরণ এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। বাংলাদেশের পাবর্ত্য জেলা রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় একটি, গাজীপুর জেলার তালিমাবাদ, মহাখালী এবং সিলেটসহ মোট চারটি ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। এইসব ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে ।
তথ্য ও যোগাযোগ Information and Communication
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)

Bangladesh Telecommunications Company Limited (BTCL) সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ছাড়াও তথ্যের দ্রুত আদান-প্রদানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিটি স্ত রেই টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং এর মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানী লিমিটেড-এর বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে রাজস্ব আয় হয়েছে ১০০৫.০২ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ১,৩৮৪.৫৯ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জানুয়ারী ২০১৫ পর্যন্ত রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৬৮.৪১ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ৪০১.২৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) সেবা প্রদানের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করে থাকে। ২০০৬-০৭ অর্থবছর হতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে (জানুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত) বিটিসিএল-এর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা, আদায়, রাজস্ব ব্যয় ও উদ্বৃত্তের বিবরণ নিম্নের সারণিতে উপস্থাপন
২০১৪-১৫ সালের জানুয়ারি ২০১৫ পর্যন্ত বিটিসিএল এর টেলিফোন ক্যাপাসিটি সারাদেশে ছিল ১৪.৫৫ লাখ এবং গ্রাহক সংযোগ ছিল ৮.০৩ লাখ । ৪৬ জেলায় ২৫৬ কেবিপিএস থেকে ১.৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট ক্যাপাসিটি ছিল ৪৭ হাজার ও সংযোগ ছিল ১৭,০২২টি। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে প্রাপ্ত ব্যান্ডউইথ ছিল ৭.৫ গিগাবিট/সেকেন্ড ও স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রাপ্ত ব্যান্ডউইথ ছিল ৭২ গিগাবিট/সেকেন্ড । এ বছর ১০০০টি ইউনিয়নে ৫,০০০ কিলোমিটার অপটিকাল ফাইবার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের পর দেশব্যাপী বিস্তৃত বিটিসিএল এর ফাইবারের দৈর্ঘ্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯৫০ কিলোমিটার। পরে ম
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)
Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission (BTRC)

সরকার ১৯৯৮ সালে টেলিকমিউনিকেশন পলিসি তৈরী করে। সে সময় পরবর্তী ১০ বৎসরে টেলিফোনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি ১০০ জনের জন্য ১০টি টেলফোন ধরা হয়েছিল । বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গঠনের পর টেলিকম সেক্টরকে উদারিকরণ করার ফলে গ্রাহক সংখ্যা হার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয় । বিটিআরসি টেলিডেনসিটি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এখন প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পেয়ে ট্যারিফের হারও ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে । কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশ টেলিফোন ব্যবহারকারী বিশেষ করে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ধারণার চাইতে অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফেব্রুয়ারী, ২০১৫ তে এ সংখ্যা ১২ কোটি অতিক্রম করেছে । সারণিতে ২০০৮ থেকে ফেব্রুয়ারী, ২০১৫ পর্যন্ত মোবাইল ও ফিক্সড ফোনের গ্রাহক সংখ্যা, মোট গ্রাহক, গ্রাহক বৃদ্ধির হার, ইন্টারনেট ইউজার, টেলিঘনত্ব ইত্যাদি দেখানো হল । ।
বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিঃ (বিএসসিসিএল)
Bangladesh Submarine Cable Company Limited (BSCCL)

বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি কোম্পনি যেটি SEA-ME-WE-4 কনসোর্টিয়ান এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সাবমেরিন কেবল ব্যান্ডউইডথ সেবা প্রদান করছে এবং বাংলাদেশের সরকারের রাজস্ব আয়ে অবদান রাখছে। বর্তমান সরকার টেলিকমিউনিকেশন এর ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেছে। সরকারের এই উদ্যোগের বিষয়টি সামনে রেখে বিএসসিসিএল সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে একটি আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছে, যা হবে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রধান অবকাঠামো। বর্তমান সরকার কর্তৃক ঘোষিত রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিএসসিসিএল কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) একটি উদীয়মান পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। বিএসসিসিএল ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৯৪.৭৮ কোটি টাকা আয় করেছে এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত রাজস্ব আয় হয়েছে ৩২.৯২ কোটি টাকা। ।
ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইডথ মূল্য হ্রাসকরণ
রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের দিকে লক্ষ্য রেখে এবং অধিকতর ব্যবহার ও সর্বসাধারণের সামর্থ্যের মধ্যে আনার লক্ষ্যে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ এর মূল্য ৬০ শতাংশ কমানো হয়েছে ।
ব্যান্ডউইডথ এর ব্যবহার
বর্তমান সরকারের আমলে ব্যান্ডউইডথের ব্যবহার ৭.৫ Gbps (Giga byte per second) হতে বৃদ্ধি পেয়ে ডিসেম্বর ২০১৩ তে প্রায় ৩৮ Gbps হয়। আন্তর্জাতিক সার্কিট বৃদ্ধি, ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সম্প্রসারণের কারণে ব্যান্ডউইডথ এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে ।
আপগ্রেড-৩ এ অংশগ্রহণ
ভবিষ্যতে দেশের ব্যান্ডউইডথ চাহিদা সামনে রেখে বিএসসিসিএল সরকারের অনুমতিক্রমে কনসোর্টিয়ামের আপগ্রেড-৩ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যম অতিরিক্ত 6 million MIU * km ক্যাপাসিটি আনয়নের ব্যবস্থা করেছে। ইতোমধ্যে বিএসসিসিএল আপগ্রেড-৩ তে অংশগ্রহণ করার জন্য ৫০ কোটি টাকা নিজস্ব তহবিল হতে SEA-ME-WE-4 কনসোর্টিয়ামকে প্রদান করেছে। এর ফলে ব্যান্ডউইডথের রিজার্ভ মে ২০১২ এ ৪৪.৬০ Gbps হতে বৃদ্ধি পেয়ে ২০০ Gbps এ উন্নীত হয়েছে ।
দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল
বিএসসিসিএল বাংলাদেশের একমাত্র কোম্পানি যা দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলে সংযোগের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এবং SMW-5 সাবমেরিন কেবলে সংযুক্ত হলে নিরবিচ্ছিন্নভাবে তথ্য আদান-প্রদান সহজ হবে। বাংলাদেশ দুটো সাবমেরিন কনসোর্টিয়াম কেবলের সাথে সংযুক্ত হলে একটি অপরটির বিকল্প হিসেবে কাজ করবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যান্ডউইডথ লীজ প্রদান Lease of Spare Bandwidth in International Market
বর্তমানে ৮৫ Gbps ব্যান্ডউইডথ এর প্রায় ৩০ শতাংশ দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রাণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি দেশের জন্য পর্যাপ্ত রেখে উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইডথ বিদেশে স্বল্প মেয়াদে লিজ দেয়ার বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুপারিশ করেছে। এমতাবস্থায়, কোম্পানির পরিচালনা পর্যদের সুপারিশক্রমে আন্তর্জাতিক বাজারে উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইডথ লিজ প্রদানের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। বিএসসিসিএল কর্তৃক বাস্তবায়িত ও বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে আগামী কয়েক বছরে টেলিযোগাযোগ ও সাবমেরিন কেবল এর ক্ষেত্রে সেবার মান অনেক বৃদ্ধি পাবে এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস জনগণের কাঙ্খিত মূল্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায় ।

FOR MORE CLICK HERE
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস মাদার্স পাবলিকেশন্স
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস ১ম পর্ব
আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস
আমেরিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস
বাংলাদেশের ইতিহাস মধ্যযুগ
ভারতে মুসলমানদের ইতিহাস
মুঘল রাজবংশের ইতিহাস
সমাজবিজ্ঞান পরিচিতি
ভূগোল ও পরিবেশ পরিচিতি
অনার্স রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রথম বর্ষ
পৌরনীতি ও সুশাসন
অর্থনীতি
অনার্স ইসলামিক স্টাডিজ প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত
অনার্স দর্শন পরিচিতি প্রথম বর্ষ থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]